ঢাকা ১২:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকায় ১০ ডিসেম্বর সমাবেশের চিন্তা বিএনপির

সরকার পদত্যাগের একদফা দাবি আদায়ে হরতাল ও অবরোধের পাশাপাশি ভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশ করার চিন্তা করছে তারা। গুম-খুন, সাজা, কারাবন্দি ও নির্যাতিত পরিবারের সদস্যদেরও এ কর্মসূচিতে রাখার বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে। এ নিয়ে চলতি সপ্তাহে সমমনা দল ও জোট নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে।

এছাড়া গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত এবং অনিবন্ধিত মোট ৬০টি দল দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জন করছে বলে জানিয়েছে বিএনপি। এসব দলকে বিএনপির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়ে চলমান আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে তাদের সঙ্গে যোগযোগ শুরু করেছে দায়িত্বশীল নেতারা। দাবি আদায়ে এক মঞ্চ কিংবা পৃথকভাবে দলগুলো যেন মাঠে সোচ্চার থাকে, সেজন্য কাজ করছেন তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত সপ্তাহে তিন দিন বিরতি দিয়ে হরতাল ও অবরোধ পালনের সিদ্ধান্ত রয়েছে বিএনপির। বিরতির দিনে ভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করছে দলটি। সেক্ষেত্রে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে ১০ ডিসেম্বর রোববারের পরিবর্তে সরকারি ছুটির দিন শনিবার ৯ ডিসেম্বরও সমাবেশ হতে পারে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, ‘আমরা অনেক কর্মসূচি নিয়েই আলোচনা করি। কাজেই শেষ পর্যন্ত কোনটা যে স্থির হবে তা এখনো বলা যাচ্ছে না।’

যুগপৎ আন্দোলনে থাকা গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক দল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘সমাবেশ করার বিষয়টি আমাদের চিন্তার মধ্যে আছে। দু-তিন দিনের মধ্যে এ নিয়ে আমরা বসব। সেখানেই চুড়ান্ত হবে।’

একই কথা জানান ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই জানানো হবে।’

এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্যসহ অন্তত পাঁচজন ভাইস চেয়ারম্যান জানান, নির্বাচনে নিতে কেন্দ্রীয় নেতা, দলের সাবেক সংসদ-সদস্য ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের টার্গেট করা হয়েছিল। ভয়ভীতি ও নানা প্রলোভনও দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে দলের হাইকমান্ড থেকে সবাইকে আত্মগোপনের পরাপর্শসহ নানা নির্দেশনা দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত এমন কৌশল সফল হয়েছে। বিএনপিকে ভাঙা তো দূরের কথা, গুরুত্বপূর্ণ কোনো নেতাকেই নির্বাচনে নিতে পারেনি, ভিন্ন কোনো দলেও ভেড়াতে পারেনি। ভার্চুয়াল বৈঠকে ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়। সেখানে দুজন সিনিয়র নেতা তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে বলেন, বাসে আগুন দেওয়ার অভিযোগে এক মামলায় হঠাৎ করে শাহজাহান ওমরকে জামিন দেওয়ার পর তারা ধরেই নিয়েছিলেন তিনি নির্বাচনে যাচ্ছেন। ওইদিন কিংস পার্টিখ্যাত একটি দলে যোগদানের গুঞ্জনও ছিল। কিন্তু তাকে নৌকা প্রতীক দেওয়ার কারণে আওয়ামী লীগেরই ক্ষতি হয়েছে। ঝালকাঠিতে খোঁজ নিয়ে দেখেছেন তাদের (আ.লীগ) তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে এ বিষয়টি নিয়ে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সরকার বিএনপিকে ভাঙার এবং বিএনপি জোট থেকে কিছু দলকে লোভ দেখিয়ে প্রহসনের নির্বাচনে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিছু নিকৃষ্ট লোভী ছাড়া কেউ সরকারের এই হীনকর্মের সঙ্গী হয়নি। সরকার ভুঁইফোঁড় দলগুলোকে জোড়াতালি দিয়ে নির্বাচনে আনার চেষ্টায় প্রমাণ হয়েছে তারা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে ব্যর্থ হয়েছে। এই একতরফা নির্বাচন তাদের বাঁচাতে পারবে না, তাদের নির্বাসনে পাঠাবে। যারা লোভে পড়ে সরকারের পাতানো নির্বাচনে অংশ নেবেন তারা রাজনীতির আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হবেন। সাধারণ মানুষ ইতোমধ্যে তাদের বেইমান হিসাবে আখ্যায়িত করেছে।’

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকায় ১০ ডিসেম্বর সমাবেশের চিন্তা বিএনপির

আপডেট সময় ০৫:১২:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩

সরকার পদত্যাগের একদফা দাবি আদায়ে হরতাল ও অবরোধের পাশাপাশি ভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি। বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সমাবেশ করার চিন্তা করছে তারা। গুম-খুন, সাজা, কারাবন্দি ও নির্যাতিত পরিবারের সদস্যদেরও এ কর্মসূচিতে রাখার বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে। এ নিয়ে চলতি সপ্তাহে সমমনা দল ও জোট নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে।

এছাড়া গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত এবং অনিবন্ধিত মোট ৬০টি দল দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জন করছে বলে জানিয়েছে বিএনপি। এসব দলকে বিএনপির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানিয়ে চলমান আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে তাদের সঙ্গে যোগযোগ শুরু করেছে দায়িত্বশীল নেতারা। দাবি আদায়ে এক মঞ্চ কিংবা পৃথকভাবে দলগুলো যেন মাঠে সোচ্চার থাকে, সেজন্য কাজ করছেন তারা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত সপ্তাহে তিন দিন বিরতি দিয়ে হরতাল ও অবরোধ পালনের সিদ্ধান্ত রয়েছে বিএনপির। বিরতির দিনে ভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করছে দলটি। সেক্ষেত্রে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে ১০ ডিসেম্বর রোববারের পরিবর্তে সরকারি ছুটির দিন শনিবার ৯ ডিসেম্বরও সমাবেশ হতে পারে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, ‘আমরা অনেক কর্মসূচি নিয়েই আলোচনা করি। কাজেই শেষ পর্যন্ত কোনটা যে স্থির হবে তা এখনো বলা যাচ্ছে না।’

যুগপৎ আন্দোলনে থাকা গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শরিক দল বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘সমাবেশ করার বিষয়টি আমাদের চিন্তার মধ্যে আছে। দু-তিন দিনের মধ্যে এ নিয়ে আমরা বসব। সেখানেই চুড়ান্ত হবে।’

একই কথা জানান ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম। তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই জানানো হবে।’

এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্যসহ অন্তত পাঁচজন ভাইস চেয়ারম্যান জানান, নির্বাচনে নিতে কেন্দ্রীয় নেতা, দলের সাবেক সংসদ-সদস্য ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের টার্গেট করা হয়েছিল। ভয়ভীতি ও নানা প্রলোভনও দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে দলের হাইকমান্ড থেকে সবাইকে আত্মগোপনের পরাপর্শসহ নানা নির্দেশনা দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত এমন কৌশল সফল হয়েছে। বিএনপিকে ভাঙা তো দূরের কথা, গুরুত্বপূর্ণ কোনো নেতাকেই নির্বাচনে নিতে পারেনি, ভিন্ন কোনো দলেও ভেড়াতে পারেনি। ভার্চুয়াল বৈঠকে ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়। সেখানে দুজন সিনিয়র নেতা তাদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে বলেন, বাসে আগুন দেওয়ার অভিযোগে এক মামলায় হঠাৎ করে শাহজাহান ওমরকে জামিন দেওয়ার পর তারা ধরেই নিয়েছিলেন তিনি নির্বাচনে যাচ্ছেন। ওইদিন কিংস পার্টিখ্যাত একটি দলে যোগদানের গুঞ্জনও ছিল। কিন্তু তাকে নৌকা প্রতীক দেওয়ার কারণে আওয়ামী লীগেরই ক্ষতি হয়েছে। ঝালকাঠিতে খোঁজ নিয়ে দেখেছেন তাদের (আ.লীগ) তৃণমূল নেতাকর্মীদের কাছে এ বিষয়টি নিয়ে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সরকার বিএনপিকে ভাঙার এবং বিএনপি জোট থেকে কিছু দলকে লোভ দেখিয়ে প্রহসনের নির্বাচনে নেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিছু নিকৃষ্ট লোভী ছাড়া কেউ সরকারের এই হীনকর্মের সঙ্গী হয়নি। সরকার ভুঁইফোঁড় দলগুলোকে জোড়াতালি দিয়ে নির্বাচনে আনার চেষ্টায় প্রমাণ হয়েছে তারা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে ব্যর্থ হয়েছে। এই একতরফা নির্বাচন তাদের বাঁচাতে পারবে না, তাদের নির্বাসনে পাঠাবে। যারা লোভে পড়ে সরকারের পাতানো নির্বাচনে অংশ নেবেন তারা রাজনীতির আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হবেন। সাধারণ মানুষ ইতোমধ্যে তাদের বেইমান হিসাবে আখ্যায়িত করেছে।’