ভারতের পার্লামেন্ট থেকে ১৫ বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৪ জন লোকসভার সদস্য ও একজন রাজ্যসভার। পার্লামেন্টের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে ব্যাঘাত ঘটানোয় তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) পার্লামেন্টে নিরাপত্তা ভেঙে পড়ার ঘটনার একদিন পর বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) ১৫ সংসদ সদস্যকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
লোকসভা থেকে বহিষ্কার হওয়া ১৪ সদস্যের মধ্যে ৯ জন প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের, দুজন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্ক্সবাদী), একজন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির ও দুজন দ্রাবিড় প্রগতিশীল ফেডারেশনের (ডিএমকে)। অন্যদিকে, ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কারণে রাজ্যসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস এমপি ডেরেক ও’ব্রায়েনকে। কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য কেসি ভেনুগোপাল এই বহিষ্কারকে অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন।
লোকসভায় বর্তমানে শীতকালীন অধিবেশন চলছে যা গত ৪ ডিসেম্বর শুরু হয়। আগামী ২২ ডিসেম্বর এটি শেষ হবে। বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) অধিবেশন শুরু হওয়ার পরই পার্লামেন্টে অনাকাঙিক্ষত ঘটনা ঘটে।
বুধবার লোকসভার নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে দুই বিক্ষোভকারী পার্লামেন্ট ভবনের ভেতরে ঢুকে পড়ে এবং আইনপ্রণেতাদের টেবিলের ওপর উঠে ক্যানিস্টার স্প্রে করে। এতে সেখানে হলুদ ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনা কেন্দ্র করে নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ইস্যুতে লোকসভা ও রাজ্যসভায় সরকারের বিবৃতি দাবি করে স্লোগান দেয় বিরোধীরা।
এ বিষয়ে দেশটির সংসদবিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী লোকসভায় বলেছেন, আমরা সবাই একমত যে বুধবারের ‘দুর্ভাগ্যজনক’ ঘটনাটি সংসদীয় নিরাপত্তার গুরুতর ত্রুটি। এ ঘটনায় লোকসভা স্পিকারের নির্দেশে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে কোনো সদস্যের কাছ থেকে রাজনীতি আশা করা যায় না। দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে থেকে কাজ করতে হবে। অতীতেও সংসদে নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে ও তৎকালীন লোকসভা স্পিকারের নির্দেশ অনুযায়ী লোকসভার কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।
সংসদ সদস্যদের বরখাস্ত করার বিষয়ে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ টুইটারে লিখেছেন, আমাদের দাবি, বুধবার ও বৃহস্পতিবার সংসদের যে অত্যন্ত গুরুতর ও বিপজ্জনক নিরাপত্তা লঙ্ঘন হয়েছে, তা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উভয়কক্ষে বিশদ বিবৃতি দেওয়া উচিত। এটা নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, বিজেপি সংসদ সদস্য প্রতাপ সিমহার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কারণ, তিনি অনুপ্রবেশকারীদের ভিজিটর পাস ইস্যু করিয়েছিলেন। আমাদের ন্যায্য ও যুক্তিসঙ্গত দাবিগুলো মেনে নিতে মোদী সরকার অস্বীকৃতি জানানোর কারণে বৃহস্পতিবার সকালে লোকসভা ও রাজ্যসভার কার্যবিবরণী স্থগিত করা হয়েছে।