ঢাকা ০১:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

মেধাবীরা কেন দেশ ছাড়ছে?

মেধাবীরা কেন দেশ ছাড়ছে?

১৫ বছরে বিদেশে যাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। এর মধ্যে প্রতি বছর আমেরিকা, কানাডা এবং ইংল্যান্ডে শিক্ষার্থী যাওয়ার সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। শুধু আমেরিকাতেই আছে ১০,৫০০ জন শিক্ষার্থী যার মধ্যে বড় একটি অংশ গিয়েছে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পড়তে। যুক্তরাষ্ট্রে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্তরে পড়তে গেলে স্কলারশিপ খুব কম পাওয়া যায়। এর মধ্যে ফুল ব্রাইট স্কলারশিপ খুবই দুর্লভ। ফুল ব্রাইট পেতে হলে রেজাল্ট অনেক ভালো হতে হবে এবং একই সাথে একটু গরিব হলে তা সহজ হয়। অনেকেই সামান্য অর্থের আংশিক স্কলারশিপ পায় কিন্তু অধিকাংশই নিজ খরচে পড়তে যায়। ধারণা করতে পারেন, দেশ থেকে কত হাজার ডলার শুধু শিক্ষা খাতে চলে যাচ্ছে?

এই যে বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী ডলার খরচ করে বিদেশে নামীদামি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাচ্ছে, তাদের একটি অংশকে যদি ফিরিয়ে আনতে পারতাম তাহলেও বলা যেত ডলার ভেঙে শিক্ষা কেনাটা কিছুটা হলেও সার্থক হয়েছে। কিন্তু আমাদের সরকারেরা আদিকাল থেকেই এই জায়গায় কোনো গুরুত্ব দেয় না। ১৫ বছরে আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণ। তার ইমপ্যাক্ট কী? বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়া সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের বিদেশ যাওয়া কমছে না কেন? কারণ শিক্ষার মান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষার পরিবেশ ভালো না।

বিশ্বে এত নিম্নমানের শিক্ষক এবং শিক্ষার পরিবেশ খুব কম দেশেই আছে। যেই দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার মতো যথেষ্ট যোগ্য মানুষ নেই সেই দেশে ভবন বানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় নাম দিয়ে অযোগ্যদের নিয়োগ দিয়ে বলা হচ্ছে এরা শিক্ষক। এমন মানুষদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বানাচ্ছে যারা জানেই না বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা মানে কী, গবেষণা মানে কী, শিক্ষকদের কী করা উচিত আর কী করা একদম অনুচিত। এদের আচরণ দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। এদের দেখে সবাই মনে করে ‘ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মানে এমন!’

দেশে নতুন করে আরও দুটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জ’ হবে নারায়ণগঞ্জে। আর ‘সাতক্ষীরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ হবে সাতক্ষীরায়। যারা সরকারি দল করবে তাদের ভিসি, প্রোভিসি, কোষাধ্যক্ষ বানানোর পর সরকারি দলে আর শিক্ষক খুঁজে পাওয়া যাবে না। দেশে কি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার মতো যোগ্য মানুষ আছে? বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মান বৃদ্ধি না করে সংখ্যা বাড়ানো মানে হলো সরকার বিপদে পড়লে বিবৃতি দেওয়া শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ানো।

দেশের শিক্ষার মান বাড়ানোর কোনো ইচ্ছে কি সরকারের আছে? বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই না আছে মানসম্পন্ন শিক্ষক, না আছে শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ, না আছে গবেষণার জন্য উপযুক্ত বরাদ্দ, না আছে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ও থাকা খাওয়ার ভালো পরিবেশ। সরকার কেন বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানসম্পন্ন না করে জেলায় জেলায় মানহীন বিশ্ববিদ্যালয় খুললো? এই সরকার অত্যন্ত চালাক ও বুদ্ধিমান। দলীয় স্বার্থের কারণেই এত এত বিশ্ববিদ্যালয় খুলছে যাতে দলান্ধ ছাত্র-শিক্ষক বাড়ে এবং ক্ষমতায় রাখা কিংবা ক্ষমতায় নেওয়ার জন্য যেভাবে নির্দেশ আসবে সেইভাবে তারা যেন কাজ করে।

তারা যদি বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানসম্পন্ন করতো তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কি সরকারের পক্ষ হয়ে এত বিবৃতি দিত? এত বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার কারণে কত শত শিক্ষক, ভিসি, প্রো-ভিসি হয়েছে, কত শত পদ পদবি পেয়েছে; এইসব পেয়ে তারা সরকারের গুণগান গেয়েছে। সরকারি দল করা কোনো শিক্ষক কি আজ পর্যন্ত সরকারের কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে? বরং উল্টো সরকারের পক্ষে সাফাই গেয়েছে।

আমরা দেখেছি বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখনো সেই সরকারি দল করা বিএনপির আমলের কোনো শিক্ষক অন্যায়ের প্রতিবাদ তো করেইনি উল্টো সাফাই গেয়েছে। এখন প্রাকৃতিকভাবেই মাত্রা বেড়েছে। পরেরবার যদি আবার বিএনপি ক্ষমতায় আসে এখন যারা অন্যায়ের সাফাই গাইছে তখন তারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করে ফাটিয়ে ফেলবে আর এখন যারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করছে তখন তারা চুপ থাকবে। এইভাবেই আমাদের দেশটা চলছে। আর কত দিন এইভাবে চলবে?

শিক্ষক হয়ে শিক্ষকতা না করে তারা করে রাজনীতি। কারণ অযোগ্যরা শিক্ষকতায় আনন্দ পাবে না। এরা এমন একটা ভাব ধরে যে এরা রাজনীতি না করলে দেশ রসাতলে যাবে। তারা যে দেশকে রসাতলে নিচ্ছে তা বোঝার মতো জ্ঞানও তাদের নেই। তার ওপর যোগ হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো আরেকটা বিষফোঁড়া। ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সরদার। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় অল্পবিস্তর কিছু শিক্ষক থাকলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স এবং বিশেষ করে মাস্টার্স পড়ানোর মতো শিক্ষক নেই কিন্তু লাখ লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি করে সার্টিফিকেট দিয়ে দেশ সার্টিফিকেটধারী শিক্ষার্থী দিয়ে সয়লাব করে ফেলেছে।

এরা কী করছে, কীভাবে করছে তার কোনো সার্ভে আছে? ভর্তি করা হয় অর্থ কামানোর জন্য। আর ছেলেমেয়েরা যেন বলতে পারে যে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়ছে সেইটাই লক্ষ্য। এরা যেন রাষ্ট্রকে জ্বালাতন না করে। কিন্তু পাস করে বেকার হয়ে হতাশায় পড়ে মাদকাসক্ত হচ্ছে, ছোটখাটো চাকরি করে একটা অসুখী জীবনযাপন করে। অথচ আমরা যদি বিদেশ থেকে বিশেষ করে ভারত ও চীন থেকে শিক্ষক এনে দেশ বিদেশের শিক্ষক মিলিয়ে দেশের সবকটি বিশ্ববিদ্যালয় মানসম্মত করতে পারতাম দেশের অনেক ছেলেমেয়েই বিদেশ যেত না।

দেশের ডলার বিদেশে যেত না। শিক্ষা ও চিকিৎসার জন্য আমাদের বিশাল পরিমাণ ডলার চলে যাচ্ছে। তার সাথে অর্থ পাচার তো আছেই। এইসব যদি রোধ করতে পারতাম, বুঝতে পারছেন দেশটা কেমন হতো?

ড. কামরুল হাসান মামুন
অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বি:দ্র : কলামটি অনলাইন গণমাধ্যম ঢাকা পোষ্ট থেকে সংগৃহীত

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের ধাওয়া সেনাবাহিনীর

মেধাবীরা কেন দেশ ছাড়ছে?

আপডেট সময় ০৩:০২:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩

১৫ বছরে বিদেশে যাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৩ গুণ। এর মধ্যে প্রতি বছর আমেরিকা, কানাডা এবং ইংল্যান্ডে শিক্ষার্থী যাওয়ার সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। শুধু আমেরিকাতেই আছে ১০,৫০০ জন শিক্ষার্থী যার মধ্যে বড় একটি অংশ গিয়েছে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পড়তে। যুক্তরাষ্ট্রে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্তরে পড়তে গেলে স্কলারশিপ খুব কম পাওয়া যায়। এর মধ্যে ফুল ব্রাইট স্কলারশিপ খুবই দুর্লভ। ফুল ব্রাইট পেতে হলে রেজাল্ট অনেক ভালো হতে হবে এবং একই সাথে একটু গরিব হলে তা সহজ হয়। অনেকেই সামান্য অর্থের আংশিক স্কলারশিপ পায় কিন্তু অধিকাংশই নিজ খরচে পড়তে যায়। ধারণা করতে পারেন, দেশ থেকে কত হাজার ডলার শুধু শিক্ষা খাতে চলে যাচ্ছে?

এই যে বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থী ডলার খরচ করে বিদেশে নামীদামি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যাচ্ছে, তাদের একটি অংশকে যদি ফিরিয়ে আনতে পারতাম তাহলেও বলা যেত ডলার ভেঙে শিক্ষা কেনাটা কিছুটা হলেও সার্থক হয়েছে। কিন্তু আমাদের সরকারেরা আদিকাল থেকেই এই জায়গায় কোনো গুরুত্ব দেয় না। ১৫ বছরে আমাদের দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়েছে দ্বিগুণ। তার ইমপ্যাক্ট কী? বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়া সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের বিদেশ যাওয়া কমছে না কেন? কারণ শিক্ষার মান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষার পরিবেশ ভালো না।

বিশ্বে এত নিম্নমানের শিক্ষক এবং শিক্ষার পরিবেশ খুব কম দেশেই আছে। যেই দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার মতো যথেষ্ট যোগ্য মানুষ নেই সেই দেশে ভবন বানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় নাম দিয়ে অযোগ্যদের নিয়োগ দিয়ে বলা হচ্ছে এরা শিক্ষক। এমন মানুষদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বানাচ্ছে যারা জানেই না বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা মানে কী, গবেষণা মানে কী, শিক্ষকদের কী করা উচিত আর কী করা একদম অনুচিত। এদের আচরণ দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। এদের দেখে সবাই মনে করে ‘ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মানে এমন!’

দেশে নতুন করে আরও দুটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হতে যাচ্ছে। এর মধ্যে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নারায়ণগঞ্জ’ হবে নারায়ণগঞ্জে। আর ‘সাতক্ষীরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ হবে সাতক্ষীরায়। যারা সরকারি দল করবে তাদের ভিসি, প্রোভিসি, কোষাধ্যক্ষ বানানোর পর সরকারি দলে আর শিক্ষক খুঁজে পাওয়া যাবে না। দেশে কি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার মতো যোগ্য মানুষ আছে? বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয়ের মান বৃদ্ধি না করে সংখ্যা বাড়ানো মানে হলো সরকার বিপদে পড়লে বিবৃতি দেওয়া শিক্ষকের সংখ্যা বাড়ানো।

দেশের শিক্ষার মান বাড়ানোর কোনো ইচ্ছে কি সরকারের আছে? বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয় এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই না আছে মানসম্পন্ন শিক্ষক, না আছে শিক্ষা ও গবেষণার পরিবেশ, না আছে গবেষণার জন্য উপযুক্ত বরাদ্দ, না আছে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ও থাকা খাওয়ার ভালো পরিবেশ। সরকার কেন বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানসম্পন্ন না করে জেলায় জেলায় মানহীন বিশ্ববিদ্যালয় খুললো? এই সরকার অত্যন্ত চালাক ও বুদ্ধিমান। দলীয় স্বার্থের কারণেই এত এত বিশ্ববিদ্যালয় খুলছে যাতে দলান্ধ ছাত্র-শিক্ষক বাড়ে এবং ক্ষমতায় রাখা কিংবা ক্ষমতায় নেওয়ার জন্য যেভাবে নির্দেশ আসবে সেইভাবে তারা যেন কাজ করে।

তারা যদি বিদ্যমান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মানসম্পন্ন করতো তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কি সরকারের পক্ষ হয়ে এত বিবৃতি দিত? এত বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার কারণে কত শত শিক্ষক, ভিসি, প্রো-ভিসি হয়েছে, কত শত পদ পদবি পেয়েছে; এইসব পেয়ে তারা সরকারের গুণগান গেয়েছে। সরকারি দল করা কোনো শিক্ষক কি আজ পর্যন্ত সরকারের কোনো অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে? বরং উল্টো সরকারের পক্ষে সাফাই গেয়েছে।

আমরা দেখেছি বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখনো সেই সরকারি দল করা বিএনপির আমলের কোনো শিক্ষক অন্যায়ের প্রতিবাদ তো করেইনি উল্টো সাফাই গেয়েছে। এখন প্রাকৃতিকভাবেই মাত্রা বেড়েছে। পরেরবার যদি আবার বিএনপি ক্ষমতায় আসে এখন যারা অন্যায়ের সাফাই গাইছে তখন তারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করে ফাটিয়ে ফেলবে আর এখন যারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করছে তখন তারা চুপ থাকবে। এইভাবেই আমাদের দেশটা চলছে। আর কত দিন এইভাবে চলবে?

শিক্ষক হয়ে শিক্ষকতা না করে তারা করে রাজনীতি। কারণ অযোগ্যরা শিক্ষকতায় আনন্দ পাবে না। এরা এমন একটা ভাব ধরে যে এরা রাজনীতি না করলে দেশ রসাতলে যাবে। তারা যে দেশকে রসাতলে নিচ্ছে তা বোঝার মতো জ্ঞানও তাদের নেই। তার ওপর যোগ হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো আরেকটা বিষফোঁড়া। ঢাল নেই তলোয়ার নেই নিধিরাম সরদার। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় অল্পবিস্তর কিছু শিক্ষক থাকলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স এবং বিশেষ করে মাস্টার্স পড়ানোর মতো শিক্ষক নেই কিন্তু লাখ লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি করে সার্টিফিকেট দিয়ে দেশ সার্টিফিকেটধারী শিক্ষার্থী দিয়ে সয়লাব করে ফেলেছে।

এরা কী করছে, কীভাবে করছে তার কোনো সার্ভে আছে? ভর্তি করা হয় অর্থ কামানোর জন্য। আর ছেলেমেয়েরা যেন বলতে পারে যে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স পড়ছে সেইটাই লক্ষ্য। এরা যেন রাষ্ট্রকে জ্বালাতন না করে। কিন্তু পাস করে বেকার হয়ে হতাশায় পড়ে মাদকাসক্ত হচ্ছে, ছোটখাটো চাকরি করে একটা অসুখী জীবনযাপন করে। অথচ আমরা যদি বিদেশ থেকে বিশেষ করে ভারত ও চীন থেকে শিক্ষক এনে দেশ বিদেশের শিক্ষক মিলিয়ে দেশের সবকটি বিশ্ববিদ্যালয় মানসম্মত করতে পারতাম দেশের অনেক ছেলেমেয়েই বিদেশ যেত না।

দেশের ডলার বিদেশে যেত না। শিক্ষা ও চিকিৎসার জন্য আমাদের বিশাল পরিমাণ ডলার চলে যাচ্ছে। তার সাথে অর্থ পাচার তো আছেই। এইসব যদি রোধ করতে পারতাম, বুঝতে পারছেন দেশটা কেমন হতো?

ড. কামরুল হাসান মামুন
অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

বি:দ্র : কলামটি অনলাইন গণমাধ্যম ঢাকা পোষ্ট থেকে সংগৃহীত