চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের মরাপাগলা গ্রামে দ্বিতীয় স্ত্রীকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগে স্বামীর লাশ দাফন আটকে দিয়েছেন হামফুল বেগম ও তার আত্মীয়স্বজন। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, মৃত মাজেদ বিশ্বাসের প্রথম স্ত্রী প্রায় ২০ বছর আগে মৃত্যুবরণ করলে তিনি হামফুল বেগমকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেন। এই দাম্পত্য জীবনে তাদের কোনো সন্তান হয়নি। এলাকাবাসীর সূত্র মতে, প্রায় ছয় মাস আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন মাজেদ বিশ্বাস। তখন তার প্রথম পক্ষের দুই ছেলে লতিফুর রহমান ও জাব্বার তাকে চিকিৎসার কথা বলে অন্যত্র নিয়ে যান এবং সেখানে পিতার সম্পত্তি নিজেদের নামে লিখে নেন। পরে গত ১৬ এপ্রিল হামফুল বেগমের নামে তালাকনামা পাঠানো হলেও তিনি তা গ্রহণ করেননি এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দেন।
এদিকে, গত শনিবার (২৭ এপ্রিল) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মাজেদ বিশ্বাস। পরদিন লাশ গ্রামে আনা হলে দ্বিতীয় স্ত্রী হামফুল বেগম দাফনে বাধা দেন। তিনি অভিযোগ করেন, অসুস্থ স্বামীর অক্ষম অবস্থায় জোরপূর্বক তাকে তালাক দেওয়া হয়েছে এবং সম্পত্তি ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ঘটনার পর রবিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে গ্রাম্য সালিশ বসে। সালিশে সিদ্ধান্ত হয়, দুই পক্ষের মধ্যে জমির সমবন্টন করা হবে এবং এরপর মৃতের দাফন সম্পন্ন হবে।
এলাকাবাসী মো. সেলিম বলেন, “মৃত ব্যক্তির ছেলেরা তাদের সৎ মাকে ঠকিয়ে জমি নিজেদের নামে লিখে নেয়। তাই দ্বিতীয় স্ত্রী বাধা দিয়েছেন। এখন সালিশে ন্যায্য সমাধানের চেষ্টা চলছে।”
আরেক বাসিন্দা আব্দুল কাদের বলেন, “ছেলেরা জমি লিখে নেওয়ায় সৎ মা ক্ষুব্ধ। এখন জমি আইন অনুযায়ী বণ্টন হবে। আমরা চাই শান্তিপূর্ণভাবে মৃতের দাফন সম্পন্ন হোক।”
হামফুল বেগমের ভাতিজি অভিযোগ করেন, “আমার ফুফু অসুস্থ অবস্থায় ছিলেন। জোর করে তাকে তালাকনামা পাঠানো হয়। সম্পত্তি আত্মসাতের জন্যই এই ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে মৃতের দুই ছেলে লতিফুর রহমান ও জাব্বারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান বলেন, “পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। আপাতত স্থানীয়ভাবে আপোস-মীমাংসার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামীকাল জমি সমবণ্টন করে লাশ দাফন করা হবে।”