ঢাকা ০৯:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এবার কবি নজরুল কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি শিক্ষার্থীদের

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৭:৫০:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • 31

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ধাপে ধাপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ছাত্র সংসদ নির্বাচন। এরই ধারাবাহিকতায় কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরাও তাদের প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে সরব হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন—কবে অনুষ্ঠিত হবে নজরুল কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন?

শিক্ষার্থীরা মনে করেন, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাণ হলো শিক্ষার্থীরা। তাদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া ও প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের অন্যতম মাধ্যম হলো ছাত্র সংসদ। এ সংসদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি তুলে ধরতে এবং সমাধানের লক্ষ্যে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন।

একটি গণতান্ত্রিক ও শিক্ষার্থীবান্ধব প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে ছাত্র সংসদের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা এটি শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক চর্চা শেখায় এবং নেতৃত্বগুণ তৈরিতে সহায়তা করে। আগামীর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দেশ পরিচালনায় যোগ্য করে গড়ে তুলতে ছাত্রসংসদের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

জানা গেছে, সর্বশেষ ২০০২ সালে কবি নজরুল সরকারি কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর পর থেকে দীর্ঘ ২৩ বছর ও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একক আধিপত্য বিস্তারের ফলে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। তৎকালীন সময়ে কলেজের ছাত্র সংসদ ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের কার্যালয় করে দখল করে রেখেছিল।

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতিবছর ছাত্র সংসদ বাবদ ২৫ টাকা করে আদায় করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই টাকার কোনো হিসেব শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপস্থাপন করা হয়নি। দীর্ঘ সময় ধরে কোনো ছাত্র সংসদ নেই, তাহলে কোথায় ব্যয় হচ্ছে এই টাকা? এমন প্রশ্নই তুলছেন প্রতিটি শিক্ষার্থী।

বর্তমানে কলেজে ছাত্র সংসদ শুধু নামেই টিকে আছে। এটি কলেজের নতুন ছয়তলা ভবন নির্মাণকাজে নিযুক্ত রাজমিস্ত্রিদের অস্থায়ী আবাসন হিসেবে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে কলেজ প্রশাসন।

কবি নজরুল সরকারি কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুফিয়ান সরকার পারভেজ বলেন, পুরান ঢাকার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান কবি নজরুল সরকারি কলেজে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রসংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার, চাহিদা ও সমস্যাগুলো যথাযথভাবে তুলে ধরার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একটি গণতান্ত্রিক শিক্ষাঙ্গনের মূল শক্তি হলো নির্বাচিত নেতৃত্ব। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কেবল তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনই করে না, বরং গণতন্ত্র, নেতৃত্ব এবং সংগঠনের চর্চা শিখে নেয়। কিন্তু নির্বাচন না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারছে না, তাদের সমস্যা ও দাবি যথাযথভাবে কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না।

কবি নজরুল সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আজম খান বলেন, ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে তারা সুষ্ঠু রাজনীতির চর্চা করবে। এতে ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে ও শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক সমস্যাগুলোর সমাধান সম্ভব হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ না থাকায় নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ক্লাস সংকট। অনেক বিভাগের শিক্ষকেরা নিয়মিত ক্লাস তো নেই-ই, এমনকি বিভাগেও আসেন না বলে শোনা যায়। অথচ তারা বাসায় বসেই বেতন পাচ্ছেন। যদি ছাত্র সংসদ থাকত, তবে এর দায়িত্বপ্রাপ্তরা বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে পারত।’

জনপ্রিয় সংবাদ

টস জিতে বোলিংয়ে টাইগাররা

এবার কবি নজরুল কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি শিক্ষার্থীদের

আপডেট সময় ০৭:৫০:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ধাপে ধাপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ছাত্র সংসদ নির্বাচন। এরই ধারাবাহিকতায় কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরাও তাদের প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে সরব হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন—কবে অনুষ্ঠিত হবে নজরুল কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন?

শিক্ষার্থীরা মনে করেন, প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাণ হলো শিক্ষার্থীরা। তাদের ন্যায্য দাবি-দাওয়া ও প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণের অন্যতম মাধ্যম হলো ছাত্র সংসদ। এ সংসদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি তুলে ধরতে এবং সমাধানের লক্ষ্যে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন।

একটি গণতান্ত্রিক ও শিক্ষার্থীবান্ধব প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে ছাত্র সংসদের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা এটি শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক চর্চা শেখায় এবং নেতৃত্বগুণ তৈরিতে সহায়তা করে। আগামীর গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দেশ পরিচালনায় যোগ্য করে গড়ে তুলতে ছাত্রসংসদের গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

জানা গেছে, সর্বশেষ ২০০২ সালে কবি নজরুল সরকারি কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এর পর থেকে দীর্ঘ ২৩ বছর ও আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একক আধিপত্য বিস্তারের ফলে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। তৎকালীন সময়ে কলেজের ছাত্র সংসদ ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠনের কার্যালয় করে দখল করে রেখেছিল।

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতিবছর ছাত্র সংসদ বাবদ ২৫ টাকা করে আদায় করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই টাকার কোনো হিসেব শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপস্থাপন করা হয়নি। দীর্ঘ সময় ধরে কোনো ছাত্র সংসদ নেই, তাহলে কোথায় ব্যয় হচ্ছে এই টাকা? এমন প্রশ্নই তুলছেন প্রতিটি শিক্ষার্থী।

বর্তমানে কলেজে ছাত্র সংসদ শুধু নামেই টিকে আছে। এটি কলেজের নতুন ছয়তলা ভবন নির্মাণকাজে নিযুক্ত রাজমিস্ত্রিদের অস্থায়ী আবাসন হিসেবে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে কলেজ প্রশাসন।

কবি নজরুল সরকারি কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুফিয়ান সরকার পারভেজ বলেন, পুরান ঢাকার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান কবি নজরুল সরকারি কলেজে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রসংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার, চাহিদা ও সমস্যাগুলো যথাযথভাবে তুলে ধরার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একটি গণতান্ত্রিক শিক্ষাঙ্গনের মূল শক্তি হলো নির্বাচিত নেতৃত্ব। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কেবল তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনই করে না, বরং গণতন্ত্র, নেতৃত্ব এবং সংগঠনের চর্চা শিখে নেয়। কিন্তু নির্বাচন না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারছে না, তাদের সমস্যা ও দাবি যথাযথভাবে কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না।

কবি নজরুল সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আজম খান বলেন, ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার একটি প্ল্যাটফর্ম, যেখানে তারা সুষ্ঠু রাজনীতির চর্চা করবে। এতে ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে ও শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক সমস্যাগুলোর সমাধান সম্ভব হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ না থাকায় নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ক্লাস সংকট। অনেক বিভাগের শিক্ষকেরা নিয়মিত ক্লাস তো নেই-ই, এমনকি বিভাগেও আসেন না বলে শোনা যায়। অথচ তারা বাসায় বসেই বেতন পাচ্ছেন। যদি ছাত্র সংসদ থাকত, তবে এর দায়িত্বপ্রাপ্তরা বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে সমাধানের পথ খুঁজে বের করতে পারত।’