ঢাকা ০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে ৩ রোহিঙ্গা নিহত

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলিতে তিন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও কয়েকজন রোহিঙ্গা।

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত আশ্রয়শিবিরের সি-৭৭ ব্লক এলাকা এবং জি-৩ ব্লক এলাকায় আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে গোলাগুলির পৃথক ঘটনা ঘটে।

নিহত তিনজন হলেন, আবুল কাসেম (৩৫), মো. জোবায়ের (১৬) ও জয়নাল উদ্দিন (২৭)। গুলিবিদ্ধ কয়েকজনের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন, একই আশ্রয়শিবিরের আনোয়ার সাদেক (১৭) ও মো. আয়াস (১৮)।

আধিপত্য বিস্তার, মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ ও পূর্বশত্রুতার জেরে দুই পক্ষের মধ্যে পৃথক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন আশ্রয়শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক ও অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আমির জাফর। তিনি বলেন, মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীর গোলাগুলিতে এখন পর্যন্ত তিনজন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। সন্ত্রাসীদের ধরতে আশ্রয়শিবিরে অভিযান চালানো হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা সাইফ উদ্দিন বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ৭টার দিকে ১০ থেকে ১২ জন আরসার সদস্য ১৭ নম্বর আশ্রয়শিবিরের সি-৭৭ ব্লক এলাকা থেকে আবুল কাশেমকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যান। কিছুটা দূরে নেওয়ার পর তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আশ্রয়শিবিরের সাধারণ রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে আরএসওর লোকজন রাতে আশ্রয়শিবিরের বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্র পাহারা বসান। রাত আটটার দিকে আশ্রয়শিবিরের জি-৩ ব্লক এলাকায় আরসার লোকজন আরএসওর সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি চালান। ঘণ্টাব্যাপী থেমে থেমে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে আরএসও সদস্য মো. জোবায়ের ও জয়নাল উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। গুলিবিদ্ধ হন কয়েকজন রোহিঙ্গা।

এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শামীম হোসেন বলেন, মিয়ানমারের দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে পৃথক গোলাগুলির ঘটনায় তিনজন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সাড়ে ৮ মাসে আশ্রয়শিবিরে ৬১টি সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ৭৪ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ জন রোহিঙ্গা মাঝি, ২২ জন আরসার সদস্য, ৫ জন আরএসওর সদস্য, ১ জন স্বেচ্ছাসেবক ও অন্যরা সাধারণ রোহিঙ্গা।

বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩ আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ।

জনপ্রিয় সংবাদ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন

রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে ৩ রোহিঙ্গা নিহত

আপডেট সময় ০১:৩৩:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৩

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলিতে তিন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরও কয়েকজন রোহিঙ্গা।

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত আশ্রয়শিবিরের সি-৭৭ ব্লক এলাকা এবং জি-৩ ব্লক এলাকায় আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে গোলাগুলির পৃথক ঘটনা ঘটে।

নিহত তিনজন হলেন, আবুল কাসেম (৩৫), মো. জোবায়ের (১৬) ও জয়নাল উদ্দিন (২৭)। গুলিবিদ্ধ কয়েকজনের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন, একই আশ্রয়শিবিরের আনোয়ার সাদেক (১৭) ও মো. আয়াস (১৮)।

আধিপত্য বিস্তার, মাদক চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ ও পূর্বশত্রুতার জেরে দুই পক্ষের মধ্যে পৃথক গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন আশ্রয়শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক ও অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আমির জাফর। তিনি বলেন, মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীর গোলাগুলিতে এখন পর্যন্ত তিনজন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। সন্ত্রাসীদের ধরতে আশ্রয়শিবিরে অভিযান চালানো হচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা সাইফ উদ্দিন বলেন, গতকাল রাত সাড়ে ৭টার দিকে ১০ থেকে ১২ জন আরসার সদস্য ১৭ নম্বর আশ্রয়শিবিরের সি-৭৭ ব্লক এলাকা থেকে আবুল কাশেমকে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে যান। কিছুটা দূরে নেওয়ার পর তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় আশ্রয়শিবিরের সাধারণ রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে আরএসওর লোকজন রাতে আশ্রয়শিবিরের বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্র পাহারা বসান। রাত আটটার দিকে আশ্রয়শিবিরের জি-৩ ব্লক এলাকায় আরসার লোকজন আরএসওর সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি চালান। ঘণ্টাব্যাপী থেমে থেমে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে আরএসও সদস্য মো. জোবায়ের ও জয়নাল উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। গুলিবিদ্ধ হন কয়েকজন রোহিঙ্গা।

এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শামীম হোসেন বলেন, মিয়ানমারের দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে পৃথক গোলাগুলির ঘটনায় তিনজন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সাড়ে ৮ মাসে আশ্রয়শিবিরে ৬১টি সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ৭৪ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ জন রোহিঙ্গা মাঝি, ২২ জন আরসার সদস্য, ৫ জন আরএসওর সদস্য, ১ জন স্বেচ্ছাসেবক ও অন্যরা সাধারণ রোহিঙ্গা।

বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩ আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ।