আজকের প্রত্রিকা গুলোর প্রধান প্রধান খবর
কালবেলা:
এবাদুলের মিলিয়ন ডলারের কোম্পানি হংকং-দুবাইয়ে
বীকন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ এবাদুল করিম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। পতিত স্বৈরাচার সরকারের সাবেক এ সংসদ সদস্য হংকং ও দুবাইয়ে গড়ে তুলেছেন কোটি কোটি টাকার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। হংকংয়েই তার কোম্পানির আর্থিক মূল্য দেড় কোটি ইউএস ডলারের বেশি। ওই প্রতিষ্ঠানের হংকংয়ের এইচএসবিসি ব্যাংক হিসাবে লেনদেনও হয় ব্যাপক। কোম্পানি রয়েছে দুবাইয়েও। লেনদেন করেন দুবাইয়ের মাশরেক ব্যাংকে।
অনিয়মের এখানেই শেষ নয়। এবাদুল করিম শেয়ারহোল্ডারদের ফাঁকি দিয়ে বিদেশে পণ্য রপ্তানি করতে খুলেছেন আলাদা কোম্পানি। জড়িত হয়েছেন শেয়ারবাজার কারসাজিতেও। আত্মীয়স্বজন, কর্মচারীদের নামে বিও হিসাব খুলে তিনি বিপুল বিনিয়োগ করেছেন। এমনকি এবাদুলের পিয়নরাও কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন শেয়ারবাজারে।
কালবেলার হাতে আসা এবাদুল করিম ও বীকন গ্রুপের নথিপত্র পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ব্যবসার নামে বিভিন্ন খাতে শত শত কোটি টাকার অনিয়ম করেছেন এবাদুল করিম। বীকন গ্রুপের আড়ালে অর্থ পাচারের ঘটনাও ঘটেছে। তথ্য বলছে, হংকংয়ে ২০১৬ সালে বীকন এশিয়া প্যাসিফিক নামে একটি কোম্পানি খোলা হয়। এর ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে ফ্ল্যাট নম্বর-২০০৪, ২০/এফ, বেল হাউস, ব্লক-এ, ৫২৫-৫৪৩, নাথান রোড, ইয়াও মা তি, কাউলুন। কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নাম রয়েছে মোহাম্মদ এবাদুল করিমের।
প্রধম আলো:
কাঙ্ক্ষিত ফল আসেনি, হতাশা
বাকু জলবায়ু সম্মেলনের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ফাইন্যান্স কপ’ বা ‘জলবায়ুর আর্থিক সম্মেলন’। কিন্তু ২০০টি দেশের প্রতিনিধিরা দুই সপ্তাহ বৈঠক করেও কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারেননি। গত শুক্রবার থেকে টানা দুই দিনের রুদ্ধদ্বার বৈঠকেও আসেনি কাঙ্ক্ষিত ফল।
বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলো তাদের জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি পোষাতে বছরে ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন (১ লাখ ৩০ হাজার কোটি) ডলার চেয়েছে। আর শিল্পোন্নত দেশগুলো বছরে সর্বোচ্চ ৩০০ বিলিয়ন (৩০ হাজার কোটি) ডলার দিতে রাজি হয়েছে। তা-ও ওই অর্থ শুধু তারা একলা দেবে না; চীন, ভারত ও ব্রাজিলের মতো দ্রুত উন্নয়নশীল দেশগুলোকেও তহবিলে অর্থ জমা দিতে হবে।
এ পরিস্থিতিতে আজ রোববার বাংলাদেশ সময় সকালের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে বাকু ঘোষণা আসতে পারে। ওই ঘোষণায় বিশ্বের সব দেশের সম্মতির ভিত্তিতে হবে, নাকি নোট আকারে থাকবে, তা নিয়েও সংশয় রয়ে গেছে। কপ সম্মেলন ১১ নভেম্বর শুরু হয়ে গতকাল শনিবার শেষ হয়েছে।
তবে ঘোষণা যা-ই আসুক, তাতে জলবায়ু–বিপন্ন বিশ্ববাসীর জন্য কোনো আশার বাণী থাকছে না বলে মনে করছেন জলবায়ু আন্দোলনের নেতারা। সুইডেনের আলোচিত জলবায়ু অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ এরই মধ্যে বাকু সম্মেলনের সম্ভাব্য ঘোষণাকে বিশ্বের জন্য ‘মৃত্যু পরোয়ানা’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
বাংলাদেশের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান কপ২৯–এর ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করতে স্বল্পোন্নত রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্সি কর্তৃক প্রকাশিত নতুন যৌথ পরিমাণগত লক্ষ্য (এনসিকিউজি) বিষয়ক সর্বশেষ খসড়া নিয়ে গভীর হতাশা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ প্রতিদিন:
রমজানে কঠিন সংকটের শঙ্কা
আসন্ন রমজানে দেশ কঠিন সংকটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শিল্পবাণিজ্যবিষয়ক বিশ্লেষকরা। তাঁদের মতে, রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ বিভিন্ন কারণে স্থানীয় শিল্পে স্থবিরতা, অন্যদিকে নানা জটিলতায় আমদানি কমে যাওয়ায় বাড়তি চাহিদার বিপরীতে পণ্য সরবরাহে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় ব্যবসাবাণিজ্যে গতি ফেরাতে সবরকম ভীতি কাটিয়ে উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম খান বলেন, ‘দেশের সব রকম ব্যবসাবাণিজ্যে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে অস্বস্তি বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারকে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। ঘন ঘন আলোচনার সুযোগ তৈরি করতে হবে।’
বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরেই দেশের ব্যবসাবাণিজ্যে শ্লথগতি বিরাজ করছে। করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতিতে নেমে আসা মন্দা বাংলাদেশকেও প্রভাবিত করে। জ্বালানি, খাদ্যপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল, যন্ত্রপাতিসহ সব ধরনের পণ্যের আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি, ডলারের বিপরীতে টাকার দ্রুত অবমূল্যায়ন, ডলারের অভাবে অনেক ব্যাংক ঋণপত্র (এলসি) খুলতে না পারাসহ বিভিন্ন কারণে ব্যবসাবাণিজ্য চরমভাবে ব্যাহত হয়। পাশাপাশি সরকারের ঋণ বৃদ্ধি ও ব্যাংক খাতে নজিরবিহীন লুটপাটের কারণে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা চাহিদা অনুযায়ী ঋণ পাননি। আবার বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করে শিল্প স্থাপন করেও গ্যাস সংযোগ না পাওয়া এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহে অনিশ্চয়তার কারণে উৎপাদন শুরু করা যায়নি। এ কারণে বর্ধিত চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশে খাদ্য ও অন্যান্য পণ্যের উৎপাদন বাড়েনি।
কালের কন্ঠ:
পাচারে ফোকলা দেশের অর্থনীতি। প্রবাসীরা ঘামঝরা কষ্টের আয় দেশে পাঠান ঠিকই, কিন্তু সব সুযোগ-সুবিধা নিয়ে চুরি ও লুটপাট করে দেশের টাকায় বিদেশে বিলাসী জীবন যাপন করেন ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ লুটেরারা। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার বদলে এই পাচারকারীচক্র দেশ থেকে অন্তত ১৭ লাখ কোটি টাকা বিদেশে নিয়ে গেছে। রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় ওই টাকায় দুবাই, কানাডা, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরে তারা বউ-বাচ্চা নিয়ে বিলাসবহুল ভিলাবাড়ি, ফ্ল্যাট কিনে আয়েশে দিন কাটাচ্ছেন, অথচ তাদের লুটের শিকার অনেক ব্যাংক এখন দেউলিয়ার পথে।
ক্ষমতার পালাবদলে নতুন সরকার এলেও এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে পাচারকারী রুই-কাতলরা। বিপুল অঙ্কের টাকা পাচার করে সামিটের মতো গ্রুপ সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে সাম্রাজ্য গড়ে তুললেও ওই টাকা ফিরিয়ে আনার অগ্রগতি এখনো চিঠি চালাচালিতেই সীমাবদ্ধ।
টাকা পাচারের ইস্যু যখন সরকারের অগ্রাধিকারে, তখনই নতুন করে দুবাইয়ে ৮৪৭টি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, ভিলাবাড়িসহ বিভিন্ন প্রপার্টি কেনার তথ্য জানা গেছে। এর মধ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী একাই কিনেছেন ১৩৭টি ফ্ল্যাট।
ফরেন রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টমেন্ট তথ্যভাণ্ডার থেকে তৈরি একটি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য জানা যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংক, দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমের তথ্য-উপাত্ত ঘেঁটে জানা যায়, অর্থনৈতিকভাবে দেশ এখন ক্রান্তিকাল পার করছে। ঋণখেলাপি আর আর্থিক কেলেঙ্কারির মধ্যে ডলার সংকট থেকে তৈরি অর্থনৈতিক অস্থিরতার রেশ কাটছে না কোনোভাবেই। তবে নামে-বেনামে ব্যাংকের টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করার ঘটনা এখন টক অব দ্য কান্ট্রি।
দেশের সাবেক মন্ত্রী, এমপি, আমলা, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের কানাডা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার পাশাপাশি দুবাইও এখন বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচারের ‘হাব’ হয়ে উঠছে। বিশ্বের অন্যতম বিলাসবহুল এই শহরে টাকা পাচার করে প্রপার্টি কেনার একের পর এক তথ্য ফাঁস হচ্ছে।
পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হওয়ার পর পাচারের টাকা ফেরানোর দাবি জোরালো হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিশ্বব্যাপী তার যে যোগাযোগ, সেটি কাজে লাগিয়ে তিনি চাইলে বিপুল অঙ্কের ওই পাচারের টাকা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবেন। অর্থনৈতিক সংকটের সময়ে দেশ পুনর্গঠনের জন্য এই টাকা বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
পাচারের টাকা ফেরানো সময়সাপেক্ষ হলেও তা সম্ভব বলে অর্থনীতিবিদ-ব্যাংকাররা আশা প্রকাশ করেন।
তাদের ধারণা, আগের সরকারের রাজনৈতিক প্রভাবে থাকা ব্যাংকগুলোর মদদেই মূলত টাকা পাচার হয়েছে। এ ছাড়া অনেক ব্যাংকের নজরদারির ঘাটতিও এ ক্ষেত্রে অনেকাংশে দায়ী। তবে টাকা ফেরানো সময়সাপেক্ষ হলেও সরকার তা ফেরাতে ঠিক পথেই আছে। কোনো কোনো অর্থনীতি বিশ্লেষক মনে করেন, টাকা ফেরানো প্রায় অসম্ভব। যদি দ্বিপক্ষীয় উপায়ে সরকার টু সরকার চেষ্টা করে সফল হয়, তখন হয়তো কিছু টাকা ফেরত আসতে পারে।
তথ্য পর্যালোচনা করে জানা যায়, এরই মধ্যে ‘দুবাই আনলকড’ নামের অর্গানাইজড ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রজেক্ট (ওসিসিআরপি) এবং নরওয়ের সংবাদমাধ্যম ই-টোয়েন্টিফোর পাচারের টাকায় প্রপার্টি কেনার তথ্য ফাঁস করেছে। ২০২০ থেকে ২০২২ সালের তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশ করা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে পাচার করা টাকায় আরব আমিরাতের দুবাই, আবুধাবিসহ বিভিন্ন শহরে বাংলাদেশিরা অন্তত এক লাখ প্রতিষ্ঠানের মালিক হয়েছেন। ইইউ ট্যাক্স অবজার্ভেটরির প্রকাশিত ‘অ্যাটলাস অব অফশোর ওয়ার্ল্ড’ আরেক প্রতিবেদনেও বিশ্বের ‘ট্যাক্স হেভেন’ দেশগুলোতে বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকার অফশোর সম্পদ রয়েছে বলে জানিয়েছে, যা বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১.৩ শতাংশ। এর মধ্যে অন্তত ৬০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে এশিয়ার ট্যাক্স হেভেনে আর বাকিটা ইউরোপ-আমেরিকায়। এর আগে আইসিআইজে প্রকাশিত প্যান্ডোরা পেপার্সেও টাকা পাচারকারীদের তালিকায় অনেক বাংলাদেশির নাম এসেছিল। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দেশ থেকে পাচারের টাকার পরিমাণ অন্তত ১৭ লাখ কোটি টাকা। টাকা পাচার নিয়ে অনেক আলোচনা, সরকারের অনেক উদ্যোগ ও তৎপরতার কথা জানা গেলেও এখনো তা চিঠি চালাচালির মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এখনো পাচারকারীচক্র এবং তাদের হোতাদের চিহ্নিত করা যায়নি। সরকারের বিভিন্ন সূত্র বলছে, টাকা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হলেও এখনো সাফল্য অধরাই রয়েছে।
নয়াদিগন্ত:
চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল অপারেটর নিয়োগ
প্রশ্নের মুখে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর চ্যানেলকে ঘিরে গড়ে উঠেছে দেশের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত সব স্থাপনা। কিন্তু বন্দরের টার্মিনালগুলো বিদেশীদের হাতে তুলে দেয়ার ক্ষেত্রে সেটা বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে কি না সে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বন্দর ব্যবহারকারী একাধিক সূত্র দাবি করেছে, এক দিকে পিসিটি (পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল) অন্য দিকে এনসিটি (নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল), আর এ দু’টির মধ্যে রয়েছে দেশের প্রধান প্রধান তেল স্থাপনা এবং নৌবাহিনীর ঘাঁটি। পিসিটি পতিত আওয়ামী সরকারের আমলে সৌদি অপারেটরের হাতে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। অপর দিকে এনসিটি পরিচালনায় বর্তমান সরকারও পতিত সরকারের পথেই হাঁটছে বলে মন্তব্য বন্দর সংশ্লিষ্টদের। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক টার্মিনাল অপারেটরগুলোর শীর্ষপদে আমাদের প্রতিবেশী একটি দেশের কর্মকর্তাদের প্রাধান্য। তাই এই দুই টার্মিনালের মাধ্যমে প্রকারান্তরে আমাদের কৌশলগত স্থাপনার ওপর প্রতিবেশী দেশটির নজরদারির সুযোগ অবারিত হচ্ছে কি না তা ভেবে দেখার দাবি রাখে। অর্থনেতিক লাভকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় কৌশলগত স্থাপনার নিরাপত্তাকে খাটো করে দেখা হচ্ছে কি না এমন প্রশ্নও উঠছে। একই সাথে দেশীয় অপারেটর নিয়োগ করার ক্ষেত্রেও একচেটিয়া প্রভাব বন্ধে গুরুত্বারোপ করেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
বন্দর সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সরকার পিপিপির (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) আওতায় চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) সৌদি আরবভিত্তিক রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনালকে (আরএসজিটিআই) একটি কনসেশন চুক্তির আওতায় পরিচালনার দায়িত্ব দেয়। গত বছরের ৬ ডিসেম্বর ইকুইপ-অপারেট অ্যান্ড ট্রান্সফার ভিত্তিতে ২২ বছরের একটি কনসেশন চুক্তির ভিত্তিেিত পিসিটি পরিচালনা করছে আরএসজিটি বাংলাদেশ। চুক্তির পর চলতি বছরের ১০ জুন টার্মিনালটির অপারেশন কার্যক্রম শুরু করে আরএসজিটি বাংলাদেশ। প্রতিষ্ঠানটি সৌদি আরবভিত্তিক হলেও চট্টগ্রাম বন্দরে এই প্রতিষ্ঠান নিয়োজিত হয় অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে।
বন্দর সূত্র জানিয়েছে, পিসিটির টার্মিনাল অপারেটর নিয়োগে প্রতিবেশী বৃহৎ রাষ্ট্রটির সরাসরি হস্তক্ষেপ ছিল। সূত্র মতে, সৌদি সরকারের মিনিস্ট্রি অব ইনভেস্টমেন্টের সাথে বাংলাদেশ সরকারের জি টু জি চুক্তির ভিত্তিতে পিপিপির আওতায় প্রাইভেট কোম্পানি রেড সি গেটওয়ে টার্মিনালকে (আরএসজিটি) মনোনীত করা হয়। ২০১৯ সালের ৩১ জুলাই আরএসজিটির সাথে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই হয়।
জানা গেছে, আরএসজিটির মূল কোম্পানি হলো আরএসপিডি (রেড সি পোর্টস ডেভেলপমেন্ট) কোম্পানি। তাদের ইনভেস্টমেন্ট উইং হলো আরএসজিটি যার ৮০% শেয়ার সৌদি কোম্পানি জেনেল ইন্ডাস্ট্রিজ এবং সৌদি ইন্ডাাস্ট্রিয়াল সার্ভিস কোম্পানীর স্টক লিস্টেড। ২০% শেয়ার মালয়েশিয়ান মাইনিং কোম্পানির (এমএমসি)। এমএমসির ওই শেয়ার চায়নার কোম্পানি কসকোর ছিল বলে জানিয়ে সূত্র দাবি করেছে এতে আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রটির পক্ষ হতে আরএসজিটিকে কাজ দিতে মানা করা হয়।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আরএসজিটি নতুন করে লন্ডনভিত্তিক নতুন একটি কোম্পানি গঠন করে যার নাম দেয় আরএসজিটিআই (রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনাল)।
যুগান্তর:
চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলনে তারেক রহমান
নির্বাচন যত দেরিতে হবে ততই ষড়যন্ত্র বাড়বে
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের নির্বাচন যত দেরি হবে, ততই ষড়যন্ত্র বৃদ্ধি পাবে। জনগণের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারকে হটিয়ে দেওয়া হয়েছে। যার বিরুদ্ধে দেশের লক্ষ-কোটি মানুষ এক যুগের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করেছেন, সেই স্বৈরাচার কিন্তু বসে নেই। সেই স্বৈরাচার তাদের দেশি-বিদেশি প্রভুদের সঙ্গে মিলে ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে। তাই দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। সংস্কারের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য আমরা ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি। শুধু আমরাই নই, বিভিন্ন দল দিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা থেকে শুরু করে উপদেষ্টারা যেসব সংস্কারের কথা বলছেন, এগুলো সত্যিকার অর্থেই বাস্তবায়ন সম্ভব যদি প্রকৃত জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হন। এর বাইরে সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। সেজন্য জনপ্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন প্রয়োজন। শনিবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে আয়োজিত জেলা বিএনপির সম্মেলনে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কেন নির্বাচন চাইছেন তারও ব্যাখ্যা দেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, নির্বাচন যত দেরিতে হবে, এই দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুবিধা, ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাব্যবস্থা, কৃষকদের সমস্যা, ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সমস্যা, বিচার ব্যবস্থার সমস্যা, প্রশাসনের সমস্যা, যতগুলো সমস্যা স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ করে গিয়েছে, তা আরও বৃদ্ধি যাবে। একমাত্র একটি নির্বাচনের মাধ্যমেই সম্ভব ধীরে ধীরে দেশের সমস্যাগুলোর সমাধান করা।
দৈনিক সংগ্রাম:
ভারতকে খুশি ও লুটপাট করতে আদানির সাথে অসম চুক্তি করেছিল হাসিনা সরকার
–
শুধু ভারতেই নয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে ব্যাপকভাবে সমালোচিত ভারতীয় কোম্পানী আদানির সাথে অসম চুক্তি করেছিল আওয়ামী লীগ। মূলত সে সময় ভারতকে খুশি রাখা এবং লুটপাটের জন্য আদানির সাথে চুক্তি করে হাসিনা। গেলো ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের বৈতরনী পার হওয়ার জন্য এমন চুক্তি করে হাসিনা। আদানির সাথে চুক্তি করলে নরেন্দ্র মোদি খুশি হবে সেজনই এমন পথে পা বাড়ায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলমান সময়ে আদানির সাথে অসম চুক্তির খেসারত দিতে হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে। বিদ্যুতের বকেয়ার বোঝা টানতে হচ্ছে।
জানা গেছে, গেলো ৭ জানুয়ারি অবাধ ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচনের করার জন্য হাসিনা সরকারের উপর পশ্চিমা দেশগুলোর ব্যাপক চাপ ছিল। ভারত যেকোনো মূল্যে শেখ হাসিনাকে সমর্থন দিয়ে যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তার পেছনে ছিল শিল্পগ্রুপ আদানির সাথে একটি ‘বিতর্কিত ব্যবসায়িক চুক্তি’। বাংলাদেশে ব্যাপক সমালোচনা সত্ত্বেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির খুব ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আদানি ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সাথে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিটি সম্পন্ন করতে পিছপা হননি শেখ হাসিনা। তবে শেখ হাসিনাকে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে সতর্ক করেছিলেন ভারতীয় কর্মকর্তারা। কিন্তু অনেকেই মনে করেন যে, ওই চুক্তির কারণে সেই সতর্কতা কানে তোলেননি মোদি।
জানা গেছে, গৌতম আদানির প্রতিষ্ঠিত ‘আদানি পাওয়ার লিমিটেড’ ভারতের বৃহত্তম বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানি। দেশটির ঝাড়খন্ড রাজ্যে ১.৭ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত গোড্ডা প্ল্যান্ট নিয়ে বাংলাদেশে সমালোচনা হয়েছে। কারণ এই বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি (পিপিএ) থেকে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন ভারতীয় এই মাল্টিবিলিয়নিয়ার। ভারতীয় সীমান্ত পর্যন্ত প্রায় ১০৬ কিলোমিটার ডেডিকেটেড ট্রান্সমিশন লাইনের মাধ্যমে গোড্ডা থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আসছে।
জানা গেছে, দেশে গড়ে ১৩ হাজারের বেশি বিদ্যুতের চাহিদা নেই। কিন্তু উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে ২৭ হাজার মেগাওয়াট। এর পরেও ভারতের আদানি গ্রুপের সাথে দেশের স্বার্থবিরোধী অসম চুক্তি করে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার। আর এ চুক্তির বিরুদ্ধে কেউ যেন আদালতে যেতে না পারে সেজন্য দায়মুক্তি আইনের মাধ্যমে এ চুক্তি করা হয়। দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে ২৫ বছরের এ চুক্তির মাধ্যমে আদানিকে বাংলাদেশ থেকে বাড়তি পৌনে চার লাখ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়। আর বিদ্যুৎ না নিয়েই ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ দেশকে ২৫ বছরে আড়াই লাখ কোটি টাকার ওপরে পরিশোধ করতে হবে।
দেশরুপান্তর:
বিলিয়নের-প্রস্তাবে-সমর্থন-চায়-বাংলাদেশ
জলবায়ু অর্থায়নে সুবিচার দাবি করেছে স্বল্পোন্নত দেশগুলো। আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে জাতিসংঘ জলবায়ু সম্মেলন (কপ২৯) শেষের দিকে এসে ঠেকলেও, অর্থায়নের বিষয়টি এখনো সুরাহা হয়নি। সম্মেলনের মূল আলোচ্য বিষয় জলবায়ু অর্থায়ন নিয়ে গভীর বিভক্তি ও মতবিরোধ তৈরি হয়েছে।
এ অবস্থায় জলবায়ু সংকটের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এলডিসি ও সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দের প্রস্তাবে সমর্থন জানাতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
ঢাকায় পাওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার সম্মেলনের চূড়ান্ত ফলাফলের বিষয়ে এলডিসি মন্ত্রী এবং ইইউ মন্ত্রীদের মধ্যে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক (বায়ুমান ব্যবস্থাপনা) ও বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সদস্য মো. জিয়াউল হক।