ঢাকা ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
অধ্যক্ষকে গুলি করে হত্যার হুমকি দিলেন যুবলীগ নেতা, নীরব প্রশাসন বঙ্গোপসাগর উপকূলে লবণবোঝাই ২০ ট্রলার ডুবি, নিখোঁজ ৭০ ৬০ লাখ কর্মী বিদেশে পাঠানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে : শফিকুর রহমান উপজেলায় শান্তিপূর্ণ ভোটে উপস্থিতি সন্তোষজনক: ওবায়দুল কাদের মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে : প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরেই গ্রেফতার ‘কাচ্চি ভাই’ রেস্তোরাঁর মালিক অনিয়মের অভিযোগে বগুড়ায় প্রিসাইডিং কর্মকর্তাসহ আটক ২ ৪৬তম বিসিএস প্রিলির ফল প্রকাশ হতে পারে বৃহস্পতিবার ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল নেদারল্যান্ডস; আটক ১৬৯ বার্নাব্যুতে আজ রিয়াল-বায়ার্ন মহারণের অপেক্ষায় ফুটবল দুনিয়া

সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ যাচ্ছে ঢাকায়, অন্য এলাকায় ভয়াবহ লোডশেডিং

দেশে চলমান তাপপ্রবাহের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদ্যুতের চাহিদা। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হলেও, তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। ফলে ঘাটতি মেটাতে নিয়মিতই হচ্ছে লোডশেডিং। তবে তা ঢাকায় তুলনামূলক অনেক কম। অন্যান্য শহর ও গ্রামাঞ্চলে চাহিদার অর্ধেকও বিদ্যুৎ দেয়া হচ্ছে না। এতে সারাদেশে লোডশেডিং চরম আকার ধারণ করেছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তথ্যমতে, গত ২২ এপ্রিল সোমবার রাত ৯টায় দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। যদিও ওই সময় চাহিদা ছিল ১৬ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট। এতে রেকর্ড উৎপাদনের সময়ও ৪৬৭ মেগাওয়াট লোডশেডিং করা হয়েছে। যদিও বিদ্যুতের প্রকৃত চাহিদা সরকারি প্রাক্কলনের চেয়ে অনেক বেশি। ফলে গ্রাহক পর্যায়ে রেকর্ড উৎপাদনের সময় হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং ছিল।

এদিকে ২২ এপ্রিল রাত ৯টায় রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদিত বিদ্যুতের ৩৫ শতাংশের বেশি পেয়েছে ঢাকা অঞ্চল। অর্থাৎ ঢাকায় ওই সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় পাঁচ হাজার ৪১০ মেগাওয়াট। সে সময় খুলনা অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় এক হাজার ৯৪৪ মেগাওয়াট তথা ১২ দশমিক ৫৯ শতাংশ, রাজশাহীতে এক হাজার ৮১৭ মেগাওয়াট তথা ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং কুমিল্লা অঞ্চলে এক হাজার ৫৮৩ মেগাওয়াট তথা ১০ দশমিক ২৫ শতাংশ।

দেশের অন্য অঞ্চলগুলোয় বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ ছিল আরও কম। এর মধ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলে ২২ এপ্রিল রাত ৯টায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় এক হাজার ৩৫৬ মেগাওয়াট তথা আট দশমিক ৭৮ শতাংশ, ময়মনসিংহ অঞ্চলে এক হাজার ২২৬ মেগাওয়াট বা সাত দশমিক ৯৪ শতাংশ, রংপুর অঞ্চলে ৯৭৯ মেগাওয়াট বা ছয় দশমিক ৩৪ শতাংশ, সিলেট অঞ্চলে ৬১২ মেগাওয়াট তথা তিন দশমিক ৯৬ শতাংশ এবং বরিশাল অঞ্চলে ৫১৩ মেগাওয়াট বা তিন দশমিক ৩২ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের নীতি নির্ধারণী মহলের নির্দেশেই বিদ্যুৎ সরবরাহে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে রাজধানীকে। ঢাকা শহরে পিক আওয়ারে বিশেষত বিদ্যমান গরমে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট। আর রাজধানীর বাইরে ঢাকার অন্যান্য জেলায় চাহিদা আরও প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট। অর্থাৎ শুধু ঢাকা বিভাগেই বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে পিক আওয়ারে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট। এতে রেকর্ড উৎপাদনের সময় ঢাকায় তেমন লোডশেডিং ছিল না। তবে ফিডারগুলোয় বিশেষত গ্রাহক পর্যায়ে চাহিদা আরও কিছুটা বেশি হতে পারে। তাই ওই সময় ঢাকায় কিছুটা লোডশেডিং হয়েছে।

অন্যদিকে ঢাকার বাইরে বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে দিনে সেচ অঞ্চলগুলো অগ্রাধিকার পায়। রাতে অগ্রাধিকার পায় শিল্পাঞ্চলগুলো। এতে ওইসব অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ তুলনামূলক বেশি করা হয়। ফলে পিক বা অফপিক সময়ে ঢাকার বাইরে বিশেষত মফস্বল ও গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় অনেক কম। আবার রাত ১০টার পর গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহে পর্যায়ক্রমিক তথা রোটেশন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। এতে লোডশেডিং ঢাকার বাইরে বেশি হয়।

পিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হয়। রাত ৯টাকে পিক আওয়ার ধরে ওই সময় সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। রাত ১০টার পর থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমতে থাকে। তবে চলমান তাপপ্রবাহে রাতেও তাপমাত্রা তেমন একটা কমছে না। এছাড়া জীবনযাত্রার ধরন পরিবর্তনের কারণে মানুষ গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকছে। ফলে রাত ১২টা থেকে ২টার মধ্যে সাধারণত সর্বোচ্চ লোডশেডিং হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রেকর্ড বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিনও (২২ এপ্রিল) সারাদেশে বিশেষত গ্রামাঞ্চলে গড়ে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে। ঈদুল ফিতরের পর কয়েক দিন চাহিদা কম থাকায় সাময়িক স্বস্তি থাকলেও, গত এক সপ্তাহ ধরে লোডশেডিং বাড়ছেই। গত কয়েক দিনে তা চরম আকার ধারণ করেছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

অধ্যক্ষকে গুলি করে হত্যার হুমকি দিলেন যুবলীগ নেতা, নীরব প্রশাসন

সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ যাচ্ছে ঢাকায়, অন্য এলাকায় ভয়াবহ লোডশেডিং

আপডেট সময় ১২:৪১:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

দেশে চলমান তাপপ্রবাহের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদ্যুতের চাহিদা। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হলেও, তা চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। ফলে ঘাটতি মেটাতে নিয়মিতই হচ্ছে লোডশেডিং। তবে তা ঢাকায় তুলনামূলক অনেক কম। অন্যান্য শহর ও গ্রামাঞ্চলে চাহিদার অর্ধেকও বিদ্যুৎ দেয়া হচ্ছে না। এতে সারাদেশে লোডশেডিং চরম আকার ধারণ করেছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তথ্যমতে, গত ২২ এপ্রিল সোমবার রাত ৯টায় দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। যদিও ওই সময় চাহিদা ছিল ১৬ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট। এতে রেকর্ড উৎপাদনের সময়ও ৪৬৭ মেগাওয়াট লোডশেডিং করা হয়েছে। যদিও বিদ্যুতের প্রকৃত চাহিদা সরকারি প্রাক্কলনের চেয়ে অনেক বেশি। ফলে গ্রাহক পর্যায়ে রেকর্ড উৎপাদনের সময় হাজার মেগাওয়াটের বেশি লোডশেডিং ছিল।

এদিকে ২২ এপ্রিল রাত ৯টায় রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদিত বিদ্যুতের ৩৫ শতাংশের বেশি পেয়েছে ঢাকা অঞ্চল। অর্থাৎ ঢাকায় ওই সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় পাঁচ হাজার ৪১০ মেগাওয়াট। সে সময় খুলনা অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় এক হাজার ৯৪৪ মেগাওয়াট তথা ১২ দশমিক ৫৯ শতাংশ, রাজশাহীতে এক হাজার ৮১৭ মেগাওয়াট তথা ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং কুমিল্লা অঞ্চলে এক হাজার ৫৮৩ মেগাওয়াট তথা ১০ দশমিক ২৫ শতাংশ।

দেশের অন্য অঞ্চলগুলোয় বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ ছিল আরও কম। এর মধ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলে ২২ এপ্রিল রাত ৯টায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় এক হাজার ৩৫৬ মেগাওয়াট তথা আট দশমিক ৭৮ শতাংশ, ময়মনসিংহ অঞ্চলে এক হাজার ২২৬ মেগাওয়াট বা সাত দশমিক ৯৪ শতাংশ, রংপুর অঞ্চলে ৯৭৯ মেগাওয়াট বা ছয় দশমিক ৩৪ শতাংশ, সিলেট অঞ্চলে ৬১২ মেগাওয়াট তথা তিন দশমিক ৯৬ শতাংশ এবং বরিশাল অঞ্চলে ৫১৩ মেগাওয়াট বা তিন দশমিক ৩২ শতাংশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারের নীতি নির্ধারণী মহলের নির্দেশেই বিদ্যুৎ সরবরাহে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে রাজধানীকে। ঢাকা শহরে পিক আওয়ারে বিশেষত বিদ্যমান গরমে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে প্রায় সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট। আর রাজধানীর বাইরে ঢাকার অন্যান্য জেলায় চাহিদা আরও প্রায় দুই হাজার মেগাওয়াট। অর্থাৎ শুধু ঢাকা বিভাগেই বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে পিক আওয়ারে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মেগাওয়াট। এতে রেকর্ড উৎপাদনের সময় ঢাকায় তেমন লোডশেডিং ছিল না। তবে ফিডারগুলোয় বিশেষত গ্রাহক পর্যায়ে চাহিদা আরও কিছুটা বেশি হতে পারে। তাই ওই সময় ঢাকায় কিছুটা লোডশেডিং হয়েছে।

অন্যদিকে ঢাকার বাইরে বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে দিনে সেচ অঞ্চলগুলো অগ্রাধিকার পায়। রাতে অগ্রাধিকার পায় শিল্পাঞ্চলগুলো। এতে ওইসব অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ তুলনামূলক বেশি করা হয়। ফলে পিক বা অফপিক সময়ে ঢাকার বাইরে বিশেষত মফস্বল ও গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় অনেক কম। আবার রাত ১০টার পর গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহে পর্যায়ক্রমিক তথা রোটেশন পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। এতে লোডশেডিং ঢাকার বাইরে বেশি হয়।

পিডিবির কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো হয়। রাত ৯টাকে পিক আওয়ার ধরে ওই সময় সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। রাত ১০টার পর থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমতে থাকে। তবে চলমান তাপপ্রবাহে রাতেও তাপমাত্রা তেমন একটা কমছে না। এছাড়া জীবনযাত্রার ধরন পরিবর্তনের কারণে মানুষ গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থাকছে। ফলে রাত ১২টা থেকে ২টার মধ্যে সাধারণত সর্বোচ্চ লোডশেডিং হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রেকর্ড বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিনও (২২ এপ্রিল) সারাদেশে বিশেষত গ্রামাঞ্চলে গড়ে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা লোডশেডিং হয়েছে। ঈদুল ফিতরের পর কয়েক দিন চাহিদা কম থাকায় সাময়িক স্বস্তি থাকলেও, গত এক সপ্তাহ ধরে লোডশেডিং বাড়ছেই। গত কয়েক দিনে তা চরম আকার ধারণ করেছে।