আন্দোলনরত নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের পর রিমান্ড, জার্মানির কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের অত্যাচারের কাহিনীকেও হার মানায়। রিমান্ডে নিয়ে যেভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে। দল থেকে ভাগাতে রিমান্ডে নিয়ে নেতাকর্মীদের নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
দল পরিবর্তনের জন্য কারা অন্তরীন গণতন্ত্রকামী রাজনীতিবিদদের চরম অসন্মানজনকভাবে তাঁদের সম্মতি আদায়ের জন্য জুলুম করা হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘রিমান্ডে নির্যাতন করে কোনো নেতাকর্মীর মিথ্যা সাক্ষ্য আদায়ের চেষ্টা চলছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের নিপীড়ন-নির্যাতন, হেনস্তা ও হেয় করেও এদের তটস্থ করতে না পেরে উতপীড়নের পথ অবলম্বন করেছে এই অবৈধ সরকার। সরকার আইন প্রয়োগকারী র্যাব-পুলিশকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক দলের নীতি-নৈতিকতার অধঃপতনের দিকে ঠেলে এক সুগভীর নীল-নকশা চালিয়ে যাচ্ছে।
হয় আমাদের কথা শোনা আর তা না হলে তোমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন করে দেব, এমন অত্যাচার করা হবে তোমরা যতদিন বেঁচে থাকবে ততদিন পঙ্গু হয়ে অথবা তোমরা জীবন্ত লাশ হয়ে থাকবে-এ রকম অত্যাচার করা হচ্ছে বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপরে।’
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, এসব করে শেখ হাসিনার কোনো লাভ হবে না। এই উৎপীড়নের পথ, নিপীড়নের পথ, নির্যাতনের পথ অবলম্বন করে অথবা লোভ-প্রলোভন দেখিয়ে তিনি তাঁর অবৈধ ক্ষমতাকে প্রলম্বিত করবেন, সম্প্রসারিত করবেন এই সুযোগ এবার তাঁর হবে না। সকল সুযোগ তাঁর বন্ধ হয়ে গেছে।
দেশের মানুষকে প্রতারিত করে তিনি ক্ষমতায় থাকবেন এটা আর সম্ভব নয়। রিজভী বলেন, ক্রেতাদের মতামত উপেক্ষা করে সরকার সমর্থক সুবিধাবাদী গোষ্ঠী শোষণ নীতির পক্ষে সরকারের অবস্থান, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবী দমনে হত্যা নিষ্পেষন, অপিরনামদর্শী সিদ্ধান্ত এবং প্রতিবেশী দেশের স্বার্থে এই সর্ববৃহৎ শিল্প (পোশাক) ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নেওয়া হয়েছে। শ্রম অধিকার সুরক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র নতুন শ্রমনীতি ঘোষণার পর বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রায় অবধারিত বলে আশংকা করছেন মালিকরা। গতকাল পোশাক খাতে আতংকের বিষয়টি মালিকদের সংগঠন বিজেএমইএ সভাপতি ফারুক হাসানের কথাতেই স্পষ্ট হয়েছে। ইতোমধ্যে এ খাত ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ ব্যবসা হারিয়েছে।
পোশাক শিল্পের মালিকদের ঘোর অনিশ্চয়তার মধ্যে উদ্ভট পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বালখিল্য প্রদর্শন করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বললেই পোশাক রফতানি বন্ধ হবে না, নিষেধাজ্ঞা দিলে কিছুই হবে না। রিজভী বলেন, ‘আমরা বারবার বলেছি একতরফা নির্বাচন দেশের রাজনৈতিক সংকটকে আরো ঘনীভূত করবে, বিপর্যস্ত করবে। দেশকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবে।
এই পাতানো নির্বাচন কেবল বয়কট নয় গণপ্রতিরোধের মাধ্যমে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে একটা সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা নিশ্চিত করতে হবে।