গভীর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ ক্যাম্পাসে অবস্থিত নবাব ফয়জুন্নেসা হলসংলগ্ন এরিয়া থেকে মাইনুর রেজা নামে এক বহিরাগত মাদকসেবীকে ইয়াবাসহ আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। আজ সোমবার (১০ নভেম্বর) প্রথম প্রহরে তথা রাত ১টার দিকে আটক করা হয় ওই ব্যক্তিকে।
জানা গেছে, আটক মাইনুর রেজা হাটহাজারী উপজেলার দক্ষিণ মেঘলের বাসিন্দা। তার কাছ থেকে দুই পিস ইয়াবা, ফয়েল পেপার, সিরিঞ্জসহ মাদক সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয় এবং তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তরে নিয়ে রাখা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান তাকে হাটহাজারী থানা হেফাজতে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. হোসেন শহিদ সোহরাওয়ার্দী বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হল টিম রাত্রিকালীন অভিযান চালানোর সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব ফয়জুন্নেসা হলের সামনে থেকে অভিযুক্তকে চার্জ করে, তার কথাবার্তায় অসংলগ্নতা পান এবং তাকে চেক করে তার কাছে থেকে ২ পিস ইয়াবা ও ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করে।
ফয়জুন্নেসা হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের সানজিদা ইয়াসমিন রুশমী বলেন, আমাদের হলের পেছনের দিকটায় প্রতিদিন অনেক রাত পর্যন্ত বহিরাগতরা ঘুরঘুর করে, বাইক নিয়ে ঢোকে আবার অনেকক্ষণ পর চলে যায়। আমার ধারণা মাদক নিতে আসে। তিনি আরো বলেন, আগে দেখতাম নিরাপত্তা দপ্তরের লোকজন রাতে লাইট আর হ্যান্ডমাইক নিয়ে এদের ধাওয়া দিত।
এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে আজ দুপুরে ফয়জুন্নেসা হলের সহসভাপতি (ভিপি) পারমিতা চাকমা বলেন, আমার হলের নারী শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আলাদা নজর দিতে হবে। আমাদের হল যেহেতু একটু দূরে এবং শেষ অংশে, তাই হতাশার মোড়ে নিরাপত্তাকর্মীসহ সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো জরুরি। রাতের বেলা হল সংলগ্ন এরিয়ায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে হবে, যেগুলো বিদ্যুৎ চলে গেলেও জ্বলবে। এছাড়াও অনেকে রাতের বেলায় বোটানিক্যাল গার্ডেনের দিকে যাওয়া আসা করে তাদের হয়ত অনেকে ভার্সিটির স্টুডেন্ট নয়, কেউ ভবঘুরে, কেউ নেশাখোর।
তিনি আরও বলেন, সেই সাথে বোটানিক্যাল গার্ডেনের সামনের পুকুর পাড়ে যে অনুষ্ঠানগুলো হয় সেখানে সাউন্ডের বিষয়ে যাতে লিখিত বিধিনিষেধ জারি করা হয়৷ অনুষ্ঠানে উচ্চমাত্রার সাউন্ডের কারণে অনেকের পরীক্ষা থাকা সত্ত্বেও রুমের দরজা জানালা বন্ধ করার পরেও সাউন্ড আসে। যে কারণে হলে অবস্থানরত ছাত্রীদের পড়াশোনায় বেশ অসুবিধা হয়।
তিনি আরো যোগ করেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং চাকসু প্রতিনিধিদের অনুরোধ করব— যাতে অতিদ্রুত নবাব ফয়জুন্নেছা হলের চারদিকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ৭ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদ এলাকা থেকে ইয়াবাসহ তিনজনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে দুইজন ছিল ক্যামপাসের জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন দোকানের কর্মচারী এবং আরেকজন ছিল স্থানীয় রাজমিস্ত্রি। সেসময় তারা নিজেদের স্থানীয় বলে দাবি করেন, এতে নিরাপত্তা কর্মীদের সন্দেহ হলে তল্লাশি চালানো হয়। দেহ তল্লাশিতে তাদের কাছ থেকে দুই পিস ইয়াবা, ফয়েল পেপার, সিরিঞ্জসহ মাদক সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।