ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্ডারগ্রাজুয়েট প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষায় ট্রান্সজেন্ডার কোটা সংযুক্ত করে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এটাকে বাতিল চেয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সংশোধিত ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশসহ চার দফা দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যাল্য়েরর একদল শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের’ ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর একই দাবিতে উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
যা আছে ৪ দফায় –
আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী কতৃক আয়োজিত ঢাবি ভর্তি পরীক্ষায় ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন থেকে চার দফা দাবি পেশ করা হয়েছে। দাবিগুলো হলো-
এক. ঢাবিতে অতিদ্রুত ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিল করতে হবে।
দুই. ট্রান্সজেন্ডার কোটা বাতিল করে নতুন ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
তিন. দেশের দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা মোতাবেক অবৈধ ট্রান্সজেন্ডার প্রথা কে প্রমোট করার দায়ে ঢাবি কর্তৃপক্ষকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
চার. হিজরা জনগোষ্ঠীর পড়াশোনা নির্বিঘ্নে করার ব্যাপারে ঢাবি কর্তৃপক্ষের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
এই চার দফা দাবি বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এক সপ্তাহের সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। দাবি বাস্তবায়ন না হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের এই আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।
বিকৃত মস্তিষ্কের ট্রান্স’দের বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থান করে দেয়া হচ্ছে
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সাখাওয়াত জাকারিয়া বলেন, হিজড়া এবং ট্রান্সজেন্ডার এক নয়। কিন্তু হিজড়া সম্প্রদায়ের সহমর্মিতাকে কাজে লাগিয়ে ‘বিকৃত মস্তিষ্কের ট্রান্স’দের বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ দেয়া হচ্ছে। একমাত্র কোটা তারাই দাবি করতে পারে যারা সমাজের পিছিয়ে পড়া জাতি। কিন্তু কী যুক্তির ওপরে কোনো ধরণের শারীরিক সীমাবদ্ধতা ছাড়া ট্রান্সজেন্ডার কোটা চালু করা হয়েছে তা বোধগম্য নয়। ট্রান্সজেন্ডারদেরকে কোটা দেয়ার অর্থ হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে এলজিবিটিকে সমর্থন দেওয়া।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলের এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, হিজড়াদের কোটা থাকা যুক্তিযুক্ত, কিন্তু ট্রান্সদের কোটা দেয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই৷ নিজেদের বিকৃত করে কোটার দাবিদার হওয়া যায় না। ট্রান্স নাম করে পুরুষরূপী মহিলাদের কারণে আমরা মেয়েরা নিজেরাই ভুক্তভোগী হবো। সে আমাদের আবাসিক হলে থাকবে। তার সাথে রুম শেয়ার করতে হবে, যা কোনভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়।
শরীরের শতভাগ পরিবর্তন অসম্ভব
ওই শিক্ষার্থী আরও বলেন, ‘চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে একজন ট্রান্সমানুষ কখনোই তার শরীরের শতভাগ পরিবর্তন করতে সক্ষম নয়। সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পরিবর্তন করতে পারে। বাকি ৮০ শতাংশই তাদের অপরিবর্তিত থেকে যায়। এক্ষেত্রে আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টা থেকেই যায়। বিদেশে একটি কারাগারে এক অপরাধী তাকে ট্রান্সউইমেন দাবি করায় তাকে মহিলাদের কারাগারে পাঠানো হয়। পরে দেখা যায় ওই কারাগারে তার দ্বারা ৮ জন নারী গর্ভবতী হয়ে গেছে। পরে তাকে পুনরায় পুরুষদের কারাগারে পাঠানো হয়। এরকম যদি হয় একজন পুরুষ আমাদের সঙ্গে হল শেয়ার করবে, রুম শেয়ার করবে-তার দ্বারা আমরা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবো। এটা আমরা কখনোই চাই না। এর মাধ্যমে সমকামিতার বীজ আমাদের মাঝে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। আমি মেয়েদের প্রতিনিধি হয়ে বলতে চাই এই কোটার বিলুপ্ত চাই’।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ জোবায়ের বলেন, ট্রান্সদের মতো মস্তিষ্ক বিকৃতদের কোটা দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে হাসির পাত্রে পরিণত করা হয়েছে।
‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের’ ব্যানারে এ মানববন্ধনে শিক্ষকদের বাধা দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে।