ঢাকা ১০:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ইতিহাসগড়া জয়

নিউজিল্যান্ডের ঘরের মাঠে টেস্ট জয়ের কৃতিত্ব দেখালেও নিজেদের ঘরের মাঠে কৃতিত্বটা এবারই প্রথম অর্জন করার পথে দাঁড়িয়েছিলো টাইগাররা। ঐতিহাসিক সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় চতুর্থ দিন শেষ করেছিলো নাজমুল হোসেন শান্তর দল। পঞ্চম দিন প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩ উইকেট।

আজ সকালে সিলেটের লাক্কাতুরায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ আসতে খুব বেশি সময় লাগলো না। প্রথমে বড় বাধা হয়ে থাকা ড্যারিল মিচেলকে ফেরালেন নাইম হাসান। এরপর টিম সাউদিকে ফিরিয়ে ৫ উইকেট পূরণ করেন তাইজুল ইসলাম। শেষ উইকেট হিসেবে ইশ সোধিকে ফিরিয়ে দিয়ে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে ১৫০ রানের ব্যবধানে হারানোর ঐতিহাসিক ক্ষণের জন্ম দিলো বাংলাদেশ।

২০১৬ সালে ইংল্যান্ড ও ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়াকে ঘরের মাঠে টেস্টে হারিয়েছিলো বাংলাদেশ। এরপর বড় দলকে হারানোর অভিজ্ঞতা হয়েছিলো গত বছর মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে। ঘরের মাঠে ২০১৭ সালের পর এই প্রথম বড় কোনো দলের বিপক্ষে টেস্টে জয় পেলো বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় ইনিংস শেষে নিউজিল্যান্ডকে ৩৩২ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল বাংলাদেশ। স্পিনারদের তোপের মু্খে খেই হারিয়ে ১৮১ রানেই গুটিয়ে গেছে কিউইদের দ্বিতীয় ইনিংস। তাইজুল ইসলাম শিকার করেছেন ৬ উইকেট। ফলে ১৫০ রানের জয় পেয়েছে টাইগাররা।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৩১০ রান করেছিল বাংলাদেশ। ওই ইনিংসে টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৬ রান করেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আর মুমিনুল হক করেন ৩৭ রান করে। শেষ দিকে উইকেটরক্ষক ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান খেলেছেন ২৯ রানের ইনিংস।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ থেকে ৭ রান এগিয়ে ৩১৭ রানে গিয়ে থামে সফরকারীদের প্রথম ইনিংস। ১০৪ রানের ইনিংস খেলেন কেন উইলিয়ামসন। ড্যারিল মিচেল করেছেন ৪১ রান। গ্লেন ফিলিপস খেলেছেন ৪২ রানের ইনিংস। শেষদিকে নেমে কিউইদের স্কোরবোর্ডে ৩৫ রান যোগ করেন টিম সাউদি।

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত সেঞ্চুরির উপর ভর করে ৩৩৮ রান করে বাংলাদেশ। শান্ত করেছেন ১৯৮ বলে ১০৫ রান। মুশফিকুর রহিম ও মেহেদি হাসান মিরাজ হাঁকিয়েছেন ফিফটি। ১১৬ বলে ৬৭ রান করেছেন মুশফিক। ৫০ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন মিরাজ। এছাড়া অভিজ্ঞ মুমিনুল হক খেলেছেন ৪০ রানের ইনিংস।

৩৩২ রানের লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় খেলতে নেমে ১৮১ রানের অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। কিউইদের হয়ে একমাত্র ফিফটি হাঁকান ড্যারিল মিচেল। ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন এই কিউই ব্যাটার। শেষ দিকে ৩৪ রান করেন টিম সাউদি। ডেভন কনওয়ে ও ইশ সোধি করেছেন ২২ রান করে।

দুই ইনিংস মিলিয়ে বাংলাদেশের মোট রান হয়েছে ৬৪৮ রান। অপরদিকে দুই ইনিংসে কিউইরা করেছে ৪৯৮ রান। ফলে ১৫০ রানে জয় পায় টাইগাররা।

বাংলাদেশের হয়ে দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০ উইকেট (৪+৬) শিকার করেছেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। প্রথম ইনিংসে মুমিনুল হক তুলে নিয়েছেন ৩টি উইকেট। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে কোনো উইকেট পাননি। মিরাজ মোট পেয়েছেন ২ উইকেট (১+১)। নাইম হাসান মোট ৩ উইকেট (১+২) ও শরিফুল মোট ২ উইকেট (১+১) পেয়েছেন।

কিউইদের হয়ে অ্যাজাজ প্যাটেল ৬ উইকেট (২+৪) শিকার করেছেন। গ্লেন ফিলিপস ৫ উইকেট (৪+১), ইশ সোধি মোট ৩ (২+১), টিম সাউদি মোট ২ (১+১) ও কাইল জেমিসন মোট ২ (২+০) উইকেট শিকার করেছেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ইতিহাসগড়া জয়

আপডেট সময় ১২:০৫:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৩

নিউজিল্যান্ডের ঘরের মাঠে টেস্ট জয়ের কৃতিত্ব দেখালেও নিজেদের ঘরের মাঠে কৃতিত্বটা এবারই প্রথম অর্জন করার পথে দাঁড়িয়েছিলো টাইগাররা। ঐতিহাসিক সেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় চতুর্থ দিন শেষ করেছিলো নাজমুল হোসেন শান্তর দল। পঞ্চম দিন প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩ উইকেট।

আজ সকালে সিলেটের লাক্কাতুরায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ আসতে খুব বেশি সময় লাগলো না। প্রথমে বড় বাধা হয়ে থাকা ড্যারিল মিচেলকে ফেরালেন নাইম হাসান। এরপর টিম সাউদিকে ফিরিয়ে ৫ উইকেট পূরণ করেন তাইজুল ইসলাম। শেষ উইকেট হিসেবে ইশ সোধিকে ফিরিয়ে দিয়ে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে ১৫০ রানের ব্যবধানে হারানোর ঐতিহাসিক ক্ষণের জন্ম দিলো বাংলাদেশ।

২০১৬ সালে ইংল্যান্ড ও ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়াকে ঘরের মাঠে টেস্টে হারিয়েছিলো বাংলাদেশ। এরপর বড় দলকে হারানোর অভিজ্ঞতা হয়েছিলো গত বছর মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে। ঘরের মাঠে ২০১৭ সালের পর এই প্রথম বড় কোনো দলের বিপক্ষে টেস্টে জয় পেলো বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় ইনিংস শেষে নিউজিল্যান্ডকে ৩৩২ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল বাংলাদেশ। স্পিনারদের তোপের মু্খে খেই হারিয়ে ১৮১ রানেই গুটিয়ে গেছে কিউইদের দ্বিতীয় ইনিংস। তাইজুল ইসলাম শিকার করেছেন ৬ উইকেট। ফলে ১৫০ রানের জয় পেয়েছে টাইগাররা।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৩১০ রান করেছিল বাংলাদেশ। ওই ইনিংসে টাইগারদের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৬ রান করেন ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আর মুমিনুল হক করেন ৩৭ রান করে। শেষ দিকে উইকেটরক্ষক ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান খেলেছেন ২৯ রানের ইনিংস।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ থেকে ৭ রান এগিয়ে ৩১৭ রানে গিয়ে থামে সফরকারীদের প্রথম ইনিংস। ১০৪ রানের ইনিংস খেলেন কেন উইলিয়ামসন। ড্যারিল মিচেল করেছেন ৪১ রান। গ্লেন ফিলিপস খেলেছেন ৪২ রানের ইনিংস। শেষদিকে নেমে কিউইদের স্কোরবোর্ডে ৩৫ রান যোগ করেন টিম সাউদি।

দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত সেঞ্চুরির উপর ভর করে ৩৩৮ রান করে বাংলাদেশ। শান্ত করেছেন ১৯৮ বলে ১০৫ রান। মুশফিকুর রহিম ও মেহেদি হাসান মিরাজ হাঁকিয়েছেন ফিফটি। ১১৬ বলে ৬৭ রান করেছেন মুশফিক। ৫০ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন মিরাজ। এছাড়া অভিজ্ঞ মুমিনুল হক খেলেছেন ৪০ রানের ইনিংস।

৩৩২ রানের লক্ষ্য নিয়ে দ্বিতীয় খেলতে নেমে ১৮১ রানের অলআউট হয় নিউজিল্যান্ড। কিউইদের হয়ে একমাত্র ফিফটি হাঁকান ড্যারিল মিচেল। ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন এই কিউই ব্যাটার। শেষ দিকে ৩৪ রান করেন টিম সাউদি। ডেভন কনওয়ে ও ইশ সোধি করেছেন ২২ রান করে।

দুই ইনিংস মিলিয়ে বাংলাদেশের মোট রান হয়েছে ৬৪৮ রান। অপরদিকে দুই ইনিংসে কিউইরা করেছে ৪৯৮ রান। ফলে ১৫০ রানে জয় পায় টাইগাররা।

বাংলাদেশের হয়ে দুই ইনিংস মিলিয়ে ১০ উইকেট (৪+৬) শিকার করেছেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। প্রথম ইনিংসে মুমিনুল হক তুলে নিয়েছেন ৩টি উইকেট। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে কোনো উইকেট পাননি। মিরাজ মোট পেয়েছেন ২ উইকেট (১+১)। নাইম হাসান মোট ৩ উইকেট (১+২) ও শরিফুল মোট ২ উইকেট (১+১) পেয়েছেন।

কিউইদের হয়ে অ্যাজাজ প্যাটেল ৬ উইকেট (২+৪) শিকার করেছেন। গ্লেন ফিলিপস ৫ উইকেট (৪+১), ইশ সোধি মোট ৩ (২+১), টিম সাউদি মোট ২ (১+১) ও কাইল জেমিসন মোট ২ (২+০) উইকেট শিকার করেছেন।