ঢাকা ০৮:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পেঁয়াজ চুরির ভয়ে ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন মানিকগঞ্জের কৃষকরা

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ চুরির আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে কৃষকদের। চুরির ভয়ে প্রতিরাতে পেঁয়াজ ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাল্লা, চালা, গালা, গোপীনাথপুর এবং রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজের ভালো চাষ হয়ে থাকে। আর মাত্র ১৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে ক্ষেত থেকে এসব পেঁয়াজ তোলার উপযোগী হয়ে উঠবে। বর্তমানে পেঁয়াজের দাম ভালো হওয়ায় উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে ক্ষেত থেকে চুরি হয়েছে পেঁয়াজ। তাই চুরি ঠেকাতে রাত জেগে পেঁয়াজ ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন কৃষকরা। ক্ষেতের পাশে ছোট ছোট অস্থায়ী টং ঘর (ঝুপড়ি) তুলে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত পেঁয়াজ ক্ষেতেই রাত কাটাচ্ছেন তারা। চুরির ভয় অনেক কৃষকই ক্ষেত থেকে অপরিপক্ক পেঁয়াজ তুলে বিক্রি করে দিচ্ছেন।

উপজেলার বাহিরচর গ্রামের কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছি। এতে এক লাখ ১৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। বর্তমানে পেঁয়াজের বাজারদর ভালো আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হবে। এবার পেঁয়াজ চাষে লাভবান হওয়ার সম্ভবনা ছিল। তবে আমার পাঁচ বিঘা জমির মধ্য তিন শতাংশ জমির পেঁয়াজ ইতোমধ্যে চুরি হয়ে গেছে। তোলার উপযোগী না হলেও চুরির ভয়ে অপরিপক্ক অবস্থায় ক্ষেত থেকে তুলে পেঁয়াজ বিক্রি করছি।

একই এলাকার কৃষক মঙ্গল দা জানান, কয়েকদিন আগে তার ক্ষেতের পাশের জমি থেকে এক কৃষকের অনেক পেঁয়াজ চুরি হয়েছে । এরপর থেকেই তিনি রাত জেগে ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন। এখন পেঁয়াজের আকার বড় হলেও তোলার উপযোগী হয়নি। চোরের ভয়ে এখনই পেঁয়াজ তোলা হচ্ছে। সঠিক সময়ে তুলতে পারলে ৪২ শতাংশ জমিতে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ মণ পেঁয়াজ হতো কিন্তু চুরির ভয়ে আগে উঠানোর কারণে ৩৫ থেকে ৪০ মণ পেঁয়াজ হবে।

কৃষক মো. হারুনুর রশিদ জানান, কয়েকটি ক্ষেত মিলিয়ে ৪০ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তবে ৪ শতাংশ একটি জমির ১ শতাংশ পেঁয়াজ চুরি হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, এ অঞ্চলের জমি পেঁয়াজ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। উপজেলায় বাল্লা ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। এ বছর উপজেলায় ৮৫০ হেক্টর জমিতে কন্দ পেঁয়াজ চাষ হয়েছে।

হরিরামপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ নুর এ আলম জানান, এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

পেঁয়াজ চুরির ভয়ে ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন মানিকগঞ্জের কৃষকরা

আপডেট সময় ০৫:৩৪:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় ক্ষেত থেকে পেঁয়াজ চুরির আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে কৃষকদের। চুরির ভয়ে প্রতিরাতে পেঁয়াজ ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাল্লা, চালা, গালা, গোপীনাথপুর এবং রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে আগাম জাতের মুড়িকাটা পেঁয়াজের ভালো চাষ হয়ে থাকে। আর মাত্র ১৫ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে ক্ষেত থেকে এসব পেঁয়াজ তোলার উপযোগী হয়ে উঠবে। বর্তমানে পেঁয়াজের দাম ভালো হওয়ায় উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নে ক্ষেত থেকে চুরি হয়েছে পেঁয়াজ। তাই চুরি ঠেকাতে রাত জেগে পেঁয়াজ ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন কৃষকরা। ক্ষেতের পাশে ছোট ছোট অস্থায়ী টং ঘর (ঝুপড়ি) তুলে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত পেঁয়াজ ক্ষেতেই রাত কাটাচ্ছেন তারা। চুরির ভয় অনেক কৃষকই ক্ষেত থেকে অপরিপক্ক পেঁয়াজ তুলে বিক্রি করে দিচ্ছেন।

উপজেলার বাহিরচর গ্রামের কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছি। এতে এক লাখ ১৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। বর্তমানে পেঁয়াজের বাজারদর ভালো আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হবে। এবার পেঁয়াজ চাষে লাভবান হওয়ার সম্ভবনা ছিল। তবে আমার পাঁচ বিঘা জমির মধ্য তিন শতাংশ জমির পেঁয়াজ ইতোমধ্যে চুরি হয়ে গেছে। তোলার উপযোগী না হলেও চুরির ভয়ে অপরিপক্ক অবস্থায় ক্ষেত থেকে তুলে পেঁয়াজ বিক্রি করছি।

একই এলাকার কৃষক মঙ্গল দা জানান, কয়েকদিন আগে তার ক্ষেতের পাশের জমি থেকে এক কৃষকের অনেক পেঁয়াজ চুরি হয়েছে । এরপর থেকেই তিনি রাত জেগে ক্ষেত পাহারা দিচ্ছেন। এখন পেঁয়াজের আকার বড় হলেও তোলার উপযোগী হয়নি। চোরের ভয়ে এখনই পেঁয়াজ তোলা হচ্ছে। সঠিক সময়ে তুলতে পারলে ৪২ শতাংশ জমিতে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ মণ পেঁয়াজ হতো কিন্তু চুরির ভয়ে আগে উঠানোর কারণে ৩৫ থেকে ৪০ মণ পেঁয়াজ হবে।

কৃষক মো. হারুনুর রশিদ জানান, কয়েকটি ক্ষেত মিলিয়ে ৪০ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তবে ৪ শতাংশ একটি জমির ১ শতাংশ পেঁয়াজ চুরি হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. তৌহিদুজ্জামান খান বলেন, এ অঞ্চলের জমি পেঁয়াজ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। উপজেলায় বাল্লা ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। এ বছর উপজেলায় ৮৫০ হেক্টর জমিতে কন্দ পেঁয়াজ চাষ হয়েছে।

হরিরামপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ নুর এ আলম জানান, এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।