ঢাকা ০১:৫৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘স্যাংশন’ নিয়ে শঙ্কিত নন পোশাক খাত সংশ্লিষ্টরা

‘স্যাংশন’ নিয়ে শঙ্কিত নন পোশাক খাত সংশ্লিষ্টরা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথিত স্যাংশন নিয়ে শঙ্কিত নন তৈরি পোশাক শিল্পের মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। তারা বলেছেন, বাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাত আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি মেনেই বিদেশি ক্রেতাদের পোশাক সরবরাহ করছে। এ কারণে আমরা শঙ্কিত নই। স্যাংশন যদি দেওয়া হয়, তাহলে অন্য কোনো কারণ আছে এর পেছনে।

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনে অর্থনীতি বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন ‘ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম’ কার্যালয়ে আয়োজিত ‘কারেন্ট লেবার ইস্যুজ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সিনারিও’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

ইআরএফ’র সভাপতি মোহাম্মদ রেফাজ উদ্দিন মিরধার সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় সেমিনারে আলোচনায় অংশ নেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুস্তফা আবিদ খান, তৈরি পোশাক শিল্প মালিক হাতেম আলী, এ এন এস সাইফুদ্দিন, ফজলে শামীম এহসান, শ্রমিকনেতা আমিনুল হক আমিন, তৌহিদুর রহমান ও ইআরএফ সদস্য কাজী আবদুল হান্নান।

মুস্তফা আবিদ খান বলেন, তৈরি পোশাক শিল্প মালিকরা অনেক সময় শ্রমিকদের ভয় পান। কেন ভয় পান, সে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা উচিত। একজন শ্রমিকনেতাকে শিল্প প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে হবে নাকি হবে না, সে বিষয়টি ফয়সালা হওয়া উচিত। শ্রমিকনেতা হতে হলে তাকে অবশ্যই শ্রমিক হতে হবে। এখানে শিল্প মালিকদের ম্যানেজমেন্টে ঘাটতি আছে। লেবার ম্যানেজমেন্ট একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

তিনি বলেন, কোনো সমস্যা এলে আমাদের প্রোঅ্যাকটিভ হতে হবে। কী করে সে সমস্যা থেকে উত্তরণ পাওয়া যায়, সেটা বের করতে হবে। তা না করে রিঅ্যাকটিভ হই, এখানেই সমস্যা নিহিত। বলা হয়, ইপিজেডে ট্রেড ইউনিয়ন নেই। কিন্তু, বাস্তবে সেখানে ট্রেড ইউনিয়ন আছে। ট্রেড ইউনিয়নের কাজ শ্রমিকদের কল্যাণ করা। কিছু কিছু সংগঠন ইপিজেডে ট্রেড ইউনিয়ন নেই বলে প্রচার করছে। এটা দেখা উচিত। সার্বিক অবস্থায় আমি মনে করি না, পোশাক শিল্প খাতে স্যাংশন দেওয়ার মতো কোনো অবস্থা বিরাজ করছে।

বিকেএমইএ’র কার্যনির্বাহী সভাপতি হাতেম আলী বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যিক খাতে কোনো স্যাংশন নেই। আমরা ১০টি ফান্ডামেন্টালের মধ্যে ৮টিতেই স্বাক্ষর করেছি। ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড থেকে কিছুটা পিছনে আছি। তবে, চীনের চেয়েও আমরা এগিয়ে আছি। এরপরও আমেরিকা আমাদের ওপর স্যাংশন দেয়। সেটা তাদের নিজস্ব বিষয়। বুঝতে হবে, অন্য কোনো কারণ আছে। রাজনৈতিক কারণে স্যাংশন দেওয়া হলে, সেটা সরকার রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করবে। যেহেতু, দেশের স্বার্থের সঙ্গে আমাদের স্বার্থ জড়িত, আমরা সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা দেবো।

তিনি বলেন, শ্রম আইনে একটি বিষয় সামান্য ভুল থাকায় রাষ্ট্রপতি সেটি ফেরত পাঠিয়েছেন। সেটা সংশোধন করে পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে পাস করা হবে। ট্রেড ইউনিয়ন আইনেও সামান্য সমস্যা আছে, সেগুলোও সমাধান করা হবে। সেমিনারে শ্রমিকনেতা তৈরি পোশাক শিল্পে বিরাজমান কিছু সমস্যা তুলে ধরেন। তৈরি পোশাক শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনায় মামলাগুলো তুলে নেওয়ার পাশাপাশি আটক শ্রমিকনেতাদের মুক্তি দাবি করেন তারা।

শ্রমিকনেতারাও স্যাংশন নিয়ে শঙ্কিত নন, জানিয়ে তারা বলেন, এ বিষয়ে শিল্প মালিক ও শ্রমিকরা যৌথভাবে কাজ করবেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বগুড়ায় কনসার্ট দেখতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত

‘স্যাংশন’ নিয়ে শঙ্কিত নন পোশাক খাত সংশ্লিষ্টরা

আপডেট সময় ০৮:৪৬:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথিত স্যাংশন নিয়ে শঙ্কিত নন তৈরি পোশাক শিল্পের মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। তারা বলেছেন, বাংলাদেশে তৈরি পোশাক খাত আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি মেনেই বিদেশি ক্রেতাদের পোশাক সরবরাহ করছে। এ কারণে আমরা শঙ্কিত নই। স্যাংশন যদি দেওয়া হয়, তাহলে অন্য কোনো কারণ আছে এর পেছনে।

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনে অর্থনীতি বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন ‘ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম’ কার্যালয়ে আয়োজিত ‘কারেন্ট লেবার ইস্যুজ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড সিনারিও’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

ইআরএফ’র সভাপতি মোহাম্মদ রেফাজ উদ্দিন মিরধার সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় সেমিনারে আলোচনায় অংশ নেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুস্তফা আবিদ খান, তৈরি পোশাক শিল্প মালিক হাতেম আলী, এ এন এস সাইফুদ্দিন, ফজলে শামীম এহসান, শ্রমিকনেতা আমিনুল হক আমিন, তৌহিদুর রহমান ও ইআরএফ সদস্য কাজী আবদুল হান্নান।

মুস্তফা আবিদ খান বলেন, তৈরি পোশাক শিল্প মালিকরা অনেক সময় শ্রমিকদের ভয় পান। কেন ভয় পান, সে বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা উচিত। একজন শ্রমিকনেতাকে শিল্প প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে হবে নাকি হবে না, সে বিষয়টি ফয়সালা হওয়া উচিত। শ্রমিকনেতা হতে হলে তাকে অবশ্যই শ্রমিক হতে হবে। এখানে শিল্প মালিকদের ম্যানেজমেন্টে ঘাটতি আছে। লেবার ম্যানেজমেন্ট একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

তিনি বলেন, কোনো সমস্যা এলে আমাদের প্রোঅ্যাকটিভ হতে হবে। কী করে সে সমস্যা থেকে উত্তরণ পাওয়া যায়, সেটা বের করতে হবে। তা না করে রিঅ্যাকটিভ হই, এখানেই সমস্যা নিহিত। বলা হয়, ইপিজেডে ট্রেড ইউনিয়ন নেই। কিন্তু, বাস্তবে সেখানে ট্রেড ইউনিয়ন আছে। ট্রেড ইউনিয়নের কাজ শ্রমিকদের কল্যাণ করা। কিছু কিছু সংগঠন ইপিজেডে ট্রেড ইউনিয়ন নেই বলে প্রচার করছে। এটা দেখা উচিত। সার্বিক অবস্থায় আমি মনে করি না, পোশাক শিল্প খাতে স্যাংশন দেওয়ার মতো কোনো অবস্থা বিরাজ করছে।

বিকেএমইএ’র কার্যনির্বাহী সভাপতি হাতেম আলী বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যিক খাতে কোনো স্যাংশন নেই। আমরা ১০টি ফান্ডামেন্টালের মধ্যে ৮টিতেই স্বাক্ষর করেছি। ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড থেকে কিছুটা পিছনে আছি। তবে, চীনের চেয়েও আমরা এগিয়ে আছি। এরপরও আমেরিকা আমাদের ওপর স্যাংশন দেয়। সেটা তাদের নিজস্ব বিষয়। বুঝতে হবে, অন্য কোনো কারণ আছে। রাজনৈতিক কারণে স্যাংশন দেওয়া হলে, সেটা সরকার রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করবে। যেহেতু, দেশের স্বার্থের সঙ্গে আমাদের স্বার্থ জড়িত, আমরা সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা দেবো।

তিনি বলেন, শ্রম আইনে একটি বিষয় সামান্য ভুল থাকায় রাষ্ট্রপতি সেটি ফেরত পাঠিয়েছেন। সেটা সংশোধন করে পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে পাস করা হবে। ট্রেড ইউনিয়ন আইনেও সামান্য সমস্যা আছে, সেগুলোও সমাধান করা হবে। সেমিনারে শ্রমিকনেতা তৈরি পোশাক শিল্পে বিরাজমান কিছু সমস্যা তুলে ধরেন। তৈরি পোশাক শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি নিয়ে ঘটে যাওয়া ঘটনায় মামলাগুলো তুলে নেওয়ার পাশাপাশি আটক শ্রমিকনেতাদের মুক্তি দাবি করেন তারা।

শ্রমিকনেতারাও স্যাংশন নিয়ে শঙ্কিত নন, জানিয়ে তারা বলেন, এ বিষয়ে শিল্প মালিক ও শ্রমিকরা যৌথভাবে কাজ করবেন।