ঢাকা ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১৬ আসামির জামিনের পর এজলাসের দিকে জুতা নিক্ষেপ

  • ফখরুল ইসলাম
  • আপডেট সময় ০৮:৩৭:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩
  • 225

আসামির জামিনের পর জুতা নিক্ষেপ

পঞ্চগড়ে একটি হত্যা মামলার ১৬ আসামিকে জামিন দিয়েছেন আদালত। এ আদেশ ঘোষণার পর বিচারকের এজলাস লক্ষ্য করে জুতা নিক্ষেপ করেছেন বাদী। আজ সোমবার দুপুরে পঞ্চগড় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের একটি কক্ষে জামিন আবেদনের ওপর শুনানির সময় এ ঘটনা ঘটে।প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবী ও পুলিশ সদস্যরা জানান, মামলার বাদী মিনারা আক্তার নিজের পায়ের জুতা খুলে এজলাস লক্ষ্য করে ছুড়ে মারেন। জুতাটি বিচারক ও আইনজীবীদের আসনের মাঝের ফাঁকা জায়গায় গিয়ে পড়ে। এর পরপরই মিনারাকে আটক করে আদালত পুলিশ। এ সময় বাদীপক্ষের আইনজীবীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত থেকে বেরিয়ে যান। এতে আদালতের কার্যক্রম কিছু সময় বন্ধ থাকে। তবে বাদীর স্বজন ও আইনজীবী জুতা নিক্ষেপের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ৫ ডিসেম্বর মিনারা আক্তার তাঁর বাবা ইয়াকুব আলীকে হত্যার অভিযোগ এনে সৎচাচা আব্দুল মোমিনসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় ইয়াকুব আলীকে কিল-ঘুষি মেরে আসামিরা হত্যা করেন বলে অভিযোগ করা হয়। সোমবার এই মামলার ১৯ আসামির মধ্যে ১৬ জন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত প্রত্যেকের জামিন মঞ্জুর করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী রাকিবুত তারেক বলেন, এ মামলার ১ থেকে ৩ নম্বর আসামিরা আত্মসমর্পণ করেননি। আত্মসমর্পণকারীদের আটজনই নারী ও তাদের সন্তান আছে। এ ছাড়া মামলার নথিতে সুরতহাল প্রতিবেদন নেই। আসামিপক্ষের বক্তব্য হলো, ভুক্তভোগী হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। তাই আদালত ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত আসামিদের জামিন দেন। এর পরই মামলার বাদী ক্ষুব্ধ হয়ে এ কাজ করেন।

পঞ্চগড় আইনীজীবী সমিতির সদস্য ইউনুস আলী লেলিন বলেন, ‘আমি আদালতে উপস্থিত ছিলাম। ওই মামলার আসামিদের জামিন মঞ্জুর করার পর বাদী ওই প্রতিক্রিয়া দেখান। বিচারকের রায়ে সংক্ষুব্ধ হলে সে জন্য উচ্চ আদালত আছে। বাদী সেখানে প্রতিকার চাইতে পারেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বলেন, ‘আসামিদের জামিন মঞ্জুর করার পর বাদীপক্ষের আইনজীবী ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। আদালতে শুরু হয় হট্টগোল। এর মধ্যেই কান্না শুরু করেন বাদী মিনারা আক্তার। পরে কয়েকজন তাঁকে বাইরে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় পেছনে ফিরে মিনারা একটি জুতা ছুড়ে মারেন।’

বাদীপক্ষের আইনজীবী হাবিবুল ইসলাম বলেন, আজ (সোমবার) বাদীর বাড়িতে বাবার কুলখানি হচ্ছে। বিচারক হত্যা মামলার ১৬ আসামিকে জামিন দিয়েছেন। তাই আমরা ক্ষুব্ধ হয়ে আদালত থেকে বেরিয়ে এসেছি। হাবিবুল বলেন, জুতা নিক্ষেপের কোনো ঘটনা ঘটেনি। যে মেয়েটির বাবাকে হত্যা করা হয়েছে আজ তাঁকেই আবার আটকে রাখা হয়েছে। এটা অমানবিক।

বাদী মিনারার বড় ভাই ফারুক হোসেন বলেন, আমার বাবাকে হত্যার এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। আজ আবার একসঙ্গে সবাইকে জামিন দিলেন আদালত। আদালতে কোনো বিচার পাইনি। এখন আবার বোনকে আটকে রেখেছে।

১৬ আসামির জামিনের পর এজলাসের দিকে জুতা নিক্ষেপ

আপডেট সময় ০৮:৩৭:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩

পঞ্চগড়ে একটি হত্যা মামলার ১৬ আসামিকে জামিন দিয়েছেন আদালত। এ আদেশ ঘোষণার পর বিচারকের এজলাস লক্ষ্য করে জুতা নিক্ষেপ করেছেন বাদী। আজ সোমবার দুপুরে পঞ্চগড় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের একটি কক্ষে জামিন আবেদনের ওপর শুনানির সময় এ ঘটনা ঘটে।প্রত্যক্ষদর্শী আইনজীবী ও পুলিশ সদস্যরা জানান, মামলার বাদী মিনারা আক্তার নিজের পায়ের জুতা খুলে এজলাস লক্ষ্য করে ছুড়ে মারেন। জুতাটি বিচারক ও আইনজীবীদের আসনের মাঝের ফাঁকা জায়গায় গিয়ে পড়ে। এর পরপরই মিনারাকে আটক করে আদালত পুলিশ। এ সময় বাদীপক্ষের আইনজীবীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত থেকে বেরিয়ে যান। এতে আদালতের কার্যক্রম কিছু সময় বন্ধ থাকে। তবে বাদীর স্বজন ও আইনজীবী জুতা নিক্ষেপের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ৫ ডিসেম্বর মিনারা আক্তার তাঁর বাবা ইয়াকুব আলীকে হত্যার অভিযোগ এনে সৎচাচা আব্দুল মোমিনসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় ইয়াকুব আলীকে কিল-ঘুষি মেরে আসামিরা হত্যা করেন বলে অভিযোগ করা হয়। সোমবার এই মামলার ১৯ আসামির মধ্যে ১৬ জন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে আদালত প্রত্যেকের জামিন মঞ্জুর করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী রাকিবুত তারেক বলেন, এ মামলার ১ থেকে ৩ নম্বর আসামিরা আত্মসমর্পণ করেননি। আত্মসমর্পণকারীদের আটজনই নারী ও তাদের সন্তান আছে। এ ছাড়া মামলার নথিতে সুরতহাল প্রতিবেদন নেই। আসামিপক্ষের বক্তব্য হলো, ভুক্তভোগী হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। তাই আদালত ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত আসামিদের জামিন দেন। এর পরই মামলার বাদী ক্ষুব্ধ হয়ে এ কাজ করেন।

পঞ্চগড় আইনীজীবী সমিতির সদস্য ইউনুস আলী লেলিন বলেন, ‘আমি আদালতে উপস্থিত ছিলাম। ওই মামলার আসামিদের জামিন মঞ্জুর করার পর বাদী ওই প্রতিক্রিয়া দেখান। বিচারকের রায়ে সংক্ষুব্ধ হলে সে জন্য উচ্চ আদালত আছে। বাদী সেখানে প্রতিকার চাইতে পারেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বলেন, ‘আসামিদের জামিন মঞ্জুর করার পর বাদীপক্ষের আইনজীবী ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। আদালতে শুরু হয় হট্টগোল। এর মধ্যেই কান্না শুরু করেন বাদী মিনারা আক্তার। পরে কয়েকজন তাঁকে বাইরে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় পেছনে ফিরে মিনারা একটি জুতা ছুড়ে মারেন।’

বাদীপক্ষের আইনজীবী হাবিবুল ইসলাম বলেন, আজ (সোমবার) বাদীর বাড়িতে বাবার কুলখানি হচ্ছে। বিচারক হত্যা মামলার ১৬ আসামিকে জামিন দিয়েছেন। তাই আমরা ক্ষুব্ধ হয়ে আদালত থেকে বেরিয়ে এসেছি। হাবিবুল বলেন, জুতা নিক্ষেপের কোনো ঘটনা ঘটেনি। যে মেয়েটির বাবাকে হত্যা করা হয়েছে আজ তাঁকেই আবার আটকে রাখা হয়েছে। এটা অমানবিক।

বাদী মিনারার বড় ভাই ফারুক হোসেন বলেন, আমার বাবাকে হত্যার এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। আজ আবার একসঙ্গে সবাইকে জামিন দিলেন আদালত। আদালতে কোনো বিচার পাইনি। এখন আবার বোনকে আটকে রেখেছে।