ঢাকা ০১:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ‘কাইন্দেন না’ বলতেই আরও বেশি কাঁদলেন পলক Logo পদত্যাগের ইচ্ছা নেই, সরকার বললে চলে যাবো: শিক্ষা উপদেষ্টা Logo আসামি ছাড়িয়ে নিতে থানায় বিএনপি-গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের হাতাহাতি Logo নির্বাচনে কালো টাকার খেলা ও মাস্তানতন্ত্র বরদাশত করা হবে না: জামায়াত আমির Logo বিমান বিধ্বস্ত: ঢাকায় পৌঁছেছে ভারতীয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদল Logo এনসিপির এজেন্ডা বিএনপির নামে বদনাম করা: ইশরাক Logo বিমান বিধ্বস্তে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে: আইএসপিআর Logo চাঁদাবাজি-সন্ত্রাস, নৈরাজ্য ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদে শিবিরের বিক্ষোভ Logo ৯ দিনের সফরে ঢাকায় পাকিস্তানের প্রখ্যাত আলেম; জেনে নিন সফরসূচি Logo পরাজিত শক্তির নানা ষড়যন্ত্রের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

রাঙ্গামাটিতে পাহাড় কেটে ইটভাটা বানালেন আওয়ামীলীগের তিন নেতা

পাহাড় কেটে ইটভাটা

রাঙামাটির লংগদু উপজেলার দুর্গম আটারকছড়া ইউনিয়নের বটতল তিন ব্রিজ এলাকায় ‘কেবিএম ব্রিকস’ নামে ইটভাটাটি গড়ে তুলেছেন আওয়ামীলীগের তিন নেতা। তারা হলেন, আটারকছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান, লংগদু ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহামেদ ও লংগদু উপজেলা যুবলীগের সভাপতি চাঁন মিয়া।

পাহাড় কেটে তিন মাসে গড়ে তোলা হয়েছে। এখন সেখানে পুরোদমে চলছে ইট তৈরি ও পোড়ানোর কাজ। কাঁচা ইট বানাতে যেমন পাহাড়ের মাটি কাটা হচ্ছে, তেমনি পোড়ানোর জন্য সাবাড় হচ্ছে স্থানীয় বনের গাছ। অবৈধভাবে দুই একরের বেশি জায়গায় এত বড় আয়োজন চললেও প্রশাসন বলছে, ভাটার বিষয়ে কোনো তথ্যই নেই তাদের কাছে।

জানতে চাইলে চাঁন মিয়া তাদের তিনজনের মালিকানায় সম্প্রতি ইটভাটাটি গড়ে তোলার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘দেরিতে ভাটা স্থাপনের কারণে লোকসান হচ্ছে। অনেক শ্রমিক চলে গেছেন। বাট্যাপাড়ার একটি ইটভাটার মালিক শাহজাহান কোম্পানির ভুল পরামর্শের কারণে ভুগতে হচ্ছে।’ আরেক অংশীদার জিয়াউর রহমান বলেছেন, স্থানীয় কিছু উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ইট প্রয়োজন। বাইরে থেকে আনলে লোকসান হয়। এ জন্য ছোট পরিসরে ভাটাটি করা হয়েছে। সামনের বছর আরও বড় করা হবে। তবে প্রশাসনের অনুমতি, পরিবেশ ছাড়পত্র নেওয়ার বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেননি এ আওয়ামী লীগ নেতা।

লংগদু উপজেলা সদর থেকে অন্তত ৮ কিলোমিটার দূরে কেবিএম ব্রিকস। মাইনি ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাইছড়ির বটতল তিন ব্রিজের পাশে হলেও ভাটাটির মূল অবস্থান আটারকছড়া ইউনিয়নে। গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন শ্রমিকদের ইট তৈরিতে ব্যস্ত দেখা যায়। একটি বিশাল পাহাড় কেটে ইটভাটা করা হয়েছে। বনাঞ্চল থেকে অপরিপক্ব গাছ কেটে এনে চিমনিতে দেওয়া হচ্ছে। কালো ধোঁয়ায় আকাশ ছেয়ে গেছে। এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসনের অগোচরেই চলছে ইট পোড়ানোর মহোৎসব।

আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের তিন নেতা প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রা ভয়ে মুখ খুলতে চাননি। তবে আলাপকালে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ভাটার স্থানে আগে একটি বিশাল টিলা ছিল। কয়েক মাসে এটি কেটে সমান করে ভাটা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা মালিক হওয়ায় কেউ টুঁ শব্দ করেনি। এখন যেমন স্থানীয় বন কেটে ভাটার জ্বালানি করা হলেও কেউ কিছু বলতে পারছেন না।

আটারকছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অজয় মিত্র চাকমা বলেছেন, ইটভাটাটি করার কথা মৌখিকভাবে জানালেও তারা লিখিত আবেদন করেননি। এটি বৈধ, না অবৈধ তাও আমি জানি না।

অবৈধ ইটভাটায় সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে উপজেলা প্রশাসন চারটিকে জরিমানা করে। তবে বটতল তিন ব্রিজ এলাকার কেবিএম ব্রিকসের বিষয়ে কোনো তথ্য নেই উপজেলা প্রশাসনের কাছে। আইন অনুসারে, জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া কেউ ইটভাটা করতে পারবে না।

জেলা প্রশাসক মোশারফ হোসেন খান জানিয়েছেন, তিন দিন আগে তিনি সব ইউএনওকে ছবিসহ উপজেলার অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিষয়ে তথ্য দিতে চিঠি পাঠিয়েছেন। তালিকা আসার পর আটারকছড়া ইউনিয়নের ভাটাটি সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

‘কাইন্দেন না’ বলতেই আরও বেশি কাঁদলেন পলক

রাঙ্গামাটিতে পাহাড় কেটে ইটভাটা বানালেন আওয়ামীলীগের তিন নেতা

আপডেট সময় ০৫:৪১:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৪

রাঙামাটির লংগদু উপজেলার দুর্গম আটারকছড়া ইউনিয়নের বটতল তিন ব্রিজ এলাকায় ‘কেবিএম ব্রিকস’ নামে ইটভাটাটি গড়ে তুলেছেন আওয়ামীলীগের তিন নেতা। তারা হলেন, আটারকছড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান, লংগদু ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহামেদ ও লংগদু উপজেলা যুবলীগের সভাপতি চাঁন মিয়া।

পাহাড় কেটে তিন মাসে গড়ে তোলা হয়েছে। এখন সেখানে পুরোদমে চলছে ইট তৈরি ও পোড়ানোর কাজ। কাঁচা ইট বানাতে যেমন পাহাড়ের মাটি কাটা হচ্ছে, তেমনি পোড়ানোর জন্য সাবাড় হচ্ছে স্থানীয় বনের গাছ। অবৈধভাবে দুই একরের বেশি জায়গায় এত বড় আয়োজন চললেও প্রশাসন বলছে, ভাটার বিষয়ে কোনো তথ্যই নেই তাদের কাছে।

জানতে চাইলে চাঁন মিয়া তাদের তিনজনের মালিকানায় সম্প্রতি ইটভাটাটি গড়ে তোলার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘দেরিতে ভাটা স্থাপনের কারণে লোকসান হচ্ছে। অনেক শ্রমিক চলে গেছেন। বাট্যাপাড়ার একটি ইটভাটার মালিক শাহজাহান কোম্পানির ভুল পরামর্শের কারণে ভুগতে হচ্ছে।’ আরেক অংশীদার জিয়াউর রহমান বলেছেন, স্থানীয় কিছু উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ইট প্রয়োজন। বাইরে থেকে আনলে লোকসান হয়। এ জন্য ছোট পরিসরে ভাটাটি করা হয়েছে। সামনের বছর আরও বড় করা হবে। তবে প্রশাসনের অনুমতি, পরিবেশ ছাড়পত্র নেওয়ার বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেননি এ আওয়ামী লীগ নেতা।

লংগদু উপজেলা সদর থেকে অন্তত ৮ কিলোমিটার দূরে কেবিএম ব্রিকস। মাইনি ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাইছড়ির বটতল তিন ব্রিজের পাশে হলেও ভাটাটির মূল অবস্থান আটারকছড়া ইউনিয়নে। গত বৃহস্পতিবার সরেজমিন শ্রমিকদের ইট তৈরিতে ব্যস্ত দেখা যায়। একটি বিশাল পাহাড় কেটে ইটভাটা করা হয়েছে। বনাঞ্চল থেকে অপরিপক্ব গাছ কেটে এনে চিমনিতে দেওয়া হচ্ছে। কালো ধোঁয়ায় আকাশ ছেয়ে গেছে। এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় স্থানীয় প্রশাসনের অগোচরেই চলছে ইট পোড়ানোর মহোৎসব।

আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের তিন নেতা প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রা ভয়ে মুখ খুলতে চাননি। তবে আলাপকালে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ভাটার স্থানে আগে একটি বিশাল টিলা ছিল। কয়েক মাসে এটি কেটে সমান করে ভাটা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা মালিক হওয়ায় কেউ টুঁ শব্দ করেনি। এখন যেমন স্থানীয় বন কেটে ভাটার জ্বালানি করা হলেও কেউ কিছু বলতে পারছেন না।

আটারকছড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অজয় মিত্র চাকমা বলেছেন, ইটভাটাটি করার কথা মৌখিকভাবে জানালেও তারা লিখিত আবেদন করেননি। এটি বৈধ, না অবৈধ তাও আমি জানি না।

অবৈধ ইটভাটায় সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে উপজেলা প্রশাসন চারটিকে জরিমানা করে। তবে বটতল তিন ব্রিজ এলাকার কেবিএম ব্রিকসের বিষয়ে কোনো তথ্য নেই উপজেলা প্রশাসনের কাছে। আইন অনুসারে, জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া কেউ ইটভাটা করতে পারবে না।

জেলা প্রশাসক মোশারফ হোসেন খান জানিয়েছেন, তিন দিন আগে তিনি সব ইউএনওকে ছবিসহ উপজেলার অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিষয়ে তথ্য দিতে চিঠি পাঠিয়েছেন। তালিকা আসার পর আটারকছড়া ইউনিয়নের ভাটাটি সম্পর্কে বিস্তারিত বলা যাবে।