নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একশ’ রানের আগে পাঁচ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ দলের আকাশে তখন দুর্যোগের ঘনঘটা। গলাকাঁপিয়ে ‘কে দেবে তাকে আশা, কে দেবে ভরসা’ উচ্চারিত যাত্রার মঞ্চে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের তখন নায়ক হওয়ার সুযোগ। দলের ঘোর অমানিশায় ‘বারবার দাঁড়িয়ে যান রিয়াদ’ প্রচলিত গল্প মিলিয়ে নেওয়ার মঞ্চ। ওই পরীক্ষায় রিয়াদ টেনেটুনে পাশ করলেও বাংলাদেশ হেরেছে ৮৬ রানের বিশাল ব্যবধানে।
রিয়াদের মতো কামব্যাকের মঞ্চ ছিল তামিম ইকবালেরও। অবসর ভেঙে দীর্ঘ ইনজুরি কাটিয়ে চেনা মঞ্চে অনাড়ম্বর অভিনেতার মতো নতুন শুরু করেছিলেন তিনি। বাঁ-হাতি ওপেনার তামিমও কামব্যাকের ম্যাচে ৪৪ রানের ইনিংস খেলে টেনেটুনে পাশ মার্ক তুলেছেন। তবে বিশ্বকাপ দলের লিটন দাস (১৬ বলে ৬ রান) কিংবা টিকিট পাওয়ার আশায় থাকা তানজিদ তামিম (১৬) ফেল করেছেন।
ফেল করেছেন আট নম্বরের বোলিং অলরাউন্ডার বিবেচনায় দলে সুযোগ পাওয়া সৌম্য সরকার। যাকে এই ম্যাচে অধিনায়ক বোলিং করাননি। ব্যাটিংয়ের সুযোগ দিয়েছিলেন গুরুত্বপূর্ণ অর্ডার চারে। তিনি গোল্ডেন ডাক মেরে সাজঘরে ফেরেন। তাওহীদ হৃদয় পাঁচে নেমে মাত্র ৪ রান করে আউট হন। পরে ভরসা দেওয়া রিয়াদ ৭৬ বলে চারটি চার ও এক ছক্কায় ৪৯ রান করে ফিরে যান। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার রানের কীর্তি গড়লেও এক রানের জন্য ফিফটির সঙ্গে মিস করেন ওয়ানডের পাঁচ হাজার রান করার সুযোগ। লোয়ারে বাংলাদেশ দলের হারের ব্যবধান ছোট করেন শেখ মাহেদি ও নাসুম আহমেদ। সাতে ব্যাট করতে নামা মাহেদি ১৭ রানের ইনিংস খেলেন। নাসুম খেলেন ২১ রানের ইনিংস। বাংলাদেশ ৪১.১ ওভারে ১৬৮ রানে অলআউট হয়।
এর আগে নিউজিল্যান্ড চার বল থাকতে ২৫৪ রানে থামে। তারাও শুরুর ৩৬ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়েছিল। হেনরি নিকোলস ও টম ব্লান্ডেলের ৯৫ রানের জুটিতে ভর করে ওই ধাক্কা সামাল দেয় তারা। তবে দেড়শ’ রানের পরে ছয় উইকেট হারিয়ে নতুন করে চাপে পড়ে। লোয়ারে ম্যাককনচি ২০ ও জেমিনসন ২০ রান করে এবং ইশ শোধি ৩৫ রান করে দলকে ভালো সংগ্রহ এনে দেন। তার আগে নিকোলস খেলেন ৪৯ রানের ইনিংস। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৬৮ রান করেন টম ব্লান্ডেল।
বল হাতে বাংলাদেশ দলকে একাই ধসিয়ে দিয়েছেন ব্ল্যাক ক্যাপসদের লেগ স্পিনার ইশ শোধি। তিনি ১০ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ার সেরা ৬ উইকেট নিয়েছেন। তার লেগ ব্রেকের সামনে রীতিমতো দিশেহারা ছিল বাংলাদেশের ব্যাটাররা। এছাড়া পেসার কাইল জেমিনসন নিয়েছেন দুই উইকেট। বাংলাদেশ দলে ওয়ানডে অভিষেক হওয়া পেসার খালেদ আহমেদ তিন উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া স্পিনার শেখ মাহেদী তিনটি ও মুস্তাফিজ নেন দুই উইকেট।