ঢাকা ১০:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিএনপির ৭২টি জেলা কার্যালয় বন্ধ

গত ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ। এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো খোলার কোনো লক্ষণ নেই।

কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছাড়াও দলটির জেলা কার্যালয়গুলোর বেশির ভাগ তালাবদ্ধ। সেগুলো কবে খোলা যাবে, কবে নেতা-কর্মীরা আনাগোনা শুরু করবেন, তা কেউ জানেন না।

দেশের ৬৪ জেলায় বিএনপির সাংগঠনিক জেলা আছে ৮২ টি। এরমধ্যে ৭২ টি কার্যালয়ই বন্ধ। খোলা আছে চারটি কার্যালয় আর চারটিতে কার্যালয় নেই। দেশের এক জাতীয় পত্রিকায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।

রিপোর্টে ‍নেতা-কর্মীদের উদৃতি ‍বলা হয়, কার্যালয় ঘিরে পুলিশের পাহারা, টহল অথবা গোয়েন্দাদের তৎপরতা থাকে। গেলেই গ্রেপ্তারের ভয় আছে। নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে। ফলে কার্যালয় খোলা হয় না।

ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলায় বিএনপির কার্যালয় খোলা পাওয়া গেছে তা হলো । তবে এসব কার্যালয়ে নেতা-কর্মীরা আসে না বললেই চলে। জেলা পর্যায়ের নেতারা বলছেন, গ্রেপ্তারের ভয়ে তাঁরা সেখানে যান না।

রিপোর্টে বলা হয়, কার্যালয়গুলোর বেশির ভাগ বন্ধ রয়েছে গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে, যেদিন ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশের অভিযানে পণ্ড হয়ে যায়। ওই দিন পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশের এক সদস্যসহ দুজন নিহত হন। এরপর পুলিশ সারা দেশে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা এবং বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ২৮ অক্টোবরের ওই মহাসমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি।

বিএনপির মহাসচিবসহ দলটির বেশিরভাগ কেন্দ্রীয় নেতাই কারাগারে আছেন। বাকীরা আত্মগোপনে। দেশজুড়ে আন্দোলন চলমান। সেই সাথে চলছে গ্রেফতার। বিএনপি সূত্র বলছে তাদের ১৭ হাজারের বেশি নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। এছাড়াও নেতা-কর্মীদের বাসায় অভিযান করতে গিয়ে আসামী না পেলে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বিরোধী নেতা-কর্মীদের ওপর এত মামলা ও অত্যাচার তিনি কখনো দেখেননি। এমনকি এরশাদের সামরিক শাসনের সময়ও নয়। তিনি বলেন, পুলিশ নেতা-কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে না পেলে স্বজনদের ধরে আনছে। বাড়িতে বাড়িতে হামলা করছে মুখোশধারী ও ‘হেলমেট’ বাহিনী।

রিপোর্টে আরও বলা হয় , ২৮ অক্টোবর দুপুরে মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর ওই দিন রাতেই ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা দেওয়া হয়। পুলিশ বলছে, তারা তালা দেয়নি। বিএনপির দাবি, পুলিশই তালা দিয়েছে।

পুলিশ গত ২৯ অক্টোবর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কড়া পাহারা বসায়। সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট কার্যালয়টির সামনে ‘ডু-নট ক্রস-ক্রাইম সিন’ লেখা হলুদ ফিতা দিয়ে ঘিরে রাখে। দুই দিন পর দুই পাশে বসানো হয় কাঁটাতারের ব্যারিকেড। ১৪ নভেম্বর ব্যারিকেড সরানো হয়। তবে এখনো বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়মিত পুলিশি পাহারা ও গোয়েন্দাদের উপস্থিতি থাকে।

এছাড়াও বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইসলামী সংগঠন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের সবগুলো দলীয় কার্যালয় বন্ধ আছে প্রায় ১০ বছর ধরে।

কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ জেলা, মহানগরগযলোর কার্যালয়ে তালা ঝুলছে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলের। নেতা-কর্মীরা হয় কারাগারে , না হয় আত্মগোপনে। এমতাবস্থায় দেশে চলমান নির্বাচনী প্রক্রিয়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে সেটাই দেখার বিষয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

যে কারণে হয় মরণ ব্যাধি রোগ ক্যান্সার

বিএনপির ৭২টি জেলা কার্যালয় বন্ধ

আপডেট সময় ১২:৫৩:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৩

গত ২৮ অক্টোবর থেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ। এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো খোলার কোনো লক্ষণ নেই।

কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছাড়াও দলটির জেলা কার্যালয়গুলোর বেশির ভাগ তালাবদ্ধ। সেগুলো কবে খোলা যাবে, কবে নেতা-কর্মীরা আনাগোনা শুরু করবেন, তা কেউ জানেন না।

দেশের ৬৪ জেলায় বিএনপির সাংগঠনিক জেলা আছে ৮২ টি। এরমধ্যে ৭২ টি কার্যালয়ই বন্ধ। খোলা আছে চারটি কার্যালয় আর চারটিতে কার্যালয় নেই। দেশের এক জাতীয় পত্রিকায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।

রিপোর্টে ‍নেতা-কর্মীদের উদৃতি ‍বলা হয়, কার্যালয় ঘিরে পুলিশের পাহারা, টহল অথবা গোয়েন্দাদের তৎপরতা থাকে। গেলেই গ্রেপ্তারের ভয় আছে। নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে। ফলে কার্যালয় খোলা হয় না।

ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, কুষ্টিয়া ও মেহেরপুর জেলায় বিএনপির কার্যালয় খোলা পাওয়া গেছে তা হলো । তবে এসব কার্যালয়ে নেতা-কর্মীরা আসে না বললেই চলে। জেলা পর্যায়ের নেতারা বলছেন, গ্রেপ্তারের ভয়ে তাঁরা সেখানে যান না।

রিপোর্টে বলা হয়, কার্যালয়গুলোর বেশির ভাগ বন্ধ রয়েছে গত ২৮ অক্টোবরের পর থেকে, যেদিন ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশের অভিযানে পণ্ড হয়ে যায়। ওই দিন পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশের এক সদস্যসহ দুজন নিহত হন। এরপর পুলিশ সারা দেশে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করে। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠা এবং বর্তমান সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ২৮ অক্টোবরের ওই মহাসমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি।

বিএনপির মহাসচিবসহ দলটির বেশিরভাগ কেন্দ্রীয় নেতাই কারাগারে আছেন। বাকীরা আত্মগোপনে। দেশজুড়ে আন্দোলন চলমান। সেই সাথে চলছে গ্রেফতার। বিএনপি সূত্র বলছে তাদের ১৭ হাজারের বেশি নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়েছেন। এছাড়াও নেতা-কর্মীদের বাসায় অভিযান করতে গিয়ে আসামী না পেলে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বিরোধী নেতা-কর্মীদের ওপর এত মামলা ও অত্যাচার তিনি কখনো দেখেননি। এমনকি এরশাদের সামরিক শাসনের সময়ও নয়। তিনি বলেন, পুলিশ নেতা-কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে না পেলে স্বজনদের ধরে আনছে। বাড়িতে বাড়িতে হামলা করছে মুখোশধারী ও ‘হেলমেট’ বাহিনী।

রিপোর্টে আরও বলা হয় , ২৮ অক্টোবর দুপুরে মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যাওয়ার পর ওই দিন রাতেই ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা দেওয়া হয়। পুলিশ বলছে, তারা তালা দেয়নি। বিএনপির দাবি, পুলিশই তালা দিয়েছে।

পুলিশ গত ২৯ অক্টোবর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কড়া পাহারা বসায়। সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট কার্যালয়টির সামনে ‘ডু-নট ক্রস-ক্রাইম সিন’ লেখা হলুদ ফিতা দিয়ে ঘিরে রাখে। দুই দিন পর দুই পাশে বসানো হয় কাঁটাতারের ব্যারিকেড। ১৪ নভেম্বর ব্যারিকেড সরানো হয়। তবে এখনো বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়মিত পুলিশি পাহারা ও গোয়েন্দাদের উপস্থিতি থাকে।

এছাড়াও বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইসলামী সংগঠন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের সবগুলো দলীয় কার্যালয় বন্ধ আছে প্রায় ১০ বছর ধরে।

কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ জেলা, মহানগরগযলোর কার্যালয়ে তালা ঝুলছে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলের। নেতা-কর্মীরা হয় কারাগারে , না হয় আত্মগোপনে। এমতাবস্থায় দেশে চলমান নির্বাচনী প্রক্রিয়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে কতটা গ্রহণযোগ্য হবে সেটাই দেখার বিষয়।