গিনির রাজধানী কোনাক্রিতে সোমবার একটি তেল ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছে। সরকার সতর্ক করে বলেছে, দুর্ঘটনাটি বিস্তৃত জনসংখ্যার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির প্রধান তেল ডিপোতে স্থানীয় সময় ভোরে বিস্ফোরণটি হয়। এতে কোনাক্রি শহরের কেন্দ্রস্থলে কালুম প্রশাসনিক জেলা কেঁপে ওঠে, কাছাকাছি বাড়ির জানালাগুলো ভেঙে পড়ে এবং শত শত মানুষ পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
নাগরিক সুরক্ষা বিভাগের প্রধান জিন ট্রাওরে বলেছেন, বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ৮৮ জন আহত হয়েছে। এর আগে তিনি ১১ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিলেন। এদিকে ডিপোর ক্ষতির পরিমাণ এখনো অস্পষ্ট। গিনি তেল উৎপাদক দেশ নয়। দেশটির পরিশোধন ক্ষমতাও নেই। তারা শুধু পরিশোধিত পণ্য আমদানি করে, যার অধিকাংশই কালু্মের ডিপোটিতে সংরক্ষণ করা হয় এবং সারা দেশে ট্রাকের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।
সরকার একটি বিবৃতিতে বলেছে, আগুনের উৎস এখনো জানা যায়নি। আগুনের কারণ এবং কোন পক্ষ এর জন্য দায়ী তা নির্ধারণের জন্য তদন্ত শুরু হবে। দুর্ঘটনার মাত্রা ‘জনসংখ্যার ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে’। তবে এ বিষয়ে কোনো বিশদ বিবরণ দেয়নি তারা। স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে দমকলকর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে বিশাল আগুন এবং কালো ধোঁয়া কয়েক মাইল দূর থেকেও দৃশ্যমান ছিল। এ সময় বেশ কয়েকটি ট্যাংকার ট্রাক সেনা ও পুলিশ সদস্যদের পাহারায় কোনাক্রি ডিপো ছেড়ে চলে যায়। কোনাক্রির উত্তরে কামসার বন্দরে দেশটির একটি ছোট তেল ডিপো রয়েছে, যা অধিকাংশ খনি সংস্থাগুলো ব্যবহার করে। প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা ও চিকিৎসা কর্মী বাদে অন্যদের বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্কুল এবং অধিকাংশ গ্যাস স্টেশনও বন্ধ রয়েছে। সম্ভাব্য জ্বালানির ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগের কারণে কোনাক্রি থেকে প্রায় ২৬০ কিলোমিটার দূরে মামু শহরের বাসিন্দারা গ্যাস স্টেশন ঘেরাও করেছে।
আলফা বাহ নামের একজন মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারকারী বলেছেন, ‘এক লিটার পেট্রল বর্তমানে কালো বাজারে ২০ হাজার গিনি ফ্রাংকে (২.৩৫ মার্কিন ডকার) বিক্রি হচ্ছে।’ আগে এর দাম ছিল ১২ হাজার গিনি ফ্রাংক।