ঢাকা ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভালো পাঠক কিংবা শ্রোতা হতে হলে করণীয়

পাঠক হওয়ার আগে শ্রোতা হউন

পড়া বা পাঠ তো কত রকমের ই হয়। যেমন- বইপাঠ,পত্রিকা পাঠ ইত্যাদি। আর যারা পড়েন বা পাঠ করেন তাদেরকেই তো আমরা পাঠক নামে অভিহিত করি বা সম্বোধন করি।

পড়ার উদ্দেশ্যই হলো জানা। জ্ঞানরাজ্যে প্রবেশ করা। বই হলো পড়ার জন্য সবচেয়ে উত্তম মাধ্যম। কেউ এই বই শখের বসে, আবার কেউ মনের খোরাক জোগাতে পড়ে থাকে। আবার কেউ শুধু প্রয়োজন হিসেবে বই পড়ে। বই তার পাঠককে শিখায় বিনয়, মার্জিত রুচি, কোমলতা। একজন পাঠক বইয়ের সংস্পর্শে এসে জ্ঞানরাজ্যের বিশালতা অনুভব করেন।

আগে শ্রোতা হউন

একটা বই একজন পাঠককে ভালো অথবা খারাপ পথ দেখায়। ভালো খারাপের পার্থক্য বুঝতে শেখায়। একজন পাঠককে সর্বপ্রথম খুব ভালো শ্রোতা হতে হয়। যখন তিনি কোনো বই পড়েন তখন তিনি বইয়ের লেখাগুলো যেন শুনতে পান। সমস্ত মনোযোগ বইয়ে ঢেলে দিয়ে যেন বইকে আত্মস্থ করে নেন। একইসঙ্গে দুটি কাজ করলে কাজের প্রতি মনোযোগ কমে যায়। বই পড়ার সময় যেহেতু সম্পুর্ণ মনোযোগ বইয়ে থাকে তাই বইয়ের কথাগুলো গেঁথে যায় পাঠক মনে। বই হয় তার বক্তা। এজন্য একজন পাঠককে শ্রোতাও বলা যায়।

প্রকৃত পাঠক যে ভাবে হবেন

একজন পাঠক বা পড়ুয়া মানুষ কিন্তু একদিনে তৈরি হয় না। এজন্য থাকতে হয় প্রচুর ধৈর্য, চর্চা আর পড়ার ধারাবাহিকতা। শেষোক্ত বৈশিষ্ট্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ একজন পাঠকের জন্য। সবাই এটা ধরে রাখতে পারে না। বছরের ফাঁকে এক/দুই পৃষ্ঠা পড়ে পাঠক পরিচয় দেয়া মানুষজন ও নিজেকে পাঠক বলে পরিচয় দেয়। কিন্তু প্রকৃত পাঠক তাকেই বলা যায়, যিনি তার পড়ার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে জানেন সুশৃঙ্খলভাবে। বই তার পাঠককে প্রখর চিন্তাশক্তি তৈরি করে দেয়। অসংখ্য বই পড়ার ফলে একজন পাঠক ভালো খারাপ বইয়ের মধ্যে পার্থক্য করতে শিখেন। নিজের জন্য উপযুক্ত বই বেছে নিতে পারেন। প্রকৃতিগত ভাবেই মানুষের স্বভাব হলো সে যা জানে তা অন্যদেরকে জানিয়ে দেয়া, মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে সে থাকে উতলা। এজন্য ভালো বই থেকে জ্ঞান আহরন করে তা ছড়িয়ে দিতে হবে পাড়া ,মহল্লা ও সমাজে। সমাজের কুসংস্কার দূরীকরণে বইয়ের ভূমিকা অপরিসীম।

মুসলিম হিসেবে যা করতে হবে

মুসলিম ধর্মাবলম্বী হওয়ায় আমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রথম আদেশ হলো -‘পড়ো,তোমার প্রভুর নামে। যিনি সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা আলাক)। তার অর্থ হলো, সৃষ্টিগত ভাবেই আমাদের পাঠক হতে বলা হয়েছে। কুরআন তেলাওয়াত (পাঠের) সময় আমরা মনে করি আল্লাহ আমাদেরকে যেন সরাসরি তার কথা সমূহ শোনাচ্ছেন।

নিজেকে গড়ার উত্তম পন্থা

জ্ঞান আমাদের দেওয়া হয়েছে সবচেয়ে বড় নিয়ামত হিসেবে। আমরা এর বিকাশ ঘটাই অথবা ধ্বংস করি। নবী করীম (সা.) এর একটি হাদিস রয়েছে এমন- ‘জ্ঞান মুসলমানের হারানো সম্পদ,তাই যেখানেই তা কুড়িয়ে পাবে, সেখান থেকেই আহরণ করবে। মানুষের জন্য মানুষ হতে হলে আগে নিজেকে গড়তে হবে। আর নিজেকে গড়ার উত্তম পন্থা হলো জ্ঞানার্জন করা। এজন্য পাঠ্যাভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। বইয়ের সাথে শখ্যতা হৃদ্যতা, আন্তরিকতা বাড়াতে হয় ধীরে ধীরে। বইকে যত ভালোবাসা, যত্ন করে হৃদয়ে ধারণ করবেন, বই তার হাজার গুণ ভালোবাসা ফিরিয়ে দেয়।

দৈনিক কত সময় বই পড়বেন

বছরের ফাঁকে এক দুই পৃষ্ঠা পড়ে নামমাত্র পাঠক না হয়ে প্রতিদিন অন্তত ৫/১০ মিনিট সময় বই পড়ায় দেওয়া উচিত। এতে করে বইয়ের প্রতি আলাদা টান তৈরি হবে। এই টানই একজন পাঠককে জ্ঞানরাজ্যের গভীরে পৌঁছে দেয়। জ্ঞান সমুদ্রে তার তুচ্ছতা দেখায়। জ্ঞান আহরণের তুলনায় জীবন কত ছোট তা উপলব্ধি করতে শেখায়। জানাশোনার পরিধি বাড়ানোর জন্য শুধু একাডেমিক বই পড়লে হবে না। এর বাইরেও বিশাল এক গ্রন্থভূবন সৃষ্টি করে গিয়েছেন এবং সৃষ্টি করে যাচ্ছেন জ্ঞান পিপাসু সকল মানুষ। তা জ্ঞান সমুদ্রের ঢেউ বাড়িয়েই চলেছে শুধু।

লেখক হতে হলে আগে যা করতে হবে

একজন লেখক তার লেখক পরিচয়ের আগে একজন পাঠক। বিখ্যাত সব মানুষজনই একেকজন পাঠক। পাঠ্যলব্ধ জ্ঞানই তারা ছড়িয়ে দেন নিজস্ব সৌন্দর্যতা, সৃষ্টিশীলতা মিশিয়ে। একজন লেখকের একটা লেখা মনে পড়ছে। তিনি বলেছিলেন -এক পৃষ্ঠা লিখতে হলে একশো পৃষ্ঠার কাছে যেতে হবে। আজকাল তো যে কেউ অল্প স্বল্প পড়েই লেখালেখির মতো জটিল বিষয়টায় নিজেকে সম্পৃক্ত করে ফেলে। যুগে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগায় এখন আর বই হাতে নেওয়া মানুষ চোখে পড়ে না তেমন। তাতে করে না পড়েই সবাই লেখক হয়ে উঠছে। এইসব ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠা লেখকদের অখাদ্য সব লেখার আড়ালে চলে যাচ্ছে পরিশ্রমী, চর্চাশীল মানুষগুলোর কষ্টার্জিত শ্রমের সব লেখা। অনলাইনে এসে দু’লাইন লিখে নিজেকে লেখক বলে পরিচয় দেওয়া মানুষগুলো নিজের ক্ষতি তো করেই, সাথে মানুষের মধ্যে ক্ষতির তীব্রতা বাড়িয়ে চলে। উঠতি বয়সী কিশোর তরুণদের মধ্যে আজ জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা অনেক। তারা এখন পড়তে নারাজ। পড়বে কম কিন্তু ফল লাভ করবে বেশি এই প্রবণতায় ভাসছে তারা। নিজেদের মধ্যে যখন জ্ঞানের বিস্তৃতি ঘটাতে পারে না তখন নামকরা লেখকদের লেখা চুরি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার মতো অপরাধও তারা করে। নিজেদের ভিতর পাঠকতার জন্ম দিলে এমন হীন কাজ তাঁরা করতে পারতো না। এজন্য পাঠক হওয়া জরুরি।

একটি বই মানুষের জীবনে যা করতে পারে

বই একজন পাঠককে শুধু লেখা তৈরি করেই দেয় না। পাঠকের জীবনে সুশৃঙ্খলতা এনে দেয়। মনের প্রশান্তি আনয়ন করে। সুন্দর সমাজ বিনির্মানের পথ বাতলে দেয়। আর তাই কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজকে আলোকিত করতে বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে হবে। ভালো বইয়ের জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে হবে চতুর্দিকে। এজন্য নিজেকে একজন প্রকৃত পাঠক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে প্রথমে। জানতে হবে প্রচুর। তারপর জানানোর দায়িত্ব নিতে হবে। পাঠক তৈরি করতে হবে ভালো বইয়ের। মানুষের মতো মানুষ হতে হবে জ্ঞানাহরণের মাধ্যমে। বলতে হবে -‘ আমি একা উপরে উঠতে চাই না। সবাইকে নিয়ে তবেই উঠবো।’ আগামীর পৃথিবী হোক জ্ঞানের পৃথিবী।

লেখক: মোসা: পপি আক্তার, সহকারী শিক্ষিকা হযরত ওমর ফারুক (রা) একাডেমি আলিম মাদরাসা,মহিলা শাখা।
জালালপুর, দক্ষিণ সুরমা, সিলেট।

ট্যাগস :

ভালো পাঠক কিংবা শ্রোতা হতে হলে করণীয়

আপডেট সময় ০৭:০৬:২০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

পড়া বা পাঠ তো কত রকমের ই হয়। যেমন- বইপাঠ,পত্রিকা পাঠ ইত্যাদি। আর যারা পড়েন বা পাঠ করেন তাদেরকেই তো আমরা পাঠক নামে অভিহিত করি বা সম্বোধন করি।

পড়ার উদ্দেশ্যই হলো জানা। জ্ঞানরাজ্যে প্রবেশ করা। বই হলো পড়ার জন্য সবচেয়ে উত্তম মাধ্যম। কেউ এই বই শখের বসে, আবার কেউ মনের খোরাক জোগাতে পড়ে থাকে। আবার কেউ শুধু প্রয়োজন হিসেবে বই পড়ে। বই তার পাঠককে শিখায় বিনয়, মার্জিত রুচি, কোমলতা। একজন পাঠক বইয়ের সংস্পর্শে এসে জ্ঞানরাজ্যের বিশালতা অনুভব করেন।

আগে শ্রোতা হউন

একটা বই একজন পাঠককে ভালো অথবা খারাপ পথ দেখায়। ভালো খারাপের পার্থক্য বুঝতে শেখায়। একজন পাঠককে সর্বপ্রথম খুব ভালো শ্রোতা হতে হয়। যখন তিনি কোনো বই পড়েন তখন তিনি বইয়ের লেখাগুলো যেন শুনতে পান। সমস্ত মনোযোগ বইয়ে ঢেলে দিয়ে যেন বইকে আত্মস্থ করে নেন। একইসঙ্গে দুটি কাজ করলে কাজের প্রতি মনোযোগ কমে যায়। বই পড়ার সময় যেহেতু সম্পুর্ণ মনোযোগ বইয়ে থাকে তাই বইয়ের কথাগুলো গেঁথে যায় পাঠক মনে। বই হয় তার বক্তা। এজন্য একজন পাঠককে শ্রোতাও বলা যায়।

প্রকৃত পাঠক যে ভাবে হবেন

একজন পাঠক বা পড়ুয়া মানুষ কিন্তু একদিনে তৈরি হয় না। এজন্য থাকতে হয় প্রচুর ধৈর্য, চর্চা আর পড়ার ধারাবাহিকতা। শেষোক্ত বৈশিষ্ট্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ একজন পাঠকের জন্য। সবাই এটা ধরে রাখতে পারে না। বছরের ফাঁকে এক/দুই পৃষ্ঠা পড়ে পাঠক পরিচয় দেয়া মানুষজন ও নিজেকে পাঠক বলে পরিচয় দেয়। কিন্তু প্রকৃত পাঠক তাকেই বলা যায়, যিনি তার পড়ার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে জানেন সুশৃঙ্খলভাবে। বই তার পাঠককে প্রখর চিন্তাশক্তি তৈরি করে দেয়। অসংখ্য বই পড়ার ফলে একজন পাঠক ভালো খারাপ বইয়ের মধ্যে পার্থক্য করতে শিখেন। নিজের জন্য উপযুক্ত বই বেছে নিতে পারেন। প্রকৃতিগত ভাবেই মানুষের স্বভাব হলো সে যা জানে তা অন্যদেরকে জানিয়ে দেয়া, মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে সে থাকে উতলা। এজন্য ভালো বই থেকে জ্ঞান আহরন করে তা ছড়িয়ে দিতে হবে পাড়া ,মহল্লা ও সমাজে। সমাজের কুসংস্কার দূরীকরণে বইয়ের ভূমিকা অপরিসীম।

মুসলিম হিসেবে যা করতে হবে

মুসলিম ধর্মাবলম্বী হওয়ায় আমাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রথম আদেশ হলো -‘পড়ো,তোমার প্রভুর নামে। যিনি সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা আলাক)। তার অর্থ হলো, সৃষ্টিগত ভাবেই আমাদের পাঠক হতে বলা হয়েছে। কুরআন তেলাওয়াত (পাঠের) সময় আমরা মনে করি আল্লাহ আমাদেরকে যেন সরাসরি তার কথা সমূহ শোনাচ্ছেন।

নিজেকে গড়ার উত্তম পন্থা

জ্ঞান আমাদের দেওয়া হয়েছে সবচেয়ে বড় নিয়ামত হিসেবে। আমরা এর বিকাশ ঘটাই অথবা ধ্বংস করি। নবী করীম (সা.) এর একটি হাদিস রয়েছে এমন- ‘জ্ঞান মুসলমানের হারানো সম্পদ,তাই যেখানেই তা কুড়িয়ে পাবে, সেখান থেকেই আহরণ করবে। মানুষের জন্য মানুষ হতে হলে আগে নিজেকে গড়তে হবে। আর নিজেকে গড়ার উত্তম পন্থা হলো জ্ঞানার্জন করা। এজন্য পাঠ্যাভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। বইয়ের সাথে শখ্যতা হৃদ্যতা, আন্তরিকতা বাড়াতে হয় ধীরে ধীরে। বইকে যত ভালোবাসা, যত্ন করে হৃদয়ে ধারণ করবেন, বই তার হাজার গুণ ভালোবাসা ফিরিয়ে দেয়।

দৈনিক কত সময় বই পড়বেন

বছরের ফাঁকে এক দুই পৃষ্ঠা পড়ে নামমাত্র পাঠক না হয়ে প্রতিদিন অন্তত ৫/১০ মিনিট সময় বই পড়ায় দেওয়া উচিত। এতে করে বইয়ের প্রতি আলাদা টান তৈরি হবে। এই টানই একজন পাঠককে জ্ঞানরাজ্যের গভীরে পৌঁছে দেয়। জ্ঞান সমুদ্রে তার তুচ্ছতা দেখায়। জ্ঞান আহরণের তুলনায় জীবন কত ছোট তা উপলব্ধি করতে শেখায়। জানাশোনার পরিধি বাড়ানোর জন্য শুধু একাডেমিক বই পড়লে হবে না। এর বাইরেও বিশাল এক গ্রন্থভূবন সৃষ্টি করে গিয়েছেন এবং সৃষ্টি করে যাচ্ছেন জ্ঞান পিপাসু সকল মানুষ। তা জ্ঞান সমুদ্রের ঢেউ বাড়িয়েই চলেছে শুধু।

লেখক হতে হলে আগে যা করতে হবে

একজন লেখক তার লেখক পরিচয়ের আগে একজন পাঠক। বিখ্যাত সব মানুষজনই একেকজন পাঠক। পাঠ্যলব্ধ জ্ঞানই তারা ছড়িয়ে দেন নিজস্ব সৌন্দর্যতা, সৃষ্টিশীলতা মিশিয়ে। একজন লেখকের একটা লেখা মনে পড়ছে। তিনি বলেছিলেন -এক পৃষ্ঠা লিখতে হলে একশো পৃষ্ঠার কাছে যেতে হবে। আজকাল তো যে কেউ অল্প স্বল্প পড়েই লেখালেখির মতো জটিল বিষয়টায় নিজেকে সম্পৃক্ত করে ফেলে। যুগে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগায় এখন আর বই হাতে নেওয়া মানুষ চোখে পড়ে না তেমন। তাতে করে না পড়েই সবাই লেখক হয়ে উঠছে। এইসব ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠা লেখকদের অখাদ্য সব লেখার আড়ালে চলে যাচ্ছে পরিশ্রমী, চর্চাশীল মানুষগুলোর কষ্টার্জিত শ্রমের সব লেখা। অনলাইনে এসে দু’লাইন লিখে নিজেকে লেখক বলে পরিচয় দেওয়া মানুষগুলো নিজের ক্ষতি তো করেই, সাথে মানুষের মধ্যে ক্ষতির তীব্রতা বাড়িয়ে চলে। উঠতি বয়সী কিশোর তরুণদের মধ্যে আজ জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা অনেক। তারা এখন পড়তে নারাজ। পড়বে কম কিন্তু ফল লাভ করবে বেশি এই প্রবণতায় ভাসছে তারা। নিজেদের মধ্যে যখন জ্ঞানের বিস্তৃতি ঘটাতে পারে না তখন নামকরা লেখকদের লেখা চুরি করে নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার মতো অপরাধও তারা করে। নিজেদের ভিতর পাঠকতার জন্ম দিলে এমন হীন কাজ তাঁরা করতে পারতো না। এজন্য পাঠক হওয়া জরুরি।

একটি বই মানুষের জীবনে যা করতে পারে

বই একজন পাঠককে শুধু লেখা তৈরি করেই দেয় না। পাঠকের জীবনে সুশৃঙ্খলতা এনে দেয়। মনের প্রশান্তি আনয়ন করে। সুন্দর সমাজ বিনির্মানের পথ বাতলে দেয়। আর তাই কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজকে আলোকিত করতে বইয়ের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে হবে। ভালো বইয়ের জ্ঞান ছড়িয়ে দিতে হবে চতুর্দিকে। এজন্য নিজেকে একজন প্রকৃত পাঠক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে প্রথমে। জানতে হবে প্রচুর। তারপর জানানোর দায়িত্ব নিতে হবে। পাঠক তৈরি করতে হবে ভালো বইয়ের। মানুষের মতো মানুষ হতে হবে জ্ঞানাহরণের মাধ্যমে। বলতে হবে -‘ আমি একা উপরে উঠতে চাই না। সবাইকে নিয়ে তবেই উঠবো।’ আগামীর পৃথিবী হোক জ্ঞানের পৃথিবী।

লেখক: মোসা: পপি আক্তার, সহকারী শিক্ষিকা হযরত ওমর ফারুক (রা) একাডেমি আলিম মাদরাসা,মহিলা শাখা।
জালালপুর, দক্ষিণ সুরমা, সিলেট।