ঢাকা ০১:৫৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

১১ ঘণ্টা পর বেতন নিয়ে বাড়ি ফিরলেন শ্রমিকরা

১১ ঘণ্টা পর বেতন নিয়ে বাড়ি ফিরলেন শ্রমিকরা

গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় বকেয়া বেতনসহ কয়েকটি দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা। এতে সকাল থেকেই বন্ধ হয়ে পড়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল। এর ফলে কয়েক কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজটে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন ওই মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকরা।

বকেয়া বেতনের দাবিতে গতকাল সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকাল হতে পুনরায় শুরু হয় আন্দোলন। অবশেষে ১ মাসের বেতন নিয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে মহাসড়ক থেকে সরে যান শ্রমিকরা।

শিল্প পুলিশ, থানা পুলিশ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুর মহানগরীর টিএন্ডজেড গ্রুপের এপিএল অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা গত মাসের শুরুতে বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। কিন্তু মালিকপক্ষ বেতন দিতে অপারগতা প্রকাশ করে ৩০ সেপ্টেম্বর বেতন পরিশোধ করার কথা জানায়। এরপর শ্রমিকরা আর কোনো আন্দোলন বা বিক্ষোভ করেনি। পূর্ব নির্ধারিত অনুযায়ী সোমবার বিকালে বেতন চাইলে কর্তৃপক্ষ বেতন দেয়নি। পরে রাতেই শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন এবং মহাসড়ক অবরোধ করেন। এদিন রাত ১২ টার দিকে শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে যান।

মঙ্গলবার সকাল থেকে শ্রমিকরা ফের বেতনের দাবিতে ভোগড়া মোড়ে মহাসড়ক অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অবশেষে ১ মাসের বেতন দিলে শ্রমিকরা সন্ধ্যা ৭ টার দিকে মহাসড়ক ছেড়ে দেন।

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এপিএল অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানায় প্রায় ১ হাজার ৭০০ জন শ্রমিক কাজ করেন। পূর্ব নোটিস ছাড়াই গত ১ সেপ্টেম্বর কারখানা বন্ধ ঘোষণা এবং কারখানাটি মোরগখাল হতে ঝাজর এলাকায় স্থানান্তরিত করে কর্তৃপক্ষ। তখন থেকেই শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন পাওনা ছিল কারখানায়।

শ্রমিকরা এ নিয়ে আন্দোলন করলে সেনাবাহিনী, শ্রমিক ও মালিকপক্ষ বসে ২৫ সেপ্টেম্বর বকেয়া বেতন দেওয়ার ঘোষণা দেন। নির্ধারিত সময়ের ৫ দিন পরেও বেতন না দিলে গতকাল হতে আন্দোলন শুরু করেন শ্রমিকরা।

শ্রমিকনেতা ও অভ্যুত্থানকারী ছাত্র শ্রমিক জনতার সংগঠক বলেন, ‘এ কারখানায় তিন মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বেতন পরিশোধ না করতে পারায় শ্রমিকরা বাড়ি ভাড়া দিতে পারছে না, মুদি দোকানের বাকি পরিশোধ করতে পারছে না। গত সপ্তাহে কারখানায় সেনাবাহিনী-মালিক-শ্রমিক বৈঠকে মালিকপক্ষ কথা দিয়েছিল ২৫ সেপ্টেম্বর বেতন পরিশোধ করবে। অথচ ৫ দিন পার হয়ে গেছে, বেতন পরিশোধ করা হয়নি। এজন্য আজকে তারা আন্দোলনে নামে। আজ ১ মাসের বকেয়া বেতন দেওয়ায় রাতে মহাসড়ক ছেড়ে দেন শ্রমিকরা।’

গাজীপুর মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার অশোক কুমার পাল জানান, সকাল থেকে শ্রমিকরা চান্দনা চৌরাস্তা এবং ঢাকা রোডের ভাওয়াল পয়েন্টের সামনে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। সন্ধ্যার পর বেতন পেয়ে তারা মহাসড়ক ছেড়ে দিয়েছে।

ট্যাগস :

মাহমুদ উল্লাহর বিদায়ী ম্যাচে বড় হার টাইগারদের

১১ ঘণ্টা পর বেতন নিয়ে বাড়ি ফিরলেন শ্রমিকরা

আপডেট সময় ০৮:৫৯:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০২৪

গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় বকেয়া বেতনসহ কয়েকটি দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকরা। এতে সকাল থেকেই বন্ধ হয়ে পড়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যান চলাচল। এর ফলে কয়েক কিলোমিটার এলাকায় তীব্র যানজটে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন ওই মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকরা।

বকেয়া বেতনের দাবিতে গতকাল সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) সকাল হতে পুনরায় শুরু হয় আন্দোলন। অবশেষে ১ মাসের বেতন নিয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে মহাসড়ক থেকে সরে যান শ্রমিকরা।

শিল্প পুলিশ, থানা পুলিশ ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুর মহানগরীর টিএন্ডজেড গ্রুপের এপিএল অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা গত মাসের শুরুতে বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। কিন্তু মালিকপক্ষ বেতন দিতে অপারগতা প্রকাশ করে ৩০ সেপ্টেম্বর বেতন পরিশোধ করার কথা জানায়। এরপর শ্রমিকরা আর কোনো আন্দোলন বা বিক্ষোভ করেনি। পূর্ব নির্ধারিত অনুযায়ী সোমবার বিকালে বেতন চাইলে কর্তৃপক্ষ বেতন দেয়নি। পরে রাতেই শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেন এবং মহাসড়ক অবরোধ করেন। এদিন রাত ১২ টার দিকে শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে যান।

মঙ্গলবার সকাল থেকে শ্রমিকরা ফের বেতনের দাবিতে ভোগড়া মোড়ে মহাসড়ক অবরোধ সৃষ্টি করেন। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অবশেষে ১ মাসের বেতন দিলে শ্রমিকরা সন্ধ্যা ৭ টার দিকে মহাসড়ক ছেড়ে দেন।

শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এপিএল অ্যাপারেলস লিমিটেড কারখানায় প্রায় ১ হাজার ৭০০ জন শ্রমিক কাজ করেন। পূর্ব নোটিস ছাড়াই গত ১ সেপ্টেম্বর কারখানা বন্ধ ঘোষণা এবং কারখানাটি মোরগখাল হতে ঝাজর এলাকায় স্থানান্তরিত করে কর্তৃপক্ষ। তখন থেকেই শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন পাওনা ছিল কারখানায়।

শ্রমিকরা এ নিয়ে আন্দোলন করলে সেনাবাহিনী, শ্রমিক ও মালিকপক্ষ বসে ২৫ সেপ্টেম্বর বকেয়া বেতন দেওয়ার ঘোষণা দেন। নির্ধারিত সময়ের ৫ দিন পরেও বেতন না দিলে গতকাল হতে আন্দোলন শুরু করেন শ্রমিকরা।

শ্রমিকনেতা ও অভ্যুত্থানকারী ছাত্র শ্রমিক জনতার সংগঠক বলেন, ‘এ কারখানায় তিন মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বেতন পরিশোধ না করতে পারায় শ্রমিকরা বাড়ি ভাড়া দিতে পারছে না, মুদি দোকানের বাকি পরিশোধ করতে পারছে না। গত সপ্তাহে কারখানায় সেনাবাহিনী-মালিক-শ্রমিক বৈঠকে মালিকপক্ষ কথা দিয়েছিল ২৫ সেপ্টেম্বর বেতন পরিশোধ করবে। অথচ ৫ দিন পার হয়ে গেছে, বেতন পরিশোধ করা হয়নি। এজন্য আজকে তারা আন্দোলনে নামে। আজ ১ মাসের বকেয়া বেতন দেওয়ায় রাতে মহাসড়ক ছেড়ে দেন শ্রমিকরা।’

গাজীপুর মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার অশোক কুমার পাল জানান, সকাল থেকে শ্রমিকরা চান্দনা চৌরাস্তা এবং ঢাকা রোডের ভাওয়াল পয়েন্টের সামনে ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। সন্ধ্যার পর বেতন পেয়ে তারা মহাসড়ক ছেড়ে দিয়েছে।