ঢাকা ০৬:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বুয়েটে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল-ফ্রন্ট-শিবির কিছুরই দরকার নাই : চমক হাসান

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালটের (বুয়েট) সাবেক ছাত্র, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী গবেষক, জনপ্রিয় গায়ক ও সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট ক্রিয়েটর চমক হাসান বলেছেন, আমি বুয়েটের অ্যালামনাইদের একজন হিসেবে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে চাই। আমি দৃঢ়ভাবে মনে করি, বুয়েটে ছাত্র-রাজনীতি বন্ধ থাকা উচিত। ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্র শিবির- কিছুরই দরকার নাই।

রোববার (৩১ মার্চ) সন্ধ্যায় চমক হাসান তার নিজের ফেসবুক একাউন্টের এক পোস্টে এই মন্তব্য করেন। তার টাইমলাইনে গিয়ে দেখা যায়, দুই ঘণ্টার ব্যবধানে এই পোস্টে ১১ হাজারেরও বেশি রিয়েকশন ও প্রায় হাজার খানেক মন্তব্য জমা পড়েছে।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, কারণ দেখানো খুব সহজ। দুই কলামের একটা সারণি বানানো হোক। বামপাশে থাকুক ছাত্র-রাজনীতির উপস্থিতি বুয়েটে কী কী ইতিবাচক পরিবর্তন উপহার দিয়েছে তার একটা তালিকা, আর ডানপাশে থাকুক ছাত্র-রাজনীতির উপস্থিতির কারণে কী কী যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে গেছে ছাত্র-শিক্ষক-প্রশাসন, তার একটা খতিয়ান। ডানপাশে আবরার, সনি এই নামগুলোর কোনো একটার যে ভার, সেটা বামপাশের সম্মিলিত ভারের চেয়েও বহুগুণে বেশি। এরপরেও ডানদিকের তালিকায় র‍্যাগিং, অত্যাচার, চাঁদাবাজি, ক্ষমতা প্রদর্শনী, অন্যায় সুবিধাভোগ – এসবের উপাখ্যান পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখে যাওয়া যাবে। তাহলে ছাত্র-রাজনীতি কেন চাইবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা?

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডকে স্মরণ করিয়ে চমক বলেন, ডিপার্টমেন্টের প্রিয় জুনিয়র আবরারকে যে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল, মন থেকে সেই ক্ষত এখনও মুছে যায়নি। চেনা জুনিয়রদের সাথে যত আলাপ হয়েছে সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, আবরার-হত্যার ঘটনার পর যখন ছাত্র-রাজনীতি নিষিদ্ধ করার হয়, তারপর থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনেক শান্তিতে ছিল, আছে। কোনো যুক্তিতেই আবার ওই নরক ফিরিয়ে আনার মানে হয় না।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগ না থাকলে শিবির মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে এটাও মেনে নেওয়ার মতো যুক্তি না। সহজ কথা ছাত্র রাজনীতি নেই মানে কোনো সংগঠনেরই কার্যক্রম নেই। ছাত্রলীগও না, শিবিরও না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা সবাইকেই প্রতিহত করবে। গত কদিনে সবার সাহস আর ঐক্য দেখে তাদের প্রতি এই ভরসা আমার আছে।

সবশেষে বুয়েটের সাবেক এই ছাত্র তার পোস্টে বলেন, একসঙ্গে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়ে, পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষার্থীরা যে ঐক্য দেখিয়েছে, সেটা অসাধারণ। মন থেকে ভালোবাসা আর টুপিখোলা সালাম! আমার পূর্ণ সমর্থন রইলো তোমাদের জন্য।

বুয়েট ক্যাম্পাসে সম্প্রতি দলবল নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের প্রবেশের পর ছাত্ররাজনীতি প্রতিরোধসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন করছে। এমনকি সকল ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনও করেছে তারা। অন্যদিকে, ছাত্রলীগও ছাত্ররাজনীতির দাবিতে বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ করে নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ বুয়েট ক্যাম্পাসে ঢুকেছে। এ নিয়ে সারাদেশব্যাপী যখন আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনই এমন মন্তব্য করলেন চমক হাসান।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বুয়েটে ছাত্রলীগ-ছাত্রদল-ফ্রন্ট-শিবির কিছুরই দরকার নাই : চমক হাসান

আপডেট সময় ০১:০০:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০২৪

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালটের (বুয়েট) সাবেক ছাত্র, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী গবেষক, জনপ্রিয় গায়ক ও সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট ক্রিয়েটর চমক হাসান বলেছেন, আমি বুয়েটের অ্যালামনাইদের একজন হিসেবে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে চাই। আমি দৃঢ়ভাবে মনে করি, বুয়েটে ছাত্র-রাজনীতি বন্ধ থাকা উচিত। ছাত্রলীগ, ছাত্রদল, ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্র শিবির- কিছুরই দরকার নাই।

রোববার (৩১ মার্চ) সন্ধ্যায় চমক হাসান তার নিজের ফেসবুক একাউন্টের এক পোস্টে এই মন্তব্য করেন। তার টাইমলাইনে গিয়ে দেখা যায়, দুই ঘণ্টার ব্যবধানে এই পোস্টে ১১ হাজারেরও বেশি রিয়েকশন ও প্রায় হাজার খানেক মন্তব্য জমা পড়েছে।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, কারণ দেখানো খুব সহজ। দুই কলামের একটা সারণি বানানো হোক। বামপাশে থাকুক ছাত্র-রাজনীতির উপস্থিতি বুয়েটে কী কী ইতিবাচক পরিবর্তন উপহার দিয়েছে তার একটা তালিকা, আর ডানপাশে থাকুক ছাত্র-রাজনীতির উপস্থিতির কারণে কী কী যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে গেছে ছাত্র-শিক্ষক-প্রশাসন, তার একটা খতিয়ান। ডানপাশে আবরার, সনি এই নামগুলোর কোনো একটার যে ভার, সেটা বামপাশের সম্মিলিত ভারের চেয়েও বহুগুণে বেশি। এরপরেও ডানদিকের তালিকায় র‍্যাগিং, অত্যাচার, চাঁদাবাজি, ক্ষমতা প্রদর্শনী, অন্যায় সুবিধাভোগ – এসবের উপাখ্যান পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখে যাওয়া যাবে। তাহলে ছাত্র-রাজনীতি কেন চাইবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা?

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডকে স্মরণ করিয়ে চমক বলেন, ডিপার্টমেন্টের প্রিয় জুনিয়র আবরারকে যে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল, মন থেকে সেই ক্ষত এখনও মুছে যায়নি। চেনা জুনিয়রদের সাথে যত আলাপ হয়েছে সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, আবরার-হত্যার ঘটনার পর যখন ছাত্র-রাজনীতি নিষিদ্ধ করার হয়, তারপর থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অনেক শান্তিতে ছিল, আছে। কোনো যুক্তিতেই আবার ওই নরক ফিরিয়ে আনার মানে হয় না।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগ না থাকলে শিবির মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে এটাও মেনে নেওয়ার মতো যুক্তি না। সহজ কথা ছাত্র রাজনীতি নেই মানে কোনো সংগঠনেরই কার্যক্রম নেই। ছাত্রলীগও না, শিবিরও না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা সবাইকেই প্রতিহত করবে। গত কদিনে সবার সাহস আর ঐক্য দেখে তাদের প্রতি এই ভরসা আমার আছে।

সবশেষে বুয়েটের সাবেক এই ছাত্র তার পোস্টে বলেন, একসঙ্গে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়ে, পরীক্ষা বর্জন করে শিক্ষার্থীরা যে ঐক্য দেখিয়েছে, সেটা অসাধারণ। মন থেকে ভালোবাসা আর টুপিখোলা সালাম! আমার পূর্ণ সমর্থন রইলো তোমাদের জন্য।

বুয়েট ক্যাম্পাসে সম্প্রতি দলবল নিয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের প্রবেশের পর ছাত্ররাজনীতি প্রতিরোধসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন করছে। এমনকি সকল ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনও করেছে তারা। অন্যদিকে, ছাত্রলীগও ছাত্ররাজনীতির দাবিতে বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ করে নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ বুয়েট ক্যাম্পাসে ঢুকেছে। এ নিয়ে সারাদেশব্যাপী যখন আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনই এমন মন্তব্য করলেন চমক হাসান।