ঢাকা ০৫:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আদালত বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা জামায়াতপন্থী আইনজীবীদের

বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের সব আদালত বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীপন্থি আইনজীবীরা। আগামীকাল ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করবে তারা।

রোববার (৩১ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতি ভবনে জামায়াত সমর্থিত বাংলাদেশ লইয়ার্স কাউন্সিলের নেতারা এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন লইয়ার্স কাউন্সিলের জেনারেল সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।

তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে প্রায় সব রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠনসমূহ ও দেশের সুশীল সমাজ কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। গণতান্ত্রিক বিশ্ব এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী দেশসমূহ সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ওপর গুরুত্বারোপ করে আসছে। সরকার তা অগ্রাহ্য করে ২০১৪ ও ২০১৮ স্টাইলে নির্বাচনের নামে আরেকটি প্রহসনের আয়োজন করতে যাচ্ছে। প্রহসনের এই নির্বাচন সম্পন্ন হলে দেশে গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বলে আর কিছু থাকবে না। দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলসমূহ প্রহসনের নির্বাচন বয়কট করে শান্তিপূর্ণ উপায়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করে যাচ্ছে। এই আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য সরকার প্রতিদিনই শত শত রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করছে। ২৮ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের অনেককে রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। অনেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাদেরকে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হয়নি। আবার কাউকে কাউকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর থানায় এবং কারাগারে বিভিন্ন সময়ে ১৩ জনের মৃত্যু সংবাদ গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী রাজশাহীর দামকুড়া থানা আমীর আবদুল লতিফ রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তিকাল করেছেন। কারাগারে আটক থাকার কারণে জীবনের শেষ মুহূর্তে তিনি চিকিৎসার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কারাগারে থাকাবস্থায় যারা ইন্তিকাল করেছেন তাদের দায়-দায়িত্ব সরকারকে বহন করতে হবে। সরকারের জুলুম-নিপীড়ন থেকে আইনজীবীগণও রেহাই পাননি। গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে দেশকে রাজনীতিহীনতার দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। দেশের এই পরিস্থিতিতে আমরা আইনজীবীগণ নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন করে যাচ্ছি। তারই অংশ হিসেবে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আমরা দেশব্যাপী আদালত বর্জন কর্মসূচি ঘোষণা করছি। দেশের সব বারের আইনজীবী ভাই-বোনদেরকে আদালত বর্জন কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সফল করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন লইয়ার্স কাউন্সিলের সভাপতি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, লইয়ার্স কাউন্সিলের নেতা অ্যাডভোকেট গোলাম রহমান ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিনসহ অনেকে।

জনপ্রিয় সংবাদ

আদালত বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা জামায়াতপন্থী আইনজীবীদের

আপডেট সময় ০৩:১৭:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩

বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের সব আদালত বর্জনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীপন্থি আইনজীবীরা। আগামীকাল ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করবে তারা।

রোববার (৩১ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্ট বার সমিতি ভবনে জামায়াত সমর্থিত বাংলাদেশ লইয়ার্স কাউন্সিলের নেতারা এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন লইয়ার্স কাউন্সিলের জেনারেল সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ।

তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে প্রায় সব রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠনসমূহ ও দেশের সুশীল সমাজ কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। গণতান্ত্রিক বিশ্ব এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী দেশসমূহ সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ওপর গুরুত্বারোপ করে আসছে। সরকার তা অগ্রাহ্য করে ২০১৪ ও ২০১৮ স্টাইলে নির্বাচনের নামে আরেকটি প্রহসনের আয়োজন করতে যাচ্ছে। প্রহসনের এই নির্বাচন সম্পন্ন হলে দেশে গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বলে আর কিছু থাকবে না। দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলসমূহ প্রহসনের নির্বাচন বয়কট করে শান্তিপূর্ণ উপায়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করে যাচ্ছে। এই আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য সরকার প্রতিদিনই শত শত রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করছে। ২৮ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের অনেককে রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। অনেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাদেরকে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হয়নি। আবার কাউকে কাউকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তারের পর থানায় এবং কারাগারে বিভিন্ন সময়ে ১৩ জনের মৃত্যু সংবাদ গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী রাজশাহীর দামকুড়া থানা আমীর আবদুল লতিফ রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তিকাল করেছেন। কারাগারে আটক থাকার কারণে জীবনের শেষ মুহূর্তে তিনি চিকিৎসার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। কারাগারে থাকাবস্থায় যারা ইন্তিকাল করেছেন তাদের দায়-দায়িত্ব সরকারকে বহন করতে হবে। সরকারের জুলুম-নিপীড়ন থেকে আইনজীবীগণও রেহাই পাননি। গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে দেশকে রাজনীতিহীনতার দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। দেশের এই পরিস্থিতিতে আমরা আইনজীবীগণ নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন করে যাচ্ছি। তারই অংশ হিসেবে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত আমরা দেশব্যাপী আদালত বর্জন কর্মসূচি ঘোষণা করছি। দেশের সব বারের আইনজীবী ভাই-বোনদেরকে আদালত বর্জন কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সফল করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন লইয়ার্স কাউন্সিলের সভাপতি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, লইয়ার্স কাউন্সিলের নেতা অ্যাডভোকেট গোলাম রহমান ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিনসহ অনেকে।