ঢাকা ০৪:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া হস্তান্তর করা হবে না অভিশ্রুতি লাশ

মৃত সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। তার পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা থাকায় ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া লাশ হস্তান্তর করা হবে না। গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মারা যান অভিশ্রুতি শাস্ত্রী।

কুষ্টিয়ার বৃষ্টি খাতুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এবং তার চাকরিক্ষেত্রে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে পরিচিত ছিলেন। তবে তার জন্মনিবন্ধন সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং চাকরির জন্মবৃত্তান্তে নামের ক্ষেত্রে কোনোটিতে বৃষ্টি খাতুন আবার কোনোটিতে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামটা দেওয়া আছে। এসব নথিতে বাবার নামের জায়গায় শাবলুল আলম এবং মায়ের নাম বিউটি বেগম লেখা। তবে চাকরির জন্মবৃত্তান্তে মায়ের নাম অপর্ণা শাস্ত্রী লেখা।

অনলাইন পোর্টাল দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের সাবেক সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। তার মৃত্যুর পর লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় পরিচয়সংক্রান্ত এ জটিলতা সামনে আসে। ঢাকার রমনা কালীমন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা বলেন, মন্দিরের পক্ষ থেকে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং জেলা প্রশাসক বরাবর অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর পরিচয় নিয়ে যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে, তার সমাধানে ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে অভিশ্রুতির আত্মীয় হারুন অর রশীদ বলেন, গতকাল রাত পর্যন্ত কথা ছিল বৃষ্টি খাতুনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তবে পরে পরিবারকে জানানো হয়, ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া লাশ হস্তান্তর করা হবে না। বৃষ্টির বাবা লাশ নেওয়ার জন্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে বসে আছেন। এই ইনস্টিটিউটের মর্গেই রাখা হয়েছে বৃষ্টির লাশ।

হারুন অর রশীদ বলেন, ‘বৃষ্টিকে দত্তক নেওয়া হয়েছিল, সে হিন্দুধর্মের ছিল এমন অনেক কথা এখন বলা হচ্ছে। তবে কখনোই তাকে দত্তক নেওয়া হয়নি। ডিএনএ পরীক্ষা হলে হবে, এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’

গতকাল শুক্রবার দুপুরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে সাদা কাপড়ে ঢেকে অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর লাশ নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে। তখন পর্যন্ত এই লাশের পরিচয় ছিল অজ্ঞাত, অর্থাৎ লাশের দাবিদার কেউ ছিলেন না। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেনটিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা লাশের আঙুলের ছাপ নিয়ে লাশটি আবার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠিয়ে দেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে এবং পরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গিয়ে অভিশ্রুতির সহকর্মীরা নিশ্চিত হন লাশটি অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর।

অভিশ্রুতি অনলাইন পোর্টাল দ্য রিপোর্ট ডট লাইভে ছয় মাস কর্মরত ছিলেন। তিনি গত জানুয়ারি পর্যন্ত সেখানে কর্মরত ছিলেন। নতুন আরেকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে যোগ দেওয়ার কথা ছিল অভিশ্রুতির। নতুন কর্মক্ষেত্রে যোগ দেওয়া উপলক্ষে বৃহস্পতিবার অভিশ্রুতি তার বন্ধুদের সঙ্গে বেইলি রোডের ওই ভবনের একটি রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন। সেখানে অগ্নিকাণ্ডে অন্যদের সঙ্গে অভিশ্রুতি মারা যান।

জনপ্রিয় সংবাদ

পারিবারিক কলহ: মেয়েকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন মা!

ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া হস্তান্তর করা হবে না অভিশ্রুতি লাশ

আপডেট সময় ০৪:২৫:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ মার্চ ২০২৪

মৃত সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। তার পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা থাকায় ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া লাশ হস্তান্তর করা হবে না। গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মারা যান অভিশ্রুতি শাস্ত্রী।

কুষ্টিয়ার বৃষ্টি খাতুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এবং তার চাকরিক্ষেত্রে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে পরিচিত ছিলেন। তবে তার জন্মনিবন্ধন সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং চাকরির জন্মবৃত্তান্তে নামের ক্ষেত্রে কোনোটিতে বৃষ্টি খাতুন আবার কোনোটিতে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামটা দেওয়া আছে। এসব নথিতে বাবার নামের জায়গায় শাবলুল আলম এবং মায়ের নাম বিউটি বেগম লেখা। তবে চাকরির জন্মবৃত্তান্তে মায়ের নাম অপর্ণা শাস্ত্রী লেখা।

অনলাইন পোর্টাল দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের সাবেক সাংবাদিক অভিশ্রুতি শাস্ত্রী। তার মৃত্যুর পর লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় পরিচয়সংক্রান্ত এ জটিলতা সামনে আসে। ঢাকার রমনা কালীমন্দিরের সভাপতি উৎপল সাহা বলেন, মন্দিরের পক্ষ থেকে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবং জেলা প্রশাসক বরাবর অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর পরিচয় নিয়ে যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে, তার সমাধানে ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে অভিশ্রুতির আত্মীয় হারুন অর রশীদ বলেন, গতকাল রাত পর্যন্ত কথা ছিল বৃষ্টি খাতুনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তবে পরে পরিবারকে জানানো হয়, ডিএনএ পরীক্ষা ছাড়া লাশ হস্তান্তর করা হবে না। বৃষ্টির বাবা লাশ নেওয়ার জন্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে বসে আছেন। এই ইনস্টিটিউটের মর্গেই রাখা হয়েছে বৃষ্টির লাশ।

হারুন অর রশীদ বলেন, ‘বৃষ্টিকে দত্তক নেওয়া হয়েছিল, সে হিন্দুধর্মের ছিল এমন অনেক কথা এখন বলা হচ্ছে। তবে কখনোই তাকে দত্তক নেওয়া হয়নি। ডিএনএ পরীক্ষা হলে হবে, এতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’

গতকাল শুক্রবার দুপুরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে সাদা কাপড়ে ঢেকে অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর লাশ নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে। তখন পর্যন্ত এই লাশের পরিচয় ছিল অজ্ঞাত, অর্থাৎ লাশের দাবিদার কেউ ছিলেন না। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেনটিফিকেশন অ্যান্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা লাশের আঙুলের ছাপ নিয়ে লাশটি আবার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠিয়ে দেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গের সামনে এবং পরে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে গিয়ে অভিশ্রুতির সহকর্মীরা নিশ্চিত হন লাশটি অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর।

অভিশ্রুতি অনলাইন পোর্টাল দ্য রিপোর্ট ডট লাইভে ছয় মাস কর্মরত ছিলেন। তিনি গত জানুয়ারি পর্যন্ত সেখানে কর্মরত ছিলেন। নতুন আরেকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে যোগ দেওয়ার কথা ছিল অভিশ্রুতির। নতুন কর্মক্ষেত্রে যোগ দেওয়া উপলক্ষে বৃহস্পতিবার অভিশ্রুতি তার বন্ধুদের সঙ্গে বেইলি রোডের ওই ভবনের একটি রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন। সেখানে অগ্নিকাণ্ডে অন্যদের সঙ্গে অভিশ্রুতি মারা যান।