ঢাকা ০৩:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo অনলাইন জুয়ায় গাড়ি-বাড়ি হারিয়ে যুবকের দুধ দিয়ে তওবার গোসল Logo লঞ্চঘাটে তরুণীদের প্রকাশ্যে মারধর, যুবক বললেন ভাই হিসেবে মেরেছি Logo ভারতের অপারেশন সিঁদুরের পাল্টা জবাবে পাকিস্তানের ‘বুনিয়ান-উন-মারসুস’ Logo ভারতে ৪ টিভি চ্যানেল বন্ধ: ব্যাখ্যা না পেলে পাল্টা পদক্ষেপ নেবে সরকার Logo উপশাখা দায়িত্বশীলদের নিয়ে অর্ধদিবসব্যাপী কর্মশালা Logo তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে দেশের ৬ বিভাগ Logo পারমাণবিক অস্ত্রের নিয়ন্ত্রক কমিটির জরুরি বৈঠক ডেকেছেন শেহবাজ Logo মাদারীপুর জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি ঢাকায় আটক Logo দ্বিতীয় দিনের মতো শাহবাগে চলছে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ Logo ঢাকা জেলা জামায়াতের দিনব্যাপী অগ্রসর কর্মী শিক্ষা শিবির অনুষ্ঠিত

রাজশাহীতে পেঁয়াজের জমিতে পাহারা

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় পেঁয়াজের চুরি ঠেকাতে অনেক এলাকায় চুরি ঠেকাতে চাষিরা খেতে পাহারা বসিয়েছেন। বাজারে পেঁয়াজের আকাশছোঁয়া দাম। অনেক এলাকায় খেত থেকে পেঁয়াজ চুরি হচ্ছে। রাত জেগে তারা তাঁবুতে বসে পেঁয়াজ পাহারা দিচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বিদিরপুর বাজারে গত রোববার প্রতি কেজি গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ১৬০-১৭০ টাকা এবং তাহেরপুরী পেঁয়াজ ১৯০-২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে এই হাটে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছির ১০০ টাকা।

উপজেলার হরিশংকরপুর গ্রামের কৃষক হযরত আলী পেঁয়াজ চুরির ভয়ে জমির পাশে তাঁবু গেড়ে রাত-দিন পাহারা দিচ্ছেন। গতকাল সোমবার দেখা যায়, তিনি তাঁবুর সামনে লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। ১০ কাঠা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তিনি আশা করছেন, সেখানে অন্তত ৫০ মণ পেঁয়াজ পাবেন।

এখানে হযরত আলীর ১০ বিঘা জমিতে ফসল রয়েছে। পেঁয়াজ ছাড়াও ভুট্টা, শর্ষে ও টমেটো চাষ করেছেন। তিনি বলেন, গতকাল সকাল ৯টার দিকে পাইকারি ক্রেতারা এসেছিলেন। তাঁরা ১৩০ টাকা কেজি দরে দাম দিতে চেয়েছেন। কিন্তু পরিপক্ব না হওয়ায় তিনি পেঁয়াজ বিক্রি করেননি। আশা করছেন পেঁয়াজ আরও বড় হবে, দামও বেশি পাবেন।

বেনীপুর গ্রামের কৃষক মাজহারুল ইসলাম দুই বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তিনিও ওই জমিতে ২৪ ঘণ্টা পাহারা বসিয়েছেন। তিনি বলেন, দাম বেড়ে যাওয়ার কারণেই পেঁয়াজ নিয়ে একটু উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। চুরি হয়ে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় পাহারা জোরদার করতে হয়েছে।

উপজেলার পৌর এলাকার চাষি গোলাম রাব্বানী পাঁচ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে তাঁর জমি থেকে ছয় মণ পেঁয়াজ চুরি হয়ে গেছে। এর পর থেকে তিনি জমিতে পাহারা বসিয়েছেন।

এ ছাড়া গত কয়েক দিনে ঈশ্বরীপুর ব্লকের গলাই গ্রাম, ধামিলা গ্রাম, হাতীবন্ধা গ্রামের কয়েকজন কৃষকের খেত থেকে পেঁয়াজ চুরি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে জেলায় এবার ৯ হাজার ৭৫০ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে গোদাগাড়ীতে চাষ হয়েছে ১ হাজার ৩২০ বিঘা জমিতে। ইতিমধ্যে আড়াই শ বিঘা থেকে পেঁয়াজ তোলা হয়েছে। প্রতি বিঘায় ফলন হয়েছে ১২০ থেকে ১২৫ মণ।

কৃষকের পেঁয়াজ পাহারা দেখতে সন্ধ্যায় হরিশংকরপুর মাঠে এসেছিলেন গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম আহমদ। তিনি বলেন, খেতের পেঁয়াজ এখনো পরিপক্ব হয়নি। তবে বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার খবর শুনে চাষিরা পেঁয়াজ তোলার জন্য অস্থির হয়ে উঠেছেন। পেঁয়াজ পরিপক্ব হতে ১০-১৫ দিন সময় লাগবে। তখন বিঘাপ্রতি ফলন অন্তত দেড় শ মণ হতে পারে। এখনো পেঁয়াজের গাছ সবুজ রয়েছে। পরিপক্ব বা উপযুক্ত মানে হারভেস্টিংয়ের সময় এই গাছ সবুজ থাকবে না। নরম হয়ে হেলে পড়বে। একটি পেঁয়াজ মোটামুটি ৪০০ গ্রাম পর্যন্ত ওজন হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

অনলাইন জুয়ায় গাড়ি-বাড়ি হারিয়ে যুবকের দুধ দিয়ে তওবার গোসল

রাজশাহীতে পেঁয়াজের জমিতে পাহারা

আপডেট সময় ০১:৪১:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় পেঁয়াজের চুরি ঠেকাতে অনেক এলাকায় চুরি ঠেকাতে চাষিরা খেতে পাহারা বসিয়েছেন। বাজারে পেঁয়াজের আকাশছোঁয়া দাম। অনেক এলাকায় খেত থেকে পেঁয়াজ চুরি হচ্ছে। রাত জেগে তারা তাঁবুতে বসে পেঁয়াজ পাহারা দিচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বিদিরপুর বাজারে গত রোববার প্রতি কেজি গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ১৬০-১৭০ টাকা এবং তাহেরপুরী পেঁয়াজ ১৯০-২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এর আগের সপ্তাহে এই হাটে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ছির ১০০ টাকা।

উপজেলার হরিশংকরপুর গ্রামের কৃষক হযরত আলী পেঁয়াজ চুরির ভয়ে জমির পাশে তাঁবু গেড়ে রাত-দিন পাহারা দিচ্ছেন। গতকাল সোমবার দেখা যায়, তিনি তাঁবুর সামনে লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। ১০ কাঠা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তিনি আশা করছেন, সেখানে অন্তত ৫০ মণ পেঁয়াজ পাবেন।

এখানে হযরত আলীর ১০ বিঘা জমিতে ফসল রয়েছে। পেঁয়াজ ছাড়াও ভুট্টা, শর্ষে ও টমেটো চাষ করেছেন। তিনি বলেন, গতকাল সকাল ৯টার দিকে পাইকারি ক্রেতারা এসেছিলেন। তাঁরা ১৩০ টাকা কেজি দরে দাম দিতে চেয়েছেন। কিন্তু পরিপক্ব না হওয়ায় তিনি পেঁয়াজ বিক্রি করেননি। আশা করছেন পেঁয়াজ আরও বড় হবে, দামও বেশি পাবেন।

বেনীপুর গ্রামের কৃষক মাজহারুল ইসলাম দুই বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করেছেন। তিনিও ওই জমিতে ২৪ ঘণ্টা পাহারা বসিয়েছেন। তিনি বলেন, দাম বেড়ে যাওয়ার কারণেই পেঁয়াজ নিয়ে একটু উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। চুরি হয়ে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় পাহারা জোরদার করতে হয়েছে।

উপজেলার পৌর এলাকার চাষি গোলাম রাব্বানী পাঁচ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করেছেন। গত মঙ্গলবার রাতে তাঁর জমি থেকে ছয় মণ পেঁয়াজ চুরি হয়ে গেছে। এর পর থেকে তিনি জমিতে পাহারা বসিয়েছেন।

এ ছাড়া গত কয়েক দিনে ঈশ্বরীপুর ব্লকের গলাই গ্রাম, ধামিলা গ্রাম, হাতীবন্ধা গ্রামের কয়েকজন কৃষকের খেত থেকে পেঁয়াজ চুরি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে জেলায় এবার ৯ হাজার ৭৫০ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে গোদাগাড়ীতে চাষ হয়েছে ১ হাজার ৩২০ বিঘা জমিতে। ইতিমধ্যে আড়াই শ বিঘা থেকে পেঁয়াজ তোলা হয়েছে। প্রতি বিঘায় ফলন হয়েছে ১২০ থেকে ১২৫ মণ।

কৃষকের পেঁয়াজ পাহারা দেখতে সন্ধ্যায় হরিশংকরপুর মাঠে এসেছিলেন গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম আহমদ। তিনি বলেন, খেতের পেঁয়াজ এখনো পরিপক্ব হয়নি। তবে বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার খবর শুনে চাষিরা পেঁয়াজ তোলার জন্য অস্থির হয়ে উঠেছেন। পেঁয়াজ পরিপক্ব হতে ১০-১৫ দিন সময় লাগবে। তখন বিঘাপ্রতি ফলন অন্তত দেড় শ মণ হতে পারে। এখনো পেঁয়াজের গাছ সবুজ রয়েছে। পরিপক্ব বা উপযুক্ত মানে হারভেস্টিংয়ের সময় এই গাছ সবুজ থাকবে না। নরম হয়ে হেলে পড়বে। একটি পেঁয়াজ মোটামুটি ৪০০ গ্রাম পর্যন্ত ওজন হবে।