ঢাকা ০৭:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo রাষ্ট্র পরিগঠন করলেই আলিফের শাহাদাত অর্থবহ হবে: মাহফুজ আলম Logo প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপির বৈঠক Logo ইসকন ইস্যুতে পুলিশের ‘ভুয়া বক্তব্য’ প্রকাশ করেছে রয়টার্স : সিএমপি Logo ছাত্র-জনতার বিপ্লবকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে : জাহিদুল ইসলাম Logo ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে হাসনাত-সারজিসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ Logo ৯ দফা দাবিতে সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিক্ষোভ Logo স্ত্রী হত্যা মামলায় এসপি বাবুল আক্তারের জামিন Logo অনাগত সন্তানের মুখ দেখে যেতে পারলেন না শহীদ আলিফ Logo জরুরি অবস্থা জারি ও ইসকন নিষিদ্ধ চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন Logo সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবেন বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে হাসনাত-সারজিসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ

ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) নিষিদ্ধের দাবিতে চট্টগ্রামে ব্যাপক বিক্ষোভ হচ্ছে। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে নগরের টাইগার পাস মোড়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের জানাজা শেষে শোক এবং সম্প্রীতি সমাবেশ হয়। সবশেষ বিকেল ৩টার দিকে টাইগারপাস এলাকা ছাত্র-জনতার স্লোগানে উত্তাল রয়েছে। সেখানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তারা মিছিল নিয়ে বহদ্দারহাট এলাকায় যাবেন।

এর আগে সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগের সহায়তায় ইসকন গত ১৬ বছর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বেড়ে উঠেছে। এখন জঙ্গি সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে। আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই ভারতের বুবু, ভারতের হাসিনা এই বাংলাদেশে তোমার আর ঠাঁই হবে না। ভারতে বসে যতই ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করা হয় আমরা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ সেই ষড়যন্ত্র রুখে দেব। আমাদের দেশে সব ধর্মের সহাবস্থান থাকবে। কিন্তু ধর্মের দোহাই দিয়ে উগ্রবাদী সংগঠন পরিচালনা করবে, সেসব উগ্রবাদী সংগঠনকে বাংলাদেশে কোনো জায়গা দেওয়া হবে না।

সারজিস আলম বলেন, যে রক্তের বন্যা বসিয়ে শেখ হাসিনা এই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, যে রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে নতুন বাংলাদেশ এসেছে, সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে এই চিন্ময়রা উসকানি দেয়। সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে খুনি হাসিনারা উসকানি দেয়। সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে জঙ্গি ইসকনরা উসকানি দেয়। সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ভারতের কিছু প্রেত্মারা উসকানি দেয়। আমরা স্পষ্ট করে সব প্রেত্মাদের বলে দিতে চাই, আমরা ১৬ বছরের স্বৈরাচার খুনি হাসিনাকে দেশ ছাড়া করেছি এবং ছোটোখাটো কিছু জঙ্গি ইসকনকে দেশছাড়া করা তো আমাদের জন্য হাতের ময়লা।

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই প্রশাসনের যেসব জায়গায় স্বৈরাচারের দোসরেরা বিরাজমান তাদের সমূলে নির্মূল করতে হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ভারতীয় প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশ চলবে না। ভারতীয় কোনো আগ্রাসন বাংলাদেশে চলবে না। ভারতীয় কোনো দাদাগিরি বাংলাদেশে চলবে না। আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে এক-ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু যদি কেউ ধর্মের দোহাই দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে, তাহলে আমরা বাংলাদেশের ছাত্রজনতা তাদের প্রতিহত করতে একবারও ভাববো না।

এর আগে, মঙ্গলবার বিকেলে একদল ইসকন অনুসারীর হাতে নির্মমভাবে খুন হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার প্রথম জানাজা চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দ্বিতীয় জানাজা বেলা ১২টার দিকে নগরের জমিয়তুল ফালাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সর্বস্তরের জনসাধারণের ঢল নামে।

২৫ নভেম্বর বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন (মঙ্গলবার) কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদোহ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মহানগর ষষ্ঠ কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণকে। আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এটি নিয়ে বিক্ষোভ করেন ইসকন অনুসারীরা। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিক্ষোভকারীরা। দুপুর পর বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে আদালত এলাকায় মসজিদ-দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। এসময় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

রাষ্ট্র পরিগঠন করলেই আলিফের শাহাদাত অর্থবহ হবে: মাহফুজ আলম

ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে হাসনাত-সারজিসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ

আপডেট সময় ০৪:০৫:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪

ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস (ইসকন) নিষিদ্ধের দাবিতে চট্টগ্রামে ব্যাপক বিক্ষোভ হচ্ছে। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এবং জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে নগরের টাইগার পাস মোড়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের জানাজা শেষে শোক এবং সম্প্রীতি সমাবেশ হয়। সবশেষ বিকেল ৩টার দিকে টাইগারপাস এলাকা ছাত্র-জনতার স্লোগানে উত্তাল রয়েছে। সেখানে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তারা মিছিল নিয়ে বহদ্দারহাট এলাকায় যাবেন।

এর আগে সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আওয়ামী লীগের সহায়তায় ইসকন গত ১৬ বছর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বেড়ে উঠেছে। এখন জঙ্গি সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে। আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই ভারতের বুবু, ভারতের হাসিনা এই বাংলাদেশে তোমার আর ঠাঁই হবে না। ভারতে বসে যতই ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করা হয় আমরা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষ সেই ষড়যন্ত্র রুখে দেব। আমাদের দেশে সব ধর্মের সহাবস্থান থাকবে। কিন্তু ধর্মের দোহাই দিয়ে উগ্রবাদী সংগঠন পরিচালনা করবে, সেসব উগ্রবাদী সংগঠনকে বাংলাদেশে কোনো জায়গা দেওয়া হবে না।

সারজিস আলম বলেন, যে রক্তের বন্যা বসিয়ে শেখ হাসিনা এই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে, যে রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে নতুন বাংলাদেশ এসেছে, সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে এই চিন্ময়রা উসকানি দেয়। সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে খুনি হাসিনারা উসকানি দেয়। সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে জঙ্গি ইসকনরা উসকানি দেয়। সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে ভারতের কিছু প্রেত্মারা উসকানি দেয়। আমরা স্পষ্ট করে সব প্রেত্মাদের বলে দিতে চাই, আমরা ১৬ বছরের স্বৈরাচার খুনি হাসিনাকে দেশ ছাড়া করেছি এবং ছোটোখাটো কিছু জঙ্গি ইসকনকে দেশছাড়া করা তো আমাদের জন্য হাতের ময়লা।

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই প্রশাসনের যেসব জায়গায় স্বৈরাচারের দোসরেরা বিরাজমান তাদের সমূলে নির্মূল করতে হবে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, ভারতীয় প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশ চলবে না। ভারতীয় কোনো আগ্রাসন বাংলাদেশে চলবে না। ভারতীয় কোনো দাদাগিরি বাংলাদেশে চলবে না। আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে এক-ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু যদি কেউ ধর্মের দোহাই দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে, তাহলে আমরা বাংলাদেশের ছাত্রজনতা তাদের প্রতিহত করতে একবারও ভাববো না।

এর আগে, মঙ্গলবার বিকেলে একদল ইসকন অনুসারীর হাতে নির্মমভাবে খুন হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তার প্রথম জানাজা চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়। এরপর দ্বিতীয় জানাজা বেলা ১২টার দিকে নগরের জমিয়তুল ফালাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এতে সর্বস্তরের জনসাধারণের ঢল নামে।

২৫ নভেম্বর বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে পুলিশের বিশেষায়িত গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন (মঙ্গলবার) কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদোহ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মহানগর ষষ্ঠ কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণকে। আদালত জামিন না মঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এটি নিয়ে বিক্ষোভ করেন ইসকন অনুসারীরা। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিক্ষোভকারীরা। দুপুর পর বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে আদালত এলাকায় মসজিদ-দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। এসময় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়।