ঢাকা ০২:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে না জামায়াত

ভর্তুকির বিশেষ বন্ডে আগ্রহ দেখাচ্ছে না বিদেশী ব্যাংকগুলো

আজকের প্রত্রিকা গুলোর প্রধান প্রধান খবর:

বনিকবার্তা:

ভর্তুকির বিশেষ বন্ডে আগ্রহ দেখাচ্ছে না বিদেশী ব্যাংকগুলো
বিশেষ বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে সার ও বিদ্যুতে ভর্তুকি বাবদ বকেয়া পড়ে যাওয়া অর্থ পরিশোধের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। এরই মধ্যে বকেয়া ভর্তুকির বিপরীতে ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি বন্ড ইস্যু করা হয়েছে। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে আরো ৭ হাজার কোটি টাকার বন্ড। এখন পর্যন্ত এসব বন্ডের সাবস্ক্রিপশন করছে মূলত স্থানীয় ব্যাংকগুলোই। বিদ্যুৎ খাতে অর্থায়ন থাকলেও সরকারি ভর্তুকির এ বন্ডে কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছে না দেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী বিদেশী ব্যাংকগুলো। মূলত এসব বন্ডের সুদহার ও সুযোগ-সুবিধা আকর্ষণীয় না হওয়ার কারণে বিদেশী ব্যাংকগুলো আগ্রহী হচ্ছে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সামিট পাওয়ার স্থানীয় ব্যাংকের পাশাপাশি বিদেশী ব্যাংকগুলোর কাছ থেকেও ঋণ নিয়েছে। স্থানীয় ব্যাংকের কাছ থেকে নেয়া ঋণ বিশেষ বন্ডের মাধ্যমে সমন্বয় করছে প্রতিষ্ঠানটি। আর বিদেশী ব্যাংকগুলো বন্ড না নেয়ায় তাদের পাওনা পরিশোধ করা হচ্ছে সামিটের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আয় থেকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইপিপিএ) প্রেসিডেন্ট ও সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক মোহাম্মদ ফয়সাল করিম খান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘‌কোন ব্যাংক বন্ডে সাবস্ক্রিপশন করবে সেটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারণ করে থাকে। বিপিডিবির কাছে বকেয়া থাকা অর্থ পরিশোধের জন্য একটি সমাধান খুঁজে বের করায় আমরা স্থানীয় ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে কৃতজ্ঞ। সামিটের প্রকল্পের আয় থেকেই বিদেশী ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করা হচ্ছে।’

বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী বিদেশী ব্যাংকগুলো এখান থেকে প্রতি বছরই বড় অংকের মুনাফা করে। এর মধ্যে ট্রেজারি বিল-বন্ডের বিনিয়োগ থেকে ভালো মুনাফা আসে ব্যাংকগুলোর। গত বছর দেশের ব্যাংক খাতের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকার মুনাফা করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সুদ খাত ও সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ থেকে আসা আয়ের অবদানই ছিল সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও হংকং সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশনের (এইচএসবিসি) মতো বৃহৎ ব্যাংকগুলোর বড় বিনিয়োগ রয়েছে। ভর্তুকির বন্ডে সাবস্ক্রিপশনে অনাগ্রহের বিষয়ে দেশের কোনো বিদেশী ব্যাংকই আনুষ্ঠানিকভাবে বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।

চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি সারে ভর্তুকির বিপরীতে বিশেষ বন্ড ইস্যুর কার্যক্রম শুরু করে অর্থ মন্ত্রণালয়। পরে বিদ্যুতের বকেয়া ভর্তুকির বিপরীতে বন্ড ইস্যু করা হয়। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত এ দুই খাতে মোট ২০ হাজার ৩৫২ কোটি টাকার বিশেষ বন্ড ইস্যু করা হয়েছে। এর মধ্যে সারে ১৩ ব্যাংকের অনুকূলে ৯ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকার এবং বিদ্যুতে ২৮ ব্যাংকের অনুকূলে ১০ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকার বিশেষ ট্রেজারি বন্ড ইস্যু করা হয়েছে।

মানবজমিন:

উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে না জামায়াত
কেন্দ্রীয়ভাবে ঘোষণা ছিল না, এখনো নেই। তবে ‘জয়ের সম্ভাবনা’ আছে- এমন উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচ শতাধিক প্রার্থী চূড়ান্ত করেছিল জামায়াত। সংশ্লিষ্ট উপজেলা, জেলা কমিটি এবং আঞ্চলিক নেতাদের মধ্যকার সিরিজ আলোচনা এবং তাদের সুপারিশের প্রেক্ষিতে ওইসব প্রার্থী ঠিক হয়েছিল। উপজেলা পর্যায়ে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি তথা ‘আঞ্চলিক দায়িত্বশীল’রা সফর করে তৃণমূলের মতামত এবং রিপোর্ট নিয়েছিলেন। সেই রিপোর্ট ধরেই কোন প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা কতো ভাগ তা ঠিক হয়েছিল। সেখানে উপজেলাওয়ারী দলের সাংগঠনিক অবস্থা, সম্ভাব্য প্রার্থীর সামাজিক অবস্থান তথা ভাবমূর্তি, মানুষের মাঝে শাসক দলের নেতাদের (স্থানীয়) অবস্থান, ক্ষমতার বেনিফিশিয়ারিদের মধ্যকার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সংঘাতের জেরে বিরোধী মতের প্রার্থীর ‘জয়ের সম্ভাবনা’র বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছিল নিবন্ধন হারানো বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সেই অনুযায়ী মনোনীত প্রার্থীরা ইফতার মাহফিল, ঈদ পুনর্মিলনীসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে উঠান বৈঠক করে গত শুক্রবার পর্যন্ত (ঈদের পরদিন) ভোটারদের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। কিন্তু না, উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীর সর্বশেষ কেন্দ্রীয় পর্যালোচনা সভায় কোনো ফর্মেটেই দলীয় পদ-পদবি আছে এমন নেতাদের উপজেলা পরিষদে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সোমবার প্রথম ধাপের নির্বাচনে জামায়াতের কোন নেতা প্রার্থী হননি। পরবর্তীতে ভোট হবে এমন প্রার্থীদেরও আপাতত ভোট চাওয়া বন্ধ করে সংগঠনের রুটিন কার্যক্রমে মনোনিবেশ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।দলীয় নির্দেশনা পেয়ে ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন এমন অনেকের সঙ্গে কথা বলেছে মানবজমিন। তাছাড়া দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিমও কোনো ফর্মেটে উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি খোলাসা করে বলেন, আমরা এই নির্বাচনে যাচ্ছি না, এটাই আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। শুধু প্রথম ধাপ নয়, উপজেলা নির্বাচনে কোনো ধাপেই, কোনো ফর্মেটে আমাদের নেতা বা দায়িত্বশীল কেউ অংশগ্রহণ করবে না। এদিকে দলটির দায়িত্বশীল অন্য এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে মানবজমিনকে বলেন, গত ১৫ বছর ধরে শাসক দলের চরম রাজনৈতিক আক্রোশের শিকার বাংলাদেশ জায়ায়াতে ইসলামী। সেই আক্রোশ চরিতার্থ করতে দলটির শীর্ষ নেতৃত্বকে বিচারের নামে বছরের পর বছর কারাগারে দুনিয়া থেকে বিদায় করা হয়েছে। নতুন নেতৃত্বকেও নানাভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। টার্গেট একটাই রাজনৈতিকভাবে জামায়াতকে ধ্বংস করা। কিন্তু স্রষ্টার কৃপায় তারা তা করতে পারেনি। এখন নানাভাবে তারা জামায়াতকে ট্রাপে ফেলার চেষ্টা করছে। বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টির চেষ্টাও করেছে। কিন্তু তারা তাতেও সফল হয়নি। রাজনৈতিক কারণে জামায়াতের নিবন্ধন কেড়ে নেয়া হয়েছে। কেন্দ্র থেকে শুরু করে ওয়ার্ড-গ্রাম পর্যায়ে আমাদের নেতাদের হয়রানি করা হচ্ছে। এ অবস্থায় অর্ধেকের কম উপজেলায় প্রার্থী চিন্তা করেছিলাম। তাও দলীয়ভাবে নয়, স্থানীয়দের সুপারিশে। সেখানেও তারা ‘ষড়যন্ত্র’ শুরু করেছে। আমরা মনে করি রাজনৈতিকভাবে শাসক দল আমাদের প্রার্থীর সামনে টিকতে পারবে না। এমনকি বিএনপি’র কোনো প্রার্থীকে ভোটে হারানোর চ্যালেঞ্জ গ্রহণের সক্ষমতা তাদের নেই। কিন্তু সেটা তো তারা করতে দিবে না। এরইমধ্যে বিভিন্ন রিপোর্টে ‘এমপিতন্ত্র’ কায়েমের খবর এসেছে। সব মিলিয়ে আমাদের শীর্ষ নেতৃত্ব এই সরকার তথা নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের যৌথ প্রযোজনায় অনুষ্ঠেয় প্রহসনের ভোটাভুটিতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে জামায়াতের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আছে কিনা? জানতে চাইলে দলটির প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ মানবজমিনকে বলেন, উপজেলা নির্বাচনে প্রথম ধাপে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। এ নিয়ে আর কোনো বিভ্রান্তি নেই। এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় বলেই আমরা সিদ্ধান্তটি নিয়েছি। তিনি বলেন, কেবল জামায়াত নয়, দেশবাসী নিশ্চয়ই আসন্ন নির্বাচনটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে রাখবে। সবার এটাই চাওয়া স্থানীয় পর্যায়ের ভোটে শাসক দলের আচরণে কোনো পরিবর্তন আসে কিনা? দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কোনো নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা- এমন প্রশ্নে মিস্টার আকন্দ বলেন, জামায়াত একটি সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক দল। দল যে সিদ্ধান্ত নিবে নেতাকর্মীরা সেই অনুযায়ী কাজ করবেন। জামায়াতের নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরও অভিন্ন অভিমত ব্যক্ত করেন। মানবজমিনকে তিনি বলেন, উপজেলা প্রথম ধাপে আমাদের কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। আপাতত দলীয় সিদ্ধান্ত এটাই। ব্যক্তিগতভাবে কোনো নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তার বিরুদ্ধে দলীয় কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা? এমন প্রশ্নে ড. তাহের বলেন, জামায়াতে এই ট্র্যাডিশন নেই।


যুপান্তর

:প্রার্থী হচ্ছেন বিএনপি জামায়াত নেতারাও
প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় নির্বাচন * দুই চেয়ারম্যানসহ ১২ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পথে
প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলা নির্বাচনের বেশ কয়েকটিতে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি ও জামায়াত নেতা। তারা অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন বর্জন করে আসছে বিএনপি ও জামায়াত। কিন্তু এবার নির্বাচন বর্জনে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেই ওইসব উপজেলায় দল দুটির নেতারা প্রার্থী হয়েছেন। তবে কত উপজেলায় মোট কতজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তার প্রকৃত তথ্য পাওয়া যায়নি। যুগান্তরের ব্যুরো, জেলা ও উপজেলা অফিস থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এ সংখ্যা ৫০ জনের কম নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকাল ৪টায় প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমার সময় শেষ হয়েছে। আগামী ৮ মে প্রথম ধাপের ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৫০টি উপজেলায় মোট ১৮৯০ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬৯৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭২৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৭১ জন রয়েছেন। মনোনয়নপত্র দাখিলের দিনই বাগেরহাট সদর ও মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ১২টি পদে একজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতে চলেছেন। বাকি শুধু আনুষ্ঠানিকতা।

বাগেরহাট সদর উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে জয়ী হতে যাচ্ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগ সভাপতি সরদার নাসির উদ্দিন। এ উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রিজিয়া পারভীনও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। এর আগের নির্বাচনেও তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিলেন। তবে এ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী হয়েছেন। আরেকজন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায়। এ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনিছুজ্জামান আনিস একক প্রার্থী হিসাবে আবারও নির্বাচিত হওয়ার পথে রয়েছেন। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রাহেনা বেগম হাছনা। এ নিয়ে টানা চতুর্থবার জয় পেতে যাচ্ছেন তিনি। এছাড়া কক্সবাজার সদর ও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন করে প্রার্থী রয়েছেন। নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেতে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। কুষ্টিয়া সদর, চাঁদপুরের মতলব উত্তর, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা ও ঠাকুরগাঁওর বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী রয়েছেন।প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় ১৮৯০ জনের মনোনয়নপত্র দাখিলের তথ্য যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। তিনি যুগান্তরকে বলেন, অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল হওয়ায় কোথাও উল্লেখ করার মতো আচরণবিধি লংঘনের খবর পাওয়া যায়নি। প্রার্থীরা সহজেই অনলাইনে আবেদন করতে পেরেছেন।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, এবারই প্রথম পুরোপুরি অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। এ কারণে মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরগুলোতে শোরগোল ছিল না, আচরণ বিধিমালা লংঘনেরও খবর পাওয়া যায়নি। গত নির্বাচনে অনলাইন ও অফলাইন দুভাবেই জমা দেওয়ার সুযোগ ছিল। তখন অনলাইনে তেমন সাড়া মেলেনি।

নয়াদিগন্ত:

সোমালি উপকূলে জিম্মি বাংলাদেশী জাহাজ ও ২৩ নাবিকের মুক্তি
৫০ লাখ ডলারে মিলেছে মুক্তি : রয়টার্স
অবিশ্বাস্য দ্রুততম সময়ে সোমালীয় উপকূলে জিম্মি বাংলাদেশী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও এর ২৩ নাবিকের মুক্তি মিলেছে ৩২ দিনের মাথায়। গত শনিবার দিবাগত রাত ৩টা ৮ মিনিটে জাহাজে থাকা ৬৫ জলদস্যু একে একে নেমে যাবার সময় নাবিকদের উদ্দেশে বলে যায় ‘তোমরা এখন মুক্ত’। জাহাজটির মালিকপক্ষ বলছে- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সোমালিয়া এমনকি কেনিয়ার মেরিটাইম আইন মেনে জাহাজ ও নাবিকদের মুক্ত করা হয়েছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্স সোমালীয় দস্যুদের উদ্ধৃতি দিয়ে ৫০ লাখ মার্কিন ডলারে এই জিম্মিদশার অবসান হয়েছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। অবশেষে যেভাবেই মুক্ত হোন না কেন এখন নাবিকদের পরিবারে আনন্দের ঢেউ বইছে। জাহাজটি এখন ইইউ নেভাল ফোর্স আটলান্টার নিরাপত্তা বেষ্টনীতে দুবাইয়ের পথে সমুদ্র পাড়ি দিচ্ছে।

যেভাবে অতি দ্রুততায় মুক্তি : ছিনতাই হওয়ার এক মাসের মাথায় সোমালিয়ার উপকূল থেকে জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের মুক্ত করার নজির খুব একটা দেখা যায় না। মেরিটাইম সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সে তুলনায় এমভি আবদুল্লাহ অতি দ্রুতই মুক্ত হয়েছে। সোমালীয় জলদস্যুরা গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে এমভি আবদুল্লাহ জিম্মি করে। মুক্তিপণ দিয়ে জাহাজ ও এর নাবিকরা মুক্ত হয় গত শনিবার বাংলাদেশ সময় দিবাগত মধ্যরাত ৩টা ৮ মিনিটে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগে থেকে প্রস্তুত থাকা ৯টি বোটে করে জলদস্যুরা চলে যায় রাতের আঁধারে। যাবার প্রাক্কালে নাবিকদের উদ্দেশে বলে যায়, ‘তোমরা এখন মুক্ত’। এর পর পরই এমভি আবদুল্লাহর ক্যাপ্টেন জাহাজটির মালিকপক্ষের কাছে তাদের মুক্তির বার্তা পাঠান।
কীভাবে এত দ্রুত জাহাজটি মুক্ত করা সম্ভব হলো- জানতে চাইলে কেএসআরএম গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাইয়ের পর নাবিকদের দ্রুত নিরাপদে ফেরানোই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। তাই প্রথম দিন থেকেই আমরা কাজ শুরু করি। একদিকে সোমালিয়ার উপকূলে দস্যুতার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আন্তর্জাতিক নৌবাহিনীর তৎপরতা বাড়ায় দস্যুরা চাপে ছিল। পাশাপাশি আগের অভিজ্ঞতা থাকায় দস্যুদের সাথে আলোচনায় সমঝোতার প্রক্রিয়াগুলোও আমরা গুছিয়ে এনেছিলাম। সরকারও নাবিকদের উদ্ধারে আমাদের সব রকমের সহযোগিতা করেছে।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএমএমএ) সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন, এক দশক আগের চেয়ে এখনকার সোমালিয়ার উপকূলের পরিস্থিতি ভিন্ন। জলদস্যুদের হাতে ছিনতাই হওয়া জাহাজের সংখ্যা ছিল কম। দস্যুদের নগদ অর্থের প্রয়োজন ছিল বেশি। আবার জাহাজটির মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপও দ্রুত সমঝোতা করতে চেয়েছিল। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক নৌবাহিনীর নিয়মিত নজরদারি দস্যুদের উপর চাপ বাড়িয়েছিল। ফলে আগের ঘটনাগুলোর চেয়ে কম সময়ে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের নাবিকদের মুক্ত করে আনা সম্ভব হয়েছে বলে তিনি জানান।


কালের কন্ঠ:

সিদ্ধান্তহীনতায় বিএনপি তবু প্রার্থী হচ্ছেন নেতারা
প্রথম ধাপের ১৫২ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গতকাল সোমবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। গতকাল পর্যন্ত এই নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপি আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। তার পরও উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দলটির নেতারা।

বিএনপির জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী, রংপুরসহ সাংগঠনিকভাবে তাদের শক্তিশালী এলাকায় চেয়ারম্যানসহ অন্য দুই পদে প্রার্থী দিয়েছে।

তাঁরাও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, ১৫২ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৬৯৬ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭২৪টি এবং সংরক্ষিত নারী পদে ৪৭১টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। অর্থাৎ তিন পদে মোট এক হাজার ৮৯১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

এর বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের প্রার্থী।
আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য মতে, নওগাঁর ধামইরহাট, গাজীপুর সদর, লক্ষ্মীপুরের রামগতি, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর, কুমিল্লার নাঙলকোট, পঞ্চগড় সদর, ময়মনসিংহের ফুলপুর, রাজশাহীর গোদাগাড়ী, শেরপুরের ঝিনাইগাতি, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বিএনপি নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় বিএনপির দুইজন নেতা প্রার্থী হয়েছেন। এ ছাড়া মানিকগঞ্জের সিংগাইরে একজন ভাইস চেয়ারম্যান ও একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, মেহেরপুর সদরে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

এর মধ্যে গাজীপুর সদরে বিএনপি নেতা এজাদুর রহমান চৌধুরী ওরফে মিলন (জেলা বিএনপির সহসভাপতি), মানিকগঞ্জের সিংগাইরে তোফাজ্জল হোসেন (উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি) ও মোছা. আঁখি (সিংগাইর মহিলা বিএনপির সহসভাপতি), হরিরামপুরে বিএনপি নেতা জাহিদুর রহমান তুষার (উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক), সুনামগঞ্জের দিরাইতে গোলাপ মিয়া (উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক), শাল্লায় গণেন্দ্র চন্দ্র সরকার (উপজেলা বিএনপির সভাপতি), কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ইমান আলী (বর্তমানে উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি), ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে বিএনপি নেতা ইসমাঈল হোসেন, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে বিএনপি নেতা শাহ মোহাম্মদ শামীম হোসেন চৌধুরী (উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান), পঞ্চগড় সদরে বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু দাউদ প্রধান, আটোয়ারীতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান এবং তেঁতুলিয়ায় বিএনপির সমর্থক মুক্তারুল হক মুকু, ফরিদপুরের সালথায় মো. আসাদুজ্জামান আসাদ (উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক) এবং রাজশাহীর গোদাগাড়িতে জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান খান মার্কনী, সিলেটের বিশ্বনাথে সোহেল চৌধুরী (বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা), একই উপজেলায় গৌছ খান (পৌর বিএনপির সদস্য), সেবুল মিয়া ও শফিক মিয়া (যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতা) প্রার্থী হয়েছেন।


বাংলাদেশ প্রতিদিন

:মধ্যপ্রাচ্যে ফের যুদ্ধের দামামা
ইসরায়েলে পাঁচ ঘণ্টা ধরে ড্রোন ক্ষেপণাস্ত্রে ইরানের নজিরবিহীন হামলা
নানা জল্পনাকল্পনা এবং হুঁশিয়ারির পর বিশ্বকে চমকে দিয়ে মার্কিন মিত্র ইসরায়েলের ওপর নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে ইরান। সম্প্রতি সিরিয়ার রাজধানীতে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার জবাব হিসেবে রবিবার গভীর রাতে সরাসরি ইসরায়েলের ওপর এ হামলা শুরু করে তেহরান। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে চালানো হামলায় শত শত ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ব্যবহার করা হয়। প্রাথমিক খবর অনুযায়ী, হামলায় ইসরায়েলের একটি গোয়েন্দা কেন্দ্র এবং একটি বিমানঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে। অবশ্য ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানি হামলার জবাবে ইসরায়েল যদি পাল্টা হামলা চালায় তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের দামামা বেজে উঠবে। পাল্টা হামলার পরিকল্পনা থাকলেও এ মুহূর্তে স্পষ্ট করে তেলআবিব কিছু বলছে না। তাদের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যও ‘যুদ্ধ চায় না’ বলে দাবি করছে।

রবিবার রাতের হামলার একটি বিবরণ দিয়ে আলজাজিরা জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে দেশটি তিন শর বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এ হামলায় ইসরায়েলের একটি গোয়েন্দা কেন্দ্র ও একটি বিমানঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে। হামলার পর ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি রাষ্ট্রায়ত্ত একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া ভাষণে এ তথ্য জানান। এদিকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, রবিবার রাতে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহর লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। হামলার পরপরই তেলআবিব, পশ্চিম জেরুজালেমসহ ইসরায়েলি শহরগুলোয় ব্যাপক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইসরায়েলের ৭২০টির বেশি জায়গায় বিমান হামলার সাইরেন বেজেছে। ইসরায়েলি সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম করপোরেশন জানিয়েছে, হামলায় ইরান ১০০ ক্ষেপণাস্ত্র, ৩০টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও ১৬০টি সুইসাইড ড্রোন ব্যবহার করেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, ইরানের ছোড়া অধিকাংশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশসীমার বাইরেই ভূপাতিত করা হয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, ক্রুজ মিসাইলসহ বেশ কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। দুই শর বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের অভ্যন্তরে আঘাত করেছে এবং একটি সামরিক ঘাঁটির সামান্য ক্ষতি হয়েছে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। দুই মার্কিন কর্মকর্তা সিএনএনের কাছে জানিয়েছেন, রবিবার রাতের হামলা প্রায় পাঁচ ঘণ্টা স্থায়ী ছিল। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য এক অজানা সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, রাতের এ হামলাকে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ’ নাম দিয়েছে ইরান। এ হামলাকে ‘সীমিত ও নির্ধারিত’ বলে জানিয়েছেন ইরানি কর্মকর্তারা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান কী করতে সক্ষম তার সামান্য চিত্র দেখাল মাত্র। এটা এমন একটি দৃশ্য যা কখনো কেউ দেখেনি। মূলত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে দেশটির কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই রবিবার রাতে ইসরায়েলজুড়ে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইরান। এমন হামলার পরই পাল্টা হামলার আশঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী, একই সঙ্গে ইসরায়েলের প্রতিও সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছে দেশটি। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া বিবৃতিতে আইআরজিসির এক কমান্ডার জানান, ইসরায়েল যদি প্রতিক্রিয়া দেখায় তাহলে তার চেয়েও কড়া প্রতিক্রিয়া দেখাবে ইরান। এদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সতর্কতা জারি করে বলেছে, অধিকৃত গোলান মালভূমি, নেভাটিম, ডিমোনা এবং ইলাতের বাসিন্দাদের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ‘প্রতিরক্ষামূলক স্থানের কাছাকাছি’ অবস্থান করতে হবে। খবরে বলা হয়, নেভাটিম এমন একটি স্থান যেখানে ইসরায়েলি বিমানঘাঁটির অবস্থান। দিমোনার উপকণ্ঠে ইসরায়েলের একটি পারমাণবিক চুল্লি রয়েছে। ইলাত হলো ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় লোহিত সাগর তীরবর্তী বন্দরনগরী। গাজায় চলমান যুদ্ধের সময় ইয়েমেনের হুতিদের বারবার আক্রমণের শিকার হয়েছে এ শহরটি। ইরানের হামলা সম্পর্কে গতকাল নিউইয়র্ক টাইমসের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের ওপর ইরানের নজিরবিহীন হামলা তার শত্রু তেহরান সম্পর্কে ইহুদিবাদী দেশটির বিশ্বাস নাড়িয়ে দিয়েছে। এ হামলা তেলআবিবের দীর্ঘকালের হিসাবনিকাশ ভুল প্রমাণ করেছে-বৃহত্তর ইসরায়েলি আগ্রাসনের মাধ্যমে ইরানকে সর্বোত্তমভাবে নিবৃত্ত করা সম্ভব। বছরের পর বছর ধরে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে এবং ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় যুক্তি দিয়ে আসছেন, ইরানকে যত বেশি আঘাত করা হবে ততই তার যুদ্ধের ক্ষমতা খর্ব হবে। তবে রবিবার একযোগে ইরানের তিন শর বেশি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত ছিল ইসরায়েলের ওপর ইরানের প্রথম সরাসরি আক্রমণ। এ হামলা ইসরায়েলি যুক্তি উল্টে দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে বোঝা যাচ্ছে ইরানের নেতারা আর তাদের বিভিন্ন প্রক্সি বা ছায়াশক্তি যেমন লেবাননের হিজবুল্লাহ বা ইয়েমেনের হুতিদের মাধ্যমে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই করে সন্তুষ্ট থাকছেন না। বরং ইরান এখন সরাসরি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত। এ প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রাক্তন গবেষণাপ্রধান সিমা শাইন বলতে বাধ্য হয়েছেন, ‘আমি মনে করি আমরা ভুল হিসাবনিকাশ করেছি।’ তিনি বলেছেন, ‘ইসরায়েলের এতদিনের অভিজ্ঞতা হলো, ইরানের প্রতিশোধ নেওয়ার শক্তি নেই। ইসরায়েলি নেতাদের দৃঢ়বিশ্বাস ছিল ইরান যুদ্ধে জড়িত হতে চায় না। কিন্তু ইরান এখন একটি সম্পূর্ণ নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’


প্রথম আলো:

উপজেলায়ও আ.লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আ.লীগ
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন
৮ মে প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা ১,৮৯১ জনের।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও লড়াই হতে যাচ্ছে মূলত আওয়ামী লীগের নেতাদের নিজেদের মধ্যে। প্রথম ধাপে ১৫০টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলটির গড়ে তিনজন করে প্রার্থী হচ্ছেন।
গতকাল সোমবার ছিল প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন। ১৫০টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মোট ৬৯৬ জন। ১৪১টি উপজেলায় দেখা গেছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অন্তত ৪৬৬ জন নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নেতা আছেন কমবেশি ৪৫ জন। তাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী। আর জামায়াতে ইসলামীর অন্তত ২২ জন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন মাসের মাথায় সারা দেশে স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২০১৫ সালে আইন সংশোধন করে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দেওয়ার বিধান যুক্ত করা হয়। ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এখনো আইনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান আছে। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচনেও নেই। তাদের অনুপস্থিতিতে নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করতে আওয়ামী লীগ এবার উপজেলায় দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দিচ্ছে না। দলটির নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন।

ক্ষমতাসীনেরা এই ‘স্বতন্ত্র কৌশল’ নেওয়ার সময় আশা করেছিল, আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে না থাকলে বিএনপির নেতাদের অনেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন। কিন্তু প্রথম ধাপে সেটা খুব একটা হয়নি। প্রথম ধাপের মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হয়ে গেলেও গতকাল পর্যন্ত বিএনপি এই নির্বাচনের বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি। গত রাতে এ বিষয়ে দলের নীতিনির্ধারণী পর্ষদ স্থায়ী কমিটির বৈঠক করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শুরুতে এই নির্বাচনে কিছু জায়গায় স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে সরে এসেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির যেসব নেতা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন, তাঁদের তা প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিএনপিও একই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ফলে এবারের উপজেলা নির্বাচন শেষ পর্যন্ত কতটা অংশগ্রহণমূলক হবে, সেটা নিয়ে সংশয় আছে।

সমকাল:

ইসরায়েলের দম্ভে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র
ইসরায়েল শুধু ফিলিস্তিনে প্রতিনিয়ত আগ্রাসন চালিয়েও ক্ষান্ত ছিল না। কয়েক দশক ধরে ইরান, সিরিয়া, লেবাননসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে একতরফা হামলা চালিয়ে জানান দিয়েছে– এ অঞ্চলের অপ্রতিদ্বন্দ্বী সামরিক শক্তি সে। তবে গত শনিবার দেশটির সেই আত্মবিশ্বাসে ফাটল ধরিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক বড় শক্তি ইরান। একযোগে তিন শতাধিক ড্রোন আর ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইসরায়েলে। প্রথমবারের মতো দীর্ঘদিনের বৈরী ইরান সরাসরি ইসরায়েলের সার্বভৌম ভূখণ্ডে আঘাত করে তেল আবিবের দম্ভ চূর্ণ করে দিয়েছে।

ইরান ইচ্ছা করেই ইসরায়েলের বড় ক্ষতি করে বৃহত্তর যুদ্ধ বাধাতে চায়নি। তবে তেহরানের বার্তা ছিল খুব স্পষ্ট– চাইলেই তারা ইসরায়েলের বড় ক্ষতি করার সক্ষমতা অর্জন করেছে। ফলে ইসরায়েল মার খেয়ে মার হজম করছে; এখন পর্যন্ত কোনো পাল্টা জবাব দেয়নি। ইসরায়েলের ওপর ইরানি হামলায় মুসলিম বিশ্বে খুশির জোয়ার বইছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

বিএনপি দিন দিন সাংগঠনিকভাবে আরও দুর্বল হচ্ছে: ওবায়দুল কাদের

উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে না জামায়াত

ভর্তুকির বিশেষ বন্ডে আগ্রহ দেখাচ্ছে না বিদেশী ব্যাংকগুলো

আপডেট সময় ০৮:৩৬:১৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

আজকের প্রত্রিকা গুলোর প্রধান প্রধান খবর:

বনিকবার্তা:

ভর্তুকির বিশেষ বন্ডে আগ্রহ দেখাচ্ছে না বিদেশী ব্যাংকগুলো
বিশেষ বন্ড ইস্যুর মাধ্যমে সার ও বিদ্যুতে ভর্তুকি বাবদ বকেয়া পড়ে যাওয়া অর্থ পরিশোধের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। এরই মধ্যে বকেয়া ভর্তুকির বিপরীতে ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি বন্ড ইস্যু করা হয়েছে। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে আরো ৭ হাজার কোটি টাকার বন্ড। এখন পর্যন্ত এসব বন্ডের সাবস্ক্রিপশন করছে মূলত স্থানীয় ব্যাংকগুলোই। বিদ্যুৎ খাতে অর্থায়ন থাকলেও সরকারি ভর্তুকির এ বন্ডে কোনো আগ্রহ দেখাচ্ছে না দেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী বিদেশী ব্যাংকগুলো। মূলত এসব বন্ডের সুদহার ও সুযোগ-সুবিধা আকর্ষণীয় না হওয়ার কারণে বিদেশী ব্যাংকগুলো আগ্রহী হচ্ছে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সামিট পাওয়ার স্থানীয় ব্যাংকের পাশাপাশি বিদেশী ব্যাংকগুলোর কাছ থেকেও ঋণ নিয়েছে। স্থানীয় ব্যাংকের কাছ থেকে নেয়া ঋণ বিশেষ বন্ডের মাধ্যমে সমন্বয় করছে প্রতিষ্ঠানটি। আর বিদেশী ব্যাংকগুলো বন্ড না নেয়ায় তাদের পাওনা পরিশোধ করা হচ্ছে সামিটের বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আয় থেকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইপিপিএ) প্রেসিডেন্ট ও সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের পরিচালক মোহাম্মদ ফয়সাল করিম খান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘‌কোন ব্যাংক বন্ডে সাবস্ক্রিপশন করবে সেটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারণ করে থাকে। বিপিডিবির কাছে বকেয়া থাকা অর্থ পরিশোধের জন্য একটি সমাধান খুঁজে বের করায় আমরা স্থানীয় ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে কৃতজ্ঞ। সামিটের প্রকল্পের আয় থেকেই বিদেশী ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করা হচ্ছে।’

বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী বিদেশী ব্যাংকগুলো এখান থেকে প্রতি বছরই বড় অংকের মুনাফা করে। এর মধ্যে ট্রেজারি বিল-বন্ডের বিনিয়োগ থেকে ভালো মুনাফা আসে ব্যাংকগুলোর। গত বছর দেশের ব্যাংক খাতের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকার মুনাফা করেছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে সুদ খাত ও সরকারি ট্রেজারি বিল-বন্ডে বিনিয়োগ থেকে আসা আয়ের অবদানই ছিল সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ও হংকং সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশনের (এইচএসবিসি) মতো বৃহৎ ব্যাংকগুলোর বড় বিনিয়োগ রয়েছে। ভর্তুকির বন্ডে সাবস্ক্রিপশনে অনাগ্রহের বিষয়ে দেশের কোনো বিদেশী ব্যাংকই আনুষ্ঠানিকভাবে বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।

চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি সারে ভর্তুকির বিপরীতে বিশেষ বন্ড ইস্যুর কার্যক্রম শুরু করে অর্থ মন্ত্রণালয়। পরে বিদ্যুতের বকেয়া ভর্তুকির বিপরীতে বন্ড ইস্যু করা হয়। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত এ দুই খাতে মোট ২০ হাজার ৩৫২ কোটি টাকার বিশেষ বন্ড ইস্যু করা হয়েছে। এর মধ্যে সারে ১৩ ব্যাংকের অনুকূলে ৯ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকার এবং বিদ্যুতে ২৮ ব্যাংকের অনুকূলে ১০ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকার বিশেষ ট্রেজারি বন্ড ইস্যু করা হয়েছে।

মানবজমিন:

উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছে না জামায়াত
কেন্দ্রীয়ভাবে ঘোষণা ছিল না, এখনো নেই। তবে ‘জয়ের সম্ভাবনা’ আছে- এমন উপজেলায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচ শতাধিক প্রার্থী চূড়ান্ত করেছিল জামায়াত। সংশ্লিষ্ট উপজেলা, জেলা কমিটি এবং আঞ্চলিক নেতাদের মধ্যকার সিরিজ আলোচনা এবং তাদের সুপারিশের প্রেক্ষিতে ওইসব প্রার্থী ঠিক হয়েছিল। উপজেলা পর্যায়ে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি তথা ‘আঞ্চলিক দায়িত্বশীল’রা সফর করে তৃণমূলের মতামত এবং রিপোর্ট নিয়েছিলেন। সেই রিপোর্ট ধরেই কোন প্রার্থীর জয়ের সম্ভাবনা কতো ভাগ তা ঠিক হয়েছিল। সেখানে উপজেলাওয়ারী দলের সাংগঠনিক অবস্থা, সম্ভাব্য প্রার্থীর সামাজিক অবস্থান তথা ভাবমূর্তি, মানুষের মাঝে শাসক দলের নেতাদের (স্থানীয়) অবস্থান, ক্ষমতার বেনিফিশিয়ারিদের মধ্যকার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-সংঘাতের জেরে বিরোধী মতের প্রার্থীর ‘জয়ের সম্ভাবনা’র বিষয়টি বিবেচনায় রেখেছিল নিবন্ধন হারানো বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। সেই অনুযায়ী মনোনীত প্রার্থীরা ইফতার মাহফিল, ঈদ পুনর্মিলনীসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে উঠান বৈঠক করে গত শুক্রবার পর্যন্ত (ঈদের পরদিন) ভোটারদের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টায় ছিলেন। কিন্তু না, উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীর সর্বশেষ কেন্দ্রীয় পর্যালোচনা সভায় কোনো ফর্মেটেই দলীয় পদ-পদবি আছে এমন নেতাদের উপজেলা পরিষদে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সোমবার প্রথম ধাপের নির্বাচনে জামায়াতের কোন নেতা প্রার্থী হননি। পরবর্তীতে ভোট হবে এমন প্রার্থীদেরও আপাতত ভোট চাওয়া বন্ধ করে সংগঠনের রুটিন কার্যক্রমে মনোনিবেশ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।দলীয় নির্দেশনা পেয়ে ভোটের মাঠ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন এমন অনেকের সঙ্গে কথা বলেছে মানবজমিন। তাছাড়া দলটির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিমও কোনো ফর্মেটে উপজেলা নির্বাচনে অংশ না নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি খোলাসা করে বলেন, আমরা এই নির্বাচনে যাচ্ছি না, এটাই আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। শুধু প্রথম ধাপ নয়, উপজেলা নির্বাচনে কোনো ধাপেই, কোনো ফর্মেটে আমাদের নেতা বা দায়িত্বশীল কেউ অংশগ্রহণ করবে না। এদিকে দলটির দায়িত্বশীল অন্য এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে মানবজমিনকে বলেন, গত ১৫ বছর ধরে শাসক দলের চরম রাজনৈতিক আক্রোশের শিকার বাংলাদেশ জায়ায়াতে ইসলামী। সেই আক্রোশ চরিতার্থ করতে দলটির শীর্ষ নেতৃত্বকে বিচারের নামে বছরের পর বছর কারাগারে দুনিয়া থেকে বিদায় করা হয়েছে। নতুন নেতৃত্বকেও নানাভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। টার্গেট একটাই রাজনৈতিকভাবে জামায়াতকে ধ্বংস করা। কিন্তু স্রষ্টার কৃপায় তারা তা করতে পারেনি। এখন নানাভাবে তারা জামায়াতকে ট্রাপে ফেলার চেষ্টা করছে। বিএনপি-জামায়াতের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টির চেষ্টাও করেছে। কিন্তু তারা তাতেও সফল হয়নি। রাজনৈতিক কারণে জামায়াতের নিবন্ধন কেড়ে নেয়া হয়েছে। কেন্দ্র থেকে শুরু করে ওয়ার্ড-গ্রাম পর্যায়ে আমাদের নেতাদের হয়রানি করা হচ্ছে। এ অবস্থায় অর্ধেকের কম উপজেলায় প্রার্থী চিন্তা করেছিলাম। তাও দলীয়ভাবে নয়, স্থানীয়দের সুপারিশে। সেখানেও তারা ‘ষড়যন্ত্র’ শুরু করেছে। আমরা মনে করি রাজনৈতিকভাবে শাসক দল আমাদের প্রার্থীর সামনে টিকতে পারবে না। এমনকি বিএনপি’র কোনো প্রার্থীকে ভোটে হারানোর চ্যালেঞ্জ গ্রহণের সক্ষমতা তাদের নেই। কিন্তু সেটা তো তারা করতে দিবে না। এরইমধ্যে বিভিন্ন রিপোর্টে ‘এমপিতন্ত্র’ কায়েমের খবর এসেছে। সব মিলিয়ে আমাদের শীর্ষ নেতৃত্ব এই সরকার তথা নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের যৌথ প্রযোজনায় অনুষ্ঠেয় প্রহসনের ভোটাভুটিতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে জামায়াতের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আছে কিনা? জানতে চাইলে দলটির প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ মানবজমিনকে বলেন, উপজেলা নির্বাচনে প্রথম ধাপে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। এ নিয়ে আর কোনো বিভ্রান্তি নেই। এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় বলেই আমরা সিদ্ধান্তটি নিয়েছি। তিনি বলেন, কেবল জামায়াত নয়, দেশবাসী নিশ্চয়ই আসন্ন নির্বাচনটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণে রাখবে। সবার এটাই চাওয়া স্থানীয় পর্যায়ের ভোটে শাসক দলের আচরণে কোনো পরিবর্তন আসে কিনা? দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে কোনো নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা- এমন প্রশ্নে মিস্টার আকন্দ বলেন, জামায়াত একটি সুশৃঙ্খল রাজনৈতিক দল। দল যে সিদ্ধান্ত নিবে নেতাকর্মীরা সেই অনুযায়ী কাজ করবেন। জামায়াতের নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরও অভিন্ন অভিমত ব্যক্ত করেন। মানবজমিনকে তিনি বলেন, উপজেলা প্রথম ধাপে আমাদের কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেননি। আপাতত দলীয় সিদ্ধান্ত এটাই। ব্যক্তিগতভাবে কোনো নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তার বিরুদ্ধে দলীয় কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা? এমন প্রশ্নে ড. তাহের বলেন, জামায়াতে এই ট্র্যাডিশন নেই।


যুপান্তর

:প্রার্থী হচ্ছেন বিএনপি জামায়াত নেতারাও
প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় নির্বাচন * দুই চেয়ারম্যানসহ ১২ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের পথে
প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলা নির্বাচনের বেশ কয়েকটিতে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন বিএনপি ও জামায়াত নেতা। তারা অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন বর্জন করে আসছে বিএনপি ও জামায়াত। কিন্তু এবার নির্বাচন বর্জনে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেই ওইসব উপজেলায় দল দুটির নেতারা প্রার্থী হয়েছেন। তবে কত উপজেলায় মোট কতজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তার প্রকৃত তথ্য পাওয়া যায়নি। যুগান্তরের ব্যুরো, জেলা ও উপজেলা অফিস থেকে পাঠানো প্রতিবেদনে এ সংখ্যা ৫০ জনের কম নয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকাল ৪টায় প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমার সময় শেষ হয়েছে। আগামী ৮ মে প্রথম ধাপের ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ১৫০টি উপজেলায় মোট ১৮৯০ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬৯৫ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭২৪ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৪৭১ জন রয়েছেন। মনোনয়নপত্র দাখিলের দিনই বাগেরহাট সদর ও মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যানসহ ১২টি পদে একজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তারা সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতে চলেছেন। বাকি শুধু আনুষ্ঠানিকতা।

বাগেরহাট সদর উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে জয়ী হতে যাচ্ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগ সভাপতি সরদার নাসির উদ্দিন। এ উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে রিজিয়া পারভীনও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। এর আগের নির্বাচনেও তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিলেন। তবে এ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী হয়েছেন। আরেকজন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায়। এ উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনিছুজ্জামান আনিস একক প্রার্থী হিসাবে আবারও নির্বাচিত হওয়ার পথে রয়েছেন। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুজন করে প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রাহেনা বেগম হাছনা। এ নিয়ে টানা চতুর্থবার জয় পেতে যাচ্ছেন তিনি। এছাড়া কক্সবাজার সদর ও চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান পদে একজন করে প্রার্থী রয়েছেন। নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেতে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। কুষ্টিয়া সদর, চাঁদপুরের মতলব উত্তর, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা ও ঠাকুরগাঁওর বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী রয়েছেন।প্রথম ধাপে ১৫০ উপজেলায় ১৮৯০ জনের মনোনয়নপত্র দাখিলের তথ্য যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। তিনি যুগান্তরকে বলেন, অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল হওয়ায় কোথাও উল্লেখ করার মতো আচরণবিধি লংঘনের খবর পাওয়া যায়নি। প্রার্থীরা সহজেই অনলাইনে আবেদন করতে পেরেছেন।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, এবারই প্রথম পুরোপুরি অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। এ কারণে মনোনয়নপত্র দাখিলের দিন রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরগুলোতে শোরগোল ছিল না, আচরণ বিধিমালা লংঘনেরও খবর পাওয়া যায়নি। গত নির্বাচনে অনলাইন ও অফলাইন দুভাবেই জমা দেওয়ার সুযোগ ছিল। তখন অনলাইনে তেমন সাড়া মেলেনি।

নয়াদিগন্ত:

সোমালি উপকূলে জিম্মি বাংলাদেশী জাহাজ ও ২৩ নাবিকের মুক্তি
৫০ লাখ ডলারে মিলেছে মুক্তি : রয়টার্স
অবিশ্বাস্য দ্রুততম সময়ে সোমালীয় উপকূলে জিম্মি বাংলাদেশী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও এর ২৩ নাবিকের মুক্তি মিলেছে ৩২ দিনের মাথায়। গত শনিবার দিবাগত রাত ৩টা ৮ মিনিটে জাহাজে থাকা ৬৫ জলদস্যু একে একে নেমে যাবার সময় নাবিকদের উদ্দেশে বলে যায় ‘তোমরা এখন মুক্ত’। জাহাজটির মালিকপক্ষ বলছে- যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সোমালিয়া এমনকি কেনিয়ার মেরিটাইম আইন মেনে জাহাজ ও নাবিকদের মুক্ত করা হয়েছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্স সোমালীয় দস্যুদের উদ্ধৃতি দিয়ে ৫০ লাখ মার্কিন ডলারে এই জিম্মিদশার অবসান হয়েছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। অবশেষে যেভাবেই মুক্ত হোন না কেন এখন নাবিকদের পরিবারে আনন্দের ঢেউ বইছে। জাহাজটি এখন ইইউ নেভাল ফোর্স আটলান্টার নিরাপত্তা বেষ্টনীতে দুবাইয়ের পথে সমুদ্র পাড়ি দিচ্ছে।

যেভাবে অতি দ্রুততায় মুক্তি : ছিনতাই হওয়ার এক মাসের মাথায় সোমালিয়ার উপকূল থেকে জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের মুক্ত করার নজির খুব একটা দেখা যায় না। মেরিটাইম সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সে তুলনায় এমভি আবদুল্লাহ অতি দ্রুতই মুক্ত হয়েছে। সোমালীয় জলদস্যুরা গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে এমভি আবদুল্লাহ জিম্মি করে। মুক্তিপণ দিয়ে জাহাজ ও এর নাবিকরা মুক্ত হয় গত শনিবার বাংলাদেশ সময় দিবাগত মধ্যরাত ৩টা ৮ মিনিটে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, আগে থেকে প্রস্তুত থাকা ৯টি বোটে করে জলদস্যুরা চলে যায় রাতের আঁধারে। যাবার প্রাক্কালে নাবিকদের উদ্দেশে বলে যায়, ‘তোমরা এখন মুক্ত’। এর পর পরই এমভি আবদুল্লাহর ক্যাপ্টেন জাহাজটির মালিকপক্ষের কাছে তাদের মুক্তির বার্তা পাঠান।
কীভাবে এত দ্রুত জাহাজটি মুক্ত করা সম্ভব হলো- জানতে চাইলে কেএসআরএম গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাইয়ের পর নাবিকদের দ্রুত নিরাপদে ফেরানোই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। তাই প্রথম দিন থেকেই আমরা কাজ শুরু করি। একদিকে সোমালিয়ার উপকূলে দস্যুতার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় আন্তর্জাতিক নৌবাহিনীর তৎপরতা বাড়ায় দস্যুরা চাপে ছিল। পাশাপাশি আগের অভিজ্ঞতা থাকায় দস্যুদের সাথে আলোচনায় সমঝোতার প্রক্রিয়াগুলোও আমরা গুছিয়ে এনেছিলাম। সরকারও নাবিকদের উদ্ধারে আমাদের সব রকমের সহযোগিতা করেছে।
বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএমএমএ) সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী বলেন, এক দশক আগের চেয়ে এখনকার সোমালিয়ার উপকূলের পরিস্থিতি ভিন্ন। জলদস্যুদের হাতে ছিনতাই হওয়া জাহাজের সংখ্যা ছিল কম। দস্যুদের নগদ অর্থের প্রয়োজন ছিল বেশি। আবার জাহাজটির মালিকপক্ষ কেএসআরএম গ্রুপও দ্রুত সমঝোতা করতে চেয়েছিল। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক নৌবাহিনীর নিয়মিত নজরদারি দস্যুদের উপর চাপ বাড়িয়েছিল। ফলে আগের ঘটনাগুলোর চেয়ে কম সময়ে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের নাবিকদের মুক্ত করে আনা সম্ভব হয়েছে বলে তিনি জানান।


কালের কন্ঠ:

সিদ্ধান্তহীনতায় বিএনপি তবু প্রার্থী হচ্ছেন নেতারা
প্রথম ধাপের ১৫২ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গতকাল সোমবার ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। গতকাল পর্যন্ত এই নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপি আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। তার পরও উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দলটির নেতারা।

বিএনপির জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামী রাজশাহী, রংপুরসহ সাংগঠনিকভাবে তাদের শক্তিশালী এলাকায় চেয়ারম্যানসহ অন্য দুই পদে প্রার্থী দিয়েছে।

তাঁরাও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, ১৫২ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ৬৯৬ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭২৪টি এবং সংরক্ষিত নারী পদে ৪৭১টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। অর্থাৎ তিন পদে মোট এক হাজার ৮৯১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

এর বেশির ভাগই আওয়ামী লীগের প্রার্থী।
আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য মতে, নওগাঁর ধামইরহাট, গাজীপুর সদর, লক্ষ্মীপুরের রামগতি, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর, কুমিল্লার নাঙলকোট, পঞ্চগড় সদর, ময়মনসিংহের ফুলপুর, রাজশাহীর গোদাগাড়ী, শেরপুরের ঝিনাইগাতি, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বিএনপি নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় বিএনপির দুইজন নেতা প্রার্থী হয়েছেন। এ ছাড়া মানিকগঞ্জের সিংগাইরে একজন ভাইস চেয়ারম্যান ও একজন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, মেহেরপুর সদরে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

এর মধ্যে গাজীপুর সদরে বিএনপি নেতা এজাদুর রহমান চৌধুরী ওরফে মিলন (জেলা বিএনপির সহসভাপতি), মানিকগঞ্জের সিংগাইরে তোফাজ্জল হোসেন (উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি) ও মোছা. আঁখি (সিংগাইর মহিলা বিএনপির সহসভাপতি), হরিরামপুরে বিএনপি নেতা জাহিদুর রহমান তুষার (উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক), সুনামগঞ্জের দিরাইতে গোলাপ মিয়া (উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক), শাল্লায় গণেন্দ্র চন্দ্র সরকার (উপজেলা বিএনপির সভাপতি), কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ইমান আলী (বর্তমানে উপজেলা চেয়ারম্যান এবং উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি), ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরে বিএনপি নেতা ইসমাঈল হোসেন, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে বিএনপি নেতা শাহ মোহাম্মদ শামীম হোসেন চৌধুরী (উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান), পঞ্চগড় সদরে বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আবু দাউদ প্রধান, আটোয়ারীতে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান এবং তেঁতুলিয়ায় বিএনপির সমর্থক মুক্তারুল হক মুকু, ফরিদপুরের সালথায় মো. আসাদুজ্জামান আসাদ (উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক) এবং রাজশাহীর গোদাগাড়িতে জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান খান মার্কনী, সিলেটের বিশ্বনাথে সোহেল চৌধুরী (বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা), একই উপজেলায় গৌছ খান (পৌর বিএনপির সদস্য), সেবুল মিয়া ও শফিক মিয়া (যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতা) প্রার্থী হয়েছেন।


বাংলাদেশ প্রতিদিন

:মধ্যপ্রাচ্যে ফের যুদ্ধের দামামা
ইসরায়েলে পাঁচ ঘণ্টা ধরে ড্রোন ক্ষেপণাস্ত্রে ইরানের নজিরবিহীন হামলা
নানা জল্পনাকল্পনা এবং হুঁশিয়ারির পর বিশ্বকে চমকে দিয়ে মার্কিন মিত্র ইসরায়েলের ওপর নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে ইরান। সম্প্রতি সিরিয়ার রাজধানীতে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার জবাব হিসেবে রবিবার গভীর রাতে সরাসরি ইসরায়েলের ওপর এ হামলা শুরু করে তেহরান। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে চালানো হামলায় শত শত ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ব্যবহার করা হয়। প্রাথমিক খবর অনুযায়ী, হামলায় ইসরায়েলের একটি গোয়েন্দা কেন্দ্র এবং একটি বিমানঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে। অবশ্য ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা বেশির ভাগ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানি হামলার জবাবে ইসরায়েল যদি পাল্টা হামলা চালায় তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধের দামামা বেজে উঠবে। পাল্টা হামলার পরিকল্পনা থাকলেও এ মুহূর্তে স্পষ্ট করে তেলআবিব কিছু বলছে না। তাদের মিত্র যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যও ‘যুদ্ধ চায় না’ বলে দাবি করছে।

রবিবার রাতের হামলার একটি বিবরণ দিয়ে আলজাজিরা জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়েছে ইরান। ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে দেশটি তিন শর বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এ হামলায় ইসরায়েলের একটি গোয়েন্দা কেন্দ্র ও একটি বিমানঘাঁটি ধ্বংস হয়েছে। হামলার পর ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি রাষ্ট্রায়ত্ত একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া ভাষণে এ তথ্য জানান। এদিকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, রবিবার রাতে ইসরায়েলের বিভিন্ন শহর লক্ষ্য করে মুহুর্মুহু ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। হামলার পরপরই তেলআবিব, পশ্চিম জেরুজালেমসহ ইসরায়েলি শহরগুলোয় ব্যাপক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইসরায়েলের ৭২০টির বেশি জায়গায় বিমান হামলার সাইরেন বেজেছে। ইসরায়েলি সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম করপোরেশন জানিয়েছে, হামলায় ইরান ১০০ ক্ষেপণাস্ত্র, ৩০টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ও ১৬০টি সুইসাইড ড্রোন ব্যবহার করেছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, ইরানের ছোড়া অধিকাংশ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশসীমার বাইরেই ভূপাতিত করা হয়েছে। এ ছাড়া ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেন, ক্রুজ মিসাইলসহ বেশ কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। দুই শর বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। কিছু ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের অভ্যন্তরে আঘাত করেছে এবং একটি সামরিক ঘাঁটির সামান্য ক্ষতি হয়েছে। তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। দুই মার্কিন কর্মকর্তা সিএনএনের কাছে জানিয়েছেন, রবিবার রাতের হামলা প্রায় পাঁচ ঘণ্টা স্থায়ী ছিল। এ ঘটনার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য এক অজানা সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, রাতের এ হামলাকে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ’ নাম দিয়েছে ইরান। এ হামলাকে ‘সীমিত ও নির্ধারিত’ বলে জানিয়েছেন ইরানি কর্মকর্তারা। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইরান কী করতে সক্ষম তার সামান্য চিত্র দেখাল মাত্র। এটা এমন একটি দৃশ্য যা কখনো কেউ দেখেনি। মূলত ১ এপ্রিল সিরিয়ার দামেস্কে অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালিয়ে দেশটির কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তাকে হত্যা করে ইসরায়েল। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতেই রবিবার রাতে ইসরায়েলজুড়ে নজিরবিহীন হামলা চালায় ইরান। এমন হামলার পরই পাল্টা হামলার আশঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় আছে ইরানের ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী, একই সঙ্গে ইসরায়েলের প্রতিও সতর্কবার্তা দিয়ে রেখেছে দেশটি। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া বিবৃতিতে আইআরজিসির এক কমান্ডার জানান, ইসরায়েল যদি প্রতিক্রিয়া দেখায় তাহলে তার চেয়েও কড়া প্রতিক্রিয়া দেখাবে ইরান। এদিকে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী সতর্কতা জারি করে বলেছে, অধিকৃত গোলান মালভূমি, নেভাটিম, ডিমোনা এবং ইলাতের বাসিন্দাদের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ‘প্রতিরক্ষামূলক স্থানের কাছাকাছি’ অবস্থান করতে হবে। খবরে বলা হয়, নেভাটিম এমন একটি স্থান যেখানে ইসরায়েলি বিমানঘাঁটির অবস্থান। দিমোনার উপকণ্ঠে ইসরায়েলের একটি পারমাণবিক চুল্লি রয়েছে। ইলাত হলো ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় লোহিত সাগর তীরবর্তী বন্দরনগরী। গাজায় চলমান যুদ্ধের সময় ইয়েমেনের হুতিদের বারবার আক্রমণের শিকার হয়েছে এ শহরটি। ইরানের হামলা সম্পর্কে গতকাল নিউইয়র্ক টাইমসের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের ওপর ইরানের নজিরবিহীন হামলা তার শত্রু তেহরান সম্পর্কে ইহুদিবাদী দেশটির বিশ্বাস নাড়িয়ে দিয়েছে। এ হামলা তেলআবিবের দীর্ঘকালের হিসাবনিকাশ ভুল প্রমাণ করেছে-বৃহত্তর ইসরায়েলি আগ্রাসনের মাধ্যমে ইরানকে সর্বোত্তমভাবে নিবৃত্ত করা সম্ভব। বছরের পর বছর ধরে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে এবং ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় যুক্তি দিয়ে আসছেন, ইরানকে যত বেশি আঘাত করা হবে ততই তার যুদ্ধের ক্ষমতা খর্ব হবে। তবে রবিবার একযোগে ইরানের তিন শর বেশি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত ছিল ইসরায়েলের ওপর ইরানের প্রথম সরাসরি আক্রমণ। এ হামলা ইসরায়েলি যুক্তি উল্টে দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে বোঝা যাচ্ছে ইরানের নেতারা আর তাদের বিভিন্ন প্রক্সি বা ছায়াশক্তি যেমন লেবাননের হিজবুল্লাহ বা ইয়েমেনের হুতিদের মাধ্যমে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই করে সন্তুষ্ট থাকছেন না। বরং ইরান এখন সরাসরি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত। এ প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রাক্তন গবেষণাপ্রধান সিমা শাইন বলতে বাধ্য হয়েছেন, ‘আমি মনে করি আমরা ভুল হিসাবনিকাশ করেছি।’ তিনি বলেছেন, ‘ইসরায়েলের এতদিনের অভিজ্ঞতা হলো, ইরানের প্রতিশোধ নেওয়ার শক্তি নেই। ইসরায়েলি নেতাদের দৃঢ়বিশ্বাস ছিল ইরান যুদ্ধে জড়িত হতে চায় না। কিন্তু ইরান এখন একটি সম্পূর্ণ নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’


প্রথম আলো:

উপজেলায়ও আ.লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আ.লীগ
উপজেলা পরিষদ নির্বাচন
৮ মে প্রথম ধাপের ১৫০টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ। চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা ১,৮৯১ জনের।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও লড়াই হতে যাচ্ছে মূলত আওয়ামী লীগের নেতাদের নিজেদের মধ্যে। প্রথম ধাপে ১৫০টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলটির গড়ে তিনজন করে প্রার্থী হচ্ছেন।
গতকাল সোমবার ছিল প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিন। ১৫০টি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মোট ৬৯৬ জন। ১৪১টি উপজেলায় দেখা গেছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অন্তত ৪৬৬ জন নেতা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নেতা আছেন কমবেশি ৪৫ জন। তাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী। আর জামায়াতে ইসলামীর অন্তত ২২ জন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তিন মাসের মাথায় সারা দেশে স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২০১৫ সালে আইন সংশোধন করে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দেওয়ার বিধান যুক্ত করা হয়। ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এখনো আইনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান আছে। কিন্তু ক্ষমতাসীনদের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচনেও নেই। তাদের অনুপস্থিতিতে নির্বাচনকে প্রতিযোগিতামূলক করতে আওয়ামী লীগ এবার উপজেলায় দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দিচ্ছে না। দলটির নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন।

ক্ষমতাসীনেরা এই ‘স্বতন্ত্র কৌশল’ নেওয়ার সময় আশা করেছিল, আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে না থাকলে বিএনপির নেতাদের অনেকে নির্বাচনে অংশ নেবেন। কিন্তু প্রথম ধাপে সেটা খুব একটা হয়নি। প্রথম ধাপের মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হয়ে গেলেও গতকাল পর্যন্ত বিএনপি এই নির্বাচনের বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়নি। গত রাতে এ বিষয়ে দলের নীতিনির্ধারণী পর্ষদ স্থায়ী কমিটির বৈঠক করে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শুরুতে এই নির্বাচনে কিছু জায়গায় স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও শেষ পর্যন্ত সেখান থেকে সরে এসেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির যেসব নেতা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন, তাঁদের তা প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিএনপিও একই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ফলে এবারের উপজেলা নির্বাচন শেষ পর্যন্ত কতটা অংশগ্রহণমূলক হবে, সেটা নিয়ে সংশয় আছে।

সমকাল:

ইসরায়েলের দম্ভে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র
ইসরায়েল শুধু ফিলিস্তিনে প্রতিনিয়ত আগ্রাসন চালিয়েও ক্ষান্ত ছিল না। কয়েক দশক ধরে ইরান, সিরিয়া, লেবাননসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে একতরফা হামলা চালিয়ে জানান দিয়েছে– এ অঞ্চলের অপ্রতিদ্বন্দ্বী সামরিক শক্তি সে। তবে গত শনিবার দেশটির সেই আত্মবিশ্বাসে ফাটল ধরিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক বড় শক্তি ইরান। একযোগে তিন শতাধিক ড্রোন আর ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইসরায়েলে। প্রথমবারের মতো দীর্ঘদিনের বৈরী ইরান সরাসরি ইসরায়েলের সার্বভৌম ভূখণ্ডে আঘাত করে তেল আবিবের দম্ভ চূর্ণ করে দিয়েছে।

ইরান ইচ্ছা করেই ইসরায়েলের বড় ক্ষতি করে বৃহত্তর যুদ্ধ বাধাতে চায়নি। তবে তেহরানের বার্তা ছিল খুব স্পষ্ট– চাইলেই তারা ইসরায়েলের বড় ক্ষতি করার সক্ষমতা অর্জন করেছে। ফলে ইসরায়েল মার খেয়ে মার হজম করছে; এখন পর্যন্ত কোনো পাল্টা জবাব দেয়নি। ইসরায়েলের ওপর ইরানি হামলায় মুসলিম বিশ্বে খুশির জোয়ার বইছে।