২০ শতাংশ বাড়িভাতা বৃদ্ধির দাবিতে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের চলমান কর্মবিরতি দ্বিতীয় দিনে একই দাবিতে আজ মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে সচিবালয় অভিমুখে ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা।

গতকাল সোমবার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের পক্ষ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন সংগঠনের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী। তিনি জানান, সরকারের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার মধ্যে প্রজ্ঞাপন বা ঘোষণা না এলে লং মার্চসহ পরবর্তী কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

মঙ্গলবার সকালে তিনি আরও জানান, আমাদের কর্মবিরতি চলবে। ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি না করা পর্যন্ত কোনো শিক্ষক শ্রেণি কার্যক্রমে অংশ নেবেন না।

এর আগে, মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে এবং পুলিশের বলপ্রয়োগের প্রতিবাদে সোমবার সকাল থেকেই সারাদেশের সব বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। ফলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্কুল–কলেজে ক্লাস কার্যক্রম কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।

আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, সরকারের প্রস্তাবিত বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির হার ‘অপর্যাপ্ত ও অবাস্তব’। তারা মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে ভাতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সর্বজনীন বদলি নীতি বাস্তবায়নের দাবিও জানিয়েছেন।

গত রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে পুলিশ আন্দোলনরত শিক্ষকদের সরাতে গেলে ধস্তাধস্তি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে সংগঠনের নেতাদের আহ্বানে শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে অবস্থান নেন এবং সেখান থেকেই লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

রোববার ও সোমবার রাতভর রাজধানীর শহিদ মিনারে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করেন শিক্ষকরা। কেউ প্লাস্টিকের চট বিছিয়ে, কেউ ব্যানার মাথার নিচে দিয়ে রাত কাটান। তাদের দাবি, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি ও আন্দোলন চলবে।

অন্যদিকে, সারাদেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বর্তমানে কর্মবিরতি পালন করছেন। তারা নিয়মিতভাবে বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করছেন না, পাঠদানেও অংশ নিচ্ছেন না। বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা, শিক্ষক লাউঞ্জ কিংবা অফিসকক্ষে বসেই তারা অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।

এছাড়া বিভিন্ন জেলায় শিক্ষকরা হাতে ব্যানার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও ঢাকায় অবস্থানরত আন্দোলনরত শিক্ষকদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছেন বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শিক্ষকরা।