এশিয়া সফরে প্রথম আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়াকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল ব্রাজিল। এরপর তারা যায় জাপানে। সেখানে আজ মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে মুখোমুখি হয় জাপানের। প্রথমার্ধে জাপানের জালে ২ গোল দিয়েও দ্বিতীয়ার্ধে ৩ গোল হজম করে ৩-২ ব্যবধানে হার মানে সেলেসওরা। যা ৩৬ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার জাপানের কাছে হার ব্রাজিলের।
১৯৮৯ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত ১৩ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিল ও জাপান। তার মধ্যে ব্রাজিল জিতেছিল ১১ বার। দুটি ম্যাচে ড্র করেছিল জাপান। ২০২৫ সালের অক্টোবরে নতুন একটি ইতিহাস গড়লো সামুরাই ব্লুরা। প্রথমবার হারিয়ে দিল পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের।
সিউলে দক্ষিণ কোরিয়াকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল ব্রাজিল। তাই টোকিওর মাটিতে জাপানের বিপক্ষে ম্যাচটিকে অনেকে ভেবেছিলেন আরেকটি একতরফা উৎসব হবে সেলেসাওদের জন্য। কিন্তু ফুটবল তো অনিশ্চয়তার খেলা। আর সেই অনিশ্চয়তাই লিখে দিল এক অবিশ্বাস্য ইতিহাস।
প্রথমার্ধে সবকিছুই চলছিল প্রত্যাশামতো। কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা যেন আগের ম্যাচের ধারাবাহিকতাই টেনে নিচ্ছিলেন। ২৬ মিনিটে ব্রুনো গুইমারেসের চমৎকার থ্রো থেকে পাওলো হেনরিক জালে বল জড়িয়ে এগিয়ে দেয় ব্রাজিলকে। কয়েক মিনিট পর ৩২ মিনিটে লুকাস পাকেতার নিখুঁত পাসে গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেল্লির গোল, ব্যবধান দ্বিগুণ হয়। ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
কিন্তু বিরতির পর যেন জেগে ওঠে পুরো জাপান। দর্শকে ঠাসা স্টেডিয়ামে শুরু হয় সামুরাইদের প্রত্যাবর্তনের কাহিনি। ৫২ মিনিটে তাকুমি মিনামিনোর গোল জাপানকে খেলায় টেনে আনে। গোলের পর থেকেই বদলে যায় ম্যাচের রং, ছন্দ হারায় ব্রাজিল।
৫৭ মিনিটে আনচেলত্তি নতুন খেলোয়াড় নামিয়ে ভারসাম্য ফেরানোর চেষ্টা করলেও ততক্ষণে খেলার নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে জাপানের হাতে। ৬২ মিনিটে কেইতো নাকামুরার গোলে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। এরপর ৭১ মিনিটে আসে সেই মুহূর্ত, যা হয়তো জাপানি ফুটবলের ইতিহাসে লেখা থাকবে সোনার অক্ষরে। আয়াসে উয়েদার জয়সূচক গোল! ৩-২ গোলের লিড নিয়ে উত্তেজনায় ফেটে পড়ে স্টেডিয়াম।
শেষ পনেরো মিনিটে মরিয়া চেষ্টা চালান ভিনিসিউস জুনিয়র ও নবাগত এস্তেভাওরা। কিন্তু জাপানের রক্ষণভাগ যেন এক দুর্ভেদ্য দেয়াল। গোলকিপার ড্যানিয়েল শ্মিড্টের দারুণ সেভে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখে জয়।
৩৬ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটল অবশেষে। এটাই ব্রাজিলের বিপক্ষে জাপানের ইতিহাসের প্রথম জয়। ১৯৮৯ সালে প্রথম মুখোমুখি হওয়ার পর ১৪তম দেখায় মিলল এই জয়। এর আগে সর্বোচ্চ সাফল্য ছিল মাত্র দুটি ড্র।