ঢাকা ০৪:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সুন্দরবনে বিএনপি’র কমিটিতে আওয়ামী লীগের কর্মীদের নাম Logo বাংলাদেশে ঢুকে আম গাছ কাটল বিএসএফ, সীমান্তে উত্তেজনা Logo দেশের মানুষ চায় তরুণরা সংসদে প্রতিনিধিত্ব করুক: সারজিস Logo ইডেন কলেজ ছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার Logo বিএনপির ভাবনায় শুধুই ভোট Logo ‘লাল সন্ত্রাস’চায় ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন নেতা, মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ Logo শীত নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস Logo ইসরায়েলের পূর্ণ মন্ত্রিসভায় যুদ্ধবিরতি অনুমোদন, কার্যকরের দিন ঘোষণা Logo বিএনপির অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিলেন ছাত্রহত্যা আসামি শ্রমিকলীগ নেতা, খুঁজে পায় না পুলিশ Logo বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জামায়াতের লড়াই চালু থাকবে : জামায়াতের আমীর

কালো আখ চাষে সাবলম্বি ফরিদপুরের মফিজুর

কালো আখ চাষে সাবলম্বি ফরিদপুরের মফিজুর

ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের হাট গোবিন্দপুর গ্রামের মফিজুর রহমান ফিলিপাইন জাতের কালো আখ চাষ করে বাজিমাৎ করেছেন। তিনি এ বছর ২ বিঘা জমিতে ফিলিপাইন জাতের কালো আখ চাষ করে খরচ বাদে প্রায় ৮ লাখ টাকা লাভ করেছেন। জানা গেছে, এ জাতের আখ খেতে খুবই সুমিষ্ট ও নরম হয়। একেকটি প্রায় ১৫ ফুটের মতো লম্বা হয়। জমি থেকে একেকটি আখ খুচরা ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হয়। চারা লাগানোর মাত্র ১০-১১ মাসের মাথায় ফলন পাওয়া যায়। তিনি এ জাতের আখ চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন।

মফিজুর রহমানের আখের জমির পরিমাণ ২ বিঘা। তিনি জমি লিজ নিয়ে ফিলিপাইন জাতের আখের ২৮০০ কাটিং চারা রোপণ করেন। যা থেকে মোট ১১ হাজার আখের ফলন হয়েছে। সাধারণ নিয়মেই পরিচর্যা করা হয়েছে। একেকটি কাটিং থেকে ৪-৫টি আখ হয়েছে। একেকটি আখ গাছ ১২-১৫ ফুট লম্বা হয়েছে। প্রতি পিস থেকে ৩-৪.৫ কেজি ওজনের হয়েছে। প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় ৩ কেজি করে রস পাওয়া যায়।

চাষি মফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রথমে ইন্টারনেট ও ইউটিউবের মাধ্যমে এ আখ সম্পর্কে জানতে পারি। তারপর চাষের জন্য আগ্রহী হই এবং চাষ শুরু করি। চুয়াডাঙ্গার একজন কৃষকের কাছ থেকে আখের বীজগুলো সংগ্রহ করে ২ বিঘা জমিতে রোপণ করি। তুলনামূলক অন্য ফসল থেকে পরিচর্যা ও খরচ কম। অল্প সময়ে বেশ লাভজনক।’

তিনি বলেন, ‘আমার প্রায় সাড়ে ১১ হাজার আখের ফলন হয়েছে। যাতে মোট খরচ হয়েছে ১ লাখ ২ হাজার টাকা। জমি থেকে প্রতিটি আখ ৩০-৩৫ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি করেছি। অনেকে আগ্রীম অর্ডার দিয়েছেন। প্রথম বছরে সব খরচ বাদে ৮ লাখ টাকা লাভ হয়েছে। অনেকেই আখ চাষ দেখতে আসেন। পরামর্শ নেন। বীজ কিনে নিচ্ছেন। অনেক চাষি এবং বেকার যুবক এ আখ চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।’

আখের বীজ কিনতে আসা মো. রন্টি শেখ বলেন, ‘এর আগে ইন্টারনেটে দেখেছি। মফিজুর রহমানের আখ চাষের খবর শুনে ক্ষেত দেখতে এসেছি। দেখে খুব ভালো লেগেছে। তাই তার কাছ থেকে আখের বীজ ও চাষের পরামর্শ নিতে এসেছি।’ সালথা উপজেলা থেকে আসা রাকিব হোসেন নামের এক যুবক বলেন, ‘প্রথমে ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখেছি। পরে খোঁজ নিয়ে মফিজুর রহমানের আখ চাষের খোঁজ পেয়ে ক্ষেত দেখতে এসেছি। নিজের আধা বিঘা জমিতে এ বছর এ জাতের আখ চাষ করার পরিকল্পনা ও কার্যক্রম শুরু করেছি।’

ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ফিলিপাইন জাতের আখ দেখতে কালো হলেও রস খুব মিষ্টি ও নরম। সহজে চিবিয়ে খাওয়া যায়। ফরিদপুরে এ জাতের আখ চাষ নতুন। প্রায় ২ বছর আগে এ জাতের আখের একটি প্রদর্শনী করা হয়।’
ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ফিলিপাইন জাতের আখ চাষ সহজ ও লাভজনক। এ জেলার মাটি ও আবহাওয়া এ জাতের আখ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। এ জাতের আখ চাষ জেলাজুড়ে ছড়িয়ে দিতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা চলছে। এ চাষে আগ্রহীদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সুন্দরবনে বিএনপি’র কমিটিতে আওয়ামী লীগের কর্মীদের নাম

কালো আখ চাষে সাবলম্বি ফরিদপুরের মফিজুর

আপডেট সময় ০২:২৭:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের হাট গোবিন্দপুর গ্রামের মফিজুর রহমান ফিলিপাইন জাতের কালো আখ চাষ করে বাজিমাৎ করেছেন। তিনি এ বছর ২ বিঘা জমিতে ফিলিপাইন জাতের কালো আখ চাষ করে খরচ বাদে প্রায় ৮ লাখ টাকা লাভ করেছেন। জানা গেছে, এ জাতের আখ খেতে খুবই সুমিষ্ট ও নরম হয়। একেকটি প্রায় ১৫ ফুটের মতো লম্বা হয়। জমি থেকে একেকটি আখ খুচরা ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হয়। চারা লাগানোর মাত্র ১০-১১ মাসের মাথায় ফলন পাওয়া যায়। তিনি এ জাতের আখ চাষ করে এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন।

মফিজুর রহমানের আখের জমির পরিমাণ ২ বিঘা। তিনি জমি লিজ নিয়ে ফিলিপাইন জাতের আখের ২৮০০ কাটিং চারা রোপণ করেন। যা থেকে মোট ১১ হাজার আখের ফলন হয়েছে। সাধারণ নিয়মেই পরিচর্যা করা হয়েছে। একেকটি কাটিং থেকে ৪-৫টি আখ হয়েছে। একেকটি আখ গাছ ১২-১৫ ফুট লম্বা হয়েছে। প্রতি পিস থেকে ৩-৪.৫ কেজি ওজনের হয়েছে। প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় ৩ কেজি করে রস পাওয়া যায়।

চাষি মফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রথমে ইন্টারনেট ও ইউটিউবের মাধ্যমে এ আখ সম্পর্কে জানতে পারি। তারপর চাষের জন্য আগ্রহী হই এবং চাষ শুরু করি। চুয়াডাঙ্গার একজন কৃষকের কাছ থেকে আখের বীজগুলো সংগ্রহ করে ২ বিঘা জমিতে রোপণ করি। তুলনামূলক অন্য ফসল থেকে পরিচর্যা ও খরচ কম। অল্প সময়ে বেশ লাভজনক।’

তিনি বলেন, ‘আমার প্রায় সাড়ে ১১ হাজার আখের ফলন হয়েছে। যাতে মোট খরচ হয়েছে ১ লাখ ২ হাজার টাকা। জমি থেকে প্রতিটি আখ ৩০-৩৫ টাকা পিস হিসেবে বিক্রি করেছি। অনেকে আগ্রীম অর্ডার দিয়েছেন। প্রথম বছরে সব খরচ বাদে ৮ লাখ টাকা লাভ হয়েছে। অনেকেই আখ চাষ দেখতে আসেন। পরামর্শ নেন। বীজ কিনে নিচ্ছেন। অনেক চাষি এবং বেকার যুবক এ আখ চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।’

আখের বীজ কিনতে আসা মো. রন্টি শেখ বলেন, ‘এর আগে ইন্টারনেটে দেখেছি। মফিজুর রহমানের আখ চাষের খবর শুনে ক্ষেত দেখতে এসেছি। দেখে খুব ভালো লেগেছে। তাই তার কাছ থেকে আখের বীজ ও চাষের পরামর্শ নিতে এসেছি।’ সালথা উপজেলা থেকে আসা রাকিব হোসেন নামের এক যুবক বলেন, ‘প্রথমে ইন্টারনেটের মাধ্যমে দেখেছি। পরে খোঁজ নিয়ে মফিজুর রহমানের আখ চাষের খোঁজ পেয়ে ক্ষেত দেখতে এসেছি। নিজের আধা বিঘা জমিতে এ বছর এ জাতের আখ চাষ করার পরিকল্পনা ও কার্যক্রম শুরু করেছি।’

ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ফিলিপাইন জাতের আখ দেখতে কালো হলেও রস খুব মিষ্টি ও নরম। সহজে চিবিয়ে খাওয়া যায়। ফরিদপুরে এ জাতের আখ চাষ নতুন। প্রায় ২ বছর আগে এ জাতের আখের একটি প্রদর্শনী করা হয়।’
ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ফিলিপাইন জাতের আখ চাষ সহজ ও লাভজনক। এ জেলার মাটি ও আবহাওয়া এ জাতের আখ চাষের জন্য বেশ উপযোগী। এ জাতের আখ চাষ জেলাজুড়ে ছড়িয়ে দিতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা চলছে। এ চাষে আগ্রহীদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে।’