ঢাকা ০৫:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আইনি লড়াইয়ে নামবেন আওয়ামী আইনজীবীরা

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:৪৮:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 60

গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে চলে যান আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে একের পর এক মামলার আসামি করা হচ্ছে দলের সভাপতিকে। শুধু তিনি নন, দলের কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে উপজেলাপর্যায়ের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে মামলার আসামি করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে কী করবে দীর্ঘদিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ?

জানা গেছে, মামলাগুলো আইনি প্রক্রিয়ায় লড়বে স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলটি। সময় হলেই নেতাকর্মীরা আইনজীবী নিয়োগ দেবেন। প্রয়োজন হলে বিদেশি আইনজীবীও নিয়োগ দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের একাধিক সিনিয়র নেতা জানান, মামলা লড়াইয়ের জন্য এখনও উপযুক্ত সময় আসেনি। সময় হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

দলীয় সূত্র মতে, ক্ষমতা হারানোর পর থেকে মামলা আর হামলার ভয়ে দিন পার করছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। যখন-তখন বাড়িঘরে হামলার শঙ্কায় দিনাতিপাত করছেন তারা। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা দলটির কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বাড়িতে অবস্থান করতে পারছেন না। কেউ আত্মগোপনে চলে গেছেন, কেউ কেউ দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। যারা বাড়িতে থাকছেন, রাত হলেই তারা অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। হামলা থেকে বাঁচলেও রেহাই মিলছে না মামলা থেকে। এরই মধ্যে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নামে দেড় শতাধিক মামলা হয়েছে। বাদ পড়েননি শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামও।

দলীয় সভানেত্রীসহ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা এসব মামলা ও অভিযোগ মোকাবিলা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘দেশের যে পরিস্থিতি, এখনও মামলা মোকাবিলার সময় হয়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে নেই। এ পরিস্থিতিতে কে মামলা মোকাবিলা করবে? আদালতের মতো একটি জায়গায় হামলা করা হচ্ছে। ব্যাপক নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যে যেখানে আটক নেতা-কর্মীরা নিরাপদ নয়, সেখানে আইনজীবীরাও নিজেদের নিরাপদ বোধ করছেন না। আমরা অপেক্ষা করছি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

একের পর এক মামলা, এত মামলা কীভাবে মোকাবিলা করবেন— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের নিজস্ব আইনজীবী আছেন। শুধু ঢাকা নয়, প্রতিটি জেলায় দলীয় আইনজীবী রয়েছেন, আইনজীবী নেতা রয়েছেন, এমনকি দলকে সমর্থন করেন— এমন আইনজীবীও রয়েছেন। তারাই মামলাগুলো লড়বেন। তবে, এখন নয়। তারা (আইনজীবীরা) প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সময় হলেই আইনি লড়াইয়ে নামবেন তারা।’

এদিকে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, হামলার শিকার হয়েছেন এবং যাদের বাসাবাড়ি কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে, তারা যেন নিজ নিজ থানায় অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন। কারণ হিসেবে সেখানে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের তথ্য অনুসন্ধান দল এখন বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তারা গত ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সব ধরনের সহিংস ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করবেন। দলের পক্ষ থেকে এ সুযোগ কাজে লাগাতে বলা হয়েছে। ‘অভিযোগ না নিতে চাইলে সাধারণ ডায়েরি করুন, যদি সাধারণ ডায়েরি করতে না দেয় তাহলে জাতিসংঘের তদন্ত দলের কাছে দলীয়ভাবে আমরা অভিযোগ দেব’— বলা হয় ওই নির্দেশনায়।

এদিকে, রাজধানীসহ সারাদেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়েছে সরকার। সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের এ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। আগামী দুই মাস (৬০ দিন) এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।’

প্রজ্ঞাপন জারির পরই নিজেদের ওপর হামলার ব্যাপারে অভিযোগ জানাতে সেনাবাহিনীর দ্বারস্থ হতে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘আমরা সারাদেশ থেকে খবর পেয়েছি যে বেশিরভাগ থানাতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করতে দেওয়া হয়নি। যেহেতু সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে, তাই অপরাধীদের থামাতে এখন সেনাবাহিনীর কাছেই অভিযোগ দেওয়া ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই।’

সেখানে আরও বলা হয়েছে, ‘ক্ষতিগ্রস্ত সবাই পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে নিকটস্থ সেনাক্যাম্পে গিয়ে সন্ত্রাসীদের নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ জমা দিন। সেনাবাহিনীর কাছে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে যে, সব অপরাধী, সন্ত্রাসী ও লুটেরাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

দলীয় সূত্র জানায়, ৫ আগস্টের পর থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৮২টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৬২টিই হত্যা মামলা। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় ১৩টি ও চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে ১০টিসহ মোট ২৩টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের সদস্যরা আন্দোলনকারীদের গুলি করে হত্যা করেছেন।

মামলাগুলোতে শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ নানা পেশার মানুষকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উপদেষ্টা ও শীর্ষপর্যায়ের নেতা মিলিয়ে ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আসামিদের তালিকায় সাবেক দুই আইজিপিসহ ৮৮ জন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ বিভিন্ন পেশার শীর্ষস্থানীয় ২৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ ছাড়া উপজেলা, জেলা, মহানগর ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগের নেতাদের নামে মামলা দেওয়া হচ্ছে। অধিকাংশ মামলাই হত্যা সংক্রান্ত। কেন্দ্রীয় নেতারা অনেকে আত্মগোপনে চলে গেলেও বিপদে পড়েছেন তৃণমূলের নেতারা।

আইনি লড়াইয়ে নামবেন আওয়ামী আইনজীবীরা

আপডেট সময় ১২:৪৮:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে চলে যান আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে একের পর এক মামলার আসামি করা হচ্ছে দলের সভাপতিকে। শুধু তিনি নন, দলের কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে উপজেলাপর্যায়ের হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে মামলার আসামি করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে কী করবে দীর্ঘদিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ?

জানা গেছে, মামলাগুলো আইনি প্রক্রিয়ায় লড়বে স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলটি। সময় হলেই নেতাকর্মীরা আইনজীবী নিয়োগ দেবেন। প্রয়োজন হলে বিদেশি আইনজীবীও নিয়োগ দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগের একাধিক সিনিয়র নেতা জানান, মামলা লড়াইয়ের জন্য এখনও উপযুক্ত সময় আসেনি। সময় হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

দলীয় সূত্র মতে, ক্ষমতা হারানোর পর থেকে মামলা আর হামলার ভয়ে দিন পার করছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। যখন-তখন বাড়িঘরে হামলার শঙ্কায় দিনাতিপাত করছেন তারা। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা দলটির কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা বাড়িতে অবস্থান করতে পারছেন না। কেউ আত্মগোপনে চলে গেছেন, কেউ কেউ দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। যারা বাড়িতে থাকছেন, রাত হলেই তারা অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। হামলা থেকে বাঁচলেও রেহাই মিলছে না মামলা থেকে। এরই মধ্যে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নামে দেড় শতাধিক মামলা হয়েছে। বাদ পড়েননি শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামও।

দলীয় সভানেত্রীসহ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা এসব মামলা ও অভিযোগ মোকাবিলা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘দেশের যে পরিস্থিতি, এখনও মামলা মোকাবিলার সময় হয়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে নেই। এ পরিস্থিতিতে কে মামলা মোকাবিলা করবে? আদালতের মতো একটি জায়গায় হামলা করা হচ্ছে। ব্যাপক নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যে যেখানে আটক নেতা-কর্মীরা নিরাপদ নয়, সেখানে আইনজীবীরাও নিজেদের নিরাপদ বোধ করছেন না। আমরা অপেক্ষা করছি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

একের পর এক মামলা, এত মামলা কীভাবে মোকাবিলা করবেন— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের নিজস্ব আইনজীবী আছেন। শুধু ঢাকা নয়, প্রতিটি জেলায় দলীয় আইনজীবী রয়েছেন, আইনজীবী নেতা রয়েছেন, এমনকি দলকে সমর্থন করেন— এমন আইনজীবীও রয়েছেন। তারাই মামলাগুলো লড়বেন। তবে, এখন নয়। তারা (আইনজীবীরা) প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সময় হলেই আইনি লড়াইয়ে নামবেন তারা।’

এদিকে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, হামলার শিকার হয়েছেন এবং যাদের বাসাবাড়ি কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে, তারা যেন নিজ নিজ থানায় অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন। কারণ হিসেবে সেখানে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের তথ্য অনুসন্ধান দল এখন বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তারা গত ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত ঘটে যাওয়া সব ধরনের সহিংস ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করবেন। দলের পক্ষ থেকে এ সুযোগ কাজে লাগাতে বলা হয়েছে। ‘অভিযোগ না নিতে চাইলে সাধারণ ডায়েরি করুন, যদি সাধারণ ডায়েরি করতে না দেয় তাহলে জাতিসংঘের তদন্ত দলের কাছে দলীয়ভাবে আমরা অভিযোগ দেব’— বলা হয় ওই নির্দেশনায়।

এদিকে, রাজধানীসহ সারাদেশে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়েছে সরকার। সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের এ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘প্রজ্ঞাপন জারির তারিখ অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। আগামী দুই মাস (৬০ দিন) এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।’

প্রজ্ঞাপন জারির পরই নিজেদের ওপর হামলার ব্যাপারে অভিযোগ জানাতে সেনাবাহিনীর দ্বারস্থ হতে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘আমরা সারাদেশ থেকে খবর পেয়েছি যে বেশিরভাগ থানাতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের বিষয়ে সাধারণ ডায়েরি করতে দেওয়া হয়নি। যেহেতু সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে, তাই অপরাধীদের থামাতে এখন সেনাবাহিনীর কাছেই অভিযোগ দেওয়া ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই।’

সেখানে আরও বলা হয়েছে, ‘ক্ষতিগ্রস্ত সবাই পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে নিকটস্থ সেনাক্যাম্পে গিয়ে সন্ত্রাসীদের নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ জমা দিন। সেনাবাহিনীর কাছে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে যে, সব অপরাধী, সন্ত্রাসী ও লুটেরাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

দলীয় সূত্র জানায়, ৫ আগস্টের পর থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৮২টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৬২টিই হত্যা মামলা। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় ১৩টি ও চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে ১০টিসহ মোট ২৩টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, শেখ হাসিনার নির্দেশে পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের সদস্যরা আন্দোলনকারীদের গুলি করে হত্যা করেছেন।

মামলাগুলোতে শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ নানা পেশার মানুষকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উপদেষ্টা ও শীর্ষপর্যায়ের নেতা মিলিয়ে ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আসামিদের তালিকায় সাবেক দুই আইজিপিসহ ৮৮ জন পুলিশ সদস্য রয়েছেন। ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ বিভিন্ন পেশার শীর্ষস্থানীয় ২৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ ছাড়া উপজেলা, জেলা, মহানগর ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগের নেতাদের নামে মামলা দেওয়া হচ্ছে। অধিকাংশ মামলাই হত্যা সংক্রান্ত। কেন্দ্রীয় নেতারা অনেকে আত্মগোপনে চলে গেলেও বিপদে পড়েছেন তৃণমূলের নেতারা।