ঢাকা ১১:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সারা দেশে হিট অ্যালার্ট জারি

বিলিংয়ের ৯৮% আদায়ের দাবি ঢাকা ওয়াসার, গায়েব ৩২২১ কোটি টাকা

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর:

যুগান্তর:

বিলিংয়ের ৯৮% আদায়ের দাবি ঢাকা ওয়াসার, গায়েব ৩২২১ কোটি টাকা

গত নয় বছরে গ্রাহকদের কাছ থেকে গড়ে ৯৮ শতাংশ রাজস্ব আদায় হয়েছে-এমনটি দাবি করেছে ঢাকা ওয়াসা। সেই হিসাবে আদায়ের অঙ্ক দাঁড়ানোর কথা ১৬ হাজার ৩৪৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে ১৩ হাজার ১১ কোটি ১৮ লাখ টাকা, যেটি মোট রাজস্ব আদায়ের ৭৮ শতাংশ। অর্থাৎ ৩ হাজার ২২১ কোটি টাকার কোনো হদিস নেই। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছর থেকে ২০২২-২০২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ঢাকা ওয়াসার অডিট রিপোর্ট এবং বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বাস্তবতার সঙ্গে হিসাবের এমন গরমিল পাওয়া গেছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, পানির দাম ও গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি, বিলিং পদ্ধতি ডিজিটাইজেশন হওয়ায় রাজস্ব আদায় বেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তব চিত্র উলটো। দিন যতই যাচ্ছে, রাজস্ব আদায় বাস্তবের তুলনায় কম হচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্তদের চুরি, অবহেলা ও অদক্ষতার কারণেই মূলত এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ঢাকা ওয়াসার অডিট রিপোর্টের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় কম হয়েছে ২৪২ কোটি টাকা, যা প্রাপ্যতার চেয়ে ২১ শতাংশ কম। ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ২৪২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় কম হয়েছে, যা ২০ শতাংশ কম। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ৩০৪ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে, যা ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশ কম। ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ৩৩০ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে, যা ২০ দশমিক ২২ শতাংশ কম। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৩০১ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে, যা ১৭ দশমিক ২৬ শতাংশ কম। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৪৮০ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে, যা ২৪ দশমিক ১৫ শতাংশ কম। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৫৮২ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে, যা ২৫ শতাংশ কম। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৪৩০ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে, যা ১৮ শতাংশ কম। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৩১০ কোটি টাকা কম আদায় রয়েছে, যা ১৩ দশমিক ১৩ শতাংশ কম।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসার সাবেক বোর্ড চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. গোলাম মোস্তফা যুগান্তরকে বলেন, ঢাকা ওয়াসা গ্রাহকদের বড় একটি অংশের রাজস্ব আদায় করতে পারছে না। শুধু তাই নয়, সেবা আওতার পুরো অংশের বিলিংও করতে পারছে না। সেখানে তাদের ৯৮ শতাংশ বিল আদায় করার দাবি বড় মিথ্যাচার।

তিনি বলেন, নির্মাণাধীন ভবনের পানি ব্যবহারের বাণিজ্যিক বিল দিতে হয়। কিন্তু সেখানে আবাসিক বিল দেওয়া হয়। এভাবেও অনেক অপচয় ঘটছে ঢাকা ওয়াসার। কিন্তু ঢাকা ওয়াসা সেসব স্বীকার করছে না। সফলতা দেখাতে গিয়ে তারা বেশি বেশি বলছেন। তাহলে সেই টাকা গেল কোথায়?

নয়াদিগন্ত: সারা দেশে হিট অ্যালার্ট জারি

  • তাপ প্রবাহে পুড়ছে দেশ
  • গরমে ঘামে অস্বস্তিতে মানুষ
  • সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪১.৫ ডিগ্রি

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আগামী ৭২ ঘণ্টা বা তিন দিন ধরে এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে জানিয়ে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। গতকাল শুক্রবার আবহাওয়া অধিদফতরের উপপরিচালকের পক্ষে আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এই এলাট বা সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ অ গতকাল শুক্রবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। শুধু তাই নয়, তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে। পাশাপাশি জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে। এ ছাড়া আগামী তিন দিনের আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়ার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগসহ দিনাজপুর, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালীর ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে দেশ। বিশেষ করে দেশের কয়েকটি অঞ্চলে বিরাজ করছে তীব্র তাপমাত্রা। চলতি এ গরম মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ডটিও গতকালই ঘটে গেল। খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গায় গতকাল ৪১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। উচ্চ তাপমাত্রার সাথে রয়েছে অস্বস্তিকর জলীয় বাষ্প। তীব্র তাপ প্রবাহের কারণে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের কিয়দংশে বাতাসে যেন আগুনের হলকা বয়ে যাচ্ছে। খোলা আকাশে হেঁটে গেলে যে বাতাস মুখে লাগে তাতে মনে হয় কেউ যেন আগুনের গোলা ঢেলে দিয়েছে। মুখমণ্ডল পুড়ে যাওয়ার অবস্থা হচ্ছে। খোলা আকাশে বেশিক্ষণ ঘোরাফেরা করলে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার অবস্থা হয় বলে ওই অঞ্চলের সংবাদদাতারা জানিয়েছেন। তীব্র এই গরমে খেতের ফসল পুড়ে যাচ্ছে এমনকি অযত্নে-অবহেলায় বেড়ে ওঠা লতানো ঘাসগুলোও মরে যাচ্ছে। চলতি এই গরম আরো কয়েক দিন অব্যাহত থাকলেও ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষক। আবহাওয়া অফিস অবশ্য জানিয়েছে, আগামী পাঁচ দিনের আগে তীব্র এই গরম অবস্থার পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

গত কয়েক দিন থেকে বাংলাদেশের সর্বত্র জলীয় বাষ্পের পরিমাণ একটু বেশি হওয়ায় শরীরে অনেক ঘাম হচ্ছে। ঘামে শরীর থেকে অনেক পানি বেরিয়ে গিয়ে মানুষকে দুর্বল করে দিচ্ছে। এ সময়ে পানি পানের পরিমাণ বাড়াতে না পারলে হিটস্ট্রোকের শিকার মানুষের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে। একই সাথে বিশুদ্ধ পানির অভাবে ডায়রিয়া ও আমাশয়ে ভুগছে মানুষ। সব মিলিয়ে এই গরম দেশের কয়েকটি অঞ্চল ছাড়া পুরো দেশের মানুষ অস্বস্তিকর কষ্ট পাচ্ছে। আজ শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপ প্রবাহ (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে) এবং চাঁদপুর, মৌলভীবাজারসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশে এবং বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। তা ছাড়া কুমিল্লা ও কিশোরগঞ্জ অঞ্চলসহ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্র বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে।

গতকাল খুলনা বিভাগের প্রায় সর্বত্রই তীব্র তাপ প্রবাহের কবলে ছিল। চুয়াডাঙ্গায় ৪১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করলেও যশোরের তাপমাত্রা ছিল ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মংলায় ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, খুলনায় ৪০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কুমারখালীতে ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সাতক্ষীরায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রাজশাহী ও ঈশ্বরদীতে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকা বিভাগের মধ্যে টাঙ্গাইলে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গোপালগঞ্জে ৩৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ফরিদপুরে ৩৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ঢাকায় ৩৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মাদারীপুরে ৩৮.২ সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছিল।

কেন এত চরম গরম পড়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ তারিফুল নেওয়াজ কবির জানিয়েছেন, প্রথমত, বাংলাদেশে এই সম্যাটা সব সময়ই গরম থাকে। এ সময়ে সূর্য মাথার ওপর থেকে কিরণ দিয়ে থাকে বলে সূর্যের সর্বোচ্চ কিরণ পেয়ে থাকে বাংলাদেশ। এ সময়ের গরম কমিয়ে রাখতে পারে প্রচুর বৃষ্টিপাত হলে এবং একই সাথে ঝড় হলে। কিন্তু বেশ কিছুদিন যাবৎ দেশব্যাপী বৃষ্টির পরিমাণ একেবারেই কমে গেছে। সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগ ছাড়া অন্য কোথাও বৃষ্টিই হচ্ছে না। অন্য দিকে ভৌগোলিক অবস্থান ও ভূপ্রকৃতির কারণে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের কিছু অংশ এ সময়ে অনেক গরম পড়ে থাকে। শীতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কোল্ডওয়েভ তা শৈত্যপ্রবাহ হলে এর খানিকটা আঁচ বাংলাদেশে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে লেগে থাকে। তেমনি গরমে পশ্চিমবঙ্গে হিটওয়েভ হলে এরও আঁচ বাংলাদেশের খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে লেগে থাকে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার ভৌগোলিক কারণে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে বছরের এই সময়ে বৃষ্টি হয় না বললেই চলে। এর পরিণতিতে তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে এই অঞ্চলে হিটওয়েভ বা তাপপ্রবাহের সৃষ্টি করে থাকে। ভারী বৃষ্টি হলেই এই অঞ্চলের তাপপ্রবাহ কমে যাবে। তবে কখন বৃষ্টি হবে তা বলা যাচ্ছে না।

চুয়াডাঙ্গায় মাইকিং করে হিট ওয়েভ জারি চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, চুয়াডাঙ্গায় অব্যাহত রয়েছে তীব্র তাপদাহ। টানা চারদিন ধরে ৪০ ডিগ্রির উপরে তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। টানা তাপদাহে অতিষ্ঠ সীমান্তবর্তী জেলার মানুষ। অসহ্য গরমে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে প্রাণিকুল। শুক্রবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র তাপদাহে হিট ওয়েভ জারি করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন। মাইকিং করে খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের নাহতে বলা হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রান্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, তীব্র তাপদাহ কিছুদিন আরো অব্যাহত থাকতে পারে। তবে আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এখনো পর্যন্ত কোনো বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা কমবে না। ২০২৩ সালে ১৯ ও ২০ এপ্রিল জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বছর ৪৩ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যেতে পারে। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা জানান, চুয়াডাঙ্গাতে তাপমাত্রা বাড়ার কারণে আবহাওয়া অধিদফতর ও স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ ক্রমে চুয়াডাঙ্গাতে বৃহস্পতিবার ৭২ ঘণ্টার জন্য হিট এলার্ট জারি করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার চারটি উপজেলায় তথ্য অফিসের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।   প্রথম আলো:

প্রচণ্ড গরম দেশজুড়ে, ৩ দিনের সতর্কতা আবহাওয়া পরিস্থিতি

● প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

● কেউ জ্ঞান হারালে শরীরে ঢালতে হবে ঠান্ডা পানি।

● রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ২ ডিগ্রি।

● মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহের এলাকা বাড়তে পারে।

আগামী তিন দিন তাপমাত্রা বাড়তে পারে। পাশাপাশি জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিও বাড়তে পারে।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সুবদিয়া এলাকার একটি চাতালে ভুট্টা শুকানোর কাজ করছিলেন তিনজন। গতকাল শুক্রবার দুপুরের তীব্র রোদের মধ্যেই তাঁরা মাথায় গামছা বেঁধে এ কাজ করছিলেন। ভুট্টার মালিক রাজু মিয়া বলেন, ‘কদ্দিন ধইরে য্যারাম করে গরম বাড়চে, তাতে মুনিষ পাওয়াই যাচ্চে না। ভুট্টোগুনু ঘরে তুলার জন্নি অনেক অনুরোদ কইরে দুইজনকে ডাইকে আনিচি।’

প্রচণ্ড গরম সারা দেশে। এর মধ্যেই শ্রমজীবী মানুষকে কাজ করতে হচ্ছে মাঠে–ঘাটে। তাঁদের কষ্ট চুয়াডাঙ্গায় গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র দাবদাহের মধ্যে চাতালে কাজ করছেন শ্রমজীবী মানুষেরা। গতকাল দুপুরে সদর উপজেলার সুবদিয়ায়। অপেক্ষাকৃত বেশি। তবে গরমে অতিষ্ঠ সবাই।

যে চুয়াডাঙ্গার কথা দিয়ে প্রতিবেদন শুরু হলো, গতকাল সেখানেই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়—৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি এ বছরের এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। চুয়াডাঙ্গা পড়েছে খুলনা বিভাগের মধ্যে। গতকাল এ বিভাগে বয়ে গেছে তীব্র তাপপ্রবাহ।

কোনো এলাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে তাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলে গণ্য করা হয়। খুলনা বিভাগের পাশাপাশি রাজশাহী, টাঙ্গাইল ও পাবনা জেলায় বয়ে গেছে তীব্র তাপপ্রবাহ। দেশের আরও নানা স্থানে ছিল মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। রাজধানী ঢাকায় বয়ে গেছে মাঝারি তাপপ্রবাহ।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

আত্মীয়স্বজন নিয়ে দোটানায় এমপি-মন্ত্রীরা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে এমপি-মন্ত্রীদের পরিবারের সদস্য, স্বজনদের কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। দলীয় প্রধানের বার্তা পেয়ে কিছু আত্মীয়স্বজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। কিছু জায়গায় থাকছেন। এ অবস্থায় কিছু এমপি-মন্ত্রী পড়েছেন দোটানায়। কারণ আত্মীয়স্বজনরা কথা শুনছেন না, আবার দলীয় প্রধানের নির্দেশনাও রাখতে পারছেন না। ফলে ‘শ্যাম রাখি না কুল রাখি’ অবস্থায় অনেক এমপির ক্ষেত্রে। উপজেলা ভোটে দলের নির্দেশনার পর এমপি-মন্ত্রীদের আগামীর রাজনীতিতে প্রভাব পড়বে। কারণ দলীয় প্রধানের বার্তা না শুনলে তালিকা করে রাখা হচ্ছে। সেই তালিকা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক তাঁর নির্বাচনি এলাকার ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেন খালাতো ভাই হারুনুর রশিদ হিরাকে। তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন স্থানীয় নেতারা। গতকাল ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে বেলা ১১টার দিকে অনির্ধারিত এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন। আত্মীয়স্বজনকে প্রার্থী না করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, খালাতো ভাইকে প্রার্থী করা আবদুর রাজ্জাক যুক্তি তুলে ধরেন হারুনুর রশিদ হিরা উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি খালাতো ভাই। আবার তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় সভানেত্রীর কাছে যিনি লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি মামাতো ভাই। রানিং উপজেলা চেয়ারম্যানকে সমর্থন করা দোষের কিছু দেখেন না তিনি। বৈঠক থেকেই ড. রাজ্জাক দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার মোবাইলে মেসেজ পাঠান বলে জানা গেছে।

কালের কন্ঠ:

তাপের ওপর দায় চাপাচ্ছে রেল নানা ধরনের সমস্যায় ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের অর্ধেকের বেশি রেললাইন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে না ট্রেন। এর মধ্যে গ্রীষ্মের তাপের অজুহাতে ট্রেনের গতি আরো কমানোর নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

তাপের ওপর দায় চাপাচ্ছে রেলবিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিষয়টা অনেকটা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো হয়েছে।

কেননা, সারা দেশের তাপমাত্রা প্রায় কাছাকাছি থাকলেও এই নির্দেশনা সব জায়গার জন্য দেওয়া হয়নি। যেসব অঞ্চলে রেললাইন বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে, সেখানেই ট্রেনের গতি কমানোর বার্তা দেওয়া হচ্ছে। কয়েক দিন ধরে চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা বেশি থাকলেও সেখানে ট্রেনের গতি কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়নি। অথচ চট্টগ্রামে তুলনামূলক তাপমাত্রা কম থাকলেও এই অঞ্চলে তাপ বাড়লে ট্রেনের গতি কমাতে বলা হয়েছে। নিয়মিত ট্রেন চলাচলের জন্য দেশে প্রায় সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার রেললাইন ব্যবহারযোগ্য। এর মধ্যে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার রেললাইন তুলনামূলক নতুন। বাকিগুলোর ৭০ শতাংশের আয়ুষ্কাল শেষ। ঝুঁকিতে থাকা এসব রেলপথে ট্রেনের লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।নতুন নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হলেও এখনো রয়ে গেছে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত অনেক রেললাইন। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশের মোট রেললাইনের ৯০ শতাংশ নির্মিত হয়েছে ভারতীয় উপমহাদেশ বিভাজনের আগে, যেগুলোর অবস্থা এখন খুব একটা ভালো নয়।

বর্তমানে দেশের ৪৩ জেলায় রেলপথ রয়েছে। এর ৩৯টিতেই রয়েছে রেললাইনে সমস্যা। রেলের মান নষ্ট হওয়া, লাইনে পর্যাপ্ত পাথর না থাকা, মাটি সরে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

মানবজমিন:

ছায়াযুদ্ধ থেকে মিসাইল এরপর কী

ইরান-ইসরাইলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলায় উত্তেজনার বারুদ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। একটুখানি ঘষা লাগলেই শুরু হয়ে যেতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। ইরানের হুঙ্কার, বিশ্বনেতাদের হুঁশিয়ারি, জাতিসংঘের সাবধানবাণীর পরও গতকাল ইরানের স্থানীয় সময় ভোর ৪টায় ইসরাইল ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে পশ্চিমা মিডিয়া খবর দেয়। কিন্তু একে ইসরাইল ও আমেরিকার প্রোপাগান্ডা বলে উড়িয়ে দিয়েছে ইরান। তারা বলেছে, ইরানে অনুপ্রবেশকারীরা ড্রোন উড়িয়েছিল আকাশে। তা ইরানের শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবহার করে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। ফলে বিষয়টিকে তেমন আমলে নিচ্ছে না ইরান। লেবাননে নিযুক্ত বৃটেনের সাবেক রাষ্ট্রদূত টম ফ্লেচার বলেছেন, ইরানের সঙ্গে উঁচু দরের জুয়া খেলছে ইসরাইল। ওদিকে কোনো রকম ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর নাকচ করেছে ইরান। সবচেয়ে ভয়ের বিষয় ছিল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা।ওদিকে বিবিসি দিয়েছে আরেক নতুন খবর। তাতে বলা হয়েছে, ইরানে হামলা চালানোর আগে যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছিল ইসরাইল। কিন্তু তাদেরকে সমর্থন দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। এমন অবস্থায় ইরানে হামলায় যুক্তরাষ্ট্র জড়িত নয় বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। বিবিসি জানাচ্ছে, তিনি বলেছেন, কোনোরকম সামরিক অভিযানের সঙ্গে যুক্ত নয় যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি তারা উত্তেজনা প্রশমনের জন্য অব্যাহতভাবে কাজ করছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের মধ্যকার সম্পর্ককে কীভাবে মূল্যায়ন করেন- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিয়মিত সম্পর্ক বজায় আছে। ইসরাইলকে আত্মরক্ষায় সহায়তায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র। ওদিকে উত্তেজনা প্রশমনের উপায় খুঁজতে গত রাতে জি-৭ এর বৈঠকে বসার কথা। এর আগে ইরানে হামলার নিন্দা জানিয়েছে ওমান। উভয় পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে বৃটেন, চীন, মিশর, তুরস্ক, জার্মানি, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। ভয়াবহ প্রতিশোধের চক্রকে এখনই বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ। যেকোনো রকম প্রতিশোধমূলক হামলার নিন্দা জানান তিনি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানান পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আগে একসঙ্গে কাজ করার। ইরান এবং জাতিসংঘ বলেছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা নিরাপদে আছে। প্রাথমিকভাবে ইরানের বিমানবন্দরগুলো থেকে ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু যখন তারা দেখতে পেয়েছে সবকিছু নিরাপদ তখন আবার সচল হয়েছে বিমান চলাচল। ইরানের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে অবিলম্বে প্রতিশোধ নেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই ইরানের।

বনিক বার্তা:

৮ লাখ টনের ঘরে নেমেছে চালের সরকারি মজুদ প্রধান খাদ্যশস্য চালের সরকারি মজুদ আট লাখ টনের ঘরে নেমে এসেছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি গুদামগুলোয় খাদ্যশস্যটির মজুদ কমেছে ৫০ শতাংশেরও বেশি। এক্ষেত্রে সরকারিভাবে কৃষিপণ্যটির আমদানি না হওয়া, স্থানীয় বাজার থেকে লক্ষ্য অনুযায়ী সংগ্রহ করতে না পারা ও সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় চালের বিতরণ বেড়ে যাওয়া বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তথ্য অনুযায়ী, ১৭ এপ্রিল দেশের সরকারি গুদামগুলোয় চালের মোট মজুদ ছিল ৮ লাখ ৭৭ হাজার টন। আর জুলাইয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরুতে তা ছিল ১৭ লাখ ৬০ হাজার টন। এরপর সেপ্টেম্বরে তা কমে দাঁড়ায় ১৬ লাখ ২০ হাজার টনে। গত ১১ জানুয়ারিতে তা নেমে আসে ১৪ লাখ ২৮ হাজার টনে।

এর আগে গত অর্থবছরের (২০২২-২৩) ৬ এপ্রিল দেশে চালের সরকারি মজুদ ছিল ১৩ লাখ ৮৫ হাজার টন। সে হিসাবে সরকারি গুদামগুলোয় এক বছরের ব্যবধানে চালের মজুদ কমেছে ৫ লাখ ৮ হাজার টন বা প্রায় ৩৭ শতাংশ।

সরকারিভাবে দেশে গত কয়েক মৌসুমে রেকর্ড উৎপাদনের দাবি করা হলেও সাম্প্রতিক সময় দফায় দফায় চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠতে দেখা গেছে। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত চাল আমদানি করেনি সরকার। ফলে সরকারি গুদামগুলোকে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের ওপরই পুরোপুরি নির্ভর করতে হচ্ছে। যদিও গত আমন মৌসুমে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি খাদ্য মন্ত্রণালয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকারিভাবে বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় খাদ্যশস্য বিতরণ হয়েছে অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি। চালের সরকারি মজুদ কমে আসার পেছনে এসব বিষয় বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তাদের ভাষ্যমতে, সরকারের মজুদ কমার সুযোগে বিভিন্ন সময়ে চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। ২০২৪ পঞ্জিকাবর্ষ শুরুর পর এখন পর্যন্ত পণ্যটির বাজারমূল্যে জানুয়ারির শুরুতে ও পরে রমজানে দুই দফায় অস্থির হতে দেখা গেছে। এ ঊর্ধ্বমুখিতা বজায় আছে এখনো।

সমকাল:

কৌশল নির্ধারণে নানামুখী তৎপরতা বিএনপির নতুন করে সরকারবিরোধী জোরালো আন্দোলন গড়তে চাইছে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে রাজনৈতিক কর্মকৌশল নির্ধারণে নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছেন দলটির নেতারা। নির্দলীয় সরকারের অধীনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দাবি আদায়ের আন্দোলন ব্যর্থ হলেও ‘হাল ছাড়েনি’ রাজপথের প্রধান এ বিরোধী দল। নির্বাচন বর্জনের পর দাবি আদায়ে আন্দোলনে আবারও জনগণকে সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি নেতাকর্মীকে চাঙ্গা করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য অনানুষ্ঠানিকভাবে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দল, জোট ও সমমনাদের সঙ্গে আলোচনা করছে। এ ছাড়া বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা সব দলের অংশগ্রহণে শিগগিরই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দাবির পক্ষে সরকারের ওপর ‘দেশি-বিদেশি চাপ’ তৈরিতে পর্দার আড়ালে কাজ করছেন।

বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, রাজনৈতিক কর্মকৌশল নির্ধারণে বিএনপি শিগগিরই বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের নেতা, বিশেষ করে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনকারী ছোট-বড় ৬৪ দল নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে গোলটেবিলের আয়োজন করবে। এর পর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে একটি সেমিনার করা হবে। ঢাকায় নিযুক্ত শক্তিধর দেশের কূটনীতিক ও প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ও চালিয়ে যাচ্ছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। দলটি প্রতিবেশী ভারতের চলমান লোকসভা এবং যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকেও বিশেষ নজর রাখছে। সূত্র জানায়, আগামী দিনের রাজনৈতিক করণীয় সম্পর্কে শুভাকাঙ্ক্ষী, সুশীল সমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের পরামর্শ নিচ্ছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। সরকারবিরোধী ডান-বাম ও ইসলামী দলগুলোর সঙ্গেও অনানুষ্ঠানিক আলাপ করছেন তারা। বিগত ১৫ বছর ধরে ব্যর্থ আন্দোলনের অভিজ্ঞতা ও ভুল-ত্রুটি পর্যালোচনা করে নতুন কৌশল গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে বিরোধী দলটি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও আন্তর্জাতিক উইংয়ের প্রধান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী গতকাল শুক্রবার সমকালকে বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আমাদের আন্দোলন চলমান। দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ কথিত নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের পরও আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতায় রয়েছে। জনগণ দেশ পরিচালনায় আওয়ামী লীগকে কোনো ম্যান্ডেট দেয়নি। মানুষের ভোটাধিকার হরণকারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী দিনের আন্দোলন কর্মসূচি দল ও সমমনা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দাবির আন্দোলন কীভাবে সফল হবে, দেশবাসীই সময়মতো সিদ্ধান্ত নেবে

যায়যায়দিন:

ইরানে ইসরাইলের হামলা ইরানের ইস্ফাহান প্রদেশে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। শুক্রবার ভোরে ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে দেশটির রাজধানী তেহরান থেকে সাড়ে তিনশ’ কিলোমিটার দূরের এ প্রদেশের বিভিন্ন এলাকা। ইস্ফাহানে দেশটির পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর অবস্থান। পাশাপাশি প্রদেশের নাতানজ শহরটি ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দু। শুরু ইরানেই নয়, সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের দারা প্রদেশেও ইসরাইল হামলা চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। দু’জন মার্কিন কর্মকর্তা সিবিএস নিউজকে এমন তথ্য জানিয়েছেন। খবর বিবিসি ও রয়টার্স।

হামলার ঘটনার পর ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলছে, কয়েকটি শহরে বিমান চলাচল স্থগিত করা হয়। বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ থাকার পর তেহরানের প্রধান বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা শুরু হয়। তিনটি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে সংশ্লিষ্টরা।

ইরানিয়ান স্পেস এজেন্সির একজন কর্মকর্তা হোসেইন দালিরিয়ানের দাবি, সীমান্তের বাইরে থেকে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি। এক এক্স পোস্টে দালিরিয়ান লিখেছেন, ‘ইসরাইল কয়েকটি কোয়াডকপ্টার (ড্রোন) ওড়ানোর ব্যর্থ এবং হাস্যকর চেষ্টা চালিয়েছে। ভূপাতিত করা হয়েছে কোয়াডকপ্টারগুলোকে।’ এদিকে, সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের দারা প্রদেশে সামরিক বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করেও বিমান হামলা চালানো হয়েছে বলে দেশটির রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

কালবেলা:

হলফনামায় তথ্য গোপন করতে বাবাকে ৩ কোটি টাকার বাড়ি ‘দান’

মাদারীপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে হেবা করে গত ৯ এপ্রিল বাবা ইসমাইল হোসেনকে বিলাসবহুল তিনতলা বাড়িটি দান করে দেন মেয়ে ফারজানা নাজনীন। ফারজানা নাজনীন মাদারীপুর জেলা যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের বাসভবনের পেছনে সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন তিনতলা ডুপ্লেক্স বাড়ি। মাদারীপুর পৌরসভার ১১১ নম্বর শকুনী মৌজার ৩৮৭, ৩৮৮ ও ২৮৯ নম্বর দাগে ৭ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত বিলাসবহুল বাড়িটির মালিক ফারজানা নাজনীন ও তার মেয়ে তাসনিম জাহান মীম। ফারজানা নাজনীন তার বাবা কুনিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেনের নামে গত ৯ এপ্রিল ২৩৩৭ নম্বর দলিলে ‘হেবা ঘোষণার’ মাধ্যমে মালিকানা পরিবর্তন করেন। পরে দাখিল করেন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র। নির্বাচনের হলফনামায় সম্পত্তি কম দেখাতেই বাবার নামে লিখে দিয়েছেন কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি।

মাদারীপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, সরকারের সর্বশেষ ভূমি জরিপ বিআরএস রেকর্ডে সংশ্লিষ্ট দাগ ও খতিয়ানে ডোবা থাকায় ভবন নির্মাণ ঝুঁকিপূর্ণ মনে করায় অনুমোদন দেওয়া হয়নি। ওই জায়গায় ভবন নির্মাণের জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অনুমোদন চাইলেও সর্বশেষ পৌরসভার সার্ভেয়ার, ইঞ্জিনিয়ারসহ বিশেষজ্ঞরা অনুমোদন দেননি। পরে ফারজানা নাজনীন ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই ভবন নির্মাণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারজানা নাজনীনের দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তিনি ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ৩ লাখ টাকা। ব্যাংকে জমা আছে মাত্র ২ হাজার টাকা। আর নগদ অর্থ সাড়ে ৪ লাখ টাকা।

হলফনামার তথ্য নিয়ে মাদারীপুরের জনমনে এখন প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে বিপুল অর্থে নির্মিত ডুপ্লেক্স বাড়িটির অর্থ জোগান এলো কোথা থেকে? সম্প্রতি এ নিয়ে বেশ কয়েকজন বাড়িটি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। দুদককে অনুসন্ধান করতেও অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

মাদারীপুর যুব মহিলা লীগ নেত্রী ফারজানা নাজনীন সাংবাদিকদের বলেন, আমার স্বামী লিয়াকত হাওলাদার ইতালি থেকে টাকা পাঠিয়েছেন, সেই টাকা থেকে নির্মাণ করা হয়েছে এই বাড়ি। এ ছাড়া আমি জেলার একমাত্র নারী ঠিকাদার, আমি ব্যবসা করি। আমার ব্যবসার টাকায় বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছে। পৌরসভা থেকে কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছিলাম, কিন্তু পৌরসভা অনুমোদন দেয়নি। পরে অনুমোদন ছাড়াই ভবন নির্মাণ করেছি। এই শহরের অনেক বাড়িই অনুমোদন ছাড়া তৈরি হয়েছে। সবাই যেভাবে বাড়ি নির্মাণ করছে আমিও সেভাবেই নির্মাণ করেছি।

সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগেই বাড়ির মালিকানা কেন পরিবর্তন হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাড়ির জমি নিয়ে ঝামেলা থাকায় বাবার নামে লিখে দেওয়া হয়েছে। জমিটা মূলত বাবার, কিন্তু বাড়ি আমি নির্মাণ করেছি।

মাদারীপুর পৌরসভার সার্ভেয়ার এনায়েত হোসেন বলেন, ফারজানা নাজনীন ভবন নির্মাণের জন্য আবেদন করেছিলেন, পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে জায়গাটি ডোবা। বিআরএস রেকর্ডে ডোবা থাকায় পৌরসভা এজন্য কোনো অনুমোদন দেয়নি। বাড়িটি তারা অনুমোদন না নিয়েই নিজেদের মতো তৈরি করেছেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মাদারীপুরের উপপরিচালক আতিক রহমান বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মাণে অর্থের উৎস নিয়েও খোঁজ-খবর নেওয়া হবে

সারা দেশে হিট অ্যালার্ট জারি

বিলিংয়ের ৯৮% আদায়ের দাবি ঢাকা ওয়াসার, গায়েব ৩২২১ কোটি টাকা

আপডেট সময় ০৯:৩৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

আজকের প্রত্রিকাগুলোর প্রধান প্রধান খবর:

যুগান্তর:

বিলিংয়ের ৯৮% আদায়ের দাবি ঢাকা ওয়াসার, গায়েব ৩২২১ কোটি টাকা

গত নয় বছরে গ্রাহকদের কাছ থেকে গড়ে ৯৮ শতাংশ রাজস্ব আদায় হয়েছে-এমনটি দাবি করেছে ঢাকা ওয়াসা। সেই হিসাবে আদায়ের অঙ্ক দাঁড়ানোর কথা ১৬ হাজার ৩৪৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে ১৩ হাজার ১১ কোটি ১৮ লাখ টাকা, যেটি মোট রাজস্ব আদায়ের ৭৮ শতাংশ। অর্থাৎ ৩ হাজার ২২১ কোটি টাকার কোনো হদিস নেই। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছর থেকে ২০২২-২০২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ঢাকা ওয়াসার অডিট রিপোর্ট এবং বার্ষিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বাস্তবতার সঙ্গে হিসাবের এমন গরমিল পাওয়া গেছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, পানির দাম ও গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি, বিলিং পদ্ধতি ডিজিটাইজেশন হওয়ায় রাজস্ব আদায় বেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তব চিত্র উলটো। দিন যতই যাচ্ছে, রাজস্ব আদায় বাস্তবের তুলনায় কম হচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্তদের চুরি, অবহেলা ও অদক্ষতার কারণেই মূলত এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ঢাকা ওয়াসার অডিট রিপোর্টের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় কম হয়েছে ২৪২ কোটি টাকা, যা প্রাপ্যতার চেয়ে ২১ শতাংশ কম। ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে ২৪২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় কম হয়েছে, যা ২০ শতাংশ কম। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ৩০৪ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে, যা ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশ কম। ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ৩৩০ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে, যা ২০ দশমিক ২২ শতাংশ কম। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৩০১ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে, যা ১৭ দশমিক ২৬ শতাংশ কম। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৪৮০ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে, যা ২৪ দশমিক ১৫ শতাংশ কম। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৫৮২ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে, যা ২৫ শতাংশ কম। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ৪৩০ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে, যা ১৮ শতাংশ কম। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ৩১০ কোটি টাকা কম আদায় রয়েছে, যা ১৩ দশমিক ১৩ শতাংশ কম।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা ওয়াসার সাবেক বোর্ড চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ড. গোলাম মোস্তফা যুগান্তরকে বলেন, ঢাকা ওয়াসা গ্রাহকদের বড় একটি অংশের রাজস্ব আদায় করতে পারছে না। শুধু তাই নয়, সেবা আওতার পুরো অংশের বিলিংও করতে পারছে না। সেখানে তাদের ৯৮ শতাংশ বিল আদায় করার দাবি বড় মিথ্যাচার।

তিনি বলেন, নির্মাণাধীন ভবনের পানি ব্যবহারের বাণিজ্যিক বিল দিতে হয়। কিন্তু সেখানে আবাসিক বিল দেওয়া হয়। এভাবেও অনেক অপচয় ঘটছে ঢাকা ওয়াসার। কিন্তু ঢাকা ওয়াসা সেসব স্বীকার করছে না। সফলতা দেখাতে গিয়ে তারা বেশি বেশি বলছেন। তাহলে সেই টাকা গেল কোথায়?

নয়াদিগন্ত: সারা দেশে হিট অ্যালার্ট জারি

  • তাপ প্রবাহে পুড়ছে দেশ
  • গরমে ঘামে অস্বস্তিতে মানুষ
  • সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৪১.৫ ডিগ্রি

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে আগামী ৭২ ঘণ্টা বা তিন দিন ধরে এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে জানিয়ে হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর। গতকাল শুক্রবার আবহাওয়া অধিদফতরের উপপরিচালকের পক্ষে আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এই এলাট বা সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ অ গতকাল শুক্রবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। শুধু তাই নয়, তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে। পাশাপাশি জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে। এ ছাড়া আগামী তিন দিনের আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়ার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগসহ দিনাজপুর, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালীর ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে দেশ। বিশেষ করে দেশের কয়েকটি অঞ্চলে বিরাজ করছে তীব্র তাপমাত্রা। চলতি এ গরম মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ডটিও গতকালই ঘটে গেল। খুলনা বিভাগের চুয়াডাঙ্গায় গতকাল ৪১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। উচ্চ তাপমাত্রার সাথে রয়েছে অস্বস্তিকর জলীয় বাষ্প। তীব্র তাপ প্রবাহের কারণে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের কিয়দংশে বাতাসে যেন আগুনের হলকা বয়ে যাচ্ছে। খোলা আকাশে হেঁটে গেলে যে বাতাস মুখে লাগে তাতে মনে হয় কেউ যেন আগুনের গোলা ঢেলে দিয়েছে। মুখমণ্ডল পুড়ে যাওয়ার অবস্থা হচ্ছে। খোলা আকাশে বেশিক্ষণ ঘোরাফেরা করলে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার অবস্থা হয় বলে ওই অঞ্চলের সংবাদদাতারা জানিয়েছেন। তীব্র এই গরমে খেতের ফসল পুড়ে যাচ্ছে এমনকি অযত্নে-অবহেলায় বেড়ে ওঠা লতানো ঘাসগুলোও মরে যাচ্ছে। চলতি এই গরম আরো কয়েক দিন অব্যাহত থাকলেও ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষক। আবহাওয়া অফিস অবশ্য জানিয়েছে, আগামী পাঁচ দিনের আগে তীব্র এই গরম অবস্থার পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

গত কয়েক দিন থেকে বাংলাদেশের সর্বত্র জলীয় বাষ্পের পরিমাণ একটু বেশি হওয়ায় শরীরে অনেক ঘাম হচ্ছে। ঘামে শরীর থেকে অনেক পানি বেরিয়ে গিয়ে মানুষকে দুর্বল করে দিচ্ছে। এ সময়ে পানি পানের পরিমাণ বাড়াতে না পারলে হিটস্ট্রোকের শিকার মানুষের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে। একই সাথে বিশুদ্ধ পানির অভাবে ডায়রিয়া ও আমাশয়ে ভুগছে মানুষ। সব মিলিয়ে এই গরম দেশের কয়েকটি অঞ্চল ছাড়া পুরো দেশের মানুষ অস্বস্তিকর কষ্ট পাচ্ছে। আজ শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপ প্রবাহ (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে) এবং চাঁদপুর, মৌলভীবাজারসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশে এবং বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। তা ছাড়া কুমিল্লা ও কিশোরগঞ্জ অঞ্চলসহ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্র বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে।

গতকাল খুলনা বিভাগের প্রায় সর্বত্রই তীব্র তাপ প্রবাহের কবলে ছিল। চুয়াডাঙ্গায় ৪১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করলেও যশোরের তাপমাত্রা ছিল ৪১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মংলায় ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, খুলনায় ৪০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কুমারখালীতে ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সাতক্ষীরায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, রাজশাহী ও ঈশ্বরদীতে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকা বিভাগের মধ্যে টাঙ্গাইলে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গোপালগঞ্জে ৩৯.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ফরিদপুরে ৩৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ঢাকায় ৩৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মাদারীপুরে ৩৮.২ সেলসিয়াস তাপমাত্রা বিরাজ করছিল।

কেন এত চরম গরম পড়েছে? এ প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ তারিফুল নেওয়াজ কবির জানিয়েছেন, প্রথমত, বাংলাদেশে এই সম্যাটা সব সময়ই গরম থাকে। এ সময়ে সূর্য মাথার ওপর থেকে কিরণ দিয়ে থাকে বলে সূর্যের সর্বোচ্চ কিরণ পেয়ে থাকে বাংলাদেশ। এ সময়ের গরম কমিয়ে রাখতে পারে প্রচুর বৃষ্টিপাত হলে এবং একই সাথে ঝড় হলে। কিন্তু বেশ কিছুদিন যাবৎ দেশব্যাপী বৃষ্টির পরিমাণ একেবারেই কমে গেছে। সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগ ছাড়া অন্য কোথাও বৃষ্টিই হচ্ছে না। অন্য দিকে ভৌগোলিক অবস্থান ও ভূপ্রকৃতির কারণে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের কিছু অংশ এ সময়ে অনেক গরম পড়ে থাকে। শীতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে কোল্ডওয়েভ তা শৈত্যপ্রবাহ হলে এর খানিকটা আঁচ বাংলাদেশে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে লেগে থাকে। তেমনি গরমে পশ্চিমবঙ্গে হিটওয়েভ হলে এরও আঁচ বাংলাদেশের খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে লেগে থাকে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার ভৌগোলিক কারণে খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে বছরের এই সময়ে বৃষ্টি হয় না বললেই চলে। এর পরিণতিতে তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে এই অঞ্চলে হিটওয়েভ বা তাপপ্রবাহের সৃষ্টি করে থাকে। ভারী বৃষ্টি হলেই এই অঞ্চলের তাপপ্রবাহ কমে যাবে। তবে কখন বৃষ্টি হবে তা বলা যাচ্ছে না।

চুয়াডাঙ্গায় মাইকিং করে হিট ওয়েভ জারি চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, চুয়াডাঙ্গায় অব্যাহত রয়েছে তীব্র তাপদাহ। টানা চারদিন ধরে ৪০ ডিগ্রির উপরে তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। টানা তাপদাহে অতিষ্ঠ সীমান্তবর্তী জেলার মানুষ। অসহ্য গরমে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে প্রাণিকুল। শুক্রবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে বৃহস্পতিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র তাপদাহে হিট ওয়েভ জারি করেছে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন। মাইকিং করে খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের নাহতে বলা হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রান্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, তীব্র তাপদাহ কিছুদিন আরো অব্যাহত থাকতে পারে। তবে আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এখনো পর্যন্ত কোনো বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা কমবে না। ২০২৩ সালে ১৯ ও ২০ এপ্রিল জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বছর ৪৩ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যেতে পারে। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা জানান, চুয়াডাঙ্গাতে তাপমাত্রা বাড়ার কারণে আবহাওয়া অধিদফতর ও স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ ক্রমে চুয়াডাঙ্গাতে বৃহস্পতিবার ৭২ ঘণ্টার জন্য হিট এলার্ট জারি করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার চারটি উপজেলায় তথ্য অফিসের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।   প্রথম আলো:

প্রচণ্ড গরম দেশজুড়ে, ৩ দিনের সতর্কতা আবহাওয়া পরিস্থিতি

● প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

● কেউ জ্ঞান হারালে শরীরে ঢালতে হবে ঠান্ডা পানি।

● রাজধানীতে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় ২ ডিগ্রি।

● মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহের এলাকা বাড়তে পারে।

আগামী তিন দিন তাপমাত্রা বাড়তে পারে। পাশাপাশি জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিও বাড়তে পারে।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সুবদিয়া এলাকার একটি চাতালে ভুট্টা শুকানোর কাজ করছিলেন তিনজন। গতকাল শুক্রবার দুপুরের তীব্র রোদের মধ্যেই তাঁরা মাথায় গামছা বেঁধে এ কাজ করছিলেন। ভুট্টার মালিক রাজু মিয়া বলেন, ‘কদ্দিন ধইরে য্যারাম করে গরম বাড়চে, তাতে মুনিষ পাওয়াই যাচ্চে না। ভুট্টোগুনু ঘরে তুলার জন্নি অনেক অনুরোদ কইরে দুইজনকে ডাইকে আনিচি।’

প্রচণ্ড গরম সারা দেশে। এর মধ্যেই শ্রমজীবী মানুষকে কাজ করতে হচ্ছে মাঠে–ঘাটে। তাঁদের কষ্ট চুয়াডাঙ্গায় গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র দাবদাহের মধ্যে চাতালে কাজ করছেন শ্রমজীবী মানুষেরা। গতকাল দুপুরে সদর উপজেলার সুবদিয়ায়। অপেক্ষাকৃত বেশি। তবে গরমে অতিষ্ঠ সবাই।

যে চুয়াডাঙ্গার কথা দিয়ে প্রতিবেদন শুরু হলো, গতকাল সেখানেই দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়—৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি এ বছরের এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। চুয়াডাঙ্গা পড়েছে খুলনা বিভাগের মধ্যে। গতকাল এ বিভাগে বয়ে গেছে তীব্র তাপপ্রবাহ।

কোনো এলাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে তাকে তীব্র তাপপ্রবাহ বলে গণ্য করা হয়। খুলনা বিভাগের পাশাপাশি রাজশাহী, টাঙ্গাইল ও পাবনা জেলায় বয়ে গেছে তীব্র তাপপ্রবাহ। দেশের আরও নানা স্থানে ছিল মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। রাজধানী ঢাকায় বয়ে গেছে মাঝারি তাপপ্রবাহ।

বাংলাদেশ প্রতিদিন:

আত্মীয়স্বজন নিয়ে দোটানায় এমপি-মন্ত্রীরা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে এমপি-মন্ত্রীদের পরিবারের সদস্য, স্বজনদের কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে। দলীয় প্রধানের বার্তা পেয়ে কিছু আত্মীয়স্বজন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিচ্ছেন। কিছু জায়গায় থাকছেন। এ অবস্থায় কিছু এমপি-মন্ত্রী পড়েছেন দোটানায়। কারণ আত্মীয়স্বজনরা কথা শুনছেন না, আবার দলীয় প্রধানের নির্দেশনাও রাখতে পারছেন না। ফলে ‘শ্যাম রাখি না কুল রাখি’ অবস্থায় অনেক এমপির ক্ষেত্রে। উপজেলা ভোটে দলের নির্দেশনার পর এমপি-মন্ত্রীদের আগামীর রাজনীতিতে প্রভাব পড়বে। কারণ দলীয় প্রধানের বার্তা না শুনলে তালিকা করে রাখা হচ্ছে। সেই তালিকা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জানা গেছে, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক তাঁর নির্বাচনি এলাকার ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেন খালাতো ভাই হারুনুর রশিদ হিরাকে। তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন স্থানীয় নেতারা। গতকাল ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর কার্যালয়ে বেলা ১১টার দিকে অনির্ধারিত এক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন। আত্মীয়স্বজনকে প্রার্থী না করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, খালাতো ভাইকে প্রার্থী করা আবদুর রাজ্জাক যুক্তি তুলে ধরেন হারুনুর রশিদ হিরা উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি খালাতো ভাই। আবার তাঁর বিরুদ্ধে দলীয় সভানেত্রীর কাছে যিনি লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি মামাতো ভাই। রানিং উপজেলা চেয়ারম্যানকে সমর্থন করা দোষের কিছু দেখেন না তিনি। বৈঠক থেকেই ড. রাজ্জাক দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার মোবাইলে মেসেজ পাঠান বলে জানা গেছে।

কালের কন্ঠ:

তাপের ওপর দায় চাপাচ্ছে রেল নানা ধরনের সমস্যায় ঝুঁকিতে রয়েছে দেশের অর্ধেকের বেশি রেললাইন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে না ট্রেন। এর মধ্যে গ্রীষ্মের তাপের অজুহাতে ট্রেনের গতি আরো কমানোর নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

তাপের ওপর দায় চাপাচ্ছে রেলবিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিষয়টা অনেকটা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো হয়েছে।

কেননা, সারা দেশের তাপমাত্রা প্রায় কাছাকাছি থাকলেও এই নির্দেশনা সব জায়গার জন্য দেওয়া হয়নি। যেসব অঞ্চলে রেললাইন বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে, সেখানেই ট্রেনের গতি কমানোর বার্তা দেওয়া হচ্ছে। কয়েক দিন ধরে চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা বেশি থাকলেও সেখানে ট্রেনের গতি কমানোর নির্দেশ দেওয়া হয়নি। অথচ চট্টগ্রামে তুলনামূলক তাপমাত্রা কম থাকলেও এই অঞ্চলে তাপ বাড়লে ট্রেনের গতি কমাতে বলা হয়েছে। নিয়মিত ট্রেন চলাচলের জন্য দেশে প্রায় সাড়ে চার হাজার কিলোমিটার রেললাইন ব্যবহারযোগ্য। এর মধ্যে প্রায় ৮০০ কিলোমিটার রেললাইন তুলনামূলক নতুন। বাকিগুলোর ৭০ শতাংশের আয়ুষ্কাল শেষ। ঝুঁকিতে থাকা এসব রেলপথে ট্রেনের লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা প্রতিনিয়ত বাড়ছে।নতুন নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হলেও এখনো রয়ে গেছে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত অনেক রেললাইন। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশের মোট রেললাইনের ৯০ শতাংশ নির্মিত হয়েছে ভারতীয় উপমহাদেশ বিভাজনের আগে, যেগুলোর অবস্থা এখন খুব একটা ভালো নয়।

বর্তমানে দেশের ৪৩ জেলায় রেলপথ রয়েছে। এর ৩৯টিতেই রয়েছে রেললাইনে সমস্যা। রেলের মান নষ্ট হওয়া, লাইনে পর্যাপ্ত পাথর না থাকা, মাটি সরে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

মানবজমিন:

ছায়াযুদ্ধ থেকে মিসাইল এরপর কী

ইরান-ইসরাইলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলায় উত্তেজনার বারুদ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। একটুখানি ঘষা লাগলেই শুরু হয়ে যেতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। ইরানের হুঙ্কার, বিশ্বনেতাদের হুঁশিয়ারি, জাতিসংঘের সাবধানবাণীর পরও গতকাল ইরানের স্থানীয় সময় ভোর ৪টায় ইসরাইল ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে পশ্চিমা মিডিয়া খবর দেয়। কিন্তু একে ইসরাইল ও আমেরিকার প্রোপাগান্ডা বলে উড়িয়ে দিয়েছে ইরান। তারা বলেছে, ইরানে অনুপ্রবেশকারীরা ড্রোন উড়িয়েছিল আকাশে। তা ইরানের শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবহার করে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। ফলে বিষয়টিকে তেমন আমলে নিচ্ছে না ইরান। লেবাননে নিযুক্ত বৃটেনের সাবেক রাষ্ট্রদূত টম ফ্লেচার বলেছেন, ইরানের সঙ্গে উঁচু দরের জুয়া খেলছে ইসরাইল। ওদিকে কোনো রকম ক্ষেপণাস্ত্র হামলার খবর নাকচ করেছে ইরান। সবচেয়ে ভয়ের বিষয় ছিল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা।ওদিকে বিবিসি দিয়েছে আরেক নতুন খবর। তাতে বলা হয়েছে, ইরানে হামলা চালানোর আগে যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছিল ইসরাইল। কিন্তু তাদেরকে সমর্থন দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। এমন অবস্থায় ইরানে হামলায় যুক্তরাষ্ট্র জড়িত নয় বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। বিবিসি জানাচ্ছে, তিনি বলেছেন, কোনোরকম সামরিক অভিযানের সঙ্গে যুক্ত নয় যুক্তরাষ্ট্র। পাশাপাশি তারা উত্তেজনা প্রশমনের জন্য অব্যাহতভাবে কাজ করছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের মধ্যকার সম্পর্ককে কীভাবে মূল্যায়ন করেন- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিয়মিত সম্পর্ক বজায় আছে। ইসরাইলকে আত্মরক্ষায় সহায়তায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যুক্তরাষ্ট্র। ওদিকে উত্তেজনা প্রশমনের উপায় খুঁজতে গত রাতে জি-৭ এর বৈঠকে বসার কথা। এর আগে ইরানে হামলার নিন্দা জানিয়েছে ওমান। উভয় পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে বৃটেন, চীন, মিশর, তুরস্ক, জার্মানি, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। ভয়াবহ প্রতিশোধের চক্রকে এখনই বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরাঁ। যেকোনো রকম প্রতিশোধমূলক হামলার নিন্দা জানান তিনি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আহ্বান জানান পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আগে একসঙ্গে কাজ করার। ইরান এবং জাতিসংঘ বলেছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা নিরাপদে আছে। প্রাথমিকভাবে ইরানের বিমানবন্দরগুলো থেকে ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু যখন তারা দেখতে পেয়েছে সবকিছু নিরাপদ তখন আবার সচল হয়েছে বিমান চলাচল। ইরানের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ইসরাইলের বিরুদ্ধে অবিলম্বে প্রতিশোধ নেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই ইরানের।

বনিক বার্তা:

৮ লাখ টনের ঘরে নেমেছে চালের সরকারি মজুদ প্রধান খাদ্যশস্য চালের সরকারি মজুদ আট লাখ টনের ঘরে নেমে এসেছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি গুদামগুলোয় খাদ্যশস্যটির মজুদ কমেছে ৫০ শতাংশেরও বেশি। এক্ষেত্রে সরকারিভাবে কৃষিপণ্যটির আমদানি না হওয়া, স্থানীয় বাজার থেকে লক্ষ্য অনুযায়ী সংগ্রহ করতে না পারা ও সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় চালের বিতরণ বেড়ে যাওয়া বড় ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তথ্য অনুযায়ী, ১৭ এপ্রিল দেশের সরকারি গুদামগুলোয় চালের মোট মজুদ ছিল ৮ লাখ ৭৭ হাজার টন। আর জুলাইয়ে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরুতে তা ছিল ১৭ লাখ ৬০ হাজার টন। এরপর সেপ্টেম্বরে তা কমে দাঁড়ায় ১৬ লাখ ২০ হাজার টনে। গত ১১ জানুয়ারিতে তা নেমে আসে ১৪ লাখ ২৮ হাজার টনে।

এর আগে গত অর্থবছরের (২০২২-২৩) ৬ এপ্রিল দেশে চালের সরকারি মজুদ ছিল ১৩ লাখ ৮৫ হাজার টন। সে হিসাবে সরকারি গুদামগুলোয় এক বছরের ব্যবধানে চালের মজুদ কমেছে ৫ লাখ ৮ হাজার টন বা প্রায় ৩৭ শতাংশ।

সরকারিভাবে দেশে গত কয়েক মৌসুমে রেকর্ড উৎপাদনের দাবি করা হলেও সাম্প্রতিক সময় দফায় দফায় চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠতে দেখা গেছে। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত চাল আমদানি করেনি সরকার। ফলে সরকারি গুদামগুলোকে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের ওপরই পুরোপুরি নির্ভর করতে হচ্ছে। যদিও গত আমন মৌসুমে অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি খাদ্য মন্ত্রণালয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সরকারিভাবে বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় খাদ্যশস্য বিতরণ হয়েছে অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি। চালের সরকারি মজুদ কমে আসার পেছনে এসব বিষয় বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তাদের ভাষ্যমতে, সরকারের মজুদ কমার সুযোগে বিভিন্ন সময়ে চালের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। ২০২৪ পঞ্জিকাবর্ষ শুরুর পর এখন পর্যন্ত পণ্যটির বাজারমূল্যে জানুয়ারির শুরুতে ও পরে রমজানে দুই দফায় অস্থির হতে দেখা গেছে। এ ঊর্ধ্বমুখিতা বজায় আছে এখনো।

সমকাল:

কৌশল নির্ধারণে নানামুখী তৎপরতা বিএনপির নতুন করে সরকারবিরোধী জোরালো আন্দোলন গড়তে চাইছে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে রাজনৈতিক কর্মকৌশল নির্ধারণে নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছেন দলটির নেতারা। নির্দলীয় সরকারের অধীনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দাবি আদায়ের আন্দোলন ব্যর্থ হলেও ‘হাল ছাড়েনি’ রাজপথের প্রধান এ বিরোধী দল। নির্বাচন বর্জনের পর দাবি আদায়ে আন্দোলনে আবারও জনগণকে সম্পৃক্ত করার পাশাপাশি নেতাকর্মীকে চাঙ্গা করার উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্য অনানুষ্ঠানিকভাবে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দল, জোট ও সমমনাদের সঙ্গে আলোচনা করছে। এ ছাড়া বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা সব দলের অংশগ্রহণে শিগগিরই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দাবির পক্ষে সরকারের ওপর ‘দেশি-বিদেশি চাপ’ তৈরিতে পর্দার আড়ালে কাজ করছেন।

বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, রাজনৈতিক কর্মকৌশল নির্ধারণে বিএনপি শিগগিরই বিরোধী সব রাজনৈতিক দলের নেতা, বিশেষ করে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনকারী ছোট-বড় ৬৪ দল নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে গোলটেবিলের আয়োজন করবে। এর পর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদারে একটি সেমিনার করা হবে। ঢাকায় নিযুক্ত শক্তিধর দেশের কূটনীতিক ও প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময়ও চালিয়ে যাচ্ছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। দলটি প্রতিবেশী ভারতের চলমান লোকসভা এবং যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকেও বিশেষ নজর রাখছে। সূত্র জানায়, আগামী দিনের রাজনৈতিক করণীয় সম্পর্কে শুভাকাঙ্ক্ষী, সুশীল সমাজসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের পরামর্শ নিচ্ছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। সরকারবিরোধী ডান-বাম ও ইসলামী দলগুলোর সঙ্গেও অনানুষ্ঠানিক আলাপ করছেন তারা। বিগত ১৫ বছর ধরে ব্যর্থ আন্দোলনের অভিজ্ঞতা ও ভুল-ত্রুটি পর্যালোচনা করে নতুন কৌশল গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে বিরোধী দলটি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও আন্তর্জাতিক উইংয়ের প্রধান আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী গতকাল শুক্রবার সমকালকে বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আমাদের আন্দোলন চলমান। দেশের ৯৫ ভাগ মানুষ কথিত নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের পরও আওয়ামী লীগ জোর করে ক্ষমতায় রয়েছে। জনগণ দেশ পরিচালনায় আওয়ামী লীগকে কোনো ম্যান্ডেট দেয়নি। মানুষের ভোটাধিকার হরণকারী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী দিনের আন্দোলন কর্মসূচি দল ও সমমনা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দাবির আন্দোলন কীভাবে সফল হবে, দেশবাসীই সময়মতো সিদ্ধান্ত নেবে

যায়যায়দিন:

ইরানে ইসরাইলের হামলা ইরানের ইস্ফাহান প্রদেশে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। শুক্রবার ভোরে ক্ষেপণাস্ত্র বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে দেশটির রাজধানী তেহরান থেকে সাড়ে তিনশ’ কিলোমিটার দূরের এ প্রদেশের বিভিন্ন এলাকা। ইস্ফাহানে দেশটির পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর অবস্থান। পাশাপাশি প্রদেশের নাতানজ শহরটি ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দু। শুরু ইরানেই নয়, সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের দারা প্রদেশেও ইসরাইল হামলা চালিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। দু’জন মার্কিন কর্মকর্তা সিবিএস নিউজকে এমন তথ্য জানিয়েছেন। খবর বিবিসি ও রয়টার্স।

হামলার ঘটনার পর ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলছে, কয়েকটি শহরে বিমান চলাচল স্থগিত করা হয়। বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ থাকার পর তেহরানের প্রধান বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামা শুরু হয়। তিনটি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে বলেও দাবি করেছে সংশ্লিষ্টরা।

ইরানিয়ান স্পেস এজেন্সির একজন কর্মকর্তা হোসেইন দালিরিয়ানের দাবি, সীমান্তের বাইরে থেকে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি। এক এক্স পোস্টে দালিরিয়ান লিখেছেন, ‘ইসরাইল কয়েকটি কোয়াডকপ্টার (ড্রোন) ওড়ানোর ব্যর্থ এবং হাস্যকর চেষ্টা চালিয়েছে। ভূপাতিত করা হয়েছে কোয়াডকপ্টারগুলোকে।’ এদিকে, সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের দারা প্রদেশে সামরিক বাহিনীর অবস্থান লক্ষ্য করেও বিমান হামলা চালানো হয়েছে বলে দেশটির রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

কালবেলা:

হলফনামায় তথ্য গোপন করতে বাবাকে ৩ কোটি টাকার বাড়ি ‘দান’

মাদারীপুর সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে হেবা করে গত ৯ এপ্রিল বাবা ইসমাইল হোসেনকে বিলাসবহুল তিনতলা বাড়িটি দান করে দেন মেয়ে ফারজানা নাজনীন। ফারজানা নাজনীন মাদারীপুর জেলা যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সম্প্রতি মাদারীপুর জেলা প্রশাসকের বাসভবনের পেছনে সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন তিনতলা ডুপ্লেক্স বাড়ি। মাদারীপুর পৌরসভার ১১১ নম্বর শকুনী মৌজার ৩৮৭, ৩৮৮ ও ২৮৯ নম্বর দাগে ৭ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত বিলাসবহুল বাড়িটির মালিক ফারজানা নাজনীন ও তার মেয়ে তাসনিম জাহান মীম। ফারজানা নাজনীন তার বাবা কুনিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেনের নামে গত ৯ এপ্রিল ২৩৩৭ নম্বর দলিলে ‘হেবা ঘোষণার’ মাধ্যমে মালিকানা পরিবর্তন করেন। পরে দাখিল করেন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র। নির্বাচনের হলফনামায় সম্পত্তি কম দেখাতেই বাবার নামে লিখে দিয়েছেন কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি।

মাদারীপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, সরকারের সর্বশেষ ভূমি জরিপ বিআরএস রেকর্ডে সংশ্লিষ্ট দাগ ও খতিয়ানে ডোবা থাকায় ভবন নির্মাণ ঝুঁকিপূর্ণ মনে করায় অনুমোদন দেওয়া হয়নি। ওই জায়গায় ভবন নির্মাণের জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অনুমোদন চাইলেও সর্বশেষ পৌরসভার সার্ভেয়ার, ইঞ্জিনিয়ারসহ বিশেষজ্ঞরা অনুমোদন দেননি। পরে ফারজানা নাজনীন ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই ভবন নির্মাণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

নারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারজানা নাজনীনের দাখিল করা হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তিনি ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ৩ লাখ টাকা। ব্যাংকে জমা আছে মাত্র ২ হাজার টাকা। আর নগদ অর্থ সাড়ে ৪ লাখ টাকা।

হলফনামার তথ্য নিয়ে মাদারীপুরের জনমনে এখন প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে বিপুল অর্থে নির্মিত ডুপ্লেক্স বাড়িটির অর্থ জোগান এলো কোথা থেকে? সম্প্রতি এ নিয়ে বেশ কয়েকজন বাড়িটি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। দুদককে অনুসন্ধান করতেও অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

মাদারীপুর যুব মহিলা লীগ নেত্রী ফারজানা নাজনীন সাংবাদিকদের বলেন, আমার স্বামী লিয়াকত হাওলাদার ইতালি থেকে টাকা পাঠিয়েছেন, সেই টাকা থেকে নির্মাণ করা হয়েছে এই বাড়ি। এ ছাড়া আমি জেলার একমাত্র নারী ঠিকাদার, আমি ব্যবসা করি। আমার ব্যবসার টাকায় বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছে। পৌরসভা থেকে কোনো অনুমোদন নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছিলাম, কিন্তু পৌরসভা অনুমোদন দেয়নি। পরে অনুমোদন ছাড়াই ভবন নির্মাণ করেছি। এই শহরের অনেক বাড়িই অনুমোদন ছাড়া তৈরি হয়েছে। সবাই যেভাবে বাড়ি নির্মাণ করছে আমিও সেভাবেই নির্মাণ করেছি।

সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগেই বাড়ির মালিকানা কেন পরিবর্তন হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাড়ির জমি নিয়ে ঝামেলা থাকায় বাবার নামে লিখে দেওয়া হয়েছে। জমিটা মূলত বাবার, কিন্তু বাড়ি আমি নির্মাণ করেছি।

মাদারীপুর পৌরসভার সার্ভেয়ার এনায়েত হোসেন বলেন, ফারজানা নাজনীন ভবন নির্মাণের জন্য আবেদন করেছিলেন, পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে জায়গাটি ডোবা। বিআরএস রেকর্ডে ডোবা থাকায় পৌরসভা এজন্য কোনো অনুমোদন দেয়নি। বাড়িটি তারা অনুমোদন না নিয়েই নিজেদের মতো তৈরি করেছেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মাদারীপুরের উপপরিচালক আতিক রহমান বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডুপ্লেক্স বাড়ি নির্মাণে অর্থের উৎস নিয়েও খোঁজ-খবর নেওয়া হবে