ঢাকা ১১:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo অবশেষে ক্ষমা চাইলেন নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী Logo খামেনিকে ভয়ংকর মৃত্যু থেকে বাঁচালাম, ধন্যবাদ টুকুও জানাল না: ট্রাম্প Logo নবী (সা.) ও সাহাবিদের নিয়ে কটুক্তির অভিযোগে আইনজীবী গ্রেফতার Logo জুলাই পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ: পরিবর্তন কতটুকু? Logo আগামী সপ্তাহের মধ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি হতে পারে: ট্রাম্প Logo প্রধান উপদেষ্টার জন্মদিনে কেক ও ফুল পাঠালেন তারেক রহমান Logo আগামী নির্বাচন হবে দেশের ইতিহাসে সবচাইতে ভালো নির্বাচন: প্রেস সচিব Logo ‘জোটবদ্ধ ইসলামি দল হবে আগামী দিনের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি’ Logo মুন্সীগঞ্জে গোলাপ জলে গোসল করে নেতা- “আর আওয়ামীলীগ করবো না” Logo প্রেসিডেন্ট হওয়া সবচেয়ে বিপজ্জনক কাজ: ডোনাল্ড ট্রাম্প

সরকারি চাকরি পেয়েই স্ত্রীকে তালাক দিলেন কৃষি কর্মকর্তা

সরকারি চাকরি পেয়ে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বরগুনার আল মাহমুদ ফয়সালের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে সাবেক স্বামী আল মাহমুদ ফয়সালের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন স্ত্রী।

জানা যায়, এক যুগ আগে ভালোবাসার সম্পর্ক হয় গৌরনদী শহরের আল মাহমুদ ফয়সাল ও বরগুনার মেয়ে বিথির (ছদ্মনাম) সঙ্গে। দুজনই পড়াশোনা করতেন বরিশাল রহমতপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে। বন্ধুত্বের সম্পর্ক ৬ মাস না পেরোতেই ভালোবাসার সম্পর্কে রূপ নেয় ফয়সাল বিথির সম্পর্ক। ২০১৩ সালে ডিপ্লোমা শেষ করেন একইসঙ্গে। তারপর বিএসসি গ্র্যাজুয়েশন নিতে ২০১৫ সালে ভর্তি হন ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

ফয়সাল লেখাপড়া করত সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয় নিয়ে। আর বিথির বিষয় ছিল কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং। ২০২০ সালে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ হওয়ার আগেই দুই পরিবারের সম্মতিতে ২০১৯ সালে বিয়ে করেন ফয়সাল এবং বিথি। ভালোবাসার প্রথম দিকে মেয়ে পক্ষের মা বাবা রাজি না থাকার কারণে ভালোবাসার সম্পর্ককে স্থায়ী সম্পর্কে রূপান্তর করার জন্য একটু তড়িঘড়ি করেই বিয়েটা করে নেন বিথি এবং ফয়সাল।

দুই পরিবার থেকেই মেনে নিয়েছিলেন তাদের বিয়ের সম্পর্ক। লেখাপড়া চলাকালীন অনুষ্ঠান করে বিথিকে তার স্বামীর ঠিকানায় উঠিয়ে দিতে চেয়েছিলেন মেয়ের মা-বাবা। কিন্তু বিপত্তি জানায় ফয়সাল এবং ফয়সালের পরিবার। ফয়সালের পরিবার বিথির পরিবারকে জানায়, এখন যখন লেখাপড়া করছে তো লেখাপড়া শেষ করুক তারপর উঠিয়ে আনব আপনাদের মেয়েকে। ২০২০ সালে দুজনের বিএসসি শেষ হওয়ার পর আবারও মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে উঠিয়ে দিতে চান বিথির মা-বাবা। কিন্তু তখনও বিপত্তি প্রকাশ করে ফয়সাল এর পরিবার।

তারা বলেন, ছেলে সবে মাত্র লেখাপড়া শেষ করল, একটা চাকরি হোক তারপর অনুষ্ঠান করে আমাদের পুত্রবধূকে উঠিয়ে আনব। এমনটাই সাংবাদিকদের জানান বিথির বাবা বজলুর রহমান। তারপর চাকরির জন্য চেষ্টা করতে থাকেন দুজনেই।

অনেক চেষ্টার পর ২০২৩ সালে বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে নেছারাবাদ পিরোজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে যোগদান করেন মো. মাহমুদ আল ফয়সাল। চাকরিতে যোগদান করার পর বিয়ের অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করেন ফয়সাল ও বিথির পরিবার।

ফয়সাল চাকরিতে যোগদানের পর প্রায়ই আসতেন শ্বশুর এর বাসায় এমনটাই বলেন বিথি ও বিথির পরিবার। বিপত্তি শুরু হয় ৫ নভেম্বর ২০২৩ সকালে। স্বাভাবিক দিনের মতো ফয়সাল তার শ্বশুর বাড়ি থেকে সকাল বেলা কর্মস্থলে চলে যান।

পরে বিথি বিছানা ঠিক করতে গিয়ে একটা হলুদ খাম দেখতে পায় ফয়সালের বালিশের নিচে। খামটি খুলে বিথি দেখেন তার স্বামী তাকে ডিভোর্স দিয়েছে। পরে বিথি তার মায়ের ফোন থেকে ফয়সালকে কল দিতে থাকে, কিন্তু কোনোভাবে ফয়সালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন না বিথি।

এই ব্যাপারে বিথি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি জানি না কী আমার অপরাধ। ফয়সাল যেই সময় আমার কাছে যা চাইত ও যেভাবে চলতে বলত আমি সব সময় সেই রকম চলতাম। আমরা দুজন যখন ঢাকাতে ভর্তি হই তখন ওর ইউনিভার্সিটির সেমিস্টার ফিসহ ওর যাবতীয় খরচ আমি বহন করেছি। আমার টিউশনির টাকা পুরোটা ফয়সালের হাতে তুলে দিতাম।

এই ঘটনার পরে বিথির সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছে বিথি। যার মামলা নম্বর ৫৭৩/২০২৩।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ফয়সাল বিভিন্ন সময় তার স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি করে। স্ত্রীর পরিবার কমবেশি ফয়সালকে টাকা-পয়সা দিতেন। এরই মধ্যে ফয়সাল পরনারীর প্রতি আকৃষ্ট হয়। এসব নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের ফাটল ধরে। ফয়সাল এ বছর ১৫ অক্টোবর তার স্ত্রীকে রেজিস্ট্রি তালাক দিয়ে সেই তালাক গোপন রেখে ১৯ অক্টোবর হতে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময় বরগুনার শ্বশুরের বাসায় তার স্ত্রীর সঙ্গে দৈহিক মেলামেশা করে। ৫ নভেম্বর সকালে ফয়সাল তার শ্বশুরের বাসা থেকে তাদের বাড়ি যাওয়ার সময় শ্বশুরের বাসায় যেখানে ফয়সাল ঘুমাতেন সেখানের বালিশের নিচে একটি খামে তালাকের নোটিশ গোপনে রেখে যায়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফয়সাল বলেন, মামলায় উল্লেখিত বিষয়গুলো মিথ্যা। তাকে ডিভোর্স দেওয়া হয়েছে। ওই মেয়ে আমার সঙ্গে সংসার করতে ইচ্ছুক, কিন্তু আমি ইচ্ছুক না।

অবশেষে ক্ষমা চাইলেন নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী

সরকারি চাকরি পেয়েই স্ত্রীকে তালাক দিলেন কৃষি কর্মকর্তা

আপডেট সময় ১১:৫৬:৪৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩

সরকারি চাকরি পেয়ে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বরগুনার আল মাহমুদ ফয়সালের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে সাবেক স্বামী আল মাহমুদ ফয়সালের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন স্ত্রী।

জানা যায়, এক যুগ আগে ভালোবাসার সম্পর্ক হয় গৌরনদী শহরের আল মাহমুদ ফয়সাল ও বরগুনার মেয়ে বিথির (ছদ্মনাম) সঙ্গে। দুজনই পড়াশোনা করতেন বরিশাল রহমতপুর কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে। বন্ধুত্বের সম্পর্ক ৬ মাস না পেরোতেই ভালোবাসার সম্পর্কে রূপ নেয় ফয়সাল বিথির সম্পর্ক। ২০১৩ সালে ডিপ্লোমা শেষ করেন একইসঙ্গে। তারপর বিএসসি গ্র্যাজুয়েশন নিতে ২০১৫ সালে ভর্তি হন ঢাকার বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

ফয়সাল লেখাপড়া করত সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয় নিয়ে। আর বিথির বিষয় ছিল কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং। ২০২০ সালে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ হওয়ার আগেই দুই পরিবারের সম্মতিতে ২০১৯ সালে বিয়ে করেন ফয়সাল এবং বিথি। ভালোবাসার প্রথম দিকে মেয়ে পক্ষের মা বাবা রাজি না থাকার কারণে ভালোবাসার সম্পর্ককে স্থায়ী সম্পর্কে রূপান্তর করার জন্য একটু তড়িঘড়ি করেই বিয়েটা করে নেন বিথি এবং ফয়সাল।

দুই পরিবার থেকেই মেনে নিয়েছিলেন তাদের বিয়ের সম্পর্ক। লেখাপড়া চলাকালীন অনুষ্ঠান করে বিথিকে তার স্বামীর ঠিকানায় উঠিয়ে দিতে চেয়েছিলেন মেয়ের মা-বাবা। কিন্তু বিপত্তি জানায় ফয়সাল এবং ফয়সালের পরিবার। ফয়সালের পরিবার বিথির পরিবারকে জানায়, এখন যখন লেখাপড়া করছে তো লেখাপড়া শেষ করুক তারপর উঠিয়ে আনব আপনাদের মেয়েকে। ২০২০ সালে দুজনের বিএসসি শেষ হওয়ার পর আবারও মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে উঠিয়ে দিতে চান বিথির মা-বাবা। কিন্তু তখনও বিপত্তি প্রকাশ করে ফয়সাল এর পরিবার।

তারা বলেন, ছেলে সবে মাত্র লেখাপড়া শেষ করল, একটা চাকরি হোক তারপর অনুষ্ঠান করে আমাদের পুত্রবধূকে উঠিয়ে আনব। এমনটাই সাংবাদিকদের জানান বিথির বাবা বজলুর রহমান। তারপর চাকরির জন্য চেষ্টা করতে থাকেন দুজনেই।

অনেক চেষ্টার পর ২০২৩ সালে বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে নেছারাবাদ পিরোজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে যোগদান করেন মো. মাহমুদ আল ফয়সাল। চাকরিতে যোগদান করার পর বিয়ের অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণ করেন ফয়সাল ও বিথির পরিবার।

ফয়সাল চাকরিতে যোগদানের পর প্রায়ই আসতেন শ্বশুর এর বাসায় এমনটাই বলেন বিথি ও বিথির পরিবার। বিপত্তি শুরু হয় ৫ নভেম্বর ২০২৩ সকালে। স্বাভাবিক দিনের মতো ফয়সাল তার শ্বশুর বাড়ি থেকে সকাল বেলা কর্মস্থলে চলে যান।

পরে বিথি বিছানা ঠিক করতে গিয়ে একটা হলুদ খাম দেখতে পায় ফয়সালের বালিশের নিচে। খামটি খুলে বিথি দেখেন তার স্বামী তাকে ডিভোর্স দিয়েছে। পরে বিথি তার মায়ের ফোন থেকে ফয়সালকে কল দিতে থাকে, কিন্তু কোনোভাবে ফয়সালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন না বিথি।

এই ব্যাপারে বিথি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি জানি না কী আমার অপরাধ। ফয়সাল যেই সময় আমার কাছে যা চাইত ও যেভাবে চলতে বলত আমি সব সময় সেই রকম চলতাম। আমরা দুজন যখন ঢাকাতে ভর্তি হই তখন ওর ইউনিভার্সিটির সেমিস্টার ফিসহ ওর যাবতীয় খরচ আমি বহন করেছি। আমার টিউশনির টাকা পুরোটা ফয়সালের হাতে তুলে দিতাম।

এই ঘটনার পরে বিথির সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছে বিথি। যার মামলা নম্বর ৫৭৩/২০২৩।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ফয়সাল বিভিন্ন সময় তার স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি করে। স্ত্রীর পরিবার কমবেশি ফয়সালকে টাকা-পয়সা দিতেন। এরই মধ্যে ফয়সাল পরনারীর প্রতি আকৃষ্ট হয়। এসব নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের ফাটল ধরে। ফয়সাল এ বছর ১৫ অক্টোবর তার স্ত্রীকে রেজিস্ট্রি তালাক দিয়ে সেই তালাক গোপন রেখে ১৯ অক্টোবর হতে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন সময় বরগুনার শ্বশুরের বাসায় তার স্ত্রীর সঙ্গে দৈহিক মেলামেশা করে। ৫ নভেম্বর সকালে ফয়সাল তার শ্বশুরের বাসা থেকে তাদের বাড়ি যাওয়ার সময় শ্বশুরের বাসায় যেখানে ফয়সাল ঘুমাতেন সেখানের বালিশের নিচে একটি খামে তালাকের নোটিশ গোপনে রেখে যায়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফয়সাল বলেন, মামলায় উল্লেখিত বিষয়গুলো মিথ্যা। তাকে ডিভোর্স দেওয়া হয়েছে। ওই মেয়ে আমার সঙ্গে সংসার করতে ইচ্ছুক, কিন্তু আমি ইচ্ছুক না।