ঢাকা ০৬:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিদেশী তৎপরতা কমানোর ক্ষমতা আমাদের নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের তৎপরতা কমানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। আমাদের বন্ধুদেশ যারা তারা অনেক সময় আমাদের উপদেশ দেয়, যেটা ভালো সেটা গ্রহণ করি। অন্যের যদি ভালো উপদেশ থাকে সহায়ক নির্বাচনের জন্য, আমরা এটাকে স্বাগত জানাই। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র অনেক দিন ধরে বলছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা। সম্প্রতি তারা বলছে, সংঘাতমুক্ত নির্বাচন চায়। আমরাও চাই। কিন্তু সেটা আমরা একা পারব না।

সোমবার (২৭ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপের জন্য ঐতিহাসিকভাবে রাজনীতিকরা দায়ী। রাজনীতিবিদরা কিছু হলেই মিশনে গিয়ে ধরনা দেন। সম্প্রতি গণমাধ্যম ও বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিরাও এটার জন্য দায়ী। কয়েকটি গোষ্ঠীর কারণে বিদেশিরা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলায়।

তিনি আরও বলেন, আমরা চাইব না, বিদেশিরা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুক। তবে সহায়কের ভূমিকা পালন করলে স্বাগত জানাব।

মন্ত্রী বলেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) উন্নত দেশ, তাদের তো আমরা কখনো অগ্রাহ্য করতে পারি না। আমরা তো এ জন্য তাদের পরামর্শকে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করি।

যুক্তরাষ্ট্র চায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, এর বাইরে তারা কিছু চায় না– উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরাও সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন চাই। শুধু নির্বাচন নয়, তাদের সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন রকম সম্পর্ক আছে। আমেরিকা সবসময় বাস্তববাদী। এ সময় মন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে বলেন, আমরা তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) বলব, যারা নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে, তাদের তারা ভিসা পলিসির মধ্যে ঢুকাক। আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে নষ্ট করতে চাই না। আমেরিকা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। আমরা তাদের সঙ্গে আছি, তারা আমাদের সঙ্গে আছে।

যুক্তরাষ্ট্র আমাদের একাত্তরে সমর্থন দেয়নি। তারা পাকিস্তান সরকারকে সমর্থন করেছে- মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা ‍যুদ্ধে (যুক্তরাষ্ট্র) সমর্থন না দিলেও আমরা ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা পাওয়ার পর তারা প্রতিনিয়ত আমাদের সমর্থন দিয়ে গেছে। কোনো দিন আমাদের বিরুদ্ধে যায়নি। এটার মানে হচ্ছে তারা আমাদের সঙ্গে আছে।

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, জনগণের যদি সম্পৃক্ততা থাকে, জনগণ যদি ভোট দেয় তাহলে সেটা অংশগ্রহণমূলক।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেন, ঐতিহাসিকভাবে আমাদের রাজনীতিবিদরা এটার জন্য দায়ী। সম্প্রতি আমাদের মিডিয়াও এটার জন্য দায়ী। কিছু বাঙালি বিদেশি আছে, তারাও এটার জন্য দায়ী। কয়েকটি গোষ্ঠীর কারণে বিদেশিরা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলায়। প্রত্যেক দিন মার্কিন মুখপাত্রকে ত্যক্ত করে ফেলে বাংলাদেশি সাংবাদিকরা, বাংলাদেশি লোকেরা।

বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও যদি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তবে বিদেশিরা গ্রহণ করবে বলে আশা প করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে তিনি সব দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার চায় সব দল নির্বাচনে আসুক। যাদের জনসমর্থন থাকবে, তারা তাদের অবস্থান প্রমাণ করবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

বিদেশী তৎপরতা কমানোর ক্ষমতা আমাদের নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আপডেট সময় ০৯:৪১:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৩

নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের তৎপরতা কমানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। আমাদের বন্ধুদেশ যারা তারা অনেক সময় আমাদের উপদেশ দেয়, যেটা ভালো সেটা গ্রহণ করি। অন্যের যদি ভালো উপদেশ থাকে সহায়ক নির্বাচনের জন্য, আমরা এটাকে স্বাগত জানাই। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র অনেক দিন ধরে বলছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা। সম্প্রতি তারা বলছে, সংঘাতমুক্ত নির্বাচন চায়। আমরাও চাই। কিন্তু সেটা আমরা একা পারব না।

সোমবার (২৭ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপের জন্য ঐতিহাসিকভাবে রাজনীতিকরা দায়ী। রাজনীতিবিদরা কিছু হলেই মিশনে গিয়ে ধরনা দেন। সম্প্রতি গণমাধ্যম ও বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিরাও এটার জন্য দায়ী। কয়েকটি গোষ্ঠীর কারণে বিদেশিরা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলায়।

তিনি আরও বলেন, আমরা চাইব না, বিদেশিরা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুক। তবে সহায়কের ভূমিকা পালন করলে স্বাগত জানাব।

মন্ত্রী বলেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) উন্নত দেশ, তাদের তো আমরা কখনো অগ্রাহ্য করতে পারি না। আমরা তো এ জন্য তাদের পরামর্শকে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করি।

যুক্তরাষ্ট্র চায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন, এর বাইরে তারা কিছু চায় না– উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরাও সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন চাই। শুধু নির্বাচন নয়, তাদের সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন রকম সম্পর্ক আছে। আমেরিকা সবসময় বাস্তববাদী। এ সময় মন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে বলেন, আমরা তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) বলব, যারা নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে, তাদের তারা ভিসা পলিসির মধ্যে ঢুকাক। আমরা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে নষ্ট করতে চাই না। আমেরিকা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। আমরা তাদের সঙ্গে আছি, তারা আমাদের সঙ্গে আছে।

যুক্তরাষ্ট্র আমাদের একাত্তরে সমর্থন দেয়নি। তারা পাকিস্তান সরকারকে সমর্থন করেছে- মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা ‍যুদ্ধে (যুক্তরাষ্ট্র) সমর্থন না দিলেও আমরা ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা পাওয়ার পর তারা প্রতিনিয়ত আমাদের সমর্থন দিয়ে গেছে। কোনো দিন আমাদের বিরুদ্ধে যায়নি। এটার মানে হচ্ছে তারা আমাদের সঙ্গে আছে।

অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, জনগণের যদি সম্পৃক্ততা থাকে, জনগণ যদি ভোট দেয় তাহলে সেটা অংশগ্রহণমূলক।

বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ নিয়ে তিনি বলেন, ঐতিহাসিকভাবে আমাদের রাজনীতিবিদরা এটার জন্য দায়ী। সম্প্রতি আমাদের মিডিয়াও এটার জন্য দায়ী। কিছু বাঙালি বিদেশি আছে, তারাও এটার জন্য দায়ী। কয়েকটি গোষ্ঠীর কারণে বিদেশিরা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলায়। প্রত্যেক দিন মার্কিন মুখপাত্রকে ত্যক্ত করে ফেলে বাংলাদেশি সাংবাদিকরা, বাংলাদেশি লোকেরা।

বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলেও যদি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তবে বিদেশিরা গ্রহণ করবে বলে আশা প করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তবে তিনি সব দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার চায় সব দল নির্বাচনে আসুক। যাদের জনসমর্থন থাকবে, তারা তাদের অবস্থান প্রমাণ করবে।