ঢাকা ০২:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পণ্য রপ্তানির আড়ালে বেক্সিমকোর অর্থ পাচার

  • লিমন হোসেন
  • আপডেট সময় ০৭:৩৭:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 68

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর

প্রথম আলো:

পণ্য রপ্তানির আড়ালে বেক্সিমকোর অর্থ পাচার
বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানি করেছেন পিতা। এই পণ্যের কাঁচামাল কিনতে রিজার্ভ থেকে ডলার ধার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই পণ্য দুবাইয়ে বসে কিনেছে পুত্রের প্রতিষ্ঠান। নির্ধারিত সময়ে সেই অর্থ দেশে আসেনি। এভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইসহ তিনটি দেশে আটকে গেছে প্রায় ৮ কোটি ডলার। বর্তমানে বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৯৫৭ কোটি টাকা।

রপ্তানির আড়ালে অর্থ পাচারের এই আয়োজন সম্পন্ন করেছে বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং তাঁর ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমানের দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আর আর গ্লোবাল।

বেক্সিমকো গ্রুপের ১৭টি প্রতিষ্ঠানের নামে গত ১২ বছরে তিনটি দেশে পোশাক রপ্তানি দেখিয়ে এ টাকা পাচার করেছে বলে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। এই ঘটনায় গ্রুপটির মালিক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে এই অর্থ পাচার করেছে বেক্সিমকো গ্রুপ।

রাষ্ট্রমালিকানাধীন জনতা ব্যাংকের শীর্ষ ঋণগ্রহীতা বেক্সিমকো গ্রুপ। ব্যাংকটির বেক্সিমকো গ্রুপের ঋণ প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৮ হাজার কোটি টাকা খেলাপি হয়ে পড়েছে।

জনতা ব্যাংকের রপ্তানি বিভাগ এক প্রত্যয়নপত্রে সিআইডিকে জানিয়েছে, ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৩১ আগস্ট প্রায় ৮ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই টাকা দেশে আসেনি বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রত্যয়নপত্রের বিষয়টি জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল জব্বার প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অর্থ পাচারের ঘটনায় বেক্সিমকো গ্রুপের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। ১৪ আগস্ট ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ১ সেপ্টেম্বর বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের বিষয়টি অনুসন্ধান শুরু করে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। ২২ আগস্ট সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

সরকারকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না
♦ সংস্কার কার্যক্রমের পথ ধরে নির্বাচনি রোডম্যাপে উঠবে দেশ ♦ সন্ত্রাস নয় বরং ধৈর্য ধরতে হবে ♦ দেড় দশকে ১৭ লাখ কোটি টাকার বেশি পাচার
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সব কার্যক্রম মনঃপূত না হলেও তাদের কিছুতেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে- এ সরকারের ব্যর্থতা মানে আমাদের সবার ব্যর্থতা। হাজারো শহীদের আত্মদান আর ছাত্র-জনতাসহ সর্বস্তরের মানুষের ত্যাগ-তিতিক্ষার গণ আন্দোলনের ফসল এ সরকার জনগণেরই সরকার। তবে তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) নিজেরা যাতে নিজেদের ব্যর্থতার কারণ না হন, সে ব্যাপারে তাদের সতর্ক থাকতে হবে। গতকাল ছিল ‘বিশ্ব গণতন্ত্র দিবস’। এ উপলক্ষে বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্রীয় বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির ভার্চুয়ালি বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান। দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, সংস্কার কার্যক্রমের পথ ধরে নির্বাচনি রোডম্যাপে উঠবে দেশ। সুতরাং, আসুন আমরা সবাই কাজের মাধ্যমে জনগণের বিশ্বাস, ভালোবাসা অর্জন করি। জনগণের সঙ্গে থাকি। জনগণকে সঙ্গে রাখি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। সমাবেশ সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল। পরিচালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবদীন, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, হাবিব উন-নবী খান সোহেল, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান রতন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, বিএনপি নেতা আফরোজা খানম রিতা, গিয়াস উদ্দীন আহমদ, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, কৃষক দল সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজিব আহসান, শ্রমিক দল সভাপতি আনোয়ার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা দল সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাত প্রমুখ।

কালের কন্ঠ:

সাড়ে ৩ কোটির জমিতে হাজার কোটি ঋণ
আটা, ময়দা ও সুজির একটি কারখানায় এক হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। সৌভাগ্যবান এই কারখানার নাম সিলভার ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, যার অবস্থান চট্টগ্রাম নগরীর সাগরিকা বিসিক শিল্প এলাকায়। কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যেসব জমি বন্ধক নিয়ে এই ঋণ ছাড় করা হয়েছে, সেগুলোর মৌজামূল্য মাত্র সাড়ে তিন কোটি টাকা। এমনকি ওই জমির দলিলও ভুয়া বলে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে।

নামস্বর্বস্ব একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়ে কার্যত ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র।
এক হাজার কোটি টাকা ঋণ পাওয়া কারখানাটি দেখতে কেমন, কেমনই বা এখানকার কর্মযজ্ঞ, তা দেখতে গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে যায় কালের কণ্ঠ। চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর সংযোগ সড়ক থেকে সাগরিকা রোডে ঢুকলে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের আগে হাতের ডানে বিসিক শিল্প এলাকা। এ ব্লকে দুটি প্লট (এ-৫ ও এ-৬) নিয়ে ১৯৮০ সালে কারখানাটি স্থাপন করা হয়তবে কারখানার পরিধি এবং উৎপদন সক্ষমতা দেখে কারো বিশ্বাস হচ্ছে না যে রুগ্ণ এই কারখানা এক কোটি টাকার বেশি ঋণ পেতে পারে। বরং হাজার কোটি টাকার ঋণের তথ্য শুনে বিস্ময়ের অন্ত নেই স্থানীয় লোকজনের মধ্যেও।

যুগান্তর:

২০০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
বাংলাদেশের জন্য ঋণ সহায়তা বৃদ্ধি করছে বিশ্বব্যাংক। এ অর্থ সরকারের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন, বন্যা মোকাবিলা, দূষণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বায়ুর মান বাড়ানো এবং স্বাস্থ্যসেবায় ব্যবহার করা যাবে। ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মঙ্গলবার সাক্ষাতে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক একথা বলেন। তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে তার সংস্থা বাংলাদেশের জন্য ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের নতুন অর্থায়ন করতে পারবে। এছাড়াও এদিন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী। আবদৌলায়ে সেক বলেন, ‘জরুরিভাবে আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে এমন ক্ষেত্রে সহায়তা করা হবে। আমরা যত দ্রুত সম্ভব এবং যতটা সম্ভব আপনাদের সহায়তা করতে চাই।’

 

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর জানান, অতিরিক্ত ঋণ প্রদানের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক এবারের অর্থবছরে বাংলাদেশকে সহজ শর্তে ঋণ এবং মঞ্জুরি মিলিয়ে প্রায় তিনশ কোটি মার্কিন ডলার দেবে। যার মাধ্যমে বিদ্যমান প্রকল্পের তহবিল পুনর্বিন্যাসও করা হবে। সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন বাংলাদেশের তরুণ সম্প্রদায় এবং দেশটির জন্য ‘মহৎ কাজ’ হবে উল্লেখ করে আবদৌলায়ে সেক বলেন, প্রতিবছর ২০ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছেন। তারাও এর সুফল পাবেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টরকে উদ্দেশে করে বলেন, ১৫ বছরের অপশাসন থেকে ঘুরে দাঁড়াতে আমরা নতুন যাত্রার সূচনা করেছি। এই নতুন যাত্রাকে এগিয়ে নিতে এবং সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাংকের ঋণ তহবিলের শর্তাবলী নমনীয় হতে হবে। তিনি বলেন, ‘ধ্বংসাবশেষ থেকে আমাদের নতুন কাঠামো তৈরি করতে হচ্ছে। আমাদের এখন বড় ধাক্কা দেওয়ার প্রয়োজন। ছাত্রদের যে স্বপ্ন রয়েছে তা পূরণে মনোযোগ দিতে হবে।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি আপনাদের বলব, আমাদের সাহায্য করুন। আমাদের টিমের অংশীদার হোন।’ ১৫ বছরে দুর্নীতিবাজরা অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে কয়েক বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। পাচার হওয়া এসব অর্থ ফিরিয়ে আনতে অধ্যাপক ড. ইউনূস বিশ্বব্যাংককে কারিগরি সহায়তার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশে দুর্নীতিকে শূন্যের পর্যায়ে নামিয়ে আনতে ব্যাংকের দক্ষতার প্রয়োজন।

সমকাল:

এ সরকারকে সময় দিচ্ছে বিশ্ব সম্প্রদায়
রাজনীতির বদলে সামনে এসেছে সংস্কার ও অর্থনীতিড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে রাষ্ট্র সংস্কার করার জন্য সময় দিচ্ছে বিশ্ব সম্প্রদায়। ফলে রাজনীতির বিষয়ে তারা কম গুরুত্ব দিচ্ছে। বড় করে সামনে নিয়ে আসছে সংস্কারের বিষয়টি। সম্প্রতি মার্কিন অর্থ দপ্তরের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফর নিয়ে এমনটাই মত বিশ্লেষকদের। তাদের মতে, রাজনীতির বদলে সামনে এসেছে সংস্কার ও অর্থনীতি।

ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, বাংলাদেশকে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন খাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার নিয়ে আসা। ইতোমধ্যে সংস্কারের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন, জনপ্রশাসন এবং সংবিধান সংস্কার। এ জন্য গঠনও করা হয়েছে পৃথক কমিশন। পাশাপাশি হাতে নেওয়া হয়েছে আর্থিক খাতের সংস্কার।
সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতা করতে সম্প্রতি ঢাকা সফর করে গেল মার্কিন অর্থ দপ্তরের আন্তর্জাতিক অর্থনীতি ও উন্নয়নবিষয়ক সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী প্রতিনিধি দল। সফরে ওয়াশিংটনের মূল লক্ষ্য বাংলাদেশের যে প্রবৃদ্ধি গত কয়েক দশকে ধারাবাহিকভাবে বজায় রেখেছে, সে প্রবৃদ্ধি যাতে অব্যাহত থাকে। সেই সঙ্গে এখানে স্থিতিশীলতা যাতে ফিরে আসে। প্রতিনিধি দল এমন বার্তাই দিয়ে গেছে।

নয়াদিগন্ত:

দ্বন্দ্ব উসকে দেয়ার মিশন আ’লীগের
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের ইতিহাসে স্মরণকালের মহাবিপর্যয় ঘটলেও অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলার জন্য বসে নেই দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব। খোদ আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বিদেশে বসে প্রতিবিপ্লবের মাধ্যমে এখনো সরকার হটানোর ছক কষছেন বলে নির্ভরযোগ্য রাজনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।
তারই অংশ হিসেবে দেশের গোষ্ঠীগত নানা দ্বন্দ্বসহ ইস্যুভিত্তিক ঘটনাকে উসকে দেয়ার ভয়াবহ মিশনে নেমেছে দলটি। এ বিষয়ে দেশ-বিদেশে অবস্থান করা সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের বাছাইকৃত কিছু নেতার সাথে দলীয় প্রধান যোগাযোগ করে তৃণমূল পর্যায়ে উসকানি ছড়িয়ে দেয়ার জন্য উৎসাহ জোগাচ্ছেন। আর ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য দেশের অভ্যন্তরে আত্মগোপনে থাকা দলটির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের মাঠপর্যায়ের নেতৃবৃন্দ সক্রিয় রয়েছেন বলে একাধিক নেতার সাথে আলাপকালে জানা গেছে।
যুবলীগের এক সহ-সম্পাদক আলাপকালে জানান, আওয়ামী লীগকে হটিয়ে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে ছাত্ররা সরকার গঠন করতে পারলেও তারা শান্তিতে থাকতে পারবে না। দাবিদাওয়াসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজপথে আন্দোলন করছে এবং সামনের দিনগুলোতে এরকম আরো আন্দোলনের কর্মসূচি দেখা যাবে। তিনি আরো বলেন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েক স্তরে সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের লোক রয়েছে। যারা এখনো বিভিন্ন মাধ্যমে আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রীরা আত্মগোপনে থাকলেও বিভিন্ন ইস্যুতে রাজধানীতে আন্দোলন হচ্ছে। তৃণমূল পর্যায়ে সঙ্ঘাত-সংঘর্ষ হচ্ছে, একসময় দেখবেন গৃহযুদ্ধ লেগে গেছে, যা সামাল দেয়া এই সরকারের জন্য অনেকটা কঠিন হয়ে যাবে।

কারবেলা:

এক ছালামেই তছনছ জনতা
১৯৮৩ সালে জনতা ব্যাংকে চাকরি শুরু করেন আব্দুস ছালাম আজাদ। এরপর তিনি যত শাখায় কাজ করেছেন, সবখানেই বেশুমার দুর্নীতি করে নিজে লাভবান হয়েছেন এবং ব্যাংকের মারাত্মক ক্ষতি করেছেন। নিজের অপকর্ম ঢাকতে অধীন কর্মকর্তাদের ছোট-বড় শাস্তির মুখে ফেলেছেন। জেলও খাটিয়েছেন। তাদের মধ্যে ডিএমডি, ডিজিএম, এজিএম, এসপিও পদমর্যাদার কর্মকর্তারাও রয়েছেন। নিরাপদে থেকে বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। সেই টাকা পাচার করে দুবাইয়ে বাড়ি বানিয়েছেন। বিপরীতে ডুবিয়েছেন জনতা ব্যাংককে। সর্বশেষ ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্বে থেকে সাড়ে ৫ বছরে দ্বিগুণ করেছেন খেলাপি ঋণ। এর বেশিরভাগই পুঞ্জীভূত হয়েছে বড় গ্রাহকদের কাছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক, দুদকসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আব্দুস ছালাম আজাদ। ওই সময় জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা। এমডি হিসেবে তিনি দায়িত্ব শেষ করেন ২০২৩ সালের এপ্রিলে। ওই সময় ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা। আর বর্তমানে ব্যাংকটির খেলাপি দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার কোটি টাকা।

তথ্য বলছে, এমডি থাকা অবস্থায় আব্দুস ছালাম আজাদ জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের তথ্য লুকিয়েছেন। যে ধারা অব্যাহত রেখেছেন পরবর্তী এমডি জব্বারও। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন গভর্নর খেলাপি ঋণের প্রকৃত তথ্য বের করে আনায় তা ৪৮ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।জানা গেছে, ছালাম আজাদ এমডির দায়িত্ব নেওয়ার সময় ব্যাংকটির শীর্ষ গ্রাহক ছিল ১১টি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা। কিন্তু তিনি দায়িত্ব ছেড়ে যাওয়ার সময় এই গ্রাহকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩-এ। আর এদের মধ্যে সম্মিলিত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৯ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া জনতা ব্যাংক থেকে বিতর্কিত ব্যবসায়ী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে বিশেষ বিবেচনায় ২৩ হাজার কোটি টাকার ঋণও দিয়েছেন এই আব্দুস ছালাম আজাদ। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২২ সালের এক প্রতিবেদনে জনতা ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার পরিবারের চার সদস্য, এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ও তার স্ত্রী, আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এবং এসবিএসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল কাদির মোল্লা বিপুল অর্থ নামে-বেনামে বের করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। পরে অদৃশ্য কারণে সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জনতা ব্যাংক ও আব্দুস ছালাম আজাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

দেশ রুপান্তর:

সেনাবাহিনীকে দুই মাসের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা
রাজধানীসহ সারা দেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়েছে সরকার। গতকাল মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর ফলে ফৌজদারি কার্যবিধির বিভিন্ন ধারায় ছোটখাটো নানা অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে বিচার করতে পারবেন তারা।

‘দ্য কোড অব ক্রিমিন্যাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮’-এর ১২(১) ধারা অনুযায়ী, প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ হতে ৬০ দিন (২ মাস) পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার বিষয়টি নিশ্চিত করে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লে. কর্নেল সামি উদ দৌলা চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকার যেভাবে চাইবে আমরা সেভাবেই কাজ করব। সুনির্দিষ্টভাবে কোনো ক্ষেত্রে এ ক্ষমতা ব্যবহার করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিস্তারিত আমরা সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানাব।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের সামনে এখন প্রধান দুই চ্যালেঞ্জ। একটি অর্থনীতির রুগ্ণ অবস্থার উত্তোরণ। আরেকটি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি। অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা সরকারকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না সরকার। এ পরিস্থিতিতে সরকারের এই উদ্যোগ ভালো। কিন্তু সেনাবাহিনীকে এ বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগ সতর্কভাবে করতে হবে।

মানবজমিন:

জঙ্গিবাদে অর্থদাতা নিষিদ্ধ এনজিও চালাতেন মনিরুল!
মনিরুল ইসলাম। পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ এসবি’র সাবেক প্রধান। এক সময়ের প্রবল প্রতাপশালী এই অতিরিক্ত আইজিপি’র অনিয়মের শেষ নেই। ডিএমপি’র যুগ্ম কমিশনার থেকে এসবি প্রধান। গত ১০ বছরে নাটকীয় উত্থান। অল্প সময়ে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। ক্রসফায়ারের হুমকি, তুলে নিয়ে ডিবি দিয়ে নির্যাতন, বিঘায় বিঘায় জমি দখল, বাড়ি দখল, ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে কোটি টাকা আদায়, মামলা বাণিজ্য, জঙ্গি নাটক সাজিয়ে মালিককে গ্রেপ্তার করে এনজিও ছিনতাই, শ্যালককে দিয়ে পিডব্লিউডির টেন্ডারবাজি এমন কোনো কাজ নেই, যা করেনি এই মনিরুল। জঙ্গি দমনে কাজ করা এই মনিরুল নিজেই জঙ্গিবাদে অর্থদাতা হিসেবে পৃথিবী জুড়ে নিষিদ্ধ দুটি এনজিও পরিচালনায় জড়িত ছিলেন। রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা ও পুনর্বাসনের নামে ৭ বছরে এই এনজিও মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা অনুদান এনেছে। নানা অনিয়ম, দুর্নীতিতে জড়ানো এই পুলিশ কর্মকর্তা শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরে গা ঢাকা দিয়েছেন।

যেভাবে নিষিদ্ধ এনজিওর দখল করেন মনিরুল: মনিরুল ইসলাম বাংলাদেশে মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক দুটি এনজিওর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। সূত্র বলছে, ১৯৯৪ সালে কুয়েত জয়েন্ট রিলিফ কমিটি নামে একটি এনজিও বাংলাদেশে তাদের প্রথম কার্যক্রম শুরু করেন। এটি পরিচালনা করতেন একটি প্রভাবশালী ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের দ্বিতীয়সারির নেতা মো. জামাল আব্দুল খালেক আল নুরী। প্রথমদিকে এনজিওটি বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা নির্মাণ ও ছিন্নমূল বয়স্ক মানুষের পুনর্বাসনের কাজ করতো। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৬ সালে মনিরুল ইসলাম জঙ্গি দমনে গঠিত কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের প্রধান হয়েই কুয়েত জয়েন্ট রিলিফ কমিটি নামে এনজিওটির চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করেন। পরে এনজিওটি নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন। নাম সংস্কার করে কুয়েত সোসাইটি ফর রিলিফ নাম দেন। এরপর দখল করেন শারজাহ চ্যারিটি ইন্টারন্যাশনাল নামের আরেকটি এনজিও। জাতীয় এনজিও ব্যুরোর নথি বলছে, ২০১৭ সালে নভেম্বর মাসের ২ তারিখে কুয়েত জয়েন্ট কমিটি এনজিওটির নাম পরিবর্তন করা হয়। যাতে মনিরুল ইসলাম সুপারিশ করেন। এরপর থেকেই এনজিও দুটি ভিন্ন নামে ভিন্ন রূপে নির্বিঘ্নে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যার নেপথ্যে ছিলেন এসবি সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম। তার প্রভাবে এই এনজিও কার্যক্রম নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলার সাহস পাননি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, জঙ্গিবাদে অর্থদাতা হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ।

জনপ্রিয় সংবাদ

পণ্য রপ্তানির আড়ালে বেক্সিমকোর অর্থ পাচার

আপডেট সময় ০৭:৩৭:১১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর

প্রথম আলো:

পণ্য রপ্তানির আড়ালে বেক্সিমকোর অর্থ পাচার
বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানি করেছেন পিতা। এই পণ্যের কাঁচামাল কিনতে রিজার্ভ থেকে ডলার ধার দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই পণ্য দুবাইয়ে বসে কিনেছে পুত্রের প্রতিষ্ঠান। নির্ধারিত সময়ে সেই অর্থ দেশে আসেনি। এভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইসহ তিনটি দেশে আটকে গেছে প্রায় ৮ কোটি ডলার। বর্তমানে বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৯৫৭ কোটি টাকা।

রপ্তানির আড়ালে অর্থ পাচারের এই আয়োজন সম্পন্ন করেছে বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং তাঁর ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমানের দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আর আর গ্লোবাল।

বেক্সিমকো গ্রুপের ১৭টি প্রতিষ্ঠানের নামে গত ১২ বছরে তিনটি দেশে পোশাক রপ্তানি দেখিয়ে এ টাকা পাচার করেছে বলে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। এই ঘটনায় গ্রুপটির মালিক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে এই অর্থ পাচার করেছে বেক্সিমকো গ্রুপ।

রাষ্ট্রমালিকানাধীন জনতা ব্যাংকের শীর্ষ ঋণগ্রহীতা বেক্সিমকো গ্রুপ। ব্যাংকটির বেক্সিমকো গ্রুপের ঋণ প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৮ হাজার কোটি টাকা খেলাপি হয়ে পড়েছে।

জনতা ব্যাংকের রপ্তানি বিভাগ এক প্রত্যয়নপত্রে সিআইডিকে জানিয়েছে, ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ৩১ আগস্ট প্রায় ৮ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই টাকা দেশে আসেনি বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রত্যয়নপত্রের বিষয়টি জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল জব্বার প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, অর্থ পাচারের ঘটনায় বেক্সিমকো গ্রুপের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। ১৪ আগস্ট ঢাকার সদরঘাট এলাকা থেকে সালমান এফ রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ১ সেপ্টেম্বর বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের বিষয়টি অনুসন্ধান শুরু করে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। ২২ আগস্ট সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

সরকারকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না
♦ সংস্কার কার্যক্রমের পথ ধরে নির্বাচনি রোডম্যাপে উঠবে দেশ ♦ সন্ত্রাস নয় বরং ধৈর্য ধরতে হবে ♦ দেড় দশকে ১৭ লাখ কোটি টাকার বেশি পাচার
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সব কার্যক্রম মনঃপূত না হলেও তাদের কিছুতেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে- এ সরকারের ব্যর্থতা মানে আমাদের সবার ব্যর্থতা। হাজারো শহীদের আত্মদান আর ছাত্র-জনতাসহ সর্বস্তরের মানুষের ত্যাগ-তিতিক্ষার গণ আন্দোলনের ফসল এ সরকার জনগণেরই সরকার। তবে তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) নিজেরা যাতে নিজেদের ব্যর্থতার কারণ না হন, সে ব্যাপারে তাদের সতর্ক থাকতে হবে। গতকাল ছিল ‘বিশ্ব গণতন্ত্র দিবস’। এ উপলক্ষে বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কেন্দ্রীয় বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির ভার্চুয়ালি বক্তৃতায় তিনি এ আহ্বান জানান। দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, সংস্কার কার্যক্রমের পথ ধরে নির্বাচনি রোডম্যাপে উঠবে দেশ। সুতরাং, আসুন আমরা সবাই কাজের মাধ্যমে জনগণের বিশ্বাস, ভালোবাসা অর্জন করি। জনগণের সঙ্গে থাকি। জনগণকে সঙ্গে রাখি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। সমাবেশ সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল। পরিচালনা করেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, দলের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবদীন, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, হাবিব উন-নবী খান সোহেল, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান রতন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, বিএনপি নেতা আফরোজা খানম রিতা, গিয়াস উদ্দীন আহমদ, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, কৃষক দল সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজিব আহসান, শ্রমিক দল সভাপতি আনোয়ার হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা দল সভাপতি ইসতিয়াক আজিজ উলফাত প্রমুখ।

কালের কন্ঠ:

সাড়ে ৩ কোটির জমিতে হাজার কোটি ঋণ
আটা, ময়দা ও সুজির একটি কারখানায় এক হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। সৌভাগ্যবান এই কারখানার নাম সিলভার ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, যার অবস্থান চট্টগ্রাম নগরীর সাগরিকা বিসিক শিল্প এলাকায়। কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, যেসব জমি বন্ধক নিয়ে এই ঋণ ছাড় করা হয়েছে, সেগুলোর মৌজামূল্য মাত্র সাড়ে তিন কোটি টাকা। এমনকি ওই জমির দলিলও ভুয়া বলে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে।

নামস্বর্বস্ব একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়ে কার্যত ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র।
এক হাজার কোটি টাকা ঋণ পাওয়া কারখানাটি দেখতে কেমন, কেমনই বা এখানকার কর্মযজ্ঞ, তা দেখতে গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে যায় কালের কণ্ঠ। চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর সংযোগ সড়ক থেকে সাগরিকা রোডে ঢুকলে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের আগে হাতের ডানে বিসিক শিল্প এলাকা। এ ব্লকে দুটি প্লট (এ-৫ ও এ-৬) নিয়ে ১৯৮০ সালে কারখানাটি স্থাপন করা হয়তবে কারখানার পরিধি এবং উৎপদন সক্ষমতা দেখে কারো বিশ্বাস হচ্ছে না যে রুগ্ণ এই কারখানা এক কোটি টাকার বেশি ঋণ পেতে পারে। বরং হাজার কোটি টাকার ঋণের তথ্য শুনে বিস্ময়ের অন্ত নেই স্থানীয় লোকজনের মধ্যেও।

যুগান্তর:

২০০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
বাংলাদেশের জন্য ঋণ সহায়তা বৃদ্ধি করছে বিশ্বব্যাংক। এ অর্থ সরকারের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন, বন্যা মোকাবিলা, দূষণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বায়ুর মান বাড়ানো এবং স্বাস্থ্যসেবায় ব্যবহার করা যাবে। ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মঙ্গলবার সাক্ষাতে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক একথা বলেন। তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে তার সংস্থা বাংলাদেশের জন্য ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের নতুন অর্থায়ন করতে পারবে। এছাড়াও এদিন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভান্ডারী। আবদৌলায়ে সেক বলেন, ‘জরুরিভাবে আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে এমন ক্ষেত্রে সহায়তা করা হবে। আমরা যত দ্রুত সম্ভব এবং যতটা সম্ভব আপনাদের সহায়তা করতে চাই।’

 

বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর জানান, অতিরিক্ত ঋণ প্রদানের মাধ্যমে বিশ্বব্যাংক এবারের অর্থবছরে বাংলাদেশকে সহজ শর্তে ঋণ এবং মঞ্জুরি মিলিয়ে প্রায় তিনশ কোটি মার্কিন ডলার দেবে। যার মাধ্যমে বিদ্যমান প্রকল্পের তহবিল পুনর্বিন্যাসও করা হবে। সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন বাংলাদেশের তরুণ সম্প্রদায় এবং দেশটির জন্য ‘মহৎ কাজ’ হবে উল্লেখ করে আবদৌলায়ে সেক বলেন, প্রতিবছর ২০ লাখ মানুষ শ্রমবাজারে প্রবেশ করছেন। তারাও এর সুফল পাবেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টরকে উদ্দেশে করে বলেন, ১৫ বছরের অপশাসন থেকে ঘুরে দাঁড়াতে আমরা নতুন যাত্রার সূচনা করেছি। এই নতুন যাত্রাকে এগিয়ে নিতে এবং সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাংকের ঋণ তহবিলের শর্তাবলী নমনীয় হতে হবে। তিনি বলেন, ‘ধ্বংসাবশেষ থেকে আমাদের নতুন কাঠামো তৈরি করতে হচ্ছে। আমাদের এখন বড় ধাক্কা দেওয়ার প্রয়োজন। ছাত্রদের যে স্বপ্ন রয়েছে তা পূরণে মনোযোগ দিতে হবে।’

ড. ইউনূস বলেন, ‘আমি আপনাদের বলব, আমাদের সাহায্য করুন। আমাদের টিমের অংশীদার হোন।’ ১৫ বছরে দুর্নীতিবাজরা অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে কয়েক বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে। পাচার হওয়া এসব অর্থ ফিরিয়ে আনতে অধ্যাপক ড. ইউনূস বিশ্বব্যাংককে কারিগরি সহায়তার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, দেশে দুর্নীতিকে শূন্যের পর্যায়ে নামিয়ে আনতে ব্যাংকের দক্ষতার প্রয়োজন।

সমকাল:

এ সরকারকে সময় দিচ্ছে বিশ্ব সম্প্রদায়
রাজনীতির বদলে সামনে এসেছে সংস্কার ও অর্থনীতিড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে রাষ্ট্র সংস্কার করার জন্য সময় দিচ্ছে বিশ্ব সম্প্রদায়। ফলে রাজনীতির বিষয়ে তারা কম গুরুত্ব দিচ্ছে। বড় করে সামনে নিয়ে আসছে সংস্কারের বিষয়টি। সম্প্রতি মার্কিন অর্থ দপ্তরের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফর নিয়ে এমনটাই মত বিশ্লেষকদের। তাদের মতে, রাজনীতির বদলে সামনে এসেছে সংস্কার ও অর্থনীতি।

ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, বাংলাদেশকে একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন খাতে প্রয়োজনীয় সংস্কার নিয়ে আসা। ইতোমধ্যে সংস্কারের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে নির্বাচন ব্যবস্থা, পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন, জনপ্রশাসন এবং সংবিধান সংস্কার। এ জন্য গঠনও করা হয়েছে পৃথক কমিশন। পাশাপাশি হাতে নেওয়া হয়েছে আর্থিক খাতের সংস্কার।
সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতা করতে সম্প্রতি ঢাকা সফর করে গেল মার্কিন অর্থ দপ্তরের আন্তর্জাতিক অর্থনীতি ও উন্নয়নবিষয়ক সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী প্রতিনিধি দল। সফরে ওয়াশিংটনের মূল লক্ষ্য বাংলাদেশের যে প্রবৃদ্ধি গত কয়েক দশকে ধারাবাহিকভাবে বজায় রেখেছে, সে প্রবৃদ্ধি যাতে অব্যাহত থাকে। সেই সঙ্গে এখানে স্থিতিশীলতা যাতে ফিরে আসে। প্রতিনিধি দল এমন বার্তাই দিয়ে গেছে।

নয়াদিগন্ত:

দ্বন্দ্ব উসকে দেয়ার মিশন আ’লীগের
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের ইতিহাসে স্মরণকালের মহাবিপর্যয় ঘটলেও অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলার জন্য বসে নেই দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব। খোদ আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বিদেশে বসে প্রতিবিপ্লবের মাধ্যমে এখনো সরকার হটানোর ছক কষছেন বলে নির্ভরযোগ্য রাজনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।
তারই অংশ হিসেবে দেশের গোষ্ঠীগত নানা দ্বন্দ্বসহ ইস্যুভিত্তিক ঘটনাকে উসকে দেয়ার ভয়াবহ মিশনে নেমেছে দলটি। এ বিষয়ে দেশ-বিদেশে অবস্থান করা সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের বাছাইকৃত কিছু নেতার সাথে দলীয় প্রধান যোগাযোগ করে তৃণমূল পর্যায়ে উসকানি ছড়িয়ে দেয়ার জন্য উৎসাহ জোগাচ্ছেন। আর ওই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য দেশের অভ্যন্তরে আত্মগোপনে থাকা দলটির বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের মাঠপর্যায়ের নেতৃবৃন্দ সক্রিয় রয়েছেন বলে একাধিক নেতার সাথে আলাপকালে জানা গেছে।
যুবলীগের এক সহ-সম্পাদক আলাপকালে জানান, আওয়ামী লীগকে হটিয়ে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে ছাত্ররা সরকার গঠন করতে পারলেও তারা শান্তিতে থাকতে পারবে না। দাবিদাওয়াসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজপথে আন্দোলন করছে এবং সামনের দিনগুলোতে এরকম আরো আন্দোলনের কর্মসূচি দেখা যাবে। তিনি আরো বলেন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েক স্তরে সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের লোক রয়েছে। যারা এখনো বিভিন্ন মাধ্যমে আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও মন্ত্রীরা আত্মগোপনে থাকলেও বিভিন্ন ইস্যুতে রাজধানীতে আন্দোলন হচ্ছে। তৃণমূল পর্যায়ে সঙ্ঘাত-সংঘর্ষ হচ্ছে, একসময় দেখবেন গৃহযুদ্ধ লেগে গেছে, যা সামাল দেয়া এই সরকারের জন্য অনেকটা কঠিন হয়ে যাবে।

কারবেলা:

এক ছালামেই তছনছ জনতা
১৯৮৩ সালে জনতা ব্যাংকে চাকরি শুরু করেন আব্দুস ছালাম আজাদ। এরপর তিনি যত শাখায় কাজ করেছেন, সবখানেই বেশুমার দুর্নীতি করে নিজে লাভবান হয়েছেন এবং ব্যাংকের মারাত্মক ক্ষতি করেছেন। নিজের অপকর্ম ঢাকতে অধীন কর্মকর্তাদের ছোট-বড় শাস্তির মুখে ফেলেছেন। জেলও খাটিয়েছেন। তাদের মধ্যে ডিএমডি, ডিজিএম, এজিএম, এসপিও পদমর্যাদার কর্মকর্তারাও রয়েছেন। নিরাপদে থেকে বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। সেই টাকা পাচার করে দুবাইয়ে বাড়ি বানিয়েছেন। বিপরীতে ডুবিয়েছেন জনতা ব্যাংককে। সর্বশেষ ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্বে থেকে সাড়ে ৫ বছরে দ্বিগুণ করেছেন খেলাপি ঋণ। এর বেশিরভাগই পুঞ্জীভূত হয়েছে বড় গ্রাহকদের কাছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক, দুদকসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আব্দুস ছালাম আজাদ। ওই সময় জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৭ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা। এমডি হিসেবে তিনি দায়িত্ব শেষ করেন ২০২৩ সালের এপ্রিলে। ওই সময় ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা। আর বর্তমানে ব্যাংকটির খেলাপি দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার কোটি টাকা।

তথ্য বলছে, এমডি থাকা অবস্থায় আব্দুস ছালাম আজাদ জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের তথ্য লুকিয়েছেন। যে ধারা অব্যাহত রেখেছেন পরবর্তী এমডি জব্বারও। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নতুন গভর্নর খেলাপি ঋণের প্রকৃত তথ্য বের করে আনায় তা ৪৮ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।জানা গেছে, ছালাম আজাদ এমডির দায়িত্ব নেওয়ার সময় ব্যাংকটির শীর্ষ গ্রাহক ছিল ১১টি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা। কিন্তু তিনি দায়িত্ব ছেড়ে যাওয়ার সময় এই গ্রাহকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩-এ। আর এদের মধ্যে সম্মিলিত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৯ হাজার ৫৮৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া জনতা ব্যাংক থেকে বিতর্কিত ব্যবসায়ী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানকে বিশেষ বিবেচনায় ২৩ হাজার কোটি টাকার ঋণও দিয়েছেন এই আব্দুস ছালাম আজাদ। এমনকি বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২২ সালের এক প্রতিবেদনে জনতা ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার পরিবারের চার সদস্য, এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার ও তার স্ত্রী, আইএফআইসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এবং এসবিএসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল কাদির মোল্লা বিপুল অর্থ নামে-বেনামে বের করে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। পরে অদৃশ্য কারণে সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে জনতা ব্যাংক ও আব্দুস ছালাম আজাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

দেশ রুপান্তর:

সেনাবাহিনীকে দুই মাসের জন্য ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা
রাজধানীসহ সারা দেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়েছে সরকার। গতকাল মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর ফলে ফৌজদারি কার্যবিধির বিভিন্ন ধারায় ছোটখাটো নানা অপরাধ বিবেচনায় নিয়ে বিচার করতে পারবেন তারা।

‘দ্য কোড অব ক্রিমিন্যাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮’-এর ১২(১) ধারা অনুযায়ী, প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ হতে ৬০ দিন (২ মাস) পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার বিষয়টি নিশ্চিত করে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লে. কর্নেল সামি উদ দৌলা চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, সরকার যেভাবে চাইবে আমরা সেভাবেই কাজ করব। সুনির্দিষ্টভাবে কোনো ক্ষেত্রে এ ক্ষমতা ব্যবহার করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিস্তারিত আমরা সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানাব।’

বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের সামনে এখন প্রধান দুই চ্যালেঞ্জ। একটি অর্থনীতির রুগ্ণ অবস্থার উত্তোরণ। আরেকটি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি। অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে ইতিমধ্যে বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা সরকারকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না সরকার। এ পরিস্থিতিতে সরকারের এই উদ্যোগ ভালো। কিন্তু সেনাবাহিনীকে এ বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগ সতর্কভাবে করতে হবে।

মানবজমিন:

জঙ্গিবাদে অর্থদাতা নিষিদ্ধ এনজিও চালাতেন মনিরুল!
মনিরুল ইসলাম। পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ এসবি’র সাবেক প্রধান। এক সময়ের প্রবল প্রতাপশালী এই অতিরিক্ত আইজিপি’র অনিয়মের শেষ নেই। ডিএমপি’র যুগ্ম কমিশনার থেকে এসবি প্রধান। গত ১০ বছরে নাটকীয় উত্থান। অল্প সময়ে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। ক্রসফায়ারের হুমকি, তুলে নিয়ে ডিবি দিয়ে নির্যাতন, বিঘায় বিঘায় জমি দখল, বাড়ি দখল, ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে কোটি টাকা আদায়, মামলা বাণিজ্য, জঙ্গি নাটক সাজিয়ে মালিককে গ্রেপ্তার করে এনজিও ছিনতাই, শ্যালককে দিয়ে পিডব্লিউডির টেন্ডারবাজি এমন কোনো কাজ নেই, যা করেনি এই মনিরুল। জঙ্গি দমনে কাজ করা এই মনিরুল নিজেই জঙ্গিবাদে অর্থদাতা হিসেবে পৃথিবী জুড়ে নিষিদ্ধ দুটি এনজিও পরিচালনায় জড়িত ছিলেন। রোহিঙ্গাদের খাদ্য সহায়তা ও পুনর্বাসনের নামে ৭ বছরে এই এনজিও মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা অনুদান এনেছে। নানা অনিয়ম, দুর্নীতিতে জড়ানো এই পুলিশ কর্মকর্তা শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরে গা ঢাকা দিয়েছেন।

যেভাবে নিষিদ্ধ এনজিওর দখল করেন মনিরুল: মনিরুল ইসলাম বাংলাদেশে মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক দুটি এনজিওর প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। সূত্র বলছে, ১৯৯৪ সালে কুয়েত জয়েন্ট রিলিফ কমিটি নামে একটি এনজিও বাংলাদেশে তাদের প্রথম কার্যক্রম শুরু করেন। এটি পরিচালনা করতেন একটি প্রভাবশালী ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের দ্বিতীয়সারির নেতা মো. জামাল আব্দুল খালেক আল নুরী। প্রথমদিকে এনজিওটি বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা নির্মাণ ও ছিন্নমূল বয়স্ক মানুষের পুনর্বাসনের কাজ করতো। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৬ সালে মনিরুল ইসলাম জঙ্গি দমনে গঠিত কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের প্রধান হয়েই কুয়েত জয়েন্ট রিলিফ কমিটি নামে এনজিওটির চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করেন। পরে এনজিওটি নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন। নাম সংস্কার করে কুয়েত সোসাইটি ফর রিলিফ নাম দেন। এরপর দখল করেন শারজাহ চ্যারিটি ইন্টারন্যাশনাল নামের আরেকটি এনজিও। জাতীয় এনজিও ব্যুরোর নথি বলছে, ২০১৭ সালে নভেম্বর মাসের ২ তারিখে কুয়েত জয়েন্ট কমিটি এনজিওটির নাম পরিবর্তন করা হয়। যাতে মনিরুল ইসলাম সুপারিশ করেন। এরপর থেকেই এনজিও দুটি ভিন্ন নামে ভিন্ন রূপে নির্বিঘ্নে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যার নেপথ্যে ছিলেন এসবি সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম। তার প্রভাবে এই এনজিও কার্যক্রম নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলার সাহস পাননি। অনুসন্ধানে জানা গেছে, জঙ্গিবাদে অর্থদাতা হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ।