দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আজ রোববার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় সারাদেশে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিরতিহীন চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তথ্য অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে ২৯৯টি সংসদীয় আসনে ১ হাজার ৯৩১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইসিতে নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে এই নির্বাচনে ২৮টি রাজনৈতিক দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১ হাজার ৫৩৪ জন প্রার্থী। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে আছেন ৪৩৬ জন।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী ২৬৬ জন, জাতীয় পার্টির ২৬৫ জন, তৃণমূল বিএনপির ১৩৫ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) ৬৬ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২ জন, জাতীয় পার্টির (জেপি) ১৩ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের ১০ জন প্রার্থী আছেন। নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলে ৯০ জন নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও অন্যান্য মিলে ৭৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
২৯৯ সংসদীয় আসনে মোট ভোট কেন্দ্র ৪২ হাজার ২৪টি। এসব কেন্দ্রে ভোট কক্ষ ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি। সর্বশেষ প্রকাশিত ভোটার তালিকা অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৮৯ হাজার ২৮৯ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৭ লাখ ৬৯ হাজার ৭৪১ জন এবং নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৮ হাজার ৬৯৯ জন। এছাড়া, সারা দেশে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ৮৪৯ জন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘প্রায় ৮ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ভোটগ্রহণ করবেন। আরও ১ লাখ স্ট্যান্ডবাই থাকবেন। আমাদের ৯ লাখ জনবল প্রস্তুত আছে। আনসার-ভিডিপি, র্যাব, বিজিবিসহ সব মিলিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাড়ে ৭ লাখ সদস্য মাঠে আছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রায় ৩ হাজার ম্যাজিস্ট্রেট ও জজ মাঠে আছেন। পাশাপাশি, বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা মাঠে আছেন।
গত ১৫ নভেম্বর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সিইসি ৩০০ আসনের তফসিল ঘোষণা করেন। পরে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে নওগাঁ-২ আসনের ভোট স্থগিত করা হয়। আজ রোববার ভোটগ্রহণ হচ্ছে ২৯৯ আসনে।
এদিকে, বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। শনিবার ও রোববার ভোটের দিন সারা দেশে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা করেছে এসব দল। অন্যদিকে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী দাঁড় করানোসহ নানা কৌশল নিয়েছে। এক-তৃতীয়াংশ আসনে আওয়ামী লীগের এই স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলার আভাস দিয়েছেন। ফলে, শতাধিক আসনে ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহল থেকে বারবার অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচনের তাগিদ দেওয়া হলেও বিএনপিসহ ইসির নিবন্ধিত ১৬টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনের বাইরে আছে। নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ একাধিক দাবিতে নির্বাচন থেকে দূরে আছে দলগুলো। নির্বাচন কমিশন এবং সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি থাকলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্যতা পাবে।