ঢাকা ১০:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডাক্তার হয়ে মা-বাবা থেকে ‘মুখ ফিরিয়ে নিলেন’ ছেলে

শেষ সম্বল ভিটে লিখে নেওয়ার পরও বাবা-মায়ের ভরণ পোষণ করেন না ছেলে। ছেলে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (এমবিবিএস) ডা. মো. সুজাউদ্দৌলা’র বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে এই অভিযোগ দিয়েছেন ‘মা’ মোছা. মনিরা বেগম।

সোমবার (৬ মে) সকালে ইউএনও’র নারী সহায়তা কেন্দ্রে এ অভিযোগ দেন তিনি। অভিযোগে মা মনিরা বেগম জানান, উপজেলা পৌর সদরের আনন্দ নগর মহল্লার মো. খাইরুল ইসলামের স্ত্রী তিনি।

তাদের সন্তান ডা. মো. সুজাউদ্দৌলাকে লেখাপড়া করানোর জন্য স্বামী-স্ত্রী দুইজন কঠোর পরিশ্রম করেছেন। ছেলেকে ডাক্তারি পড়াশোনা করাতে গিয়ে নিজের সব জায়গা জমি বিক্রি করে দিয়েছিলেন। তার স্বামী অসুস্থ শরীর নিয়েও অটোভ্যান চালিয়ে সংসার পরিচালনা করেছেন এবং ছেলের লেখাপড়ার খরচ দিয়েছেন। ছেলে এখন বড় ডাক্তার। অনেক টাকা উপার্জন করে। ছেলে শেষ সম্বল ভিটাও লিখে নেয় বাবা মায়ের কাছ থেকে।

তিনি জানান, জমি-জমা, ভিটে-মাটি শেষ হলেও ভেবেছিলেন ছেলেকে তো প্রতিষ্ঠিত করেছেন, ছেলেই তাদের ভরণ পোষণ করবে। তবে ছেলের কাছে ভরণপোষণ চাইতে গেলে গালিগালাজ করে, এমনকি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনও চালায়। তাছাড়াও বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ারও হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগ দেন মা ও বাবা।

বাবা মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘ আমি একজন অসুস্থ ব্যক্তি। অসুস্থ শরীর নিয়েও ভ্যানগাড়ি চালিয়ে কোনোরকমে জীবন জীবিকা নির্বাহ করি। প্রতিদিন ওষুধ কিনতে হয়। স্ত্রী-সংসার নিয়ে বিপাকে পড়েছি। ছেলের জন্য এত কিছু করলাম, সেই ছেলে ভরণপোষণ দিচ্ছে না। এখন মানবেতর জীবন যাপন করছি।

বাবা-মাকে ভরণপোষণ না দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (এমবিবিএস) সুজাউদ্দৌলা জানান, পিতা-মাতা হওয়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন তারা। পিতা খাইরুল ইসলাম স্বেচ্ছায় তাকে জমি লিখে দিয়েছিলেন। এছাড়াও জমি-জমা বিক্রি করে এবং কঠোর পরিশ্রম করে তাকে পড়াশোনা করিয়েছেন তার বাবা-মা এমন ঘটনাও সত্য নয়। তিনি দাবি করেন, তিনি ভরণপোষণ দিতে চাইলেও বাবা-মা তার সাথে থাকতে চান না। ’

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলামের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

যে কারণে হয় মরণ ব্যাধি রোগ ক্যান্সার

ডাক্তার হয়ে মা-বাবা থেকে ‘মুখ ফিরিয়ে নিলেন’ ছেলে

আপডেট সময় ০৩:৪৭:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ মে ২০২৪

শেষ সম্বল ভিটে লিখে নেওয়ার পরও বাবা-মায়ের ভরণ পোষণ করেন না ছেলে। ছেলে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (এমবিবিএস) ডা. মো. সুজাউদ্দৌলা’র বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে এই অভিযোগ দিয়েছেন ‘মা’ মোছা. মনিরা বেগম।

সোমবার (৬ মে) সকালে ইউএনও’র নারী সহায়তা কেন্দ্রে এ অভিযোগ দেন তিনি। অভিযোগে মা মনিরা বেগম জানান, উপজেলা পৌর সদরের আনন্দ নগর মহল্লার মো. খাইরুল ইসলামের স্ত্রী তিনি।

তাদের সন্তান ডা. মো. সুজাউদ্দৌলাকে লেখাপড়া করানোর জন্য স্বামী-স্ত্রী দুইজন কঠোর পরিশ্রম করেছেন। ছেলেকে ডাক্তারি পড়াশোনা করাতে গিয়ে নিজের সব জায়গা জমি বিক্রি করে দিয়েছিলেন। তার স্বামী অসুস্থ শরীর নিয়েও অটোভ্যান চালিয়ে সংসার পরিচালনা করেছেন এবং ছেলের লেখাপড়ার খরচ দিয়েছেন। ছেলে এখন বড় ডাক্তার। অনেক টাকা উপার্জন করে। ছেলে শেষ সম্বল ভিটাও লিখে নেয় বাবা মায়ের কাছ থেকে।

তিনি জানান, জমি-জমা, ভিটে-মাটি শেষ হলেও ভেবেছিলেন ছেলেকে তো প্রতিষ্ঠিত করেছেন, ছেলেই তাদের ভরণ পোষণ করবে। তবে ছেলের কাছে ভরণপোষণ চাইতে গেলে গালিগালাজ করে, এমনকি শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনও চালায়। তাছাড়াও বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ারও হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগ দেন মা ও বাবা।

বাবা মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘ আমি একজন অসুস্থ ব্যক্তি। অসুস্থ শরীর নিয়েও ভ্যানগাড়ি চালিয়ে কোনোরকমে জীবন জীবিকা নির্বাহ করি। প্রতিদিন ওষুধ কিনতে হয়। স্ত্রী-সংসার নিয়ে বিপাকে পড়েছি। ছেলের জন্য এত কিছু করলাম, সেই ছেলে ভরণপোষণ দিচ্ছে না। এখন মানবেতর জীবন যাপন করছি।

বাবা-মাকে ভরণপোষণ না দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (এমবিবিএস) সুজাউদ্দৌলা জানান, পিতা-মাতা হওয়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন তারা। পিতা খাইরুল ইসলাম স্বেচ্ছায় তাকে জমি লিখে দিয়েছিলেন। এছাড়াও জমি-জমা বিক্রি করে এবং কঠোর পরিশ্রম করে তাকে পড়াশোনা করিয়েছেন তার বাবা-মা এমন ঘটনাও সত্য নয়। তিনি দাবি করেন, তিনি ভরণপোষণ দিতে চাইলেও বাবা-মা তার সাথে থাকতে চান না। ’

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুজাহিদুল ইসলামের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। ’