ঢাকা ০৮:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নেকাব পরায় ইবি ছাত্রীর ভাইভা না নেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন

নেকাব পরায় ইবি ছাত্রীর ভাইভা না নেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সেমিস্টার ফাইনালের ভাইভায় পুরুষ শিক্ষকদের সামনে নেকাব খুলতে অস্বীকৃতি জানানোয় এক ছাত্রীর ভাইভা নেননি বোর্ডের শিক্ষকরা।

শনিবার (২০ জানুয়ারী) বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতিবাচক মন্তব্যের ঝড় ওঠে। রোববার এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ইবি শাখা। স্মারকলিপিতে তারা ক্যাম্পাসে পোশাকের অধিকার নিশ্চিতসহ চার দফা দাবি জানায়।

দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ইবি শাখার সভাপতি মুহাম্মদ আল আমিনের সভাপতিত্বে সংগঠনটির সাবেক কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য মুহাম্মদ নাঈম উদ্দিন ও শাখা সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল রাহাতসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও মানববন্ধনে অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে তারা ভিসির দায়িত্বে থাকা প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমানের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। স্মারকলিপিতে উল্লেখিত দাবিগুলো হলো- ক্যাম্পাসে পোশাকের অধিকার নিশ্চিত করা, ধর্মীয় ও সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা, নেকাব-হিজাবের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা ও ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী অধিকারের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের এমন নগ্ন হস্তক্ষেপ ও কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের চরমভাবে আঘাত করেছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ও নাগরিক অধিকারহরণ করার নামান্তর। এ ঘটনায় সংবিধানের ধর্মীয় স্বাধীনতার বিধানকে লঙ্ঘন করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি স্মারকলিপি পেয়েছি। উপাচার্য ক্যাম্পাসে এলে তার সঙ্গে বসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গত ১৩ ডিসেম্বর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষের সেমিস্টার ফাইনালের ভাইভায় শিক্ষকরা ওই ছাত্রীর পরিচয় নিশ্চিতের জন্য নেকাব খুলতে বলেন। তখন ওই ছাত্রী পুরুষ শিক্ষকদের সামনে নেকাব খুলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে প্রয়োজনে নারী শিক্ষকদের মাধ্যমে তার পরিচয় নিশ্চিত করতে ভাইভা বোর্ডকে অনুরোধ জানান; কিন্তু তাকে ভাইভা বোর্ডের সব সদস্যের সামনেই নেকাব খুলতে বলেন শিক্ষকরা। পরে নেকাব না খোলায় তার ভাইভা গ্রহণ করেননি শিক্ষকরা। তবে সেদিন শিক্ষকদের পক্ষ থেকে তাকে পরবর্তীতে নেকাব খুলে ভাইভায় অংশ নিলে তার সাক্ষাৎকার নেওয়ার কথা জানানো হয়; কিন্তু তিনি তার অবস্থানে অনড় থাকায় ঘটনার ১ মাস ৯ দিন পার হলেও তার ভাইভা নেওয়া হয়নি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশ–ওয়েস্ট ইন্ডিজসহ আজ টিভিতে যা দেখবেন

নেকাব পরায় ইবি ছাত্রীর ভাইভা না নেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন

আপডেট সময় ০৭:৩৭:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৪

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সেমিস্টার ফাইনালের ভাইভায় পুরুষ শিক্ষকদের সামনে নেকাব খুলতে অস্বীকৃতি জানানোয় এক ছাত্রীর ভাইভা নেননি বোর্ডের শিক্ষকরা।

শনিবার (২০ জানুয়ারী) বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতিবাচক মন্তব্যের ঝড় ওঠে। রোববার এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ইবি শাখা। স্মারকলিপিতে তারা ক্যাম্পাসে পোশাকের অধিকার নিশ্চিতসহ চার দফা দাবি জানায়।

দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ইবি শাখার সভাপতি মুহাম্মদ আল আমিনের সভাপতিত্বে সংগঠনটির সাবেক কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য মুহাম্মদ নাঈম উদ্দিন ও শাখা সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল রাহাতসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও মানববন্ধনে অংশ নেন। মানববন্ধন শেষে তারা ভিসির দায়িত্বে থাকা প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমানের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। স্মারকলিপিতে উল্লেখিত দাবিগুলো হলো- ক্যাম্পাসে পোশাকের অধিকার নিশ্চিত করা, ধর্মীয় ও সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা, নেকাব-হিজাবের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা ও ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী অধিকারের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের এমন নগ্ন হস্তক্ষেপ ও কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের চরমভাবে আঘাত করেছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ও নাগরিক অধিকারহরণ করার নামান্তর। এ ঘটনায় সংবিধানের ধর্মীয় স্বাধীনতার বিধানকে লঙ্ঘন করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি স্মারকলিপি পেয়েছি। উপাচার্য ক্যাম্পাসে এলে তার সঙ্গে বসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গত ১৩ ডিসেম্বর হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষের সেমিস্টার ফাইনালের ভাইভায় শিক্ষকরা ওই ছাত্রীর পরিচয় নিশ্চিতের জন্য নেকাব খুলতে বলেন। তখন ওই ছাত্রী পুরুষ শিক্ষকদের সামনে নেকাব খুলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে প্রয়োজনে নারী শিক্ষকদের মাধ্যমে তার পরিচয় নিশ্চিত করতে ভাইভা বোর্ডকে অনুরোধ জানান; কিন্তু তাকে ভাইভা বোর্ডের সব সদস্যের সামনেই নেকাব খুলতে বলেন শিক্ষকরা। পরে নেকাব না খোলায় তার ভাইভা গ্রহণ করেননি শিক্ষকরা। তবে সেদিন শিক্ষকদের পক্ষ থেকে তাকে পরবর্তীতে নেকাব খুলে ভাইভায় অংশ নিলে তার সাক্ষাৎকার নেওয়ার কথা জানানো হয়; কিন্তু তিনি তার অবস্থানে অনড় থাকায় ঘটনার ১ মাস ৯ দিন পার হলেও তার ভাইভা নেওয়া হয়নি।