ঢাকা ১২:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাবিপ্রবি ছাত্রলীগের নির্যাতন: পর্ব-১

বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের শাসনামলে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দ্বারা পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) বহু শিক্ষার্থী লোমহর্ষক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এসব নির্যাতনের কথা সে সময় কথা বলতে না পারলেও গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর একে একে বলতে শুরু করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

এই শিক্ষার্থীদেরই মধ্যে একজন হলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবু হুরায়রা মুন। গত বছরের ৫ই এপ্রিল ছাত্রলীগের পাঁচ নেতা-নেতা-কর্মী দ্বারা রোজারত অবস্থায় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি। ছাত্রলীগের ঐ পাঁচ নেতার নাম হলো বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক বিবিএ ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শেহজাদ হাসান, গণিত ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের মাসুদ রানা, অর্থনীতি ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের পিয়াস আহমেদ, গণিত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সুরুজ মিয়া আপেল ও বিবিএ ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের তৌফিকুল হৃদয়। তারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও কর্মী।

ভুক্তভোগী আবু হুরায়রা মুনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঘটনার দিন ফজরের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে থাকাকালীন তার নিজ রুম ৪০৪ থেকে ভোরবেলা ছাত্রলীগ নেতা শেহজাদ তাকে মাসুদ রানার রুমে (১২৭ বি ব্লক) নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই পিয়াস, আপেল ও হৃদয় উপস্থিত ছিলেন। রুমে নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে দুই হাত বেডের সাথে বেঁধে ফেলে। বাধার পর কিছুই বুঝে ওঠার আগেই রড, জিআই পাইপ, স্টাম্প, চাপাতি ও ক্লাস দিয়ে তাকে সবাই নির্যাতন করতে থাকে।

একসময় সে তাকে মারার কারণ জানতে চাইলে শেহজাদ তাকে শিবির বলে আখ্যা দেন এবং শিবিরের সাথে চলাফেরা আছে বলে অভিযোগ করতে থাকেন। নির্যাতনের একপর্যায়ে সে অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে তারপর ছাত্রলীগের কর্মীরা তার কাছে পঞ্চাশ হাজার টাকা চাদা দাবি করেন এবং টাকা না দিলে আরো নির্যাতন হুমকি দেন। প্রাণভয়ে সে সকল শর্তে রাজি হয়ে হল ত্যাগ করেন এবং হাসপাতালে ভর্তি হন।

এই পরিস্থিতিতে আবু হুরায়রা মুন প্রাণনাশের ভয়ে প্রশাসনের কাছে বিচার চাইতেও ভয় পান এবং  পালিয়ে বেড়াতে বাধ্য হন, এমনকি প্রাণনাশের ভয়ে প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের পদার্থবিজ্ঞান -২ এর রিটেক এক্সাম ও দিতে ব্যর্থ হয়। শেষমেষ কারো কাছে বিচার না পেয়ে সে সৃষ্টিকর্তার কাছে বিচার দেন কিন্তু এখন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে ফ্যাসিবাদি সরকার পতনের পর সবাই স্বাধীনভাবে অভিযোগের কথা স্বীকার করতে পারছে বিধায় আবু হুরায়রা মুন ঐ সকল নেতা-কর্মীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন। তিনি বলেন আমার মত আর কেউ যেন এরকম অমানবিক নির্যাতনের শিকার না হয়।

এ অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের মুঠোফোন বন্ধ দেখায়।

চট্টগ্রামে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করায় ব্যবসায়ী খুন

পাবিপ্রবি ছাত্রলীগের নির্যাতন: পর্ব-১

আপডেট সময় ০৬:০৪:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের শাসনামলে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দ্বারা পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) বহু শিক্ষার্থী লোমহর্ষক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এসব নির্যাতনের কথা সে সময় কথা বলতে না পারলেও গত ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর একে একে বলতে শুরু করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

এই শিক্ষার্থীদেরই মধ্যে একজন হলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আবু হুরায়রা মুন। গত বছরের ৫ই এপ্রিল ছাত্রলীগের পাঁচ নেতা-নেতা-কর্মী দ্বারা রোজারত অবস্থায় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি। ছাত্রলীগের ঐ পাঁচ নেতার নাম হলো বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক বিবিএ ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শেহজাদ হাসান, গণিত ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের মাসুদ রানা, অর্থনীতি ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের পিয়াস আহমেদ, গণিত বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সুরুজ মিয়া আপেল ও বিবিএ ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের তৌফিকুল হৃদয়। তারা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও কর্মী।

ভুক্তভোগী আবু হুরায়রা মুনের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঘটনার দিন ফজরের নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে থাকাকালীন তার নিজ রুম ৪০৪ থেকে ভোরবেলা ছাত্রলীগ নেতা শেহজাদ তাকে মাসুদ রানার রুমে (১২৭ বি ব্লক) নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই পিয়াস, আপেল ও হৃদয় উপস্থিত ছিলেন। রুমে নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে দুই হাত বেডের সাথে বেঁধে ফেলে। বাধার পর কিছুই বুঝে ওঠার আগেই রড, জিআই পাইপ, স্টাম্প, চাপাতি ও ক্লাস দিয়ে তাকে সবাই নির্যাতন করতে থাকে।

একসময় সে তাকে মারার কারণ জানতে চাইলে শেহজাদ তাকে শিবির বলে আখ্যা দেন এবং শিবিরের সাথে চলাফেরা আছে বলে অভিযোগ করতে থাকেন। নির্যাতনের একপর্যায়ে সে অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে তারপর ছাত্রলীগের কর্মীরা তার কাছে পঞ্চাশ হাজার টাকা চাদা দাবি করেন এবং টাকা না দিলে আরো নির্যাতন হুমকি দেন। প্রাণভয়ে সে সকল শর্তে রাজি হয়ে হল ত্যাগ করেন এবং হাসপাতালে ভর্তি হন।

এই পরিস্থিতিতে আবু হুরায়রা মুন প্রাণনাশের ভয়ে প্রশাসনের কাছে বিচার চাইতেও ভয় পান এবং  পালিয়ে বেড়াতে বাধ্য হন, এমনকি প্রাণনাশের ভয়ে প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের পদার্থবিজ্ঞান -২ এর রিটেক এক্সাম ও দিতে ব্যর্থ হয়। শেষমেষ কারো কাছে বিচার না পেয়ে সে সৃষ্টিকর্তার কাছে বিচার দেন কিন্তু এখন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে ফ্যাসিবাদি সরকার পতনের পর সবাই স্বাধীনভাবে অভিযোগের কথা স্বীকার করতে পারছে বিধায় আবু হুরায়রা মুন ঐ সকল নেতা-কর্মীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন। তিনি বলেন আমার মত আর কেউ যেন এরকম অমানবিক নির্যাতনের শিকার না হয়।

এ অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের মুঠোফোন বন্ধ দেখায়।