ঢাকা ০৩:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
লাশের ওপর আক্রোশ জাহাঙ্গীরের

কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করে চলছে বেশির ভাগ ব্যাংক

আজকের প্রত্রিকাগুলো

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর:

বনিক বার্তা:

কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করে চলছে বেশির ভাগ ব্যাংক

ঈদুল ফিতরের পরও দেশের ব্যাংক খাতে তারল্য পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়নি। বরং বেশির ভাগ ব্যাংকেই নগদ টাকার সংকট আরো বেড়েছে। দৈনন্দিন লেনদেন মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অর্থ ধার করছে দুই-তৃতীয়াংশ ব্যাংক। গত সোমবারও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করা অর্থের পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার ৬১২ কোটি টাকা। একই দিন আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার (কলমানি) থেকেও সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি ধার নেয়া হয়েছে। চাহিদা তীব্র হওয়ায় কলমানি বাজারের সুদহার এখনো সাড়ে ৯ শতাংশের বেশি।এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশের ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট চলছে। ঈদুল ফিতরের আগে এ সংকট তীব্র হয়। গত ২৭ মার্চ কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে রেকর্ড ২৮ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা ধার নেয় ৪০টিরও বেশি ব্যাংক। তখন বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে বলা হয়েছিল, ঈদের আগে দেশে নগদ অর্থের লেনদেন বেড়ে যায়। এ কারণে ব্যাংক থেকে নগদ টাকা তুলে নেয়ার চাপ বাড়ে। ঈদের পর ব্যবসায়ী ও গ্রাহকদের হাতে চলে যাওয়া নগদ অর্থ ব্যাংকে ফিরবে। তখন তারল্য পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

যদিও ঈদের পর গত এক সপ্তাহে ব্যাংক খাতে তারল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। বরং এ সময়ে কিছু ব্যাংকে নগদ অর্থের সংকট আরো তীব্র হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে মার্জার-অ্যাকুইজিশনের আলোচনায় থাকা ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকরা আমানত তুলে নিচ্ছেন। এ কারণে ওই ব্যাংকগুলোয় নগদ অর্থের প্রবাহ কমে গেছে।

একীভূত হওয়ার আলোচনায় থাকা ব্যাংকগুলোর একটি বেসিক ব্যাংক। সরকারের মালিকানাধীন ব্যাংকটি বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূতকরণের আলোচনা চলছে। এতে বেসিক ব্যাংক থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও নিজ নিজ আমানতের টাকা তুলে নিচ্ছে। চলতি মাসেই ব্যাংকটি থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার আমানত তুলে নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

বেসিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আবু মো. মোফাজ্জেল বণিক বার্তাকে জানান, ‘বেসিক ব্যাংকের বেশির ভাগ আমানতই সরকারি প্রতিষ্ঠানের। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক হিসেবে পরিচিতি থাকায় এখানে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আমানত রেখেছে। এখন বেসরকারি একটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার আলোচনা ছড়িয়ে পড়ায় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আমানতের অর্থ তুলে নিতে চিঠি দিচ্ছে। এরই মধ্যে মোটা অংকের আমানত তুলে নেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি জানিয়ে বেসিক ব্যাংক পর্ষদ থেকে সরকারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। আমরা সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ঈদুল ফিতরের পর প্রথম কর্মদিবস তথা ১৫ এপ্রিলও ব্যাংকগুলোয় নগদ অর্থের চাহিদা তীব্র ছিল। ওইদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ধারকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ১৯ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা। একই দিন কলমানি বাজার থেকেও ৪ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা ধার করা হয়। এরপর প্রতিদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধারকৃত অর্থের পরিমাণ ১৬ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকায় ওঠানামা করেছে। আর কলমানি বাজার থেকে ধারকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ৩ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা। একদিন মেয়াদি ধারের সুদহার সাড়ে ৯ শতাংশ হলেও কলমানি বাজারে চাহিদা অনুযায়ী অর্থ মিলছে না। এজন্যই ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অর্থ ধার করতে বাধ্য হচ্ছে।

কালের কন্ঠ:

লাশের ওপর আক্রোশ জাহাঙ্গীরের!

হাসপাতালের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের জমি নিয়ে বিরোধ। সেই বিরোধের আক্রোশ এসে পড়েছে লাশের ওপর। নজিরবিহীন এমন এক অমানবিক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন গাজীপুরের একসময়ের জনপ্রিয় মেয়র, বর্তমান মেয়রের ছেলে ও উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম। শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পাশে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কবরস্থানে দেড় মাস ধরে বেওয়ারিশ লাশ দাফন বন্ধ রেখেছেন তিনি।

অথচ আগে বছরের পর বছর ধরে হাসপাতালের বেওয়ারিশ লাশ সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এই কবরস্থানে দাফন করে আসছিল। জমি নিয়ে বিরোধে বর্তমানে ওই কবরস্থানে নাম-পরিচয়হীন লাশ দাফন বন্ধ রেখেছেন তিনি। তাহলে এত বছর ধরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কবরস্থানে কিভাবে লাশ দাফন হয়ে আসছিল—এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে জাহাঙ্গীর আলম উল্টো সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, হাসপাতালের লাশ হাসপাতালকেই দাফন করতে হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সীমানাপ্রাচীরের পাশেই সিটি করপোরেশনের কবরস্থান।

টিনশেড মর্গের মেঝেতে ১৪ দিন ধরে পড়ে থাকা বেওয়ারিশ লাশে পচন ধরে চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। বারবার চিঠি দিয়ে ও মৌখিকভাবে অনুরোধ করা হলেও লাশ দাফনের উদ্যোগ নিচ্ছে না সিটি করপোরেশন। লাশে পচন ধরায় নিরুপায় হয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে এগিয়ে এসেছে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম। হাসপাতাল থেকে কয়েক গজ দূরের ওই কবরস্থানে ঠাঁই মিলছে না বেওয়ারিশ লাশের।

মানবজমিন:

দাবদাহে নাভিশ্বাস
কমছে না গরমের তেজ। তীব্র তাপপ্রবাহে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুরা কষ্ট পাচ্ছে বেশি। খেটে খাওয়া মানুষেরও কষ্টের শেষ নেই। প্রতিদিনই হিটস্ট্রোকে মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরও তেমন কোনো সুবার্তা দিতে পারেনি। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল পাবনা জেলার ঈশ্বরদীতে। এখানে তাপমাত্রা ছিল ৪০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দাবদাহ থেকে বাঁচতে ও বৃষ্টি চেয়ে স্রষ্টার দরবারে হাত তুলেছেন ধর্মপ্রাণ মানুষ। বিভিন্ন জেলায় আদায় করা হয়েছে ইসতিসকার নামাজ। এমন পরিস্থিতিতে তাপপ্রবাহে নিজেকে সুরক্ষা রাখতে জনসাধারণের উদ্দেশ্যে ৪ দফা সুপারিশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
নাটোরের বড়াইগ্রামে কৃষি জমিতেই এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নের সাতইল বিলে তার মৃত্যু হয়। নিহত কৃষকের নাম রকুল হোসেন (৩০)। তিনি গাড়ফা উত্তরপাড়া গ্রামের হাজী আব্দুর রহিমের ছেলে। স্থানীয় পল্লীচিকিৎসক আসাদুজ্জামান রঞ্জু বলেন, সকাল থেকে কৃষি জমিতে কাজ করছিলেন তিনি। তীব্র দাবদাহ সহ্য করতে না পেরে পাশের জলাশয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়। পরে অন্য কৃষকরা তার মৃতদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। চান্দাই ইউপি চেয়ারম্যান শাহনাজ পারভীন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। অন্যদিকে রাজধানীর ওয়ারী এলাকার গুলিস্তান টোলপ্লাজার পাশের রাস্তায় মো. আলমগীর শিকদার (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। অতিরিক্ত গরমে হিটস্ট্রোকে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতকাল সকাল ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আনা হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আলমগীর যাত্রাবাড়ীর পশ্চিম শেখদি এলাকার মৃত জমির শিকদারের ছেলে। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া বলেন, ওয়ারী থেকে আসা ওই ব্যক্তিকে ঢামেকের জরুরি বিভাগে আনা হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের মাধ্যমে জানতে পারি যে, ওই ব্যক্তি অতিরিক্ত গরমে হিটস্ট্রোকে মারা যেতে পারেন। এর আগে সোমবার রাতে পটুয়াখালীর বাউফলে হিটস্ট্রোকে মোহাম্মদ শাহ আলম (৫০) নামের এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। তিনি পুলিশের ঢাকা গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত ছিলেন। শনিবার তিনি ছুটিতে গ্রামের বাড়ি আসেন। সোমবার রাত ৯টায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বাউফল উপজেলা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই ওই পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়। তিনি হিটস্ট্রোক করেছিলেন বলে পরিবারকে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক। বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, তিনি শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে বরিশালে পাঠানো হয়েছিল।

নয়াদিগন্ত:

রেলের ভাড়া বাড়ছে ৩০ শতাংশ
পর্যন্ত
যাত্রীবাহী ট্রেনের রেয়াত-সুবিধা (ছাড়) প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী ৪ মে থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। এর ফলে যাত্রীবাহী আন্তঃনগর, মেইল, লোকাল ও কমিউটার-সব ধরনের ট্রেনের ভাড়া বাড়বে। তবে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভাড়া অপরিবর্তিত থাকবে। নতুন সিদ্ধান্তের পর ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত শোভন শ্রেণীর ভাড়া বাড়বে ৬০ টাকা। এসি স্নিগ্ধা শ্রেণীর ভাড়া ১২০ টাকার মতো বাড়তে পারে। আর এসি কামরায় ঘুমিয়ে যাওয়ার (বার্থ) ভাড়া বাড়বে ২১৬ টাকার মতো। তবে ঢাকা থেকে নরসিংদী, জয়দেবপুর, ফরিদপুরসহ কম দূরত্বের (১০০ কিলোমিটারের কম) কোনো ট্রেনেই ভাড়া বাড়বে না।
গতকাল রাতে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলীর সাথে ৪ মে থেকে রেলের ভাড়া বাড়ছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, ভাড়া বাড়ছে না, বিভিন্ন দূরত্বে দেয়া রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার করে নিয়েছি।

গত সোমবার বাংলাদেশ রেলওয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রেয়াত-সুবিধা প্রত্যাহার ও তা কার্যকর করার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। রেলওয়ে সূত্র জানায়, বর্তমানে রেলে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভ্রমণের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া হয় না। কিন্তু এর বেশি ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্তরে ছাড় রয়েছে। ১০০ কিলোমিটারের পরবর্তী ১০১ থেকে ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভাড়ার ওপর ২০ শতাংশ ছাড় দেয়া হয়। ২৫১ থেকে ৪০০ কিলোমিটার ভ্রমণ করলে ছাড় পাওয়া যায় ২৫ শতাংশ। আর ৪০১ কিলোমিটারের ওপরে ৩০ শতাংশ ছাড়। এই ছাড় প্রত্যাহারের কারণে সম হারে ভাড়া বাড়বে।

রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে রেলে প্রতি কিলোমিটারে ভিত্তি ভাড়া ৩৯ পয়সা। এর সাথে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) ও অন্যান্য উচ্চ শ্রেণীর বিভিন্ন হারে ভাড়া যোগ হয়। সাথে যোগ হয় ভ্যাট। এভাবেই মোট ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। এবার ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের ক্ষেত্রে আরো বাড়তি ভাড়া যোগ হবে।
রাজস্ব ঘাটতির কারণে সরকার বিভিন্ন খাত থেকে আয় বাড়ানোর নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে রেলের লোকসানও বছরে দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি সামনে আসে। এ পরিস্থিতিতে ভাড়া না বাড়িয়ে রেয়াত বাতিল করে আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে। এতে সংস্থাটি বছরে ৩০০ কোটি টাকা বাড়তি আয় করতে পারবে বলে প্রাক্কলন করেছে।

 

রেয়াত বা ছাড় প্রত্যাহারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের জন্য গত ফেব্রুয়ারি মাসে পাঠানো হয়। ২ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়া যায় বলে প্রকাশিত গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এরপর রেলপথ মন্ত্রণালয় তা বাস্তবায়ন করতে রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়। ১ এপ্রিল থেকেই ছাড় প্রত্যাহারের বিষয়টি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রেলপথমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম কিছুদিন পর কার্যকরের নির্দেশনা দিলে বিষয়টি আটকে যায়।
রেলের কর্মকর্তারা জানান, সারা বিশ্বেই সব ধরনের পরিবহনে বেশি দূরত্বের ভ্রমণে উৎসাহী করতে ছাড় দেয়া হয়। রেলে ১৯৯২ সাল থেকেই নির্দিষ্ট রেয়াত দেয়া হচ্ছে। সে সময় বেশি দূরত্বের পাশাপাশি নির্দিষ্ট কিছু পথে ভাড়া ছাড় দেয়া হতো। ২০১২ সালে রেলের ভাড়া গড়ে ৫০ শতাংশ বাড়ানো হয়। সে সময় নির্দিষ্ট এলাকাভিত্তিক রেয়াত বাতিল করা হয়। ২০১৬ সালে আরেক দফা সাড়ে ৭ শতাংশ হারে ভাড়া বাড়ানো হয়। তবে বেশি দূরত্বে ভ্রমণের রেয়াত বহাল থাকে। তবে গত বছরের শেষের দিকে চালু হওয়া একমাত্র ঢাকা-কক্সবাজার পথে চলাচলকারী ট্রেনগুলোতে কোনো ছাড় রাখা হয়নি।

প্রথম আলো:

নিরাপদ সড়কের দাবি, চুয়েট শিক্ষার্থীদের দিনভর বিক্ষোভ
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থীর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনে ব্যস্ততম চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক ১৩ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখা হয়। ক্লাস–পরীক্ষা বর্জন করে কর্মসূচিতে অংশ নেন শিক্ষার্থীরা। এতে তাঁরা ১০ দফা দাবি পেশ করেন।

দুর্ঘটনার কারণ চিহ্নিত করতে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন,

সড়ক বিভাগের কর্মকর্তা ও পুলিশের সদস্যদের নিয়ে কমিটি করা হয়েছে। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটি প্রতিবেদন দেবে।

চট্টগ্রাম শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে রাউজান উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নে চুয়েট ক্যাম্পাস অবস্থিত। গত সোমবার বেলা সাড়ে তিনটায় মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হন তিন শিক্ষার্থী। তাঁরা হলেন পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা (২২), দ্বিতীয় বর্ষের তৌফিক হোসাইন (২১) ও জাকারিয়া হিমু (২১)। চুয়েটের কাছাকাছি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার জিয়ানগর এলাকায় পৌঁছালে তাঁদের মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় বেপরোয়া গতির শাহ আমানত পরিবহনের একটি যাত্রীবাসী বাস। ঘটনাস্থলের মৃত্যু হয় শান্ত সাহার। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তৌফিক হোসাইন। আর আহত অবস্থায় বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জাকারিয়া হিমু। তাঁর মাথায় হালকা আঘাত লেগেছে। তাঁকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. আরিফ বাচ্চু।
সমকাল:

তাপপ্রবাহ প্রাণঘাতী জেনেও সবাই চুপ
জীবিকার খোঁজে বছর দুয়েক আগে রাজধানী ঢাকায় পা রাখেন হবিগঞ্জের লাখাইয়ের অজপাড়াগাঁয়ের আবদুল আউয়াল। শনির আখড়ার এক গ্যারেজ থেকে রিকশা ভাড়া নিয়ে চালাতেন। প্রবল গরমেও রিকশা চালাতে গিয়ে চেতনা হারিয়ে গত সোমবার মারা যান আউয়াল। যাত্রাবাড়ীর কাজলা পশ্চিম শিবির নয়ানগর এলাকার আলমগীর শিকদার (৫৬) বই বাঁধাইয়ের কাজ করতেন। গতকাল গুলিস্তানে কড়া রোদে হেঁটে যাওয়ার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে রাস্তায় পড়ে মারা যান তিনি।

আগে যেখানে শৈত্যপ্রবাহে মানুষ মারা যেত বেশি, এখন সেখানে তাপপ্রবাহে দেখা যাচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। গত শুক্রবার থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত পাঁচ দিনে তাপপ্রবাহে অন্তত ২৯ জন মারা যাওয়ার খবর গণমাধ্যমে এসেছে। তীব্র তাপপ্রবাহের দিনগুলোতে মৃত্যু বেড়ে যায় ২২ শতাংশ। দেশের পাঁচটি প্রধান নগরের ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষ প্রবল তাপের ঝুঁকিতে আছেন। গরমে অধিক শ্রমে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারাচ্ছেন অনেকে। প্রতিবছর ঢাকা প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার শ্রম উৎপাদনশীলতা হারাচ্ছে। অথচ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর বন্যা-ঘূর্ণিঝড়ের মতো তাপপ্রবাহকে আমলেই নিচ্ছে না। এত মৃত্যু, এত ক্ষতির পরও তাপপ্রবাহকে ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ হিসেবে এখনও ঘোষণা করা হয়নি। ফলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো তাপপ্রবাহ নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা, নীতি ও বাজেট তৈরি করেনি। তাপমাত্রা কমাতেও নেই তেমন কর্মসূচি। অন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে যেভাবে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তাপপ্রবাহের ঝুঁকিতে থাকা মানুষের পাশে নেই কেউ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাপপ্রবাহকে আর হেলাফেলা করার উপায় নেই। কয়েক বছর ধরে তাপমাত্রা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, ভবিষ্যতে পরিস্থিতি কত ভয়াবহ হবে। এখনই তাপপ্রবাহকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে রাষ্ট্রীয় নীতি ও পরিকল্পনা নিতে হবে।

হুমকিতে জীবন-জীবিকা
অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩ সালে প্রকাশিত এক যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের পাঁচ প্রধান নগরের ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষ প্রবল গরমে বিপর্যস্ত। নগরগুলো হলো– ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও সিলেট। এর মধ্যে ঢাকার ৭৮ শতাংশ বা ১ কোটি ২৫ লাখ মানুষ এ ঝুঁকিতে রয়েছেন। ৯ বছরের কম ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষ গরমের কারণে সবচেয়ে বেশি শারীরিক সমস্যায় পড়ছে। জলবায়ু ও পরিবেশ গবেষকরা বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও আবহাওয়ার পরিবর্তন ছাড়াও শহরে দ্রুত দালানকোঠাসহ সব ধরনের ভৌত অবকাঠামো ও জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ফলে তাপপ্রবাহ বাড়ছে

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

ভেঙে পড়েছে চেইন অব কমান্ড
দলের শৃঙ্খলা ফেরাতে ৩০ এপ্রিলের বৈঠকে শাস্তির মুখোমুখি সেই এমপি-মন্ত্রীরাশাস্তির মুখোমুখি পড়তে যাচ্ছেন সেই এমপি-মন্ত্রীরা। তাঁরা দলীয় সভানেত্রীর কড়া নির্দেশনার পরও সন্তান, আত্মীয়স্বজনদের উপজেলা নির্বাচন থেকে বিরত রাখেননি। ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এ ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানিয়েছেন। রাজনীতি-বিশ্লেষকরা বলছেন, টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের দলীয় চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়েছে। এমপি-মন্ত্রী এমনকি কিছু কেন্দ্রীয় নেতাও দলীয় প্রধানের নির্দেশনা মানেননি। এটা সংগঠনবিরোধী কার্যক্রম। শৃঙ্খলা-পরিপন্থি কাজ। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করলে বহিষ্কারসহ নানা শাস্তির কথা গঠনতন্ত্রে রয়েছে। এর আগে একাধিকবার গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অপরাধে কাউকে কাউকে বহিষ্কার করা হলেও পরে আবার সাধারণ ক্ষমা পেয়েছেন। দলীয় পদপদবি এমনকি মনোনয়নও দেওয়া হয়েছে তাদের। সে কারণে এবারের উপজেলা নির্বাচনেও দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা আমলে নেননি অনেক এমপি-মন্ত্রী। প্রথম ধাপের ভোটে গত সোমবার ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। শেষ দিনেও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াননি এমপি-মন্ত্রীদের স্বজনরা। এসব প্রার্থীর বিষয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, যারা দলীয় নির্দেশ অমান্য করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তারা মূলত দলের শৃঙ্খলা মেনে চলছেন না। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অমান্য করছেন। তাদের বিষয়ে দল অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে। ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে দলীয় নির্দেশ অমান্যকারীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও সর্বজনীন করার জন্য দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপি-মন্ত্রীদের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এ চাপ এখনো বহাল রয়েছে। প্রথম ধাপের ভোটে কিছু এমপি-মন্ত্রী দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা রেখেছেন। কেউ কেউ রাখেননি। এখনো সময় ফুরিয়ে যায়নি। আশা করি তারা দলীয় প্রধানের কথা রাখবেন। যারা দলীয় সভানেত্রীর কথা রাখেননি, তাদের ব্যাপারে ৩০ এপ্রিল দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।’ জানা গেছে, কেন্দ্রীয় নির্দেশ অমান্য করার পেছনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা নিজের পক্ষে নানা যুক্তিও দিচ্ছেন। প্রথম ধাপের নির্বাচনে দলের নির্দেশনা এসেছে ১৮ এপ্রিল। আর প্রথম ধাপের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ১৫ এপ্রিল। এজন্য কোথাও কোথাও মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা একমাত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী কিংবা আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হয়ে গেছেন। তাদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীও নেই। স্থানীয় মন্ত্রী-এমপিরা নিজেদের স্বজনদের প্রার্থী ঘোষণা করায় অন্যরা আর প্রার্থী হওয়ার সাহস পাননি। প্রথম ধাপের ভোটে অনেক এমপি-মন্ত্রী দলীয় সভানেত্রীর কথা তো শোনেনইনি, দ্বিতীয় ধাপেও এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে দেনদরবার শুরু করেছেন কেউ কেউ। দ্বিতীয় ধাপে কুমিল্লা সদর আসনে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন কুমিল্লা-১০ আসনের এমপি, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ছোট ভাই গোলাম সারোয়ার। আ হ ম মুস্তফা কামাল সম্প্রতি দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে এসেছিলেন তাঁর ভাইয়ের পক্ষে দলীয় নেতা-কর্মীকে কাজ করতে যেন কুমিল্লা সদর আসনের এমপি আ ক ম বাহারউদ্দিন বাহারকে ফোন করেন। এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক সরাসরি না করে দেন। একই সঙ্গে দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা মানার কথা বলেন সাবেক অর্থমন্ত্রীকে। সুনামগঞ্জ-৪ আসনের এমপি মোহাম্মদ সাদিকের ভাগনে ফজলে রাব্বী স্বরনও সদর আসনে প্রার্থী হিসেবে প্রচার চালাচ্ছেনে।

ইত্তেফাক:

৩৫ ইনস্টিটিউট বিক্রি করেছে সাড়ে ৫ হাজার জাল সনদ!
১৫ বছর ধরে চলছে এই অবৈধ কার্যক্রম,

বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্টরাই চক্রের মূল হোতা,

আদালতে পাঁচ জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে দুর্নীতি বাসা বেঁধেছে অনেক দিন ধরেই। ধীরে ধীরে এটা পচনের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। শুধু বর্তমান চেয়ারম্যানের সময়েই নয়, গত ১৫ বছর ধরে সনদ জালিয়াতি চক্র এখানে গেড়ে বসেছে। সাবেক একজন চেয়ারম্যানও আছেন এই দুর্নীতির সঙ্গে। এমনকি দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কর্মকর্তারাও বিপুল অঙ্কের টাকা নিয়ে সিস্টেম এনালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামানকে ‘সৎ অফিসার’ হিসেবে সার্টিফিকেট দিয়েছেন। এই দীর্ঘ সময়ে ৩৫টি ইনস্টিটিউট সাড়ে ৫ হাজারের বেশি সার্টিফিকেট বিক্রি করেছে। ডিবি বলছে, এদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করা হবে। আনা হবে আইনের আওতায়।

ডিবির উপ-কমিশনার মশিউর রহমান ইত্তেফাককে বলেন, ‘বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করতে ষড়যন্ত্র করেছে। এর সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা আছে, তারা যে পেশারই হোক, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা বিভিন্ন পেশার ৩০ জনকে নজরদারির মধ্যে রেখেছি, তাদেরও যে কোনো সময় আইনের আওতায় আনা হবে। এ পর্যন্ত ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে সিস্টেম এনালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামান, চাকরিচ্যুত কম্পিউটার অপারেটর ফয়সাল আহমেদ, কুষ্টিয়ার গড়াই সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিচালক সানজিদা কলি, কামরাঙ্গীরচরের হিলফুল ফুযল কারিগরি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সরদার মো. গোলাম মোস্তাফা ও যাত্রাবাড়ীর ঢাকা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক মাকসুদুর রহমান মামুন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া সদ্য বিদায়ি চেয়ারম্যান আলী আকবর খানের স্ত্রী সেহেলা পারভীনকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

দৈনিক সংগ্রাম:

কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে আসছে সাপ!
দু’দিনের সময় দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে সাবেক চেয়ারম্যানকে: ডিবি

নাছির উদ্দিন শোয়েব: কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সনদ জালিয়াতির ঘটনায় কেঁচো খুঁড়তে যেনো বেরিয়ে এসেছে সাপ! বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্ত্রী শেহেলা পারভীনকে গ্রেফতারের পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে। জিজ্ঞাসাবাদে সনদ জালিয়াতির ঘটনায় তিনি নিজে এবং স্ত্রীকে নির্দোষ দাবি করে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে সন্তষ্টু হতে পারেনি গোয়েন্দারা। তারা বলছেন, বের্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি এর দায় এড়াতে পারেন না। তাকে দুই দিনের সময় দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তিনি নজরদারিতে আছেন। আলী আকবর খানের বিষয় তদন্ত চলছে। তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাকে গ্রেফতারও করা হতে পারে।

এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। এরমধ্যে অন্তত ২৫ জন গোয়েন্দা নজরদারিতে আছেন। এছাড়া জালিয়াতিতে উঠে আসছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অন্য প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীর নামও। তাদের মোবাইল ফোন ট্র্যাক করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে তাদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে গ্রেফতার করা হতে পারে আরো কয়েকজনকে। ডিবি সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সার্টিফিকেট জালিয়াতির সঙ্গে বোর্ডের সদস্য সাবেক চেয়ারম্যানের স্ত্রীসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এ ঘটনার সঙ্গে শুধু এই ছয়জন জড়িত নয়, বোর্ডের আরও কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত। রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় হওয়া এ সংক্রান্ত মামলায় এখন পর্যন্ত কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কম্পিউটার সেলের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামান, তার ব্যক্তিগত সহকারী ফয়সাল, কুষ্টিয়া গড়াই সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিচালক সানজিদা আক্তার কলি, কামরাঙ্গীরচর হিলফুল ফুজুল টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান ও ঢাকা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক মো. মাকসুদুর রহমান ওরফে মামুনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি লালবাগ বিভাগ। এছাড়াও জালিয়াতির সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আরও তিন কর্মকর্তার নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিবিএ নেতা আব্দুল বাছের, রেজিস্ট্রেশন শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রামার মামুনুর রশীদ ও বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাকারিয়া আব্বাস। তারা বিভিন্ন সময় বোর্ডের কম্পিউটার সেলের সিস্টেম অ্যানালিস্ট একেএম শামসুজ্জামানকে শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট পরিবর্তন ও জাল সার্টিফিকেট তৈরি করার কথা বলতেন। তাদের দাবি অনুযায়ী, এ কে এম শামসুজ্জামান সার্টিফিকেট তৈরি ও রেজাল্ট পরিবর্তন করে দিতেন। তবে এজন্য তারা শামসুজ্জামানকে কোনো টাকা দিতেন না। একই বোর্ডের লোক হওয়ায় শামসুজ্জামান তাদের কাছে টাকা চাইতে সাহসও পেতেন না। তদন্ত সূত্রে জানা যায়, শামসুজ্জামানের সার্টিফিকেট দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলা হয় দুদকে। দুদকের উপ-পরিচালক পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা মামলার তদন্তের জন্য শামসুজ্জামানকে ডাকেন। এরপর থেকে দুদকের ওই কর্মকর্তাকে বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন শামসুজ্জামান। কিন্তু সেই কর্মকর্তাকে ম্যানেজ না করতে পেরে দুদকের উপ-পরিচালক পদমর্যাদার আরেক কর্মকর্তার দারস্থ হন। দুদকের দুজন উপ-পরিচালক মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট জালিয়াতির মামলায় এ ঘটনার মূলহোতা শামসুজ্জামানকে অব্যাহতি দিয়েছেন। গ্রেফতার এ কে এম শাসমুজ্জামান ও তার ব্যক্তিগত সহযোগী ফয়সাল গত কয়েক বছরে পাঁচ হাজারের বেশি সার্টিফিকেট ও মার্কশিট বানিয়ে ভুয়া লোকদের কাছে হস্তান্তর করেছে। একই সঙ্গে সরকারি ওয়েবসাইটে, সরকারি পাসওয়ার্ড, অথরাইজেশন ব্যবহার করে ভুয়া লোকদের মধ্যে বিক্রি করা সার্টিফিকেটগুলোকে বাংলাদেশ সরকারের কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে আপলোড করেছে। ফলে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর যে কোনো দেশে বসে এ ওয়েবসাইটে গিয়ে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর গুগলে সার্চ করলে তা সঠিক পাওয়া যায়।

যুগান্তর:

কাতারের সঙ্গে ১০ চুক্তি সমঝোতা
স্মারক সইদুদিনের সফর শেষে আমিরের ঢাকা ত্যাগ * রাজধানীতে শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির নামে সড়ক ও পার্কের নামকরণ
পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারে বাংলাদেশ ও কাতার পাঁচটি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এ অনুষ্ঠান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি প্রত্যক্ষ করেন।

 

চুক্তিগুলো হলো-দুই দেশের মধ্যে আয়ের ক্ষেত্রে দ্বৈত কর পরিহার এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধ, আইনি ক্ষেত্রে সহযোগিতা, সমুদ্র পরিবহণ, পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা এবং যৌথ ব্যবসায়িক পরিষদ প্রতিষ্ঠা। সমঝোতা স্মারকগুলোর (এমওইউ) মধ্যে রয়েছে-জনশক্তি কর্মসংস্থান (শ্রম), বন্দর (এমডব্লিউএএনআই কাতার এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ), দুই দেশের মধ্যে শিক্ষা, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা, যুব ও ক্রীড়াক্ষেত্র এবং কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতা। এদিকে কাতারের আমির দুদিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।

বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ঢাকা সফর শেষে তার নেপাল যাওয়ার কথা।
এর আগে কাতারের আমির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। তারা একান্ত বৈঠকেও মিলিত হন। পরে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। পিএমও ত্যাগের আগে আমির টাইগার গেটে রক্ষিত দর্শনার্থী বইয়েও স্বাক্ষর করেন।

এরপর তিনি বঙ্গভবনে যান। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কাতারের আমিরের সম্মানে বঙ্গভবনে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন

এমপিদের থেকেও সম্পদ বেশি উপজেলা চেয়ারম্যানদের

লাশের ওপর আক্রোশ জাহাঙ্গীরের

কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করে চলছে বেশির ভাগ ব্যাংক

আপডেট সময় ০৯:১২:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর:

বনিক বার্তা:

কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করে চলছে বেশির ভাগ ব্যাংক

ঈদুল ফিতরের পরও দেশের ব্যাংক খাতে তারল্য পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়নি। বরং বেশির ভাগ ব্যাংকেই নগদ টাকার সংকট আরো বেড়েছে। দৈনন্দিন লেনদেন মেটাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অর্থ ধার করছে দুই-তৃতীয়াংশ ব্যাংক। গত সোমবারও কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধার করা অর্থের পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার ৬১২ কোটি টাকা। একই দিন আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজার (কলমানি) থেকেও সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি ধার নেয়া হয়েছে। চাহিদা তীব্র হওয়ায় কলমানি বাজারের সুদহার এখনো সাড়ে ৯ শতাংশের বেশি।এক বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশের ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট চলছে। ঈদুল ফিতরের আগে এ সংকট তীব্র হয়। গত ২৭ মার্চ কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে রেকর্ড ২৮ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা ধার নেয় ৪০টিরও বেশি ব্যাংক। তখন বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে বলা হয়েছিল, ঈদের আগে দেশে নগদ অর্থের লেনদেন বেড়ে যায়। এ কারণে ব্যাংক থেকে নগদ টাকা তুলে নেয়ার চাপ বাড়ে। ঈদের পর ব্যবসায়ী ও গ্রাহকদের হাতে চলে যাওয়া নগদ অর্থ ব্যাংকে ফিরবে। তখন তারল্য পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

যদিও ঈদের পর গত এক সপ্তাহে ব্যাংক খাতে তারল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। বরং এ সময়ে কিছু ব্যাংকে নগদ অর্থের সংকট আরো তীব্র হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে মার্জার-অ্যাকুইজিশনের আলোচনায় থাকা ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকরা আমানত তুলে নিচ্ছেন। এ কারণে ওই ব্যাংকগুলোয় নগদ অর্থের প্রবাহ কমে গেছে।

একীভূত হওয়ার আলোচনায় থাকা ব্যাংকগুলোর একটি বেসিক ব্যাংক। সরকারের মালিকানাধীন ব্যাংকটি বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূতকরণের আলোচনা চলছে। এতে বেসিক ব্যাংক থেকে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও নিজ নিজ আমানতের টাকা তুলে নিচ্ছে। চলতি মাসেই ব্যাংকটি থেকে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার আমানত তুলে নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

বেসিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) আবু মো. মোফাজ্জেল বণিক বার্তাকে জানান, ‘বেসিক ব্যাংকের বেশির ভাগ আমানতই সরকারি প্রতিষ্ঠানের। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক হিসেবে পরিচিতি থাকায় এখানে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আমানত রেখেছে। এখন বেসরকারি একটি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হওয়ার আলোচনা ছড়িয়ে পড়ায় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আমানতের অর্থ তুলে নিতে চিঠি দিচ্ছে। এরই মধ্যে মোটা অংকের আমানত তুলে নেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি জানিয়ে বেসিক ব্যাংক পর্ষদ থেকে সরকারকে চিঠি দেয়া হয়েছে। আমরা সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনার অপেক্ষায় আছি।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ঈদুল ফিতরের পর প্রথম কর্মদিবস তথা ১৫ এপ্রিলও ব্যাংকগুলোয় নগদ অর্থের চাহিদা তীব্র ছিল। ওইদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ধারকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ১৯ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা। একই দিন কলমানি বাজার থেকেও ৪ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা ধার করা হয়। এরপর প্রতিদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ধারকৃত অর্থের পরিমাণ ১৬ থেকে ২০ হাজার কোটি টাকায় ওঠানামা করেছে। আর কলমানি বাজার থেকে ধারকৃত অর্থের পরিমাণ ছিল ৩ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা। একদিন মেয়াদি ধারের সুদহার সাড়ে ৯ শতাংশ হলেও কলমানি বাজারে চাহিদা অনুযায়ী অর্থ মিলছে না। এজন্যই ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অর্থ ধার করতে বাধ্য হচ্ছে।

কালের কন্ঠ:

লাশের ওপর আক্রোশ জাহাঙ্গীরের!

হাসপাতালের সঙ্গে সিটি করপোরেশনের জমি নিয়ে বিরোধ। সেই বিরোধের আক্রোশ এসে পড়েছে লাশের ওপর। নজিরবিহীন এমন এক অমানবিক ঘটনার জন্ম দিয়েছেন গাজীপুরের একসময়ের জনপ্রিয় মেয়র, বর্তমান মেয়রের ছেলে ও উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম। শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পাশে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কবরস্থানে দেড় মাস ধরে বেওয়ারিশ লাশ দাফন বন্ধ রেখেছেন তিনি।

অথচ আগে বছরের পর বছর ধরে হাসপাতালের বেওয়ারিশ লাশ সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এই কবরস্থানে দাফন করে আসছিল। জমি নিয়ে বিরোধে বর্তমানে ওই কবরস্থানে নাম-পরিচয়হীন লাশ দাফন বন্ধ রেখেছেন তিনি। তাহলে এত বছর ধরে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কবরস্থানে কিভাবে লাশ দাফন হয়ে আসছিল—এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে জাহাঙ্গীর আলম উল্টো সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, হাসপাতালের লাশ হাসপাতালকেই দাফন করতে হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সীমানাপ্রাচীরের পাশেই সিটি করপোরেশনের কবরস্থান।

টিনশেড মর্গের মেঝেতে ১৪ দিন ধরে পড়ে থাকা বেওয়ারিশ লাশে পচন ধরে চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। বারবার চিঠি দিয়ে ও মৌখিকভাবে অনুরোধ করা হলেও লাশ দাফনের উদ্যোগ নিচ্ছে না সিটি করপোরেশন। লাশে পচন ধরায় নিরুপায় হয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুরোধে এগিয়ে এসেছে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম। হাসপাতাল থেকে কয়েক গজ দূরের ওই কবরস্থানে ঠাঁই মিলছে না বেওয়ারিশ লাশের।

মানবজমিন:

দাবদাহে নাভিশ্বাস
কমছে না গরমের তেজ। তীব্র তাপপ্রবাহে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুরা কষ্ট পাচ্ছে বেশি। খেটে খাওয়া মানুষেরও কষ্টের শেষ নেই। প্রতিদিনই হিটস্ট্রোকে মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরও তেমন কোনো সুবার্তা দিতে পারেনি। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বিরাজ করতে পারে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল পাবনা জেলার ঈশ্বরদীতে। এখানে তাপমাত্রা ছিল ৪০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দাবদাহ থেকে বাঁচতে ও বৃষ্টি চেয়ে স্রষ্টার দরবারে হাত তুলেছেন ধর্মপ্রাণ মানুষ। বিভিন্ন জেলায় আদায় করা হয়েছে ইসতিসকার নামাজ। এমন পরিস্থিতিতে তাপপ্রবাহে নিজেকে সুরক্ষা রাখতে জনসাধারণের উদ্দেশ্যে ৪ দফা সুপারিশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
নাটোরের বড়াইগ্রামে কৃষি জমিতেই এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নের সাতইল বিলে তার মৃত্যু হয়। নিহত কৃষকের নাম রকুল হোসেন (৩০)। তিনি গাড়ফা উত্তরপাড়া গ্রামের হাজী আব্দুর রহিমের ছেলে। স্থানীয় পল্লীচিকিৎসক আসাদুজ্জামান রঞ্জু বলেন, সকাল থেকে কৃষি জমিতে কাজ করছিলেন তিনি। তীব্র দাবদাহ সহ্য করতে না পেরে পাশের জলাশয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর আগেই তার মৃত্যু হয়। পরে অন্য কৃষকরা তার মৃতদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। চান্দাই ইউপি চেয়ারম্যান শাহনাজ পারভীন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। অন্যদিকে রাজধানীর ওয়ারী এলাকার গুলিস্তান টোলপ্লাজার পাশের রাস্তায় মো. আলমগীর শিকদার (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। অতিরিক্ত গরমে হিটস্ট্রোকে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গতকাল সকাল ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে আনা হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আলমগীর যাত্রাবাড়ীর পশ্চিম শেখদি এলাকার মৃত জমির শিকদারের ছেলে। ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া বলেন, ওয়ারী থেকে আসা ওই ব্যক্তিকে ঢামেকের জরুরি বিভাগে আনা হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের মাধ্যমে জানতে পারি যে, ওই ব্যক্তি অতিরিক্ত গরমে হিটস্ট্রোকে মারা যেতে পারেন। এর আগে সোমবার রাতে পটুয়াখালীর বাউফলে হিটস্ট্রোকে মোহাম্মদ শাহ আলম (৫০) নামের এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। তিনি পুলিশের ঢাকা গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত ছিলেন। শনিবার তিনি ছুটিতে গ্রামের বাড়ি আসেন। সোমবার রাত ৯টায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বাউফল উপজেলা হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই ওই পুলিশ সদস্যের মৃত্যু হয়। তিনি হিটস্ট্রোক করেছিলেন বলে পরিবারকে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক। বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন, তিনি শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে বরিশালে পাঠানো হয়েছিল।

নয়াদিগন্ত:

রেলের ভাড়া বাড়ছে ৩০ শতাংশ
পর্যন্ত
যাত্রীবাহী ট্রেনের রেয়াত-সুবিধা (ছাড়) প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী ৪ মে থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। এর ফলে যাত্রীবাহী আন্তঃনগর, মেইল, লোকাল ও কমিউটার-সব ধরনের ট্রেনের ভাড়া বাড়বে। তবে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভাড়া অপরিবর্তিত থাকবে। নতুন সিদ্ধান্তের পর ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত শোভন শ্রেণীর ভাড়া বাড়বে ৬০ টাকা। এসি স্নিগ্ধা শ্রেণীর ভাড়া ১২০ টাকার মতো বাড়তে পারে। আর এসি কামরায় ঘুমিয়ে যাওয়ার (বার্থ) ভাড়া বাড়বে ২১৬ টাকার মতো। তবে ঢাকা থেকে নরসিংদী, জয়দেবপুর, ফরিদপুরসহ কম দূরত্বের (১০০ কিলোমিটারের কম) কোনো ট্রেনেই ভাড়া বাড়বে না।
গতকাল রাতে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলীর সাথে ৪ মে থেকে রেলের ভাড়া বাড়ছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি নয়া দিগন্তকে বলেন, ভাড়া বাড়ছে না, বিভিন্ন দূরত্বে দেয়া রেয়াতি সুবিধা প্রত্যাহার করে নিয়েছি।

গত সোমবার বাংলাদেশ রেলওয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে রেয়াত-সুবিধা প্রত্যাহার ও তা কার্যকর করার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। রেলওয়ে সূত্র জানায়, বর্তমানে রেলে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভ্রমণের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া হয় না। কিন্তু এর বেশি ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন স্তরে ছাড় রয়েছে। ১০০ কিলোমিটারের পরবর্তী ১০১ থেকে ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভাড়ার ওপর ২০ শতাংশ ছাড় দেয়া হয়। ২৫১ থেকে ৪০০ কিলোমিটার ভ্রমণ করলে ছাড় পাওয়া যায় ২৫ শতাংশ। আর ৪০১ কিলোমিটারের ওপরে ৩০ শতাংশ ছাড়। এই ছাড় প্রত্যাহারের কারণে সম হারে ভাড়া বাড়বে।

রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়, বর্তমানে রেলে প্রতি কিলোমিটারে ভিত্তি ভাড়া ৩৯ পয়সা। এর সাথে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) ও অন্যান্য উচ্চ শ্রেণীর বিভিন্ন হারে ভাড়া যোগ হয়। সাথে যোগ হয় ভ্যাট। এভাবেই মোট ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। এবার ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের ক্ষেত্রে আরো বাড়তি ভাড়া যোগ হবে।
রাজস্ব ঘাটতির কারণে সরকার বিভিন্ন খাত থেকে আয় বাড়ানোর নানা উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে রেলের লোকসানও বছরে দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি সামনে আসে। এ পরিস্থিতিতে ভাড়া না বাড়িয়ে রেয়াত বাতিল করে আয় বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে। এতে সংস্থাটি বছরে ৩০০ কোটি টাকা বাড়তি আয় করতে পারবে বলে প্রাক্কলন করেছে।

 

রেয়াত বা ছাড় প্রত্যাহারের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের জন্য গত ফেব্রুয়ারি মাসে পাঠানো হয়। ২ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়া যায় বলে প্রকাশিত গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এরপর রেলপথ মন্ত্রণালয় তা বাস্তবায়ন করতে রেল কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়। ১ এপ্রিল থেকেই ছাড় প্রত্যাহারের বিষয়টি কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রেলপথমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম কিছুদিন পর কার্যকরের নির্দেশনা দিলে বিষয়টি আটকে যায়।
রেলের কর্মকর্তারা জানান, সারা বিশ্বেই সব ধরনের পরিবহনে বেশি দূরত্বের ভ্রমণে উৎসাহী করতে ছাড় দেয়া হয়। রেলে ১৯৯২ সাল থেকেই নির্দিষ্ট রেয়াত দেয়া হচ্ছে। সে সময় বেশি দূরত্বের পাশাপাশি নির্দিষ্ট কিছু পথে ভাড়া ছাড় দেয়া হতো। ২০১২ সালে রেলের ভাড়া গড়ে ৫০ শতাংশ বাড়ানো হয়। সে সময় নির্দিষ্ট এলাকাভিত্তিক রেয়াত বাতিল করা হয়। ২০১৬ সালে আরেক দফা সাড়ে ৭ শতাংশ হারে ভাড়া বাড়ানো হয়। তবে বেশি দূরত্বে ভ্রমণের রেয়াত বহাল থাকে। তবে গত বছরের শেষের দিকে চালু হওয়া একমাত্র ঢাকা-কক্সবাজার পথে চলাচলকারী ট্রেনগুলোতে কোনো ছাড় রাখা হয়নি।

প্রথম আলো:

নিরাপদ সড়কের দাবি, চুয়েট শিক্ষার্থীদের দিনভর বিক্ষোভ
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থীর সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর নিরাপদ সড়কের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনে ব্যস্ততম চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক ১৩ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখা হয়। ক্লাস–পরীক্ষা বর্জন করে কর্মসূচিতে অংশ নেন শিক্ষার্থীরা। এতে তাঁরা ১০ দফা দাবি পেশ করেন।

দুর্ঘটনার কারণ চিহ্নিত করতে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন,

সড়ক বিভাগের কর্মকর্তা ও পুলিশের সদস্যদের নিয়ে কমিটি করা হয়েছে। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটি প্রতিবেদন দেবে।

চট্টগ্রাম শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে রাউজান উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়নে চুয়েট ক্যাম্পাস অবস্থিত। গত সোমবার বেলা সাড়ে তিনটায় মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে বের হন তিন শিক্ষার্থী। তাঁরা হলেন পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা (২২), দ্বিতীয় বর্ষের তৌফিক হোসাইন (২১) ও জাকারিয়া হিমু (২১)। চুয়েটের কাছাকাছি রাঙ্গুনিয়া উপজেলার জিয়ানগর এলাকায় পৌঁছালে তাঁদের মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় বেপরোয়া গতির শাহ আমানত পরিবহনের একটি যাত্রীবাসী বাস। ঘটনাস্থলের মৃত্যু হয় শান্ত সাহার। হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান তৌফিক হোসাইন। আর আহত অবস্থায় বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জাকারিয়া হিমু। তাঁর মাথায় হালকা আঘাত লেগেছে। তাঁকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানান কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. আরিফ বাচ্চু।
সমকাল:

তাপপ্রবাহ প্রাণঘাতী জেনেও সবাই চুপ
জীবিকার খোঁজে বছর দুয়েক আগে রাজধানী ঢাকায় পা রাখেন হবিগঞ্জের লাখাইয়ের অজপাড়াগাঁয়ের আবদুল আউয়াল। শনির আখড়ার এক গ্যারেজ থেকে রিকশা ভাড়া নিয়ে চালাতেন। প্রবল গরমেও রিকশা চালাতে গিয়ে চেতনা হারিয়ে গত সোমবার মারা যান আউয়াল। যাত্রাবাড়ীর কাজলা পশ্চিম শিবির নয়ানগর এলাকার আলমগীর শিকদার (৫৬) বই বাঁধাইয়ের কাজ করতেন। গতকাল গুলিস্তানে কড়া রোদে হেঁটে যাওয়ার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে রাস্তায় পড়ে মারা যান তিনি।

আগে যেখানে শৈত্যপ্রবাহে মানুষ মারা যেত বেশি, এখন সেখানে তাপপ্রবাহে দেখা যাচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। গত শুক্রবার থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত পাঁচ দিনে তাপপ্রবাহে অন্তত ২৯ জন মারা যাওয়ার খবর গণমাধ্যমে এসেছে। তীব্র তাপপ্রবাহের দিনগুলোতে মৃত্যু বেড়ে যায় ২২ শতাংশ। দেশের পাঁচটি প্রধান নগরের ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষ প্রবল তাপের ঝুঁকিতে আছেন। গরমে অধিক শ্রমে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারাচ্ছেন অনেকে। প্রতিবছর ঢাকা প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার শ্রম উৎপাদনশীলতা হারাচ্ছে। অথচ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর বন্যা-ঘূর্ণিঝড়ের মতো তাপপ্রবাহকে আমলেই নিচ্ছে না। এত মৃত্যু, এত ক্ষতির পরও তাপপ্রবাহকে ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ হিসেবে এখনও ঘোষণা করা হয়নি। ফলে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো তাপপ্রবাহ নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা, নীতি ও বাজেট তৈরি করেনি। তাপমাত্রা কমাতেও নেই তেমন কর্মসূচি। অন্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে যেভাবে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তাপপ্রবাহের ঝুঁকিতে থাকা মানুষের পাশে নেই কেউ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তাপপ্রবাহকে আর হেলাফেলা করার উপায় নেই। কয়েক বছর ধরে তাপমাত্রা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, ভবিষ্যতে পরিস্থিতি কত ভয়াবহ হবে। এখনই তাপপ্রবাহকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে রাষ্ট্রীয় নীতি ও পরিকল্পনা নিতে হবে।

হুমকিতে জীবন-জীবিকা
অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩ সালে প্রকাশিত এক যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের পাঁচ প্রধান নগরের ১ কোটি ৭০ লাখ মানুষ প্রবল গরমে বিপর্যস্ত। নগরগুলো হলো– ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও সিলেট। এর মধ্যে ঢাকার ৭৮ শতাংশ বা ১ কোটি ২৫ লাখ মানুষ এ ঝুঁকিতে রয়েছেন। ৯ বছরের কম ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষ গরমের কারণে সবচেয়ে বেশি শারীরিক সমস্যায় পড়ছে। জলবায়ু ও পরিবেশ গবেষকরা বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ও আবহাওয়ার পরিবর্তন ছাড়াও শহরে দ্রুত দালানকোঠাসহ সব ধরনের ভৌত অবকাঠামো ও জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ফলে তাপপ্রবাহ বাড়ছে

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

ভেঙে পড়েছে চেইন অব কমান্ড
দলের শৃঙ্খলা ফেরাতে ৩০ এপ্রিলের বৈঠকে শাস্তির মুখোমুখি সেই এমপি-মন্ত্রীরাশাস্তির মুখোমুখি পড়তে যাচ্ছেন সেই এমপি-মন্ত্রীরা। তাঁরা দলীয় সভানেত্রীর কড়া নির্দেশনার পরও সন্তান, আত্মীয়স্বজনদের উপজেলা নির্বাচন থেকে বিরত রাখেননি। ৩০ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে এ ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা জানিয়েছেন। রাজনীতি-বিশ্লেষকরা বলছেন, টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের দলীয় চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়েছে। এমপি-মন্ত্রী এমনকি কিছু কেন্দ্রীয় নেতাও দলীয় প্রধানের নির্দেশনা মানেননি। এটা সংগঠনবিরোধী কার্যক্রম। শৃঙ্খলা-পরিপন্থি কাজ। দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করলে বহিষ্কারসহ নানা শাস্তির কথা গঠনতন্ত্রে রয়েছে। এর আগে একাধিকবার গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অপরাধে কাউকে কাউকে বহিষ্কার করা হলেও পরে আবার সাধারণ ক্ষমা পেয়েছেন। দলীয় পদপদবি এমনকি মনোনয়নও দেওয়া হয়েছে তাদের। সে কারণে এবারের উপজেলা নির্বাচনেও দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা আমলে নেননি অনেক এমপি-মন্ত্রী। প্রথম ধাপের ভোটে গত সোমবার ছিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন। শেষ দিনেও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াননি এমপি-মন্ত্রীদের স্বজনরা। এসব প্রার্থীর বিষয়ে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, যারা দলীয় নির্দেশ অমান্য করে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, তারা মূলত দলের শৃঙ্খলা মেনে চলছেন না। দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ অমান্য করছেন। তাদের বিষয়ে দল অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে। ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে দলীয় নির্দেশ অমান্যকারীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও সর্বজনীন করার জন্য দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপি-মন্ত্রীদের বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছিলেন। এ চাপ এখনো বহাল রয়েছে। প্রথম ধাপের ভোটে কিছু এমপি-মন্ত্রী দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা রেখেছেন। কেউ কেউ রাখেননি। এখনো সময় ফুরিয়ে যায়নি। আশা করি তারা দলীয় প্রধানের কথা রাখবেন। যারা দলীয় সভানেত্রীর কথা রাখেননি, তাদের ব্যাপারে ৩০ এপ্রিল দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।’ জানা গেছে, কেন্দ্রীয় নির্দেশ অমান্য করার পেছনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা নিজের পক্ষে নানা যুক্তিও দিচ্ছেন। প্রথম ধাপের নির্বাচনে দলের নির্দেশনা এসেছে ১৮ এপ্রিল। আর প্রথম ধাপের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ১৫ এপ্রিল। এজন্য কোথাও কোথাও মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা একমাত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী কিংবা আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হয়ে গেছেন। তাদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীও নেই। স্থানীয় মন্ত্রী-এমপিরা নিজেদের স্বজনদের প্রার্থী ঘোষণা করায় অন্যরা আর প্রার্থী হওয়ার সাহস পাননি। প্রথম ধাপের ভোটে অনেক এমপি-মন্ত্রী দলীয় সভানেত্রীর কথা তো শোনেনইনি, দ্বিতীয় ধাপেও এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে দেনদরবার শুরু করেছেন কেউ কেউ। দ্বিতীয় ধাপে কুমিল্লা সদর আসনে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন কুমিল্লা-১০ আসনের এমপি, সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের ছোট ভাই গোলাম সারোয়ার। আ হ ম মুস্তফা কামাল সম্প্রতি দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে এসেছিলেন তাঁর ভাইয়ের পক্ষে দলীয় নেতা-কর্মীকে কাজ করতে যেন কুমিল্লা সদর আসনের এমপি আ ক ম বাহারউদ্দিন বাহারকে ফোন করেন। এ সময় দলের সাধারণ সম্পাদক সরাসরি না করে দেন। একই সঙ্গে দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা মানার কথা বলেন সাবেক অর্থমন্ত্রীকে। সুনামগঞ্জ-৪ আসনের এমপি মোহাম্মদ সাদিকের ভাগনে ফজলে রাব্বী স্বরনও সদর আসনে প্রার্থী হিসেবে প্রচার চালাচ্ছেনে।

ইত্তেফাক:

৩৫ ইনস্টিটিউট বিক্রি করেছে সাড়ে ৫ হাজার জাল সনদ!
১৫ বছর ধরে চলছে এই অবৈধ কার্যক্রম,

বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্টরাই চক্রের মূল হোতা,

আদালতে পাঁচ জনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে দুর্নীতি বাসা বেঁধেছে অনেক দিন ধরেই। ধীরে ধীরে এটা পচনের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। শুধু বর্তমান চেয়ারম্যানের সময়েই নয়, গত ১৫ বছর ধরে সনদ জালিয়াতি চক্র এখানে গেড়ে বসেছে। সাবেক একজন চেয়ারম্যানও আছেন এই দুর্নীতির সঙ্গে। এমনকি দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন কর্মকর্তারাও বিপুল অঙ্কের টাকা নিয়ে সিস্টেম এনালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামানকে ‘সৎ অফিসার’ হিসেবে সার্টিফিকেট দিয়েছেন। এই দীর্ঘ সময়ে ৩৫টি ইনস্টিটিউট সাড়ে ৫ হাজারের বেশি সার্টিফিকেট বিক্রি করেছে। ডিবি বলছে, এদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করা হবে। আনা হবে আইনের আওতায়।

ডিবির উপ-কমিশনার মশিউর রহমান ইত্তেফাককে বলেন, ‘বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করতে ষড়যন্ত্র করেছে। এর সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা আছে, তারা যে পেশারই হোক, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা বিভিন্ন পেশার ৩০ জনকে নজরদারির মধ্যে রেখেছি, তাদেরও যে কোনো সময় আইনের আওতায় আনা হবে। এ পর্যন্ত ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে সিস্টেম এনালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামান, চাকরিচ্যুত কম্পিউটার অপারেটর ফয়সাল আহমেদ, কুষ্টিয়ার গড়াই সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিচালক সানজিদা কলি, কামরাঙ্গীরচরের হিলফুল ফুযল কারিগরি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সরদার মো. গোলাম মোস্তাফা ও যাত্রাবাড়ীর ঢাকা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক মাকসুদুর রহমান মামুন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়া সদ্য বিদায়ি চেয়ারম্যান আলী আকবর খানের স্ত্রী সেহেলা পারভীনকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

দৈনিক সংগ্রাম:

কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে আসছে সাপ!
দু’দিনের সময় দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে সাবেক চেয়ারম্যানকে: ডিবি

নাছির উদ্দিন শোয়েব: কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সনদ জালিয়াতির ঘটনায় কেঁচো খুঁড়তে যেনো বেরিয়ে এসেছে সাপ! বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্ত্রী শেহেলা পারভীনকে গ্রেফতারের পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে। জিজ্ঞাসাবাদে সনদ জালিয়াতির ঘটনায় তিনি নিজে এবং স্ত্রীকে নির্দোষ দাবি করে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে সন্তষ্টু হতে পারেনি গোয়েন্দারা। তারা বলছেন, বের্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি এর দায় এড়াতে পারেন না। তাকে দুই দিনের সময় দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তিনি নজরদারিতে আছেন। আলী আকবর খানের বিষয় তদন্ত চলছে। তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাকে গ্রেফতারও করা হতে পারে।

এ ঘটনায় বেশ কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। এরমধ্যে অন্তত ২৫ জন গোয়েন্দা নজরদারিতে আছেন। এছাড়া জালিয়াতিতে উঠে আসছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সরকারের অন্য প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীর নামও। তাদের মোবাইল ফোন ট্র্যাক করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে তাদেরকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। জড়িত থাকার প্রমাণ মিললে গ্রেফতার করা হতে পারে আরো কয়েকজনকে। ডিবি সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সার্টিফিকেট জালিয়াতির সঙ্গে বোর্ডের সদস্য সাবেক চেয়ারম্যানের স্ত্রীসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এ ঘটনার সঙ্গে শুধু এই ছয়জন জড়িত নয়, বোর্ডের আরও কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত। রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় হওয়া এ সংক্রান্ত মামলায় এখন পর্যন্ত কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কম্পিউটার সেলের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামান, তার ব্যক্তিগত সহকারী ফয়সাল, কুষ্টিয়া গড়াই সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিচালক সানজিদা আক্তার কলি, কামরাঙ্গীরচর হিলফুল ফুজুল টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান ও ঢাকা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক মো. মাকসুদুর রহমান ওরফে মামুনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি লালবাগ বিভাগ। এছাড়াও জালিয়াতির সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আরও তিন কর্মকর্তার নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিবিএ নেতা আব্দুল বাছের, রেজিস্ট্রেশন শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রামার মামুনুর রশীদ ও বোর্ডের উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাকারিয়া আব্বাস। তারা বিভিন্ন সময় বোর্ডের কম্পিউটার সেলের সিস্টেম অ্যানালিস্ট একেএম শামসুজ্জামানকে শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট পরিবর্তন ও জাল সার্টিফিকেট তৈরি করার কথা বলতেন। তাদের দাবি অনুযায়ী, এ কে এম শামসুজ্জামান সার্টিফিকেট তৈরি ও রেজাল্ট পরিবর্তন করে দিতেন। তবে এজন্য তারা শামসুজ্জামানকে কোনো টাকা দিতেন না। একই বোর্ডের লোক হওয়ায় শামসুজ্জামান তাদের কাছে টাকা চাইতে সাহসও পেতেন না। তদন্ত সূত্রে জানা যায়, শামসুজ্জামানের সার্টিফিকেট দুর্নীতি সংক্রান্ত একটি মামলা হয় দুদকে। দুদকের উপ-পরিচালক পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা মামলার তদন্তের জন্য শামসুজ্জামানকে ডাকেন। এরপর থেকে দুদকের ওই কর্মকর্তাকে বিভিন্নভাবে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন শামসুজ্জামান। কিন্তু সেই কর্মকর্তাকে ম্যানেজ না করতে পেরে দুদকের উপ-পরিচালক পদমর্যাদার আরেক কর্মকর্তার দারস্থ হন। দুদকের দুজন উপ-পরিচালক মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট জালিয়াতির মামলায় এ ঘটনার মূলহোতা শামসুজ্জামানকে অব্যাহতি দিয়েছেন। গ্রেফতার এ কে এম শাসমুজ্জামান ও তার ব্যক্তিগত সহযোগী ফয়সাল গত কয়েক বছরে পাঁচ হাজারের বেশি সার্টিফিকেট ও মার্কশিট বানিয়ে ভুয়া লোকদের কাছে হস্তান্তর করেছে। একই সঙ্গে সরকারি ওয়েবসাইটে, সরকারি পাসওয়ার্ড, অথরাইজেশন ব্যবহার করে ভুয়া লোকদের মধ্যে বিক্রি করা সার্টিফিকেটগুলোকে বাংলাদেশ সরকারের কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে আপলোড করেছে। ফলে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর যে কোনো দেশে বসে এ ওয়েবসাইটে গিয়ে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর গুগলে সার্চ করলে তা সঠিক পাওয়া যায়।

যুগান্তর:

কাতারের সঙ্গে ১০ চুক্তি সমঝোতা
স্মারক সইদুদিনের সফর শেষে আমিরের ঢাকা ত্যাগ * রাজধানীতে শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির নামে সড়ক ও পার্কের নামকরণ
পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদারে বাংলাদেশ ও কাতার পাঁচটি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এ অনুষ্ঠান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি প্রত্যক্ষ করেন।

 

চুক্তিগুলো হলো-দুই দেশের মধ্যে আয়ের ক্ষেত্রে দ্বৈত কর পরিহার এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধ, আইনি ক্ষেত্রে সহযোগিতা, সমুদ্র পরিবহণ, পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা এবং যৌথ ব্যবসায়িক পরিষদ প্রতিষ্ঠা। সমঝোতা স্মারকগুলোর (এমওইউ) মধ্যে রয়েছে-জনশক্তি কর্মসংস্থান (শ্রম), বন্দর (এমডব্লিউএএনআই কাতার এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ), দুই দেশের মধ্যে শিক্ষা, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা, যুব ও ক্রীড়াক্ষেত্র এবং কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতা। এদিকে কাতারের আমির দুদিনের রাষ্ট্রীয় সফর শেষে মঙ্গলবার বিকাল ৩টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।

বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ঢাকা সফর শেষে তার নেপাল যাওয়ার কথা।
এর আগে কাতারের আমির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। তারা একান্ত বৈঠকেও মিলিত হন। পরে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। পিএমও ত্যাগের আগে আমির টাইগার গেটে রক্ষিত দর্শনার্থী বইয়েও স্বাক্ষর করেন।

এরপর তিনি বঙ্গভবনে যান। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কাতারের আমিরের সম্মানে বঙ্গভবনে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন