ঢাকা ০১:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঢাকায় গাইল পাকিস্তানের ব্যান্ড ‘জাল’

দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঢাকায় গাইল পাকিস্তানের ব্যান্ড ‘জাল’

সেনাবাহিনীর সদস্যদের হস্তক্ষেপে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে পাকিস্তানের ব্যান্ড ‘জাল’-এর অনুষ্ঠান। পাকিস্তানের এই গানের দলটি ঢাকায় গাইতে এসেছে ১৪ বছর পর; তাদেরকে কেন্দ্র করে আয়োজিত ‘লেজেন্ডস অব দ্য ডিকেড’ নামের কনসার্ট শুরুর পর বিশৃঙ্খলার কারণে মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়, যা দেড় ঘণ্টা বন্ধ বাদে আবার শুরু হয় সেনা হস্তক্ষেপে।

শনিবার বিকালে ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্কের নর্থ কোর্টে কনসার্ট শুরুর পর ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি দর্শক ঢুকলে পড়লে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। এক পর্যায়ে দর্শকদের হৈ চৈ বাড়তে থাকলে মঞ্চে থাকা ব্যান্ড দল ‘ভাইকিংস’ গান গাওয়া বন্ধ করে দেয়।

‘জাল’ ও বাংলাদেশের অর্থহীনসহ আরও কয়েকটি ব্যান্ডের গান শুনতে এদিন দুপুর গড়াতেই অনুষ্ঠানস্থলে দর্শক শ্রোতা বাড়তে থাকে ‘লেজেন্ডস অব দ্য ডেকেড’ শিরোনামের এ কনসার্টে। যমুনা ফিউচার পার্কের নর্থ কোর্টে বিকাল ৫টায় শুরু হয় কনসার্ট। প্রথমে পারফর্ম করে ব্যান্ড ‘কনক্লুশন’।

সময় বাড়তেই দর্শক বাড়তে থাকলে হল ভরে ওঠে, জায়গার সংকুলন হচ্ছিল না। কনসার্ট দেখার জন্য পর্যাপ্ত এলইডি স্ক্রিন না থাকা, গেইট ভেঙে ঢুকে পড়ার ঘটনাও ঘটে এসময় বলে জানান একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী।

বিশৃঙ্খলার রেশ চলে যায় মঞ্চ পর্যন্ত। সেসময় ‘কনক্লুশন’ এর গান শেষে মঞ্চে ওঠে ভাইকিংস। পাঁচটি গান পর্যন্ত গেয়েছেন ব্যান্ডটি। ষষ্ঠ গান ‘নীল হব’ শুরু করলেও শেষ করতে পারেনি ব্যান্ডটি। হইচই, গণ্ডগোলে সেসময় নিরাপত্তার জন্য মঞ্চ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় ব্যান্ডটিকে।

এরপর প্রায় দেড় ঘন্টা বন্ধ ছিল কনসার্ট। শ্রোতাদের শান্ত করতে মঞ্চে এসে আয়োজক কোম্পানি অ্যাসেনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনন্দ চৌধুরী ঘোষণা দেন কনসার্ট দেখার জন্য নর্থ কোর্টে সামিয়ানা খুলে দেওয়ার। চারপাশ থেকে যাতে সবাই কনসার্ট দেখতে পারে সেজন্য এমন সিদ্ধান্ত বলে জানান তিনি।

তবুও বিশৃঙ্খলা থামাতে না পেরে মঞ্চে উঠেন যমুনা গ্রুপের ডিরেক্টর আলমগীর আলম। বলেন, এই কনসার্ট ঢাকার পূর্বাচলে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিরাপত্তা ব্যবস্থাগত কারণে তা সেখানে আয়োজনে অনুমতি দেওয়া হয়নি। পরে নর্থ কোর্টে কনসার্ট করার অনুমতি দেওয়া হয়।

“কিন্তু আপনাদের বিশৃঙ্খলার কারণে এইখানের দোকান মালিকরা আতংকে আছে। বারবার কনসার্ট বন্ধ করার জন্য বলা হচ্ছে। আমরা নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী ডেকেছি।”

এরপর সেনা সদস্যদের হস্তক্ষেপে আবারও শুরু হয় কনসার্ট। দেড় বছর পরে মঞ্চে উঠে ‘অর্থহীন’ ব্যান্ডের সাইদুস সালেহীন সুমন। যিনি বেহাবাবা সুমন নামে পরিচিত। সুমনের ‘চাইতে পার’ গান শুরু হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

‘অর্থহীন’র পর কনসার্টে পারফর্ম করার কথা পাকিস্তানের ব্যান্ড ‘জাল’ এর। দীর্ঘ বিরতির পর এ দুই ব্যান্ডের গান শুনতে শ্রোতাদের আগ্রহও ছিল ব্যাপক, যা বোঝা গেছে তাদের উপস্থিতি দেখে। এর আগে ২০১০ সালে প্রথমবার ঢাকায় এসেছিল ‘জাল’। এরপর বাংলাদেশের আর কোনো কনসার্টে দেখা যায়নি তাদের।

২০০২ সালে পাকিস্তানের লাহোরে রক গান নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে ‘জাল’। ২০০৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বরে প্রকাশ পায় জালের প্রথম অ্যালবাম ‘আদাত’। এই অ্যালবামের ‘লামহে’, ‘আদাত’, ‘পানছি’, ‘বিখরা হু ম্যায়’ গানগুলো জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এই অ্যালবামের ২০ বছর উদযাপন হিসেবে এই কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে। ঢাকায় এসে দলটি নতুন একটি অ্যাবামের ঘোষণাও দিয়েছে। তাদের এ অ্যালবামের নাম হবে ‘বারিশ’।

সম্প্রতি কোক স্টুডিও পাকিস্তান এবং পেপসি ব্যাটল অব দ্যা ব্যান্ডসে গান গেয়ে নতুন করে দর্শকদের প্রশংসা পায় দলটি। ব্যান্ডটির বর্তমান সদস্য গওহর মুমতায, আমির আজহার ও সালমান অ্যালবার্ট।

মাহমুদ উল্লাহর বিদায়ী ম্যাচে বড় হার টাইগারদের

দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঢাকায় গাইল পাকিস্তানের ব্যান্ড ‘জাল’

আপডেট সময় ১১:১২:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সেনাবাহিনীর সদস্যদের হস্তক্ষেপে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে পাকিস্তানের ব্যান্ড ‘জাল’-এর অনুষ্ঠান। পাকিস্তানের এই গানের দলটি ঢাকায় গাইতে এসেছে ১৪ বছর পর; তাদেরকে কেন্দ্র করে আয়োজিত ‘লেজেন্ডস অব দ্য ডিকেড’ নামের কনসার্ট শুরুর পর বিশৃঙ্খলার কারণে মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়, যা দেড় ঘণ্টা বন্ধ বাদে আবার শুরু হয় সেনা হস্তক্ষেপে।

শনিবার বিকালে ঢাকার যমুনা ফিউচার পার্কের নর্থ কোর্টে কনসার্ট শুরুর পর ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি দর্শক ঢুকলে পড়লে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। এক পর্যায়ে দর্শকদের হৈ চৈ বাড়তে থাকলে মঞ্চে থাকা ব্যান্ড দল ‘ভাইকিংস’ গান গাওয়া বন্ধ করে দেয়।

‘জাল’ ও বাংলাদেশের অর্থহীনসহ আরও কয়েকটি ব্যান্ডের গান শুনতে এদিন দুপুর গড়াতেই অনুষ্ঠানস্থলে দর্শক শ্রোতা বাড়তে থাকে ‘লেজেন্ডস অব দ্য ডেকেড’ শিরোনামের এ কনসার্টে। যমুনা ফিউচার পার্কের নর্থ কোর্টে বিকাল ৫টায় শুরু হয় কনসার্ট। প্রথমে পারফর্ম করে ব্যান্ড ‘কনক্লুশন’।

সময় বাড়তেই দর্শক বাড়তে থাকলে হল ভরে ওঠে, জায়গার সংকুলন হচ্ছিল না। কনসার্ট দেখার জন্য পর্যাপ্ত এলইডি স্ক্রিন না থাকা, গেইট ভেঙে ঢুকে পড়ার ঘটনাও ঘটে এসময় বলে জানান একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী।

বিশৃঙ্খলার রেশ চলে যায় মঞ্চ পর্যন্ত। সেসময় ‘কনক্লুশন’ এর গান শেষে মঞ্চে ওঠে ভাইকিংস। পাঁচটি গান পর্যন্ত গেয়েছেন ব্যান্ডটি। ষষ্ঠ গান ‘নীল হব’ শুরু করলেও শেষ করতে পারেনি ব্যান্ডটি। হইচই, গণ্ডগোলে সেসময় নিরাপত্তার জন্য মঞ্চ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় ব্যান্ডটিকে।

এরপর প্রায় দেড় ঘন্টা বন্ধ ছিল কনসার্ট। শ্রোতাদের শান্ত করতে মঞ্চে এসে আয়োজক কোম্পানি অ্যাসেনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনন্দ চৌধুরী ঘোষণা দেন কনসার্ট দেখার জন্য নর্থ কোর্টে সামিয়ানা খুলে দেওয়ার। চারপাশ থেকে যাতে সবাই কনসার্ট দেখতে পারে সেজন্য এমন সিদ্ধান্ত বলে জানান তিনি।

তবুও বিশৃঙ্খলা থামাতে না পেরে মঞ্চে উঠেন যমুনা গ্রুপের ডিরেক্টর আলমগীর আলম। বলেন, এই কনসার্ট ঢাকার পূর্বাচলে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিরাপত্তা ব্যবস্থাগত কারণে তা সেখানে আয়োজনে অনুমতি দেওয়া হয়নি। পরে নর্থ কোর্টে কনসার্ট করার অনুমতি দেওয়া হয়।

“কিন্তু আপনাদের বিশৃঙ্খলার কারণে এইখানের দোকান মালিকরা আতংকে আছে। বারবার কনসার্ট বন্ধ করার জন্য বলা হচ্ছে। আমরা নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী ডেকেছি।”

এরপর সেনা সদস্যদের হস্তক্ষেপে আবারও শুরু হয় কনসার্ট। দেড় বছর পরে মঞ্চে উঠে ‘অর্থহীন’ ব্যান্ডের সাইদুস সালেহীন সুমন। যিনি বেহাবাবা সুমন নামে পরিচিত। সুমনের ‘চাইতে পার’ গান শুরু হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

‘অর্থহীন’র পর কনসার্টে পারফর্ম করার কথা পাকিস্তানের ব্যান্ড ‘জাল’ এর। দীর্ঘ বিরতির পর এ দুই ব্যান্ডের গান শুনতে শ্রোতাদের আগ্রহও ছিল ব্যাপক, যা বোঝা গেছে তাদের উপস্থিতি দেখে। এর আগে ২০১০ সালে প্রথমবার ঢাকায় এসেছিল ‘জাল’। এরপর বাংলাদেশের আর কোনো কনসার্টে দেখা যায়নি তাদের।

২০০২ সালে পাকিস্তানের লাহোরে রক গান নিয়ে আত্মপ্রকাশ করে ‘জাল’। ২০০৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বরে প্রকাশ পায় জালের প্রথম অ্যালবাম ‘আদাত’। এই অ্যালবামের ‘লামহে’, ‘আদাত’, ‘পানছি’, ‘বিখরা হু ম্যায়’ গানগুলো জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এই অ্যালবামের ২০ বছর উদযাপন হিসেবে এই কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে। ঢাকায় এসে দলটি নতুন একটি অ্যাবামের ঘোষণাও দিয়েছে। তাদের এ অ্যালবামের নাম হবে ‘বারিশ’।

সম্প্রতি কোক স্টুডিও পাকিস্তান এবং পেপসি ব্যাটল অব দ্যা ব্যান্ডসে গান গেয়ে নতুন করে দর্শকদের প্রশংসা পায় দলটি। ব্যান্ডটির বর্তমান সদস্য গওহর মুমতায, আমির আজহার ও সালমান অ্যালবার্ট।