যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ। তারা অন্যান্য খেলায় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। সেই আমেরিকায় বিশ্বকাপ হচ্ছে, সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজেও। এটা ইঙ্গিত দেয়, ক্রিকেট বিশ্বায়নের পথে প্রসার হচ্ছে। আমি খুশি এভাবে প্রসার হওয়ায়। টি২০ খেলাই ক্রিকেটের বৈশ্বিক ভার্সন। কারণ তিন ঘণ্টায় ম্যাচ শেষ হয়। ক্যাপিটালিস্ট দেশগুলো স্বল্প সময়ের খেলাকে লুফে নেয়। এ কারণেই টি২০ বিশ্বকাপের যৌথ আয়োজক হয়েছে আমেরিকা। শুভ হোক আমেরিকার বিশ্বকাপ।
আমেরিকায় বিশ্বকাপের ১৬টি ম্যাচ হবে নিউইয়র্ক, ডালাস ও ফ্লোরিডায়। ডালাসে টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচ, যেখানে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ কানাডা। দুই প্রতিবেশীর খেলা রাখায় ভালো হয়েছে। বিশ্বকাপ নিয়ে ডালাসের মানুষের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হবে। কিছুদিন আগে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে কানাডাকে উড়িয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে তারাই জিতবে ধরে নেওয়া যায়। যুক্তরাষ্ট্র জিতে গেলে দর্শকরা মাঠে আসবে। যুক্তরাষ্ট্রের মাঠগুলো সুন্দর হয়েছে। ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি স্টেডিয়ামে আগে থেকে খেলা হয়। মেজর ক্রিকেট লিগের ফাইনাল হয়েছে। নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামটি খুবই সুন্দর। অস্ট্রেলিয়া থেকে বানিয়ে আনা হয়েছে ড্রপ ইন পিচ। ৩৪ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন স্টেডিয়ামের গ্যালারি পোর্টেবল। বিশ্বকাপ শেষ হলে গ্যালারি নাও রাখা হতে পারে।
যদিও এই ভেন্যু নির্মাণে আইসিসির সম্পৃক্ততা আছে। দেশটিতে নিয়মিত ক্রিকেট হলে মাঠ লাগবে। আমেরিকান ক্রিকেট বোর্ড হয়তো চেষ্টা করবে নাসাউ স্টেডিয়ামটি রক্ষা করতে। বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে নিউইয়র্কের এই ভেন্যুর উদ্বোধন হবে কাল (আজ)। ডালাসের মতো ফ্লোরিডায় আগে খেলা হয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে বাংলাদেশ দুটি ম্যাচ খেলেছিল ২০১৮ সালে। মাঝে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছিল আমেরিকা থেকে বিশ্বকাপ ওয়েস্ট ইন্ডিজে পুরোপুরি চলে যেতে পারত। আমেরিকান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা খুবই উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করছিল আইসিসির সঙ্গে। তারা হয়তো ভুলে গিয়েছিল বিশ্বকাপ আইসিসির টুর্নামেন্ট। শেষ পর্যন্ত সব মিটমাট হওয়ায় খেলা হচ্ছে।
আমেরিকাতে দক্ষিণ এশিয়ার অভিবাসী অনেক। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার লক্ষ লক্ষ লোক থাকে। সে কারণে নিউইয়র্ক, ডালাস ও ফ্লোরিডায় খেলা হচ্ছে। এই দেশগুলো থেকে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা লোকজন অনেক আগে থেকেই ক্রিকেট খেলে। লোকাল আমেরিকানদের মধ্যে ক্রিকেট জনপ্রিয় হতে সময় লাগবে। ওখানে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের মাধ্যমে হয়তো জনপ্রিয় হবে। বিশ্বকাপের বেশির ভাগ ম্যাচ হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। মূল ম্যাচগুলো ক্যারিবীয় ছয়টি দেশে হবে। উইন্ডিজ দ্বীপ দেশগুলোতে ক্রিকেট খুবই জনপ্রিয় খেলা। আশা করি, যৌথ আয়োজনে সফল একটি টি২০ বিশ্বকাপ দেখতে পাবে বিশ্ব।
এই বিশ্বকাপে ২০ দল খেলছে। প্রথমবারের মতো এত বেশিসংখ্যক দল নিয়ে হচ্ছে টি২০ বিশ্বকাপ। নতুন কেউ চমক দেখালে ভালো লাগবে। যদিও সেমিফাইনাল, ফাইনাল খেলবে প্রতিষ্ঠিতরাই। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত ও পাকিস্তান সেমিফাইনালে উন্নীত হতে পারে। শ্রীলঙ্কাকেও রেসে রাখতে হবে। বাংলাদেশ সেমিফাইনালে উন্নীত হওয়ার মতো দল না। তাই ফেইক স্বপ্ন না দেখানোই ভালো। বাংলাদেশ দ্বিতীয় রাউন্ডে উন্নীত হলেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দ পাব।