গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা, সদর উপজেলার মির্জাপুর, ভাওয়াল গড় ও পিরুজালী ইউনিয়ন এবং গাজীপুর সেনানিবাস এলাকা নিয়ে গঠিত গাজীপুর-৩ আসন। এ আসনে এ পর্যন্ত দুইবার জিতেছে বিএনপি। এবার তৃতীয়বারের মতো জিততে চায় তারা। তবে থেমে নেই জামায়াতে ইসলামীও। আসনটিতে জিতে অভিষেক করতে চায় দলটি।
এ আসনে মোট ভোটার পাঁচ লাখ ২৬ হাজার ৩০৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ দুই লাখ ৫৯ হাজার ৪০০ জন। নারী ভোটার দুই লাখ ৬৬ হাজার ৮৯৯ জন। আর তৃতীয় লিঙ্গের ছয়জন।
অতীতে নির্বাচিত যারা
সীমানা পরিবর্তনের আগে ১৯৮৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত গাজীপুর-৩ আসনে দুইবার করে জিতেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারি ও ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি থেকে নির্বাচিত হন একেএম ফজলুল হক মিলন। তবে আসন পরিবর্তনের পর ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত চারটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জিতেছে আওয়ামী লীগ। সবশেষ এমপি ছিলেন রুমানা আলী।
এবার বিএনপি থেকে এ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. এসএম রফিকুল ইসলাম বাচ্চুর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে প্রতিদিন এলাকায় সময় দিচ্ছেন তিনি। নিয়মিত যুক্ত হচ্ছেন দলীয় ও সামাজিক কর্মকাণ্ডে।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর আসনটিতে সাংগঠনিক কার্যক্রমে গতি বাড়িয়েছে জামায়াতে ইসলামী। প্রতিটি ইউনিটে দাঁড়িপাল্লার পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তবে মানবিক কর্মকাণ্ডে এগিয়ে রয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
তারা বলছেন, জনগণ পরিবর্তনের পক্ষে। জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীকে বেছে নেওয়ার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
ধানের শীষের প্রার্থী অধ্যাপক ডা. এস এম রফিকুল ইসলাম বাচ্চু জাগো নিউজকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক দলের কর্মী হিসেবে মানুষের জন্য কাজ করছি। এলাকাবাসীর সুখে-দুঃখে আছি। এলাকার জনগণকে কাছে থেকে সেবা করা এবং জনগণের থাকাই আমার অঙ্গীকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘দল আমার ওপর গুরুদায়িত্ব দিয়েছে। সব নেতাকর্মীকে নিয়ে কাজ করতে চাই। জনগণের ভোটে বিএনপিকে এ আসনটি উপহার দেবো।’
এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী জেলা আমির ড. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী এ দেশকে ঘুস-দুর্নীতিমুক্ত করবে। জনগণ পরিবর্তনের পক্ষে এবার রায় দেবেন বল আশা করছি। জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে ঘুস-অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নেই।’
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা আলমগীর হোসাইন বলেন, ‘জনগণ ইসলামের পক্ষে জেগে উঠেছে। আশা করি জনগণ আমাদের পক্ষে রায় দেবে।’
ভোটের অপেক্ষায় ভোটাররা
দীর্ঘদিন পর উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে মুখিয়ে আছেন ভোটাররা। অনেকে দেবেন জীবনের প্রথম ভোট। তবে জেনে-শুনে যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দেবেন বলছেন তারা।
শ্রীপুরের স্থানীয় ব্যবসায়ী সালেহ উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এলাকায় নির্বাচনের আবহ তৈরি হয়ে গেছে। মানুষ ভোট দেওয়ার অপেক্ষায় আছে। জনগণ যোগ্য প্রার্থীকেই ভোট দেবে।’
স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতি করেন মেহেদী হাসান। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘দেশে একটা পরিবর্তন এসেছে। জনগণও পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দেবে। আমরা সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে চাই।’
নতুন ভোটার কলেজছাত্র আল আমিন। তিনি বলেন, ‘জীবনে এবার প্রথম ভোট দেবো। এর আগে দেখেছি নির্বাচনের দিন মানুষ ভোট দিতে কেন্দ্রে যেতো না। অনেককে অভিযোগ করতে শুনেছি, একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দিয়েছে। এবার আমি আমার নিজের ভোট নিজে দিতে চাই।’
স্থানীয় বাসিন্দা পারভীন জাহান বলেন, ‘অনেক বছর ভোট দিতে পারিনি। এবার পরিবেশ ভালো থাকলে ভোট দেবো। তবে যোগ্য, এলাকায় গ্রহণযোগ্য এবং আমাদের পাশে থাকবেন এমন প্রার্থীকেই ভোট দেবো।’







