ঢাকা ০৮:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দলীয় সরকারের অধীনে ৭টি নির্বাচনেই ক্ষমতাসীন দল জয়লাভ করে

দলীয় সরকারের অধীনে স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত সাতটি নির্বাচন হয়েছে, প্রত্যেকটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল জয়লাভ করে। পরে এসব নির্বাচনের ভোটে কারচুপি ও জালিয়াতির প্রমাণ মিলে। এখন আবার আজ্ঞাবহ ইসিকে দিয়ে একতরফা তফসিল ঘোষণা করে সরকার নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে।

বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মুক্তি দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত সমাবেশ থেকে দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় দাবি করে এসব কথা বলেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা।

নব্বইয়ের এরশাদবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা বলেন, অবৈধ সামরিক শাসন হটাও, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা, লুটপাট-দুর্নীতি বন্ধ, ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য প্রায় ৯ বছর স্বৈরাচারী সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ৮ দল, বিএনপির নেতৃত্বে ৭ দল এবং ৫ দলীয় জোটের ধারাবাহিক আন্দোলনের ফলে সামরিক জান্তা এরশাদ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। ওই আন্দোলনে ডা. শামসুল আলম খান মিলন, নূর হোসেনসহ অসংখ্য নেতা-কর্মী প্রাণ বিসর্জন দেন।

পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আপেক্ষিক অর্থে ১৯৯১-এ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই সময়ে তিন জোটের রূপরেখায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ভবিষ্যতেও যেন জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে। সেজন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে এই তিনটি নির্বাচনও আপেক্ষিক অর্থে কিছুটা গ্রহণযোগ্য ছিল।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, স্বাধীনতার পর দলীয় সরকারের অধীনে সাতটি নির্বাচন হয়েছে, প্রত্যেকটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল জয়লাভ করে। এসব নির্বাচনে ভোটে কারচুপি ও জালিয়াতির প্রমাণ মিলে। ২০১৪-তে ভোটারবিহীন, ২০১৮-তে নিশীভোটের মাধ্যমে আওয়ামী জোট ক্ষমতায় আসে। এখন আবার আজ্ঞাবহ ইসিকে দিয়ে একতরফা তফসিল ঘোষণা করে সরকার নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বিরোধী মত-পথকে দমনপীড়নের মাধ্যমে যেনতেনভাবে ভোট করে ক্ষমতায় যেতে আওয়ামী সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে।

এ সময় অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ ও একতরফা তফসিল বাতিল করে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তনের আহ্বান জানান বাম গণতান্ত্রিক জোট নেতারা।

সমাবেশে জোটের রংপুর জেলা সমন্বয়ক ও জেলা বাসদের আহ্বায়ক কমরেড আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন কমিউনিস্ট পার্টির রংপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক কমরেড কাফি সরকার, বাসদ মার্ক্সবাদী রংপুর জেলার আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, বাসদ সদস্য সচিব মমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে গণতন্ত্র মুক্তি দিবস উপলক্ষ্যে রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন নেতৃবৃন্দ।

জনপ্রিয় সংবাদ

টানা চতুর্থবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন ম্যানসিটি

দলীয় সরকারের অধীনে ৭টি নির্বাচনেই ক্ষমতাসীন দল জয়লাভ করে

আপডেট সময় ০৭:১৬:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৩

দলীয় সরকারের অধীনে স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত সাতটি নির্বাচন হয়েছে, প্রত্যেকটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল জয়লাভ করে। পরে এসব নির্বাচনের ভোটে কারচুপি ও জালিয়াতির প্রমাণ মিলে। এখন আবার আজ্ঞাবহ ইসিকে দিয়ে একতরফা তফসিল ঘোষণা করে সরকার নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে।

বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মুক্তি দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত সমাবেশ থেকে দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয় দাবি করে এসব কথা বলেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা।

নব্বইয়ের এরশাদবিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা বলেন, অবৈধ সামরিক শাসন হটাও, মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা, লুটপাট-দুর্নীতি বন্ধ, ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য প্রায় ৯ বছর স্বৈরাচারী সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ৮ দল, বিএনপির নেতৃত্বে ৭ দল এবং ৫ দলীয় জোটের ধারাবাহিক আন্দোলনের ফলে সামরিক জান্তা এরশাদ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। ওই আন্দোলনে ডা. শামসুল আলম খান মিলন, নূর হোসেনসহ অসংখ্য নেতা-কর্মী প্রাণ বিসর্জন দেন।

পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আপেক্ষিক অর্থে ১৯৯১-এ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই সময়ে তিন জোটের রূপরেখায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ভবিষ্যতেও যেন জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে। সেজন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে এই তিনটি নির্বাচনও আপেক্ষিক অর্থে কিছুটা গ্রহণযোগ্য ছিল।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, স্বাধীনতার পর দলীয় সরকারের অধীনে সাতটি নির্বাচন হয়েছে, প্রত্যেকটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল জয়লাভ করে। এসব নির্বাচনে ভোটে কারচুপি ও জালিয়াতির প্রমাণ মিলে। ২০১৪-তে ভোটারবিহীন, ২০১৮-তে নিশীভোটের মাধ্যমে আওয়ামী জোট ক্ষমতায় আসে। এখন আবার আজ্ঞাবহ ইসিকে দিয়ে একতরফা তফসিল ঘোষণা করে সরকার নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে বিরোধী মত-পথকে দমনপীড়নের মাধ্যমে যেনতেনভাবে ভোট করে ক্ষমতায় যেতে আওয়ামী সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে।

এ সময় অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ ও একতরফা তফসিল বাতিল করে সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ব্যবস্থা প্রবর্তনের আহ্বান জানান বাম গণতান্ত্রিক জোট নেতারা।

সমাবেশে জোটের রংপুর জেলা সমন্বয়ক ও জেলা বাসদের আহ্বায়ক কমরেড আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন কমিউনিস্ট পার্টির রংপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক কমরেড কাফি সরকার, বাসদ মার্ক্সবাদী রংপুর জেলার আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন বাবলু, বাসদ সদস্য সচিব মমিনুল ইসলাম প্রমুখ।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে গণতন্ত্র মুক্তি দিবস উপলক্ষ্যে রংপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন নেতৃবৃন্দ।