ঢাকা ১১:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে কুরআনের অনুবাদ পাঠ প্রতিযোগিতা -২০২৪ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান এখন থেকে ১৫ দিনে বিসিএস প্রিলিমিনারির ফল প্রকাশ করবে পিএসসি রাইসির মৃত্যুতে বিশ্বনেতাদের শোক ম্যানসিটি থেকে চলে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে গেলেন গার্দিওলা শিল্পী সমিতির সম্পাদক পদে ডিপজলের দায়িত্ব পালনে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা ইরানের অন্তবর্তী প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন মোহাম্মদ মোখবের ইরানের প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টারের সন্ধান মিলেছে , ‘প্রাণের অস্তিত্ব নেই’ টানা চতুর্থবার ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন ম্যানসিটি যে কারণে হয় মরণ ব্যাধি রোগ ক্যান্সার সিরাজগঞ্জে অগ্নিদগ্ধ পরিবারকে জামায়াতের নগদ অর্থ সহযোগিতা প্রদান
এক দশকে সবচেয়ে কম ভোট

ডলারের বাজারে অস্থিরতা

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর:

 

নয়াদিগন্ত:

ডলারের বাজারে অস্থিরতা
নতুন পদ্ধতিতে ডলারের দর নির্ধারিত হওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে অস্থিতরা দেখা দিয়েছে। গতকাল এক লাফে খোলাবাজারে ডলারের দাম ১২৫ টাকা উঠে গেছে। তবে কোথাও কোথাও এ দরেও ডলার পাওয়া যায়নি। অন্য দিকে আমদানিতেও ডলারের দরে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আগাম ডলার কিনতে ব্যাংকভেদে ১২৮ থেকে ১২৯ টাকা উঠে গেছে। যদিও এ দর নিয়মিত দর নয়। মানিচেঞ্জাররা গতকাল দিনভর নতুন দর পর্যবেক্ষণ করেছে। এ কারণে অনেকেই বাড়তি দরে ডলার কেনাবেচা থেকে বিরত থেকেছেন। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, বাজারে এমনিতে ডলার সঙ্কট চলছে, এর ওপর নতুন দর চালু হওয়ায় গ্রাহকদের মাঝেও অস্থিরতা বিরাজ করছে। অনেকেই আমদানি ব্যয় মেটাতে আগাম ডলার কেনার জন্য আসছে। আবার অনেকেই তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাতে ব্যাংকে এসে বাড়তি মূল্য গুনছে। পাশাপাশি খোলাবাজারের মূল্যও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, বৈদেশিক মুদ্রার আয়ের চেয়ে ব্যয়ের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় দীর্ঘ দিন ধরে বাজারে ডলার সঙ্কট চলছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরোক্ষ হস্তক্ষেপে ডলারের দর বেঁধে দেয়া হয়েছিল ১১০ টাকা। তবে এ দর ছিল নেহাতই কাগজে কলমে। বাস্তবে এ দরে কোথাও ডলার পাওয়া যেত না। তবে এ দরকে ভিত্তি ধরে বাড়তি মূল্যে লেনদেন করা হতো। কিন্তু গত বুধবার ক্রলিংপেগ ঘোষণা করে। এতেই এক লাফে ডলারের দাম ১১০ থেকে বেড়ে ১১৭ টাকায় উঠে যায়। আর এ কারণে খোলা বাজারেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। গত বুধবার খোলাবাজারে ডলার লেনদেন হয়েছিল ১১৭ থেকে ১১৮ টাকার মধ্যে। কিন্তু গতকাল হঠাৎ করে তা বেড়ে ১২৫ টাকায় উঠে যায়। তবে কোথাও কোথাও এ দরেও ডলার পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি আমদানিতেও বাড়তি মূল্য গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। আগাম ডলারের মূল্য হঠাৎ করেই তা ১২৮ থেকে ১২৯ টাকায় উঠে যায়। যদিও এ দর নিয়মিত দর নয়। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, বাড়তি দামে ডলার লেনদেন হলেও অনেকটা মানুষের মধ্যে সহনশীল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ক্রলিংপেগ চালু হওয়ায় বাজার আবারো অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে।

দৈনিক ইত্তেফাক:

ডলারের মূল্য বৃদ্ধির ফলে মূল্যস্ফীতি আরো বাড়বে
ব্যাংক সুদহার ‘বাজারভিত্তিক’ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যার ফলে সব ধরনের ঋণের ওপর সুদের হার আরো বেড়ে যাবে। বেড়েছে ডলারের দামও। ডলারের দাম ১১০ টাকা থেকে একবারে বাড়িয়ে ১১৭ টাকা করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এসব সিদ্ধান্তে অর্থনীতিতে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুই ধরনেরই প্রভাব রয়েছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার এবং ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এসব সিদ্ধান্তের লক্ষ্য ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতিতে লাগাম টানা। কিন্তু বিনিময় হারকে বাজারভিত্তিক না করে ক্রলিং পেগ ঘোষণা করায় এটি কোনো কাজে আসবে না, এর ফলে ডলারের বাজার আরো অস্থির হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন ইত্তেফাককে বলেন, ক্রলিং পেগের নামে ডলারের যে দাম ধরে রাখার ব্যবস্থা করেছে তার কারণে মূল্যস্ফীতি কতটা কমবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তিনি বলেন, এতদিন ডলারে দর ১১০ টাকা নির্ধারিত থাকলেও ব্যাংকগুলো ১২০-২৩ টাকায় ক্রয় করেছে। এজন্য দেশে ডলারের মজুত বেড়েছে। কিন্তু এখন যদি ১১৬-১৮ টাকায় এটিকে আটকিয়ে রাখা হয় তাহলে নিশ্চিতভাবেই ডলারের মজুতে টান পড়বে। অর্থাৎ কম দরে ডলার কিনতে শুরু করলে বৈধ পথে ডলার আসা কমে যাবে। ডলারের মজুতও কমে যাবে। এতে মূল্যস্ফীতি লাগামহীন হওয়ার পাশাপাশি ডলার বাজারে আবারও অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

এক দশকে সবচেয়ে কম ভোট
ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে প্রথম ধাপের ১৩৯ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ভোট পড়েছে গড়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ। গত একদশকে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে ভোটের হার সবচেয়ে কম। ২৫ শতাংশের কম ভোট পড়েছে ১৩ উপজেলায়। ৬০ শতাংশের ওপরে ভোট পড়েছে আট উপজেলায়।

নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে ১৫ উপজেলায়। কোনো উপজেলায় মাত্র ২০০ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন প্রার্থী। এ ছাড়া তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি ৬৩ উপজেলায়। এসব উপজেলায় বিজয়ী ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান ১০ হাজারের বেশি।

৩১টি উপজেলায় ভোটের ব্যবধান ৩ হাজারের কম। ১৫ উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে বেশি। এসব উপজেলায় ভোটের ব্যবধান ১ হাজারের কম। চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটের ব্যবধান হয়েছে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলায়। প্রথম ধাপের ফলাফল বিশ্লেষণে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ২০১৯ সালের পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে গড়ে ৪১ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছিল। ২০১৪ সালে চতুর্থ উপজেলা ভোটে ৬১ শতাংশ এবং তৃতীয় উপজেলা ভোটে ২০০৯ সালে ৬৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ ভোট পড়ে। এই হিসাবে গত এক দশকের মধ্যে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে ভোটের হার এবারই সবচেয়ে কম।
নির্বাচন কমিশন-ইসি বলছে, বৈরী আবহাওয়া ও ধান কাটা মৌসুমসহ নানা কারণে ভোটার উপস্থিতি প্রত্যাশিত হয়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, সব দলের অংশগ্রহণে ভোট না হওয়ায় ভোটাররা কেন্দ্রে আসার উৎসাহ হারাচ্ছেন। তাছাড়া মানুষের মধ্যে এখন ভোট দেওয়ার আগ্রহ অনেক কমে গেছে। এর পেছনে একটি নয়, অনেক কারণ রয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বড় একটি কারণ হচ্ছে, সব দলের অংশগ্রহণে ভোট হলে এক ধরনের পরিবেশ থাকে, ভোটারদের উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকে। যেহেতু সব দলের অংশগ্রহণে ভোট হচ্ছে না, তাই ভোটার কম আসছে।

প্রথম আলো:

মানুষ ভোট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। সেই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য হয়তো উপজেলা নির্বাচনে সরকারি দল তাদের প্রতীক দেয়নি। সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। হয়তো অন্যান্য দলকে আনাও তাদের লক্ষ্য ছিল। কিন্তুকোনো লক্ষ্যই অর্জন হয়নি; বরং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যতটুকু ভোট পড়েছে, উপজেলায় তার চেয়েও কম ভোট পড়েছে।

উপজেলা নির্বাচন ঘিরে সরকারি দল নিজেদের মধ্যে অর্থাৎ দলের ভেতরে শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেটাও হয়নি। সেই দুর্বলতাও দৃশ্যমান হয়।
নির্বাচন কমিশনের হিসাবেই দেখা যাচ্ছে, প্রথম ধাপের নির্বাচনে ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পড়েছে। এর মধ্যে ইভিএমে ভোটের হার ৩১ দশমিক ৩১ শতাংশ আর ব্যালটে ৩৭ দশমিক ২২ শতাংশ

স্থানীয় সরকারব্যবস্থার নির্বাচনে এই ভোটের হার অনেক কম। আসলে দেশের মানুষের মধ্যে ভোটের প্রতি অনীহা তৈরি হয়েছে। নির্বাচনই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে রয়েছে।

ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকছে না। একতরফা ভোট যখন হয়, তখন মানুষের মধ্যে একটা ধারণা তৈরি হয় যে ভোট দিয়ে কী লাভ। এমন পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। সে জন্য ভোটের প্রতি মানুষের অনীহা বাড়ছে।আমাদের দেশে গণতন্ত্রের বড় দুর্বল দিক হচ্ছে নির্বাচন নিয়ে মানুষের আস্থার সংকট। ভোটের প্রতি মানুষের আগ্রহ কমছে।

ভোটের প্রতি মানুষের আগ্রহ যে কমে যাচ্ছে, সে জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর দায় রয়েছে। সরকার ও বিরোধী, সব পক্ষই এর জন্য দায়ী। কারণ, নির্বাচন নিয়ে মানুষের আস্থা তৈরি করা এবং তা রক্ষার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোর।তবে এখানে সরকার ও সরকারি দলের দায় সবচেয়ে বেশি। ভোট কতটা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ করা যাচ্ছে, মানুষ নির্বিঘ্নে তার ভোট দিয়ে প্রভাবমুক্তভাবে ফলাফল দেখতে পাচ্ছে, সেটা নির্ভর করে সরকারি দলের ওপর। বিরোধী দলগুলোরও দায় রয়েছে। মানুষের আস্থা তৈরিতে তাদেরও ভূমিকা প্রয়োজন।

রাজনৈতিক দলগুলো তা কতটা অনুধাবন করে, সেই প্রশ্ন রয়েছে। তবে মানুষ যে ভোট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে, সেটা গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক।

কালের কন্ঠ:

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আধিপত্য বজায় রাখলেন এমপিরা
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্যরা। গত বুধবার অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপের নির্বাচনে কয়েকটি বাদে সব উপজেলায় স্থানীয় সংসদ সদস্যদের পছন্দের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। এঁদের মধ্যে সংসদ সদস্যদের নিকটাত্মীয় রয়েছেন এক ডজন।

বুধবার স্থানীয় সরকারের ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

এসব উপজেলার ভোটের বেসরকারি ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অন্তত ১১০টিতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠরা উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে ১২ জন স্থানীয় সংসদ সদস্যের নিকটাত্মীয়।
তথ্য মতে, উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে স্থানীয় সংসদ সদস্যরা নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে মরিয়া ছিলেন। অনেক সংসদ সদস্যই উপজেলা চেয়ারম্যানদের ক্ষমতার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেন।

এমন পরিস্থিতিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচন প্রভাবমুক্ত রাখতে নানা কৌশল নেওয়া হয়। প্রশাসনকেও কঠোর হতে নির্দেশ দেয় সরকার।

যুগান্তর:

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘন ঘন নীতি পরিবর্তনে বিভ্রান্তি

ব্যাংকে আগাম ডলার ১২৫ থেকে ১২৯ টাকা, ১১৮ টাকা দামে ডলার মিলছে খুবই কম
ব্যাংক খাতের মৌলিক নীতিগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংক ঘন ঘন পরিবর্তন আনার কারণে গ্রাহকদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। গত জুলাই থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের সুদহার নির্ধারণের নীতিতে একাধিকবার পরিবর্তন এনেছে। এতে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোও ঘন ঘন সুদহারে পরিবর্তন এনেছে। ফলে রপ্তানিকারক, আমদানিকারক, ব্যবসায়ী ও আমানতকারীরা বিভ্রান্ত হয়েছেন। সংশ্লিষ্টদের হিসাব রাখার ক্ষেত্রেও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে ডলার সংকটের শুরু থেকে এর দাম নির্ধারণের বিষয়েও কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘন ঘন নীতির পরিবর্তন করেছে। এতে ডলারের দামে কোনো স্থিতিশীলতা ফেরেনি। নির্ধারিত দামে ডলারও পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে নীতি পরিবর্তনের কোনো সুফল তো মেলেইনি। উলটো বিভ্রান্তির ফলে ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট যেমন প্রকট হয়েছে, তেমনি ডলারের সংকটও কাটেনি।

এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকগুলোকে পরিচালনার স্থায়ী একটি নীতিমালা দরকার। ওই নীতিমালার বিষয়েও ব্যাংকগুলো তাদের নীতির পরিবর্তন করবে সময় সময়। তাহলে গ্রাহকরা যেমন পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে তা বুঝতে পারবে, তেমনি ব্যাংকগুলো বুঝবে কখন কি করতে হবে। সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ছাড়া ব্যাংকগুলো পরিচালনা বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে। যেমনটি এখন চলছে।

সূত্র জানায়, করোনার আগে থেকে ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ বেঁধে দেওয়া হয়। ২০২২ সালে আইএমএফ থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে আলোচনার সময় সংস্থাটি সুদের হারের সীমা তুলে দিয়ে বাজারভিত্তিক করার পরামর্শ দেয়। একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি অনুসরণের আওতায় সুদহার বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। ওই সময়ে বাণিজ্যিক, ভোক্তাসহ কিছু খাতে ঋণের সুদের হার বাড়ানো হয়। ২০২৩ সালের জুলাই থেকে আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী ঋণের সুদহারের সীমা তুলে দিয়ে করিডর ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে সরকারের ৬ মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদহারের সঙ্গে নির্ধারিত অংশ যোগ করে সুদহার নির্ধারণের পদ্ধতি চালু করে। শুরুতে ট্রেজারি বিলের গড় সুদহার ছিল ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। প্রতি মাসেই এ হার বাড়তে থাকে। এ কারণে সুদের হারও বাড়তে থাকে। ফেব্রুয়ারিতে ট্রেজারি বিলের সুদহার বেড়ে ডাবল ডিজিটে পৌঁছে যায়। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভিত্তি সুদে আবার পরিবর্তন আনে। ট্রেজারি বিলের গড় সুদের হারের সঙ্গে আগে সাধারণ ঋণে সাড়ে ৩ শতাংশ, ভোক্তা ঋণে সাড়ে ৪ শতাংশ, কৃষি, পল্লী ও রপ্তানি খাতের প্রি-শিপমেন্ট ঋণের সঙ্গে আড়াই শতাংশ যোগ করে ঋণের সুদহার নির্ধারিত হতো। ট্রেজারি বিলের সুদহার বাড়ায় ভিত্তি সুদের হার দশমিক ৫০ শতাংশ কমানো হয়। এতে সাধারণ ঋণের সঙ্গে ৩ শতাংশ, ভোক্তা ঋণের সঙ্গে আরও ১ শতাংশ সার্ভিস চাজ হিসাবে মোট ৪ শতাংশ, রপ্তানি খাতের প্রি-শিপমেন্ট ঋণ, কৃষি ও পল্লী ঋণের ক্ষেত্রে ২ শতাংশ যোগ করে নতুন সুদহার নির্ধারণ করতে থাকে ব্যাংকগুলো। এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংকগুলো এর ভিত্তিতে সুদহার নির্ধারণ করেছে। ফলে ঋণের সুদহার বেড়ে সর্বোচ্চ ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশে ওঠেছে। সাধারণ ঋণের সুদহার ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ, পল্লী ও কৃষি ঋণের সুদহার ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশে। প্রি-শিপমেন্ট ঋণের সুদহার ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ভোক্তা ঋণের সুদহার ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশে ওঠে। এক বছর পেরোনোর পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক আবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে। এবার সুদ করিডর থেকে সরে এসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহারকে বাজারভিত্তিক করার ঘোষণা দেয়। যেটি কার্যকর করা হয় সঙ্গে সঙ্গেই। তবে ব্যাংকগুলো এখন সুদহার নির্ধারণ করেনি। এখনো আগের পদ্ধতিতে আরোপিত সুদহারেই কাজ করছে। নতুন নিয়মে সুদহার ঘোষণা করতে একটু সময় লাগে। কারণ এ হার প্রণয়ন করে বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে ঘোষণা করতে হবে।

দৈনিক সংগ্রাম:

মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়নের আহ্বান
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলেমে দ্বীন, সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর অবদানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বিবৃতি দিয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার দেয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী বাংলাদেশের জনগণের নিকট অতি পরিচিত একটি নাম, একজন আলেমে দ্বীন ও ইসলামী চিন্তাবিদ। সততা, যোগ্যতা, উদারতা, বিনয় ও নম্রতা তাকে অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। মহান আল্লাহ প্রদত্ত যোগ্যতা বলে বাল্যকাল থেকেই তিনি তার সমসাময়িক প্রতিটি স্তরে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি তার ছাত্র জীবনের শুরু থেকে ইসলামী আদর্শ প্রচার, প্রসার ও প্রতিষ্ঠার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন। ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় তিনি নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ইসলামের সুমহান আদর্শ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ইসলামী কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে জোরালো ভূমিকা পালন করেছেন।

তিনি তার নিজ এলাকা থেকে ১৯৯১ ও ২০০১ সালে বিপুল ভোটে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।জাতীয় সংসদে তার গঠনমূলক ভূমিকা জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। বিভিন্ন ইস্যুতে জাতীয় সংসদে তার বক্তব্য ছিল দিক-নির্দেশনামূলক। ইসলামী শিক্ষার প্রসারে তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। কওমী মাদ্রাসার শিক্ষাকে সরকারি স্বীকৃতি দেয়ার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা ছিল স্মরণীয়।

তিনি সততা, যোগ্যতা, দক্ষতার সাথে কৃষি ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। তার কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় শিল্পখাত একটি লাভজনক খাতে পরিণত হয়।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা ছিল। ২০০৬ সালে এক বৈশ্বিক জরিপে বিশ্বের প্রভাবশালী ৫০০ ব্যক্তির মধ্যে মাওলানা নিজামীকে তালিকাভূক্ত করা হয়। ২০০৯ সালে অপর এক বৈশ্বিক জরিপে বিশ্বের প্রভাবশালী ৫০ মুসলিম ব্যক্তির মধ্যে তিনি অন্যতম বলে বিবেচিত হন।

তিনি অনেকগুলো মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছেন- যা মানুষের আত্মগঠন, পরিবার ও সমাজ গঠনে আলোর দিশা দিবে। দেশে-বিদেশে অসংখ্য সেমিনার, সভা ও সমাবেশে তাঁর দাওয়াতি বক্তব্য মানুষের চিন্তার জগতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। তাকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় মৃত্যুদ-ে দ-িত করা হয়। ২০১৬ সালের ১০ মে দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে তার মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়।

আমি গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মানের সাথে সাবেক আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর অবদানকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। মহান আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া করছি তিনি তার শাহাদাতকে কবুল করুন এবং তাকে জান্নাতুল ফিরদাউসে উচ্চ মর্যাদায় আসীন করুন।

মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন এবং বাংলাদেশকে একটি ইসলামী কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলনে শরীক হওয়ার জন্য আমরা দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

মানবজমিন:

ডলার নিয়ে খোলাবাজারে লুকোচুরি
রাজধানীর দিলকুশা এলাকায় অবস্থিত একটি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানে গতকাল দুপুরে ক্রেতা হিসেবে ডলার কিনতে গেলে বিক্রয়কর্মীরা জানান, ডলার নেই। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির বাইরে ফুটপাথে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তির মাধ্যমে ওই প্রতিষ্ঠান থেকেই ডলার পাওয়ার প্রস্তাব মেলে। সোহেল নামে ওই ব্যক্তি বলেন, ভেতরে নাই বললেও আমি ম্যানেজ করে দিতে পারবো। প্রতি ডলার এক দাম ১২৪ টাকা। যত লাগবে তত দেয়া যাবে। এ চিত্র কেবল ওই মানি এক্সচেঞ্জের নয়। মতিঝিল, পল্টন, ফকিরাপুল, গুলশানসহ রাজধানীর অধিকাংশ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানই ডলার নিয়ে এ রকম লুকোচুরি খেলছে।

ডলারের বিপরীতে টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়নের পরদিনই ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়েছে মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলো। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজারে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২৫ টাকা পর্যন্ত প্রতি ডলার বিক্রি করছেন তারা। অন্যদিকে কেউ বিক্রি করতে গেলে দাম কমিয়ে দেয়া হচ্ছে। দিলকুশার স্ট্যান্ডার্ড মানি এক্সচেঞ্জে ডলার বিক্রি করতে গেলে এক ব্যক্তিকে ডলার প্রতি ১২০ টাকা অফার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

ব্যাবসায়ীরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক হঠাৎ ডলারের দাম বাড়িয়ে দেয়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। যারা খুচরা ডলার বিক্রি করতো তারা বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। আবার বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে বলে বিক্রিও বেশি দামে করতে হচ্ছে। বরং ওই হারে ডলার বিক্রি হচ্ছে না। ডলারের বাজারে অস্থিরতার কথা স্বীকার করেছে মানি এক্সচঞ্জে এসোসয়িশেন অব বাংলাদশ। সংগঠনটির সভাপতি এমএস জামান বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাজারে পেনিক সৃষ্টি করছে। তারা বিভ্রান্তির মাধ্যমে বাজারে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করছে। ডলার প্রতি ১২৬ টাকা পর্যন্ত দাম বসাচ্ছে। এরা আমাদের এসোসিয়েশনের কেউ বলে আমি মনে করি না। এসোসিয়েশনের কেউ অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। তবে তারই প্রতিষ্ঠান জামান মানি চেঞ্জিং হাউজে ডলার নিয়ে লুকোচুরি করা হয়েছে জানালে তিনি বলেন, এটা আমি বলতে পারবো না, হয়তো আমার সহকারী বলেছে। সহকারীর কথাতো আর আমার না। তিনি বলেন, ডলার না থাকলে দেবে কোত্থেকে। কারণ ডলারতো আমরা কিনতে পারছি না। নতুন করে দাম নির্ধারণ করায় বাজারে এর একটা প্রভাব আছে এটা ঠিক। কারণ যারা বিক্রি করার তারা করতে চায় না।
বাংলাদেশ ব্যাংক একদিনে ডলারের বিপরীতে টাকার রেকর্ড ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ অবমূল্যায়ন ঘটিয়েছে। ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণে ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি অনুসরণের ঘোষণা দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। প্রতি ডলারের মধ্যবর্তী দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা। ব্যাংকগুলো চাইলে এর চেয়ে বেশি বা কম দরে ডলার বেচাকেনা করতে পারবে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিশ্রুত ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ প্রাপ্তির শর্ত হিসাবে ডলারের নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছে, ডলারের ক্রয় ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রলিং পেগ বিনিময় পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে ডলারের জন্য ক্রলিং পেগ মিড-রেট (সিপিএমআর) নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা। এখন থেকে আন্তঃব্যাংক ও গ্রাহকের সঙ্গে লেনদেনে তফসিলি ব্যাংকগুলো সিপিএমআরের আশপাশে ডলার ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে।

বনিকবার্তা:

টাকার অবমূল্যায়নে বিদ্যুতের বিল পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে বিপিডিবির

ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নে বিদ্যুতের বিল বাবদ ব্যয় বাড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি)। এর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে যাচ্ছে খাতটিতে সরকারের দেয়া ভর্তুকির পরিমাণ। বিষয়টি স্বীকার করছেন বিপিডিবি ও বিদ্যুৎ বিভাগসংশ্লিষ্টরাও। বিদ্যুৎ খাতের ক্রেতা সংস্থাটির এক হিসাবে বলা হয়েছে, ডলারের বিনিময় হার প্রতি ১ টাকা বৃদ্ধির জন্য চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে খাতটিতে ভর্তুকির পরিমাণ বাড়াতে হবে ৪৭৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। সে অনুযায়ী গত ও চলতি অর্থবছরের ডলারের গড় বিনিময় হারের পার্থক্য হিসাব করে দেখা গেছে, এবার বিদ্যুৎ খাতে সরকারের ভর্তুকি বাড়াতে হবে অন্তত সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা।

কালবেলা:

চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত পাইলট নিহত
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে বিমানবাহিনীর বিধ্বস্ত বিমান উদ্ধার করেছে নৌবাহিনী। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে কর্ণফুলীর জুলধা মাতব্বর ঘাটসংলগ্ন এইচএম স্টিল কারখানার পাশে কর্ণফুলী নদী থেকে বিমানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এতে স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ আসিম জাওয়াদ নিহত হন। আহত হয়েছেন উইং কমান্ডার সোহান হাসান খান। তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।

বিমান বিধ্বস্তের সেই ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা গেছে, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল এলাকার আকাশে উড়ছিল ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমানটি। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই বিমানের পেছনে জ্বলে ওঠে আগুন। মুহূর্তেই বিধ্বস্ত হয়ে কর্ণফুলী নদীতে পড়ে যায় বিমানটি।

পতেঙ্গা থানার ওসি কবীরুল ইসলাম বলেন, বিমানে আগুন লাগার পর দুজন পাইলট প্যারাস্যুট দিয়ে নেমে আসেন। এ সময় কর্ণফুলী নদী থেকে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, বিমানবাহিনীর একটি ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রামের জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে। প্রশিক্ষণ শেষে ফেরার সময় কর্ণফুলী নদীর মোহনার কাছে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। দুর্ঘটনার পর দুই বৈমানিক উইং কমান্ডার সোহান হাসান খান ও স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ প্যারাস্যুট দিয়ে নদীতে অবতরণ করেন। পরে তাদের উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে আসিম জাওয়াদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে বিএনএস পতেঙ্গা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে দুই ঘণ্টা পর তিনি মারা যান। আহত অন্য বৈমানিক উইং কমান্ডার সোহান চিকিৎসাধীন।

জাওয়াদের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। আইএসপিআর জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় পতিত বিমানটি উদ্ধারের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিমানটিতে আগুন ধরে যাওয়ার পর বড় ধরনের ক্ষতি এড়াতে বৈমানিকরা অত্যন্ত সাহসিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে বিমানটিকে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যেতে সক্ষম হন।

 

একক ক্রেতা হিসেবে বিপিডিবি সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ কেনে বেসরকারি ও ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র (আইপিপি, রেন্টাল, কুইক রেন্টাল ইত্যাদি) এবং আমদানীকৃত বিদ্যুৎ সরবরাহকারী কেন্দ্রগুলোর কাছ থেকে। প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ক্রয় চুক্তিতে বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ হয় ডলারে। এতে টাকার অবমূল্যায়নজনিত ক্ষতিও বিপিডিবিকে বহন করতে হয়।

সংস্থাটির নিজস্ব এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ডলারের বিপরীতে প্রতি ১ টাকা অবমূল্যায়নে খাতটিতে ব্যয় বেড়ে অতিরিক্ত ভর্তুকির প্রয়োজন বাড়বে ৪৭৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) ডলারের গড় বিনিময় হার ছিল প্রায় ১১০ টাকা। বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঘোষণায় ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে মুদ্রাটির মধ্যবর্তী বিনিময় হার নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকায়। এ দর অর্থবছরের বাকি দুই মাস স্থিতিশীল থাকলে চলতি অর্থবছরে ডলারের গড় বিনিময় হার দাঁড়াবে প্রায় ১১১ টাকা ১৩ পয়সায়। গত অর্থবছরে ডলারের গড় বিনিময় হার ছিল প্রায় ৯৯ টাকা ৪৫ পয়সা। সেক্ষেত্রে চলতি অর্থবছরের সঙ্গে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ডলারের গড় বিনিময় হারে পার্থক্য দাঁড়ায় ১১ টাকা ৬৮ পয়সায়। এ পার্থক্যকে বিবেচনায় নিলে সরকারকে চলতি অর্থবছরে বিদ্যুতে ভর্তুকি বাড়াতে হবে আরো ৫ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকারও বেশি।

তবে বাজারে কোথাও এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারিত দরে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে সরকারের টাকার অবমূল্যায়নজনিত ভর্তুকি বাবদ ব্যয় আরো বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। টাকার অবমূল্যায়নজনিত কারণে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি ব্যয় বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করছেন বিপিডিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে বিপিডিবির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে ট্যারিফ চুক্তি করা হয় ডলারে। ফলে ডলারের নির্ধারিত নতুন দরেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে বাড়তি টাকা পরিশোধ করতে হবে। ডলারের বিনিময় হারের এ পরিবর্তনে বিপিডিবির ব্যয়ের বোঝা আরো বাড়ল।’

জনপ্রিয় সংবাদ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে কুরআনের অনুবাদ পাঠ প্রতিযোগিতা -২০২৪ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান

এক দশকে সবচেয়ে কম ভোট

ডলারের বাজারে অস্থিরতা

আপডেট সময় ০৯:৩১:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর:

 

নয়াদিগন্ত:

ডলারের বাজারে অস্থিরতা
নতুন পদ্ধতিতে ডলারের দর নির্ধারিত হওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে অস্থিতরা দেখা দিয়েছে। গতকাল এক লাফে খোলাবাজারে ডলারের দাম ১২৫ টাকা উঠে গেছে। তবে কোথাও কোথাও এ দরেও ডলার পাওয়া যায়নি। অন্য দিকে আমদানিতেও ডলারের দরে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আগাম ডলার কিনতে ব্যাংকভেদে ১২৮ থেকে ১২৯ টাকা উঠে গেছে। যদিও এ দর নিয়মিত দর নয়। মানিচেঞ্জাররা গতকাল দিনভর নতুন দর পর্যবেক্ষণ করেছে। এ কারণে অনেকেই বাড়তি দরে ডলার কেনাবেচা থেকে বিরত থেকেছেন। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, বাজারে এমনিতে ডলার সঙ্কট চলছে, এর ওপর নতুন দর চালু হওয়ায় গ্রাহকদের মাঝেও অস্থিরতা বিরাজ করছে। অনেকেই আমদানি ব্যয় মেটাতে আগাম ডলার কেনার জন্য আসছে। আবার অনেকেই তাৎক্ষণিক প্রয়োজন মেটাতে ব্যাংকে এসে বাড়তি মূল্য গুনছে। পাশাপাশি খোলাবাজারের মূল্যও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, বৈদেশিক মুদ্রার আয়ের চেয়ে ব্যয়ের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় দীর্ঘ দিন ধরে বাজারে ডলার সঙ্কট চলছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরোক্ষ হস্তক্ষেপে ডলারের দর বেঁধে দেয়া হয়েছিল ১১০ টাকা। তবে এ দর ছিল নেহাতই কাগজে কলমে। বাস্তবে এ দরে কোথাও ডলার পাওয়া যেত না। তবে এ দরকে ভিত্তি ধরে বাড়তি মূল্যে লেনদেন করা হতো। কিন্তু গত বুধবার ক্রলিংপেগ ঘোষণা করে। এতেই এক লাফে ডলারের দাম ১১০ থেকে বেড়ে ১১৭ টাকায় উঠে যায়। আর এ কারণে খোলা বাজারেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। গত বুধবার খোলাবাজারে ডলার লেনদেন হয়েছিল ১১৭ থেকে ১১৮ টাকার মধ্যে। কিন্তু গতকাল হঠাৎ করে তা বেড়ে ১২৫ টাকায় উঠে যায়। তবে কোথাও কোথাও এ দরেও ডলার পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি আমদানিতেও বাড়তি মূল্য গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। আগাম ডলারের মূল্য হঠাৎ করেই তা ১২৮ থেকে ১২৯ টাকায় উঠে যায়। যদিও এ দর নিয়মিত দর নয়। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, বাড়তি দামে ডলার লেনদেন হলেও অনেকটা মানুষের মধ্যে সহনশীল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ক্রলিংপেগ চালু হওয়ায় বাজার আবারো অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে।

দৈনিক ইত্তেফাক:

ডলারের মূল্য বৃদ্ধির ফলে মূল্যস্ফীতি আরো বাড়বে
ব্যাংক সুদহার ‘বাজারভিত্তিক’ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যার ফলে সব ধরনের ঋণের ওপর সুদের হার আরো বেড়ে যাবে। বেড়েছে ডলারের দামও। ডলারের দাম ১১০ টাকা থেকে একবারে বাড়িয়ে ১১৭ টাকা করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এসব সিদ্ধান্তে অর্থনীতিতে ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুই ধরনেরই প্রভাব রয়েছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার এবং ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এসব সিদ্ধান্তের লক্ষ্য ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্ফীতিতে লাগাম টানা। কিন্তু বিনিময় হারকে বাজারভিত্তিক না করে ক্রলিং পেগ ঘোষণা করায় এটি কোনো কাজে আসবে না, এর ফলে ডলারের বাজার আরো অস্থির হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন ইত্তেফাককে বলেন, ক্রলিং পেগের নামে ডলারের যে দাম ধরে রাখার ব্যবস্থা করেছে তার কারণে মূল্যস্ফীতি কতটা কমবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তিনি বলেন, এতদিন ডলারে দর ১১০ টাকা নির্ধারিত থাকলেও ব্যাংকগুলো ১২০-২৩ টাকায় ক্রয় করেছে। এজন্য দেশে ডলারের মজুত বেড়েছে। কিন্তু এখন যদি ১১৬-১৮ টাকায় এটিকে আটকিয়ে রাখা হয় তাহলে নিশ্চিতভাবেই ডলারের মজুতে টান পড়বে। অর্থাৎ কম দরে ডলার কিনতে শুরু করলে বৈধ পথে ডলার আসা কমে যাবে। ডলারের মজুতও কমে যাবে। এতে মূল্যস্ফীতি লাগামহীন হওয়ার পাশাপাশি ডলার বাজারে আবারও অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

এক দশকে সবচেয়ে কম ভোট
ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে প্রথম ধাপের ১৩৯ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ভোট পড়েছে গড়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ। গত একদশকে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে ভোটের হার সবচেয়ে কম। ২৫ শতাংশের কম ভোট পড়েছে ১৩ উপজেলায়। ৬০ শতাংশের ওপরে ভোট পড়েছে আট উপজেলায়।

নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে ১৫ উপজেলায়। কোনো উপজেলায় মাত্র ২০০ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন প্রার্থী। এ ছাড়া তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি ৬৩ উপজেলায়। এসব উপজেলায় বিজয়ী ও নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান ১০ হাজারের বেশি।

৩১টি উপজেলায় ভোটের ব্যবধান ৩ হাজারের কম। ১৫ উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে বেশি। এসব উপজেলায় ভোটের ব্যবধান ১ হাজারের কম। চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী ও পরাজিত প্রার্থীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটের ব্যবধান হয়েছে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলায়। প্রথম ধাপের ফলাফল বিশ্লেষণে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ২০১৯ সালের পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে গড়ে ৪১ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছিল। ২০১৪ সালে চতুর্থ উপজেলা ভোটে ৬১ শতাংশ এবং তৃতীয় উপজেলা ভোটে ২০০৯ সালে ৬৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ ভোট পড়ে। এই হিসাবে গত এক দশকের মধ্যে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে ভোটের হার এবারই সবচেয়ে কম।
নির্বাচন কমিশন-ইসি বলছে, বৈরী আবহাওয়া ও ধান কাটা মৌসুমসহ নানা কারণে ভোটার উপস্থিতি প্রত্যাশিত হয়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, সব দলের অংশগ্রহণে ভোট না হওয়ায় ভোটাররা কেন্দ্রে আসার উৎসাহ হারাচ্ছেন। তাছাড়া মানুষের মধ্যে এখন ভোট দেওয়ার আগ্রহ অনেক কমে গেছে। এর পেছনে একটি নয়, অনেক কারণ রয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বড় একটি কারণ হচ্ছে, সব দলের অংশগ্রহণে ভোট হলে এক ধরনের পরিবেশ থাকে, ভোটারদের উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকে। যেহেতু সব দলের অংশগ্রহণে ভোট হচ্ছে না, তাই ভোটার কম আসছে।

প্রথম আলো:

মানুষ ভোট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। সেই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য হয়তো উপজেলা নির্বাচনে সরকারি দল তাদের প্রতীক দেয়নি। সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। হয়তো অন্যান্য দলকে আনাও তাদের লক্ষ্য ছিল। কিন্তুকোনো লক্ষ্যই অর্জন হয়নি; বরং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যতটুকু ভোট পড়েছে, উপজেলায় তার চেয়েও কম ভোট পড়েছে।

উপজেলা নির্বাচন ঘিরে সরকারি দল নিজেদের মধ্যে অর্থাৎ দলের ভেতরে শৃঙ্খলা আনার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেটাও হয়নি। সেই দুর্বলতাও দৃশ্যমান হয়।
নির্বাচন কমিশনের হিসাবেই দেখা যাচ্ছে, প্রথম ধাপের নির্বাচনে ৩৬ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পড়েছে। এর মধ্যে ইভিএমে ভোটের হার ৩১ দশমিক ৩১ শতাংশ আর ব্যালটে ৩৭ দশমিক ২২ শতাংশ

স্থানীয় সরকারব্যবস্থার নির্বাচনে এই ভোটের হার অনেক কম। আসলে দেশের মানুষের মধ্যে ভোটের প্রতি অনীহা তৈরি হয়েছে। নির্বাচনই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে রয়েছে।

ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকছে না। একতরফা ভোট যখন হয়, তখন মানুষের মধ্যে একটা ধারণা তৈরি হয় যে ভোট দিয়ে কী লাভ। এমন পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। সে জন্য ভোটের প্রতি মানুষের অনীহা বাড়ছে।আমাদের দেশে গণতন্ত্রের বড় দুর্বল দিক হচ্ছে নির্বাচন নিয়ে মানুষের আস্থার সংকট। ভোটের প্রতি মানুষের আগ্রহ কমছে।

ভোটের প্রতি মানুষের আগ্রহ যে কমে যাচ্ছে, সে জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর দায় রয়েছে। সরকার ও বিরোধী, সব পক্ষই এর জন্য দায়ী। কারণ, নির্বাচন নিয়ে মানুষের আস্থা তৈরি করা এবং তা রক্ষার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলোর।তবে এখানে সরকার ও সরকারি দলের দায় সবচেয়ে বেশি। ভোট কতটা সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ করা যাচ্ছে, মানুষ নির্বিঘ্নে তার ভোট দিয়ে প্রভাবমুক্তভাবে ফলাফল দেখতে পাচ্ছে, সেটা নির্ভর করে সরকারি দলের ওপর। বিরোধী দলগুলোরও দায় রয়েছে। মানুষের আস্থা তৈরিতে তাদেরও ভূমিকা প্রয়োজন।

রাজনৈতিক দলগুলো তা কতটা অনুধাবন করে, সেই প্রশ্ন রয়েছে। তবে মানুষ যে ভোট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে, সেটা গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক।

কালের কন্ঠ:

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আধিপত্য বজায় রাখলেন এমপিরা
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজেদের আধিপত্য বজায় রেখেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্যরা। গত বুধবার অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপের নির্বাচনে কয়েকটি বাদে সব উপজেলায় স্থানীয় সংসদ সদস্যদের পছন্দের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। এঁদের মধ্যে সংসদ সদস্যদের নিকটাত্মীয় রয়েছেন এক ডজন।

বুধবার স্থানীয় সরকারের ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।

এসব উপজেলার ভোটের বেসরকারি ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, অন্তত ১১০টিতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠরা উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে ১২ জন স্থানীয় সংসদ সদস্যের নিকটাত্মীয়।
তথ্য মতে, উপজেলা নির্বাচন সামনে রেখে স্থানীয় সংসদ সদস্যরা নিজেদের কর্তৃত্ব বজায় রাখতে মরিয়া ছিলেন। অনেক সংসদ সদস্যই উপজেলা চেয়ারম্যানদের ক্ষমতার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করেন।

এমন পরিস্থিতিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচন প্রভাবমুক্ত রাখতে নানা কৌশল নেওয়া হয়। প্রশাসনকেও কঠোর হতে নির্দেশ দেয় সরকার।

যুগান্তর:

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘন ঘন নীতি পরিবর্তনে বিভ্রান্তি

ব্যাংকে আগাম ডলার ১২৫ থেকে ১২৯ টাকা, ১১৮ টাকা দামে ডলার মিলছে খুবই কম
ব্যাংক খাতের মৌলিক নীতিগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংক ঘন ঘন পরিবর্তন আনার কারণে গ্রাহকদের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। গত জুলাই থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণের সুদহার নির্ধারণের নীতিতে একাধিকবার পরিবর্তন এনেছে। এতে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোও ঘন ঘন সুদহারে পরিবর্তন এনেছে। ফলে রপ্তানিকারক, আমদানিকারক, ব্যবসায়ী ও আমানতকারীরা বিভ্রান্ত হয়েছেন। সংশ্লিষ্টদের হিসাব রাখার ক্ষেত্রেও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে ডলার সংকটের শুরু থেকে এর দাম নির্ধারণের বিষয়েও কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঘন ঘন নীতির পরিবর্তন করেছে। এতে ডলারের দামে কোনো স্থিতিশীলতা ফেরেনি। নির্ধারিত দামে ডলারও পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে নীতি পরিবর্তনের কোনো সুফল তো মেলেইনি। উলটো বিভ্রান্তির ফলে ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট যেমন প্রকট হয়েছে, তেমনি ডলারের সংকটও কাটেনি।

এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকগুলোকে পরিচালনার স্থায়ী একটি নীতিমালা দরকার। ওই নীতিমালার বিষয়েও ব্যাংকগুলো তাদের নীতির পরিবর্তন করবে সময় সময়। তাহলে গ্রাহকরা যেমন পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে তা বুঝতে পারবে, তেমনি ব্যাংকগুলো বুঝবে কখন কি করতে হবে। সুনির্দিষ্ট নীতিমালা ছাড়া ব্যাংকগুলো পরিচালনা বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে। যেমনটি এখন চলছে।

সূত্র জানায়, করোনার আগে থেকে ঋণের সুদহার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ বেঁধে দেওয়া হয়। ২০২২ সালে আইএমএফ থেকে ঋণ নেওয়ার বিষয়ে আলোচনার সময় সংস্থাটি সুদের হারের সীমা তুলে দিয়ে বাজারভিত্তিক করার পরামর্শ দেয়। একই সঙ্গে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি অনুসরণের আওতায় সুদহার বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। ওই সময়ে বাণিজ্যিক, ভোক্তাসহ কিছু খাতে ঋণের সুদের হার বাড়ানো হয়। ২০২৩ সালের জুলাই থেকে আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী ঋণের সুদহারের সীমা তুলে দিয়ে করিডর ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে সরকারের ৬ মাস মেয়াদি ট্রেজারি বিলের গড় সুদহারের সঙ্গে নির্ধারিত অংশ যোগ করে সুদহার নির্ধারণের পদ্ধতি চালু করে। শুরুতে ট্রেজারি বিলের গড় সুদহার ছিল ৭ দশমিক ১১ শতাংশ। প্রতি মাসেই এ হার বাড়তে থাকে। এ কারণে সুদের হারও বাড়তে থাকে। ফেব্রুয়ারিতে ট্রেজারি বিলের সুদহার বেড়ে ডাবল ডিজিটে পৌঁছে যায়। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভিত্তি সুদে আবার পরিবর্তন আনে। ট্রেজারি বিলের গড় সুদের হারের সঙ্গে আগে সাধারণ ঋণে সাড়ে ৩ শতাংশ, ভোক্তা ঋণে সাড়ে ৪ শতাংশ, কৃষি, পল্লী ও রপ্তানি খাতের প্রি-শিপমেন্ট ঋণের সঙ্গে আড়াই শতাংশ যোগ করে ঋণের সুদহার নির্ধারিত হতো। ট্রেজারি বিলের সুদহার বাড়ায় ভিত্তি সুদের হার দশমিক ৫০ শতাংশ কমানো হয়। এতে সাধারণ ঋণের সঙ্গে ৩ শতাংশ, ভোক্তা ঋণের সঙ্গে আরও ১ শতাংশ সার্ভিস চাজ হিসাবে মোট ৪ শতাংশ, রপ্তানি খাতের প্রি-শিপমেন্ট ঋণ, কৃষি ও পল্লী ঋণের ক্ষেত্রে ২ শতাংশ যোগ করে নতুন সুদহার নির্ধারণ করতে থাকে ব্যাংকগুলো। এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংকগুলো এর ভিত্তিতে সুদহার নির্ধারণ করেছে। ফলে ঋণের সুদহার বেড়ে সর্বোচ্চ ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশে ওঠেছে। সাধারণ ঋণের সুদহার ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ, পল্লী ও কৃষি ঋণের সুদহার ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশে। প্রি-শিপমেন্ট ঋণের সুদহার ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ভোক্তা ঋণের সুদহার ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশে ওঠে। এক বছর পেরোনোর পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক আবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে। এবার সুদ করিডর থেকে সরে এসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদহারকে বাজারভিত্তিক করার ঘোষণা দেয়। যেটি কার্যকর করা হয় সঙ্গে সঙ্গেই। তবে ব্যাংকগুলো এখন সুদহার নির্ধারণ করেনি। এখনো আগের পদ্ধতিতে আরোপিত সুদহারেই কাজ করছে। নতুন নিয়মে সুদহার ঘোষণা করতে একটু সময় লাগে। কারণ এ হার প্রণয়ন করে বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে ঘোষণা করতে হবে।

দৈনিক সংগ্রাম:

মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়নের আহ্বান
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলেমে দ্বীন, সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর অবদানকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বিবৃতি দিয়েছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার দেয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী বাংলাদেশের জনগণের নিকট অতি পরিচিত একটি নাম, একজন আলেমে দ্বীন ও ইসলামী চিন্তাবিদ। সততা, যোগ্যতা, উদারতা, বিনয় ও নম্রতা তাকে অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে। মহান আল্লাহ প্রদত্ত যোগ্যতা বলে বাল্যকাল থেকেই তিনি তার সমসাময়িক প্রতিটি স্তরে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তিনি তার ছাত্র জীবনের শুরু থেকে ইসলামী আদর্শ প্রচার, প্রসার ও প্রতিষ্ঠার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে মানুষের কল্যাণের জন্য তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন। ন্যায় ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় তিনি নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ইসলামের সুমহান আদর্শ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি ইসলামী কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে জোরালো ভূমিকা পালন করেছেন।

তিনি তার নিজ এলাকা থেকে ১৯৯১ ও ২০০১ সালে বিপুল ভোটে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।জাতীয় সংসদে তার গঠনমূলক ভূমিকা জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। বিভিন্ন ইস্যুতে জাতীয় সংসদে তার বক্তব্য ছিল দিক-নির্দেশনামূলক। ইসলামী শিক্ষার প্রসারে তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। কওমী মাদ্রাসার শিক্ষাকে সরকারি স্বীকৃতি দেয়ার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা ছিল স্মরণীয়।

তিনি সততা, যোগ্যতা, দক্ষতার সাথে কৃষি ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। তার কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় শিল্পখাত একটি লাভজনক খাতে পরিণত হয়।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা ছিল। ২০০৬ সালে এক বৈশ্বিক জরিপে বিশ্বের প্রভাবশালী ৫০০ ব্যক্তির মধ্যে মাওলানা নিজামীকে তালিকাভূক্ত করা হয়। ২০০৯ সালে অপর এক বৈশ্বিক জরিপে বিশ্বের প্রভাবশালী ৫০ মুসলিম ব্যক্তির মধ্যে তিনি অন্যতম বলে বিবেচিত হন।

তিনি অনেকগুলো মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছেন- যা মানুষের আত্মগঠন, পরিবার ও সমাজ গঠনে আলোর দিশা দিবে। দেশে-বিদেশে অসংখ্য সেমিনার, সভা ও সমাবেশে তাঁর দাওয়াতি বক্তব্য মানুষের চিন্তার জগতে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। তাকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় মৃত্যুদ-ে দ-িত করা হয়। ২০১৬ সালের ১০ মে দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটে তার মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়।

আমি গভীর শ্রদ্ধা ও সম্মানের সাথে সাবেক আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর অবদানকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। মহান আল্লাহ তাআলার নিকট দোয়া করছি তিনি তার শাহাদাতকে কবুল করুন এবং তাকে জান্নাতুল ফিরদাউসে উচ্চ মর্যাদায় আসীন করুন।

মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন এবং বাংলাদেশকে একটি ইসলামী কল্যাণমূলক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলনে শরীক হওয়ার জন্য আমরা দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।

মানবজমিন:

ডলার নিয়ে খোলাবাজারে লুকোচুরি
রাজধানীর দিলকুশা এলাকায় অবস্থিত একটি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানে গতকাল দুপুরে ক্রেতা হিসেবে ডলার কিনতে গেলে বিক্রয়কর্মীরা জানান, ডলার নেই। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির বাইরে ফুটপাথে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তির মাধ্যমে ওই প্রতিষ্ঠান থেকেই ডলার পাওয়ার প্রস্তাব মেলে। সোহেল নামে ওই ব্যক্তি বলেন, ভেতরে নাই বললেও আমি ম্যানেজ করে দিতে পারবো। প্রতি ডলার এক দাম ১২৪ টাকা। যত লাগবে তত দেয়া যাবে। এ চিত্র কেবল ওই মানি এক্সচেঞ্জের নয়। মতিঝিল, পল্টন, ফকিরাপুল, গুলশানসহ রাজধানীর অধিকাংশ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানই ডলার নিয়ে এ রকম লুকোচুরি খেলছে।

ডলারের বিপরীতে টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়নের পরদিনই ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়েছে মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলো। কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজারে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২৫ টাকা পর্যন্ত প্রতি ডলার বিক্রি করছেন তারা। অন্যদিকে কেউ বিক্রি করতে গেলে দাম কমিয়ে দেয়া হচ্ছে। দিলকুশার স্ট্যান্ডার্ড মানি এক্সচেঞ্জে ডলার বিক্রি করতে গেলে এক ব্যক্তিকে ডলার প্রতি ১২০ টাকা অফার করা হয়।

বিজ্ঞাপন

ব্যাবসায়ীরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক হঠাৎ ডলারের দাম বাড়িয়ে দেয়ায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। যারা খুচরা ডলার বিক্রি করতো তারা বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। আবার বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে বলে বিক্রিও বেশি দামে করতে হচ্ছে। বরং ওই হারে ডলার বিক্রি হচ্ছে না। ডলারের বাজারে অস্থিরতার কথা স্বীকার করেছে মানি এক্সচঞ্জে এসোসয়িশেন অব বাংলাদশ। সংগঠনটির সভাপতি এমএস জামান বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী বাজারে পেনিক সৃষ্টি করছে। তারা বিভ্রান্তির মাধ্যমে বাজারে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করছে। ডলার প্রতি ১২৬ টাকা পর্যন্ত দাম বসাচ্ছে। এরা আমাদের এসোসিয়েশনের কেউ বলে আমি মনে করি না। এসোসিয়েশনের কেউ অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। তবে তারই প্রতিষ্ঠান জামান মানি চেঞ্জিং হাউজে ডলার নিয়ে লুকোচুরি করা হয়েছে জানালে তিনি বলেন, এটা আমি বলতে পারবো না, হয়তো আমার সহকারী বলেছে। সহকারীর কথাতো আর আমার না। তিনি বলেন, ডলার না থাকলে দেবে কোত্থেকে। কারণ ডলারতো আমরা কিনতে পারছি না। নতুন করে দাম নির্ধারণ করায় বাজারে এর একটা প্রভাব আছে এটা ঠিক। কারণ যারা বিক্রি করার তারা করতে চায় না।
বাংলাদেশ ব্যাংক একদিনে ডলারের বিপরীতে টাকার রেকর্ড ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ অবমূল্যায়ন ঘটিয়েছে। ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণে ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি অনুসরণের ঘোষণা দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। প্রতি ডলারের মধ্যবর্তী দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা। ব্যাংকগুলো চাইলে এর চেয়ে বেশি বা কম দরে ডলার বেচাকেনা করতে পারবে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিশ্রুত ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ প্রাপ্তির শর্ত হিসাবে ডলারের নতুন দর নির্ধারণ করা হয়েছে। গত বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছে, ডলারের ক্রয় ও বিক্রয়ের ক্ষেত্রে ক্রলিং পেগ বিনিময় পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে ডলারের জন্য ক্রলিং পেগ মিড-রেট (সিপিএমআর) নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা। এখন থেকে আন্তঃব্যাংক ও গ্রাহকের সঙ্গে লেনদেনে তফসিলি ব্যাংকগুলো সিপিএমআরের আশপাশে ডলার ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে।

বনিকবার্তা:

টাকার অবমূল্যায়নে বিদ্যুতের বিল পরিশোধে ব্যয় বাড়ছে বিপিডিবির

ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নে বিদ্যুতের বিল বাবদ ব্যয় বাড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি)। এর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে যাচ্ছে খাতটিতে সরকারের দেয়া ভর্তুকির পরিমাণ। বিষয়টি স্বীকার করছেন বিপিডিবি ও বিদ্যুৎ বিভাগসংশ্লিষ্টরাও। বিদ্যুৎ খাতের ক্রেতা সংস্থাটির এক হিসাবে বলা হয়েছে, ডলারের বিনিময় হার প্রতি ১ টাকা বৃদ্ধির জন্য চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে খাতটিতে ভর্তুকির পরিমাণ বাড়াতে হবে ৪৭৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। সে অনুযায়ী গত ও চলতি অর্থবছরের ডলারের গড় বিনিময় হারের পার্থক্য হিসাব করে দেখা গেছে, এবার বিদ্যুৎ খাতে সরকারের ভর্তুকি বাড়াতে হবে অন্তত সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা।

কালবেলা:

চট্টগ্রামে প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত পাইলট নিহত
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে বিমানবাহিনীর বিধ্বস্ত বিমান উদ্ধার করেছে নৌবাহিনী। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে কর্ণফুলীর জুলধা মাতব্বর ঘাটসংলগ্ন এইচএম স্টিল কারখানার পাশে কর্ণফুলী নদী থেকে বিমানের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। এতে স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ আসিম জাওয়াদ নিহত হন। আহত হয়েছেন উইং কমান্ডার সোহান হাসান খান। তিনি চিকিৎসাধীন আছেন।

বিমান বিধ্বস্তের সেই ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। এতে দেখা গেছে, পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল এলাকার আকাশে উড়ছিল ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমানটি। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই বিমানের পেছনে জ্বলে ওঠে আগুন। মুহূর্তেই বিধ্বস্ত হয়ে কর্ণফুলী নদীতে পড়ে যায় বিমানটি।

পতেঙ্গা থানার ওসি কবীরুল ইসলাম বলেন, বিমানে আগুন লাগার পর দুজন পাইলট প্যারাস্যুট দিয়ে নেমে আসেন। এ সময় কর্ণফুলী নদী থেকে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, বিমানবাহিনীর একটি ইয়াক-১৩০ প্রশিক্ষণ বিমান নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রামের জহুরুল হক ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে। প্রশিক্ষণ শেষে ফেরার সময় কর্ণফুলী নদীর মোহনার কাছে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। দুর্ঘটনার পর দুই বৈমানিক উইং কমান্ডার সোহান হাসান খান ও স্কোয়াড্রন লিডার মুহাম্মদ আসিম জাওয়াদ প্যারাস্যুট দিয়ে নদীতে অবতরণ করেন। পরে তাদের উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে আসিম জাওয়াদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে বিএনএস পতেঙ্গা হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে দুই ঘণ্টা পর তিনি মারা যান। আহত অন্য বৈমানিক উইং কমান্ডার সোহান চিকিৎসাধীন।

জাওয়াদের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। আইএসপিআর জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় পতিত বিমানটি উদ্ধারের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিমানটিতে আগুন ধরে যাওয়ার পর বড় ধরনের ক্ষতি এড়াতে বৈমানিকরা অত্যন্ত সাহসিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে বিমানটিকে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যেতে সক্ষম হন।

 

একক ক্রেতা হিসেবে বিপিডিবি সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ কেনে বেসরকারি ও ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র (আইপিপি, রেন্টাল, কুইক রেন্টাল ইত্যাদি) এবং আমদানীকৃত বিদ্যুৎ সরবরাহকারী কেন্দ্রগুলোর কাছ থেকে। প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে ক্রয় চুক্তিতে বিদ্যুতের মূল্য নির্ধারণ হয় ডলারে। এতে টাকার অবমূল্যায়নজনিত ক্ষতিও বিপিডিবিকে বহন করতে হয়।

সংস্থাটির নিজস্ব এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ডলারের বিপরীতে প্রতি ১ টাকা অবমূল্যায়নে খাতটিতে ব্যয় বেড়ে অতিরিক্ত ভর্তুকির প্রয়োজন বাড়বে ৪৭৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) ডলারের গড় বিনিময় হার ছিল প্রায় ১১০ টাকা। বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঘোষণায় ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে মুদ্রাটির মধ্যবর্তী বিনিময় হার নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকায়। এ দর অর্থবছরের বাকি দুই মাস স্থিতিশীল থাকলে চলতি অর্থবছরে ডলারের গড় বিনিময় হার দাঁড়াবে প্রায় ১১১ টাকা ১৩ পয়সায়। গত অর্থবছরে ডলারের গড় বিনিময় হার ছিল প্রায় ৯৯ টাকা ৪৫ পয়সা। সেক্ষেত্রে চলতি অর্থবছরের সঙ্গে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ডলারের গড় বিনিময় হারে পার্থক্য দাঁড়ায় ১১ টাকা ৬৮ পয়সায়। এ পার্থক্যকে বিবেচনায় নিলে সরকারকে চলতি অর্থবছরে বিদ্যুতে ভর্তুকি বাড়াতে হবে আরো ৫ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকারও বেশি।

তবে বাজারে কোথাও এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারিত দরে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। সেক্ষেত্রে সরকারের টাকার অবমূল্যায়নজনিত ভর্তুকি বাবদ ব্যয় আরো বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। টাকার অবমূল্যায়নজনিত কারণে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি ব্যয় বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করছেন বিপিডিবির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে বিপিডিবির ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে ট্যারিফ চুক্তি করা হয় ডলারে। ফলে ডলারের নির্ধারিত নতুন দরেই বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে বাড়তি টাকা পরিশোধ করতে হবে। ডলারের বিনিময় হারের এ পরিবর্তনে বিপিডিবির ব্যয়ের বোঝা আরো বাড়ল।’