বিশ্বের ১৭৬টি দেশে বাংলাদেশি প্রবাসীর সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৪৯ লাখের বেশি। বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব প্রবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশে জাতীয় পরিচয় পত্র (এনআইডি) প্রদান কার্যক্রম চালু করেছে নির্বাচন কমিশন।
গত ১৩ জুন থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এনআইডি স্মার্ট কার্ডের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু করে বাংলাদেশ দূতাবাস ও দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেট। বিদেশে প্রথম দেশ হিসেবে আমিরাতে এই কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। শুরুতে একমাস পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চলে। এরপর দেশটিতে ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে স্মার্ট কার্ডের আবেদনের সংখ্যা।
আমিরাতের দুইটি বাংলাদেশ মিশন জানায়, গত তিন মাসে আবুধাবি বাংলাদেশ দূতাবাস ও দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেটে প্রায় ৫ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি এনআইডি স্মার্ট কার্ডের আবেদন করেছেন। প্রতিনিয়ত বাড়ছে আরও আবেদনকারীর সংখ্যা। এনআইডি স্মার্ট কার্ড পেতে দৈনিক আবেদন করছেন গড়ে ৮০ থেকে একশ জন প্রবাসী।
দুবাই বাংলাদেশ কনস্যুলেটের কনসাল জেনারেল বি এম জামাল হোসেন জানান, দুবাই ও উত্তর আমিরাত থেকে গত তিন মাসে ৩ হাজার ৭০০ প্রবাসী বাংলাদেশি নতুন জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করেছেন। প্রতিদিন এই আবেদনের সংখ্যা বাড়ছে। ইতোমধ্যে ২০০টি নতুন স্মার্ট কার্ড হস্তান্তর করেছেন তারা। বাকি আবেদনগুলো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আবুধাবি দূতাবাসের মিনিস্টার লেবার আবদুল আউয়াল জানান, আবুধাবি দূতাবাসে গত দুই মাসে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন প্রবাসী স্মার্ট কার্ডের আবেদন করেছেন। তার মধ্যে ১০০ জনের স্মার্ট কার্ড হস্তান্তর করা হয়েছে। আরও অর্ধশত স্মার্ট কার্ড প্রস্তুত রয়েছে।
আবদুল আউয়াল আরও বলেন, আবেদনকারী ১১ দিনের মাথায় অনলাইনে তার এনআইডি পেয়ে যাচ্ছেন। এক মাসের মাথায় স্মার্ট কার্ড হাতে পাচ্ছেন প্রবাসীরা। দেশ থেকে কার্ড প্রস্তুত হয়ে এলে আবেদনকারীদের ফোন করে বা ক্ষুদে বার্তায় এনআইডি গ্রহণের সময় জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।এদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বর্তমানে প্রায় দশ লাখের বেশি প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। যাদের একটি বড় অংশের নেই জাতীয় পরিচয়পত্র। বৃহত্তর এই প্রবাসীদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তাদের এনআইডি কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশন জানায়, বিশ্বের ৪০টি দেশে প্রবাসীদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। আগামী এক বছরের মধ্যে অন্তত ১৫টি দেশে এই কার্যক্রম সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে। যেসব দেশে প্রবাসীর সংখ্যা বেশি এবং রেমিট্যান্সের পরিমাণ বেশি সেসব দেশে অগ্রাধিকার থাকবে। আমিরাতে এনআইডির এই কার্যক্রম সফল হলে এরপর পর্যায়ক্রমে সৌদি আরব, কুয়েত ও মালয়েশিয়ায় জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্যক্রম চলমান রাখবে নির্বাচন কমিশন।