ইসরায়েলের গোলাবর্ষণ ও বিমান হামলায় প্রতিবেশী দেশ লেবাননে দুই হিজবুল্লাহ যোদ্ধা এবং একজন গ্রাম্য মেয়র নিহত হয়েছেন। সোমবার দক্ষিণ লেবাননে এ হামলায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন। লেবাননের সামরিক সূত্র চীনের বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় গ্রাম আইতারুনকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলের তিনটি বিমান হামলায় দুই হিজবুল্লাহ সদস্য নিহত হয়েছেন।
সামরিক কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, তায়বেহের দক্ষিণ-পূর্ব গ্রামের মেয়র হুসেইন আলী মনসুর (৮৮) নিজ বাড়িতে ইসরায়েলি শেল হামলায় নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলি বাহিনীর নিক্ষেপ করা যে শেলটি তাকে আঘাত করেছিল সেটি বিস্ফোরিত হয়নি। এতে বাড়ির বারান্দায় মেয়রের পাশে বসে থাকা পরিবারের আট সদস্য বেঁচে গেছেন।
এছাড়া, দক্ষিণ লেবাননের কেন্দ্রে অবস্থিত আইতা আল-শাব গ্রাম এবং এর আশেপাশে ইসরায়েলি একটি বিমান হামলায় তিনজন বেসামরিক মানুষ আহত হয়েছেন। লেবাননের সামরিক সূত্রগুলো বলছে, ইসরায়েলি ড্রোন এবং বিমানগুলো পশ্চিম এবং পূর্ব সীমান্তবর্তী গ্রামে নয়টি বিমান হামলা চালিয়ে পাঁচটি বাড়ি ধ্বংস করেছে। এতে ১৭ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
সামরিক সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, লেবানন থেকে উত্তর ইসরায়েলের দিকে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তবে ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আয়রন ডোম সেগুলো ধ্বংস করে দেয়। ইরান-সমর্থিত শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, তাদের যোদ্ধারা ইসরায়েলের শতুলা, আল-বাগদাদি, হাদাব আল-বুস্তান, আল-রাহেব, জেবদিনসহ বেশ কিছু স্থানে হামলা চালিয়েছে।
পরে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো লেবানন সীমান্তে তিনজন সেনা আহত হওয়ার খবর জানায়। আহত সেনাদের হেলিকপ্টারে করে হাইফার রামবাম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত শুরুর পর থেকে লেবানন ও ইসরায়েল সীমান্তে গোলাগুলি বাড়তে দেখা গেছে। এসব সংঘর্ষের ঘটনা বড় সংঘাতে রূপ নিতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় এ পর্যন্ত লেবাননে ১৪৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের তালিকায় ১০১ জন হিজবুল্লাহ সদস্য, একজন সেনা সদস্য, আমাল আন্দোলনের একজন সদস্য, হামাস ও ইসলামিক জিহাদের ১৬ জন সদস্য এবং তিন সাংবাদিকসহ ২৮ জন বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন।
ইসরায়েল সরকারের মুখপাত্র আইলন লেভি বলেছেন, ‘আমরা যেকোনও আগ্রাসনের দৃঢ় জবাব দেব এবং আমরা আবারও বলছি- ইসরায়েল একসঙ্গে দুটি ফ্রন্টে যুদ্ধে আগ্রহী নয়। কিন্তু হিজবুল্লাহ যদি ইসরায়েলকে পূর্ণ মাত্রার যুদ্ধে টেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে হিজবুল্লাহ এবং লেবানন রাষ্ট্রের জন্য এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।’