ঢাকা ০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানে ভোট জালিয়াতি অভিযোগ, তদন্ত চায় যুক্তরাষ্ট্র

ম্যাথিউ মিলার

পাকিস্তানে সদ্য সমাপ্ত সাধারণ নির্বাচন হয়েছে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। নির্বাচনে পিটিআই-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচনে কারচুপি ও ভোটের ফলাফল পরিবর্তন করে দেওয়ার অভিযোগ সামনে এনেছে। এমন অবস্থায় পাকিস্তানকে ভোট জালিয়াতির অভিযোগের তদন্ত করতে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি সামনের দিনগুলোতে দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর এই দেশটির পরিস্থিতির দিকেও নজর রাখার কথা জানিয়েছে দেশটি।

মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৮ ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের সময় অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগের স্বাধীন তদন্ত করার জন্য পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশে অত্যধিক বিলম্ব করা হয়েছে। যা নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই), জামায়াতে ইসলামী এবং জামিয়াত উলেমা-ই-ইসলাম (জেইউআই-এফ)-সহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল সদ্য সমাপ্ত এই নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ করেছে।

যদিও বিলম্বিত ফল প্রকাশের পর পিপিপি, পিএমএল-এন এবং এমকিউএম-পি-সহ অন্যান্য দল জোট সরকার গঠনের জন্য আলোচনা শুরু করেছে। কারণ গত সপ্তাহের এই নির্বাচনে কোনও দলই সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে সক্ষম হয়নি।

তবে ইমরান খানের পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সর্বাধিক আসন জিতেছে। আর এরপর রয়েছে নওয়াজের পিএমএল-এন এবং বিলাওয়ালের পিপিপি।

এমন অবস্থায় সোমবার দৈনিক প্রেস ব্রিফিংয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘এখন আমরা মনে করি, পাকিস্তানে আইনি ব্যবস্থা নিজেই কার্যকর হবে, এটাই হবে সঠিক প্রথম পদক্ষেপ এবং আমরা মনে করি, এই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’

মার্কিন আইন প্রণেতারা বাইডেন প্রশাসনকে কথিত নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগের স্বাধীন তদন্তের জন্য পাকিস্তানকে চাপ দেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানি না, স্বাধীন তদন্ত করার জন্য তারা কোন সংস্থার প্রস্তাব করছে।’

মিলার বলেন, ‘প্রয়োজনে অতিরিক্ত কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দেখতে পেলে আমরা খুশি হবো।’

পৃথক এক প্রশ্নে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের এই মুখপাত্র বলেন: ‘নির্বাচনে হস্তক্ষেপ এবং জালিয়াতির যেসব অভিযোগ আমরা উত্থাপিত হতে দেখেছি, তাতে পাকিস্তানের আইনি ব্যবস্থার অধীনে এগুলোর সম্পূর্ণরূপে তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা। এর পাশাপাশি আমরা সামনের দিনগুলোতেও এটি পর্যবেক্ষণ করা চালিয়ে যাব।’

নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগের সম্পূর্ণভাবে তদন্ত করার আহ্বান জানিয়ে মুখপাত্র মিলার বলেন, এটি স্পষ্টতই একটি প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন ছিল যেখানে জনগণ তাদের পছন্দ অনুযায়ী প্রার্থীকে বেছে নিতে সক্ষম হয়েছিল এবং ‘আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সম্মান করি এবং আমরা সরকার গঠনের পর তাদের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত’।

মুখপাত্র আরও বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে এবং ব্যক্তিগতভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং এই ব্যাপারে ইইউ, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। কিছু অনিয়ম আমরা নির্বাচনের এই প্রক্রিয়াটিতে দেখেছি। আমরা পাকিস্তান সরকারকে নির্বাচনের রায়কে সম্মান করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে জানিয়েছি।

রাজনৈতিক ও নির্বাচন-সম্পর্কিত সহিংসতা এবং ইন্টারনেট ও সেল ফোন পরিষেবার ওপর বিধিনিষেধের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের সময় আইনের শাসন, সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা, স্বাধীন গণমাধ্যম, সুশীল সমাজকে সম্মান করার বিষয়টি দেখতে চাই এবং আমরা এটিই বিশ্বাস করি।

জনপ্রিয় সংবাদ

পাকিস্তানে ভোট জালিয়াতি অভিযোগ, তদন্ত চায় যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় ০১:০২:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

পাকিস্তানে সদ্য সমাপ্ত সাধারণ নির্বাচন হয়েছে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। নির্বাচনে পিটিআই-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচনে কারচুপি ও ভোটের ফলাফল পরিবর্তন করে দেওয়ার অভিযোগ সামনে এনেছে। এমন অবস্থায় পাকিস্তানকে ভোট জালিয়াতির অভিযোগের তদন্ত করতে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি সামনের দিনগুলোতে দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর এই দেশটির পরিস্থিতির দিকেও নজর রাখার কথা জানিয়েছে দেশটি।

মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ৮ ফেব্রুয়ারির সাধারণ নির্বাচনের সময় অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগের স্বাধীন তদন্ত করার জন্য পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশে অত্যধিক বিলম্ব করা হয়েছে। যা নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই), জামায়াতে ইসলামী এবং জামিয়াত উলেমা-ই-ইসলাম (জেইউআই-এফ)-সহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল সদ্য সমাপ্ত এই নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ করেছে।

যদিও বিলম্বিত ফল প্রকাশের পর পিপিপি, পিএমএল-এন এবং এমকিউএম-পি-সহ অন্যান্য দল জোট সরকার গঠনের জন্য আলোচনা শুরু করেছে। কারণ গত সপ্তাহের এই নির্বাচনে কোনও দলই সাধারণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে সক্ষম হয়নি।

তবে ইমরান খানের পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সর্বাধিক আসন জিতেছে। আর এরপর রয়েছে নওয়াজের পিএমএল-এন এবং বিলাওয়ালের পিপিপি।

এমন অবস্থায় সোমবার দৈনিক প্রেস ব্রিফিংয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, ‘এখন আমরা মনে করি, পাকিস্তানে আইনি ব্যবস্থা নিজেই কার্যকর হবে, এটাই হবে সঠিক প্রথম পদক্ষেপ এবং আমরা মনে করি, এই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’

মার্কিন আইন প্রণেতারা বাইডেন প্রশাসনকে কথিত নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগের স্বাধীন তদন্তের জন্য পাকিস্তানকে চাপ দেওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘আমি জানি না, স্বাধীন তদন্ত করার জন্য তারা কোন সংস্থার প্রস্তাব করছে।’

মিলার বলেন, ‘প্রয়োজনে অতিরিক্ত কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দেখতে পেলে আমরা খুশি হবো।’

পৃথক এক প্রশ্নে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের এই মুখপাত্র বলেন: ‘নির্বাচনে হস্তক্ষেপ এবং জালিয়াতির যেসব অভিযোগ আমরা উত্থাপিত হতে দেখেছি, তাতে পাকিস্তানের আইনি ব্যবস্থার অধীনে এগুলোর সম্পূর্ণরূপে তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা। এর পাশাপাশি আমরা সামনের দিনগুলোতেও এটি পর্যবেক্ষণ করা চালিয়ে যাব।’

নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগের সম্পূর্ণভাবে তদন্ত করার আহ্বান জানিয়ে মুখপাত্র মিলার বলেন, এটি স্পষ্টতই একটি প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন ছিল যেখানে জনগণ তাদের পছন্দ অনুযায়ী প্রার্থীকে বেছে নিতে সক্ষম হয়েছিল এবং ‘আমরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সম্মান করি এবং আমরা সরকার গঠনের পর তাদের সাথে কাজ করতে প্রস্তুত’।

মুখপাত্র আরও বলেন, নির্বাচনের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে এবং ব্যক্তিগতভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং এই ব্যাপারে ইইউ, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশের পাশে দাঁড়িয়েছে। কিছু অনিয়ম আমরা নির্বাচনের এই প্রক্রিয়াটিতে দেখেছি। আমরা পাকিস্তান সরকারকে নির্বাচনের রায়কে সম্মান করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে জানিয়েছি।

রাজনৈতিক ও নির্বাচন-সম্পর্কিত সহিংসতা এবং ইন্টারনেট ও সেল ফোন পরিষেবার ওপর বিধিনিষেধের নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের সময় আইনের শাসন, সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা, স্বাধীন গণমাধ্যম, সুশীল সমাজকে সম্মান করার বিষয়টি দেখতে চাই এবং আমরা এটিই বিশ্বাস করি।