ঢাকা ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফের উত্তাল মণিপুর, অশান্তির আগুন থামছেই না

ফের উত্তাল মণিপুর, অশান্তির আগুন থামছেই না

পাঁচ যুবককে প্রেপ্তার করায় ফের উত্তপ্ত মণিপুর। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ৫ জনকে গ্রেপ্তার করার পর থেকেই নতুন করে উত্তেজনা মাথাচাড়া দেয় মণিপুরে। তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে নানা জায়গায় বিক্ষোভ, অবস্থান শুরু হয়। মঙ্গলবার থেকে সেই বিক্ষোভই চরমে পৌঁছেছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা ৪৮ ঘণ্টার লকডাউনের ডাক দেন। একাধিক থানায় হামলার চেষ্টা করে স্থানীয়রা। এরপরেই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে মণিপুরে। জারি করা হয় কারফিউ।

ইম্ফলের পূর্বাঞ্চলে ভোর ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয় যেন সাধারণ মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করতে পারেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) তুলে নেওয়া হয় কারফিউ শিথিলতা। গত কয়েকমাস ধরে একাধিক ইস্যুতে উত্তাল মণিপুর। যদিও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছিল পরিস্থিতি।

এখন আবার উত্তাল হতে শুরু করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নারী বিক্ষোভকারীরা গ্রেপ্তারকৃত পাঁচজন গ্রামরক্ষির মুক্তির দাবিতে ইম্ফলের একাধিক থানায় মিছিল করেন। তাদের দাবি একটাই, গ্রেপ্তারকৃত ৫ জনকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। মুক্তি না দিলে তাদেরও গ্রেপ্তার করতে হবে। এই দাবিতেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তারা।

এর জেরেই বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। মণিপুরের সিনজামেই থানার বাইরে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। এতে আহত হন ৩জন।আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি দেখে কারফিউ শিথিল করার নির্দেশ প্রত্যাহার করেছে রাজ্য সরকার। পরিবর্তে ফের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গত মে মাস থেকে অশান্ত মণিপুর। প্রায় ৪ মাস ধরে মেইতেই ও কুকিদের দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত মণিপুর। মেইতেইরা মণিপুরের সবচেয়ে বড় জনগোষ্ঠী। মোট জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশ মেইতেই। ইতিমধ্যে ১৫০ জনেরও বেশি মারা গিয়েছে।

মূলত ইম্ফল উপত্যকায় বাস মেইতেইদের। অপরদিকে কুকি ও জো সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষরা থাকেন পাহাড়ি অঞ্চলে। মেইতেইদের সংরক্ষণের অধিকারের দাবির বিরোধীতা করেছেন কুকিরা। কারণ, মেইতেইরা সংরক্ষণের আওতায় এলে তারা বনাঞ্চলে প্রবেশে অগ্রাধিকার পেয়ে যাবেন। এ নিয়ে গত ৩ মে প্রথম সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তারপর থেকেই অশান্তির আগুনে পুড়ছে মণিপুর। আবার মণিপুরের ২ নারীকে গণধর্ষণ ও তাদের নগ্ন হাঁটানোর ভিডিও সামনে আসতেই তোলপাড় শুরু হয় মণিপুরে। ৪ মে মণিপুরের কাংপোকপি জেলায় এই ঘটনা ঘটে। ভাইরাল ভিডিও ঘিরে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে দেশজুড়ে। ন্যক্কারজনক সেই ঘটনায় ৫ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ট্যাগস :

চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বেড়ে নিহতের সংখ্যা এখন ২০৪

ফের উত্তাল মণিপুর, অশান্তির আগুন থামছেই না

আপডেট সময় ০৭:০৩:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩

পাঁচ যুবককে প্রেপ্তার করায় ফের উত্তপ্ত মণিপুর। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ৫ জনকে গ্রেপ্তার করার পর থেকেই নতুন করে উত্তেজনা মাথাচাড়া দেয় মণিপুরে। তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে নানা জায়গায় বিক্ষোভ, অবস্থান শুরু হয়। মঙ্গলবার থেকে সেই বিক্ষোভই চরমে পৌঁছেছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা ৪৮ ঘণ্টার লকডাউনের ডাক দেন। একাধিক থানায় হামলার চেষ্টা করে স্থানীয়রা। এরপরেই নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে মণিপুরে। জারি করা হয় কারফিউ।

ইম্ফলের পূর্বাঞ্চলে ভোর ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয় যেন সাধারণ মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনাকাটা করতে পারেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) তুলে নেওয়া হয় কারফিউ শিথিলতা। গত কয়েকমাস ধরে একাধিক ইস্যুতে উত্তাল মণিপুর। যদিও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছিল পরিস্থিতি।

এখন আবার উত্তাল হতে শুরু করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নারী বিক্ষোভকারীরা গ্রেপ্তারকৃত পাঁচজন গ্রামরক্ষির মুক্তির দাবিতে ইম্ফলের একাধিক থানায় মিছিল করেন। তাদের দাবি একটাই, গ্রেপ্তারকৃত ৫ জনকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। মুক্তি না দিলে তাদেরও গ্রেপ্তার করতে হবে। এই দাবিতেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তারা।

এর জেরেই বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। মণিপুরের সিনজামেই থানার বাইরে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। এতে আহত হন ৩জন।আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি দেখে কারফিউ শিথিল করার নির্দেশ প্রত্যাহার করেছে রাজ্য সরকার। পরিবর্তে ফের জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গত মে মাস থেকে অশান্ত মণিপুর। প্রায় ৪ মাস ধরে মেইতেই ও কুকিদের দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত মণিপুর। মেইতেইরা মণিপুরের সবচেয়ে বড় জনগোষ্ঠী। মোট জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশ মেইতেই। ইতিমধ্যে ১৫০ জনেরও বেশি মারা গিয়েছে।

মূলত ইম্ফল উপত্যকায় বাস মেইতেইদের। অপরদিকে কুকি ও জো সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষরা থাকেন পাহাড়ি অঞ্চলে। মেইতেইদের সংরক্ষণের অধিকারের দাবির বিরোধীতা করেছেন কুকিরা। কারণ, মেইতেইরা সংরক্ষণের আওতায় এলে তারা বনাঞ্চলে প্রবেশে অগ্রাধিকার পেয়ে যাবেন। এ নিয়ে গত ৩ মে প্রথম সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তারপর থেকেই অশান্তির আগুনে পুড়ছে মণিপুর। আবার মণিপুরের ২ নারীকে গণধর্ষণ ও তাদের নগ্ন হাঁটানোর ভিডিও সামনে আসতেই তোলপাড় শুরু হয় মণিপুরে। ৪ মে মণিপুরের কাংপোকপি জেলায় এই ঘটনা ঘটে। ভাইরাল ভিডিও ঘিরে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে দেশজুড়ে। ন্যক্কারজনক সেই ঘটনায় ৫ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।