ঢাকা ০৮:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে বাসভবনে যাবেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী Logo বিধিমালা ভঙ্গের পরও হামীমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি কমিশন: বাকের Logo জনগণের ভোটে বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে: জি কে গউছ Logo মুন্সীগঞ্জে ছাত্রশিবিরের “A+ সংবর্ধনা” অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে উদ্দীপনা Logo এখন জাতীয় পার্টি বিরোধী দল হওয়ার স্বপ্ন দেখছে: নুর Logo শেখ হাসিনা যা চাচ্ছেন, পিআর পদ্ধতি অনেকটা ওইরকম: রিজভী Logo কেন্দ্র দখল করলেই ভোট বাতিল করা হবে: সিইসি নাসির উদ্দিন Logo বাজারে কমছে চালের দাম,বন্দরে ঢুকছে ভারতীয় চাল বোঝাই শত শত ট্রাক Logo চকরিয়া থানায় যুবকের মৃত্যু: এএসআইসহ ৩ পুলিশ প্রত্যাহার Logo ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে ব্যর্থ, পদত্যাগ করলেন ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাদেশের প্রথম মডেল ‘মসলা গ্রাম’: কুষ্টিয়ার বড়িয়ায় কৃষিতে নতুন বিপ্লব

কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার ছোট্ট একটি জনপদ—বড়িয়া। কয়েক বছর আগেও যা ছিল ধান ও গমের পরিচিত মাঠঘাট, আজ সেটি রূপ নিয়েছে দেশের প্রথম ‘মডেল মসলা গ্রামে’। আর এই রূপান্তরের নেপথ্যে আছে সরকারি প্রণোদনা, কৃষকের পরিশ্রম, আর আধুনিক প্রযুক্তির যুগোপযোগী ব্যবহার।

গ্রামের ভেতর প্রবেশ করতেই দু’পাশে চোখে পড়ে খাঁচা পদ্ধতিতে লাগানো তেজপাতা, দারুচিনি, গোলমরিচের গাছ। কেউ ভাবতেও পারেনি, এক সময়কার পতিত জমিতে এতটা সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে। জিও ব্যাগে আদা, হলুদ কিংবা উঠানে ক্যাপসিকাম—গ্রামের প্রতিটি চৌহদ্দি যেন এখন ছোট্ট একটি গবেষণাক্ষেত্র।

এই প্রকল্পের আওতায় বড়িয়ায় চাষ হচ্ছে মোট ১৪ ধরনের মসলা। বাড়ির পাশের পুকুরপাড় কিংবা পরিত্যক্ত কোনো আঙিনা—সব জায়গাই এখন চাষের আওতায়। এখানকার কৃষক আবির হাসান বলেন, “আমার বাড়ির পেছনের যে জায়গাটা আগের বছর ঘাসে ভরা ছিল, এখন সেখানে আদা চাষ করে মাসে ভালো আয় করছি। মাটিকে ঠিকভাবে চিনতে পারলে সে কখনো ফেরায় না।”

সরকারের ‘মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের অধীনে এই গ্রামের ৬ হাজার মসলা গাছ লাগানো হয়েছে। মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের পর্যবেক্ষণ ও সহযোগিতায় এই প্রকল্পে যুক্ত হয়েছেন শতাধিক কৃষক।

২০২৩ সালের জুলাই মাসে শুরু হওয়া এই পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্প এখন বড়িয়ার মানুষের জীবনে অর্থনৈতিক স্থিতি ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এনে দিয়েছে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই এখন কৃষিকাজে যুক্ত, অনেক তরুণও পড়ালেখার পাশাপাশি কৃষিকে নিচ্ছে পেশা হিসেবে।

প্রকল্প পরিচালক রাসেল আহমেদ বলেন, “এই মডেল গ্রাম শুধু ফসল উৎপাদনের জন্য নয়, একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো হিসেবেও কাজ করবে। এখান থেকেই কৃষকেরা মসলার বীজ ও চারা সরবরাহ করতে পারবেন, যা ভবিষ্যতে জাতীয় চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে।”

বড়িয়া এখন শুধু একটি গ্রাম নয়—এটি একটি দর্শন, যেখানে কৃষি মানে শুধু জমিতে ফসল ফলানো নয়, বরং একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের বীজ বোনা।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে বাসভবনে যাবেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাদেশের প্রথম মডেল ‘মসলা গ্রাম’: কুষ্টিয়ার বড়িয়ায় কৃষিতে নতুন বিপ্লব

আপডেট সময় ০৩:৫২:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার ছোট্ট একটি জনপদ—বড়িয়া। কয়েক বছর আগেও যা ছিল ধান ও গমের পরিচিত মাঠঘাট, আজ সেটি রূপ নিয়েছে দেশের প্রথম ‘মডেল মসলা গ্রামে’। আর এই রূপান্তরের নেপথ্যে আছে সরকারি প্রণোদনা, কৃষকের পরিশ্রম, আর আধুনিক প্রযুক্তির যুগোপযোগী ব্যবহার।

গ্রামের ভেতর প্রবেশ করতেই দু’পাশে চোখে পড়ে খাঁচা পদ্ধতিতে লাগানো তেজপাতা, দারুচিনি, গোলমরিচের গাছ। কেউ ভাবতেও পারেনি, এক সময়কার পতিত জমিতে এতটা সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে। জিও ব্যাগে আদা, হলুদ কিংবা উঠানে ক্যাপসিকাম—গ্রামের প্রতিটি চৌহদ্দি যেন এখন ছোট্ট একটি গবেষণাক্ষেত্র।

এই প্রকল্পের আওতায় বড়িয়ায় চাষ হচ্ছে মোট ১৪ ধরনের মসলা। বাড়ির পাশের পুকুরপাড় কিংবা পরিত্যক্ত কোনো আঙিনা—সব জায়গাই এখন চাষের আওতায়। এখানকার কৃষক আবির হাসান বলেন, “আমার বাড়ির পেছনের যে জায়গাটা আগের বছর ঘাসে ভরা ছিল, এখন সেখানে আদা চাষ করে মাসে ভালো আয় করছি। মাটিকে ঠিকভাবে চিনতে পারলে সে কখনো ফেরায় না।”

সরকারের ‘মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের অধীনে এই গ্রামের ৬ হাজার মসলা গাছ লাগানো হয়েছে। মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তাদের পর্যবেক্ষণ ও সহযোগিতায় এই প্রকল্পে যুক্ত হয়েছেন শতাধিক কৃষক।

২০২৩ সালের জুলাই মাসে শুরু হওয়া এই পাঁচ বছর মেয়াদি প্রকল্প এখন বড়িয়ার মানুষের জীবনে অর্থনৈতিক স্থিতি ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এনে দিয়েছে। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই এখন কৃষিকাজে যুক্ত, অনেক তরুণও পড়ালেখার পাশাপাশি কৃষিকে নিচ্ছে পেশা হিসেবে।

প্রকল্প পরিচালক রাসেল আহমেদ বলেন, “এই মডেল গ্রাম শুধু ফসল উৎপাদনের জন্য নয়, একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো হিসেবেও কাজ করবে। এখান থেকেই কৃষকেরা মসলার বীজ ও চারা সরবরাহ করতে পারবেন, যা ভবিষ্যতে জাতীয় চাহিদা পূরণে সহায়ক হবে।”

বড়িয়া এখন শুধু একটি গ্রাম নয়—এটি একটি দর্শন, যেখানে কৃষি মানে শুধু জমিতে ফসল ফলানো নয়, বরং একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের বীজ বোনা।